আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
93 views
in সালাত(Prayer) by (27 points)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ

 

১/ তারাবীহ নামাজ আদায়ের নিয়ম জানতে চাচ্ছি

২/ কোন প্রকার ঘ্রাণ মুখে গিয়ে তিতা অনুভূত হলে রোযা হবে?  যেমন আতরের ঘ্রাণ,  লেবুর, অথবা লাকড়ির চুলায় ধোয়ার স্মেল।

৩/  ২ রাকাত করে তারাবীহ নামাজ পড়া ও ৪রাকাত করে নামাজ আদায়কারীর সওয়াব কি সমান? 

কখন ৪রাকাত করে তারাবীহ পড়া উত্তম? 

৪/ নামাজে বার বার ভুলে যাই আমি কি নামাজ পড়েছি যার কারনে প্রচুর সময় যায় নামাজে। অর্ধেকের চেয়ে বেশি নামাযে সাহু সেজদা দিতে দিতে ক্লান্ত লাগে, গিভ আপ করতে ইচ্ছা হয়। সমস্যা মাত্রাতিরিক্ত।  খুব কম ওয়াক্তের নামাজ সাহু সেজদা ছাড়া আদায় করেছি।

আমার করণীয় কি?

৫/ সাদা স্রাব ইনারে সব সময় লেগে থাকে কখন পড়ে বুঝা যায় না। আবার কখনো বুঝা যায় লজ্জাস্থান থেকে স্রাব আসছে।
দুই অবস্থায় আমি নামাজ কন্টিনিউ করি। কারন প্রায় ওয়াক্তে স্রাব/তরল লেগে আছে দেখতে পাই। মাঝেমধ্যে ব্যতিক্রম হয়।

এক্ষেত্রে কি আমার গুনাহ হবে?
নামাজ আদায় হবে? তেলাওয়াত হবে?

৬/ টাইম মেইন্টেইন করতে পারি না যতই রাত ১০টায় এশা ও তারাবীহ পড়া শুরু করি রাত ২/২:৩০ বাজে শেষ হতে।
সকাল সকাল শুরু করবো ভাবলেও ৯/৯:৩০/১০টা বেজে যায়।

শুধু এশা না, প্রত্যেক ওয়াক্তে সমস্যা,  নামাজ নিয়ে রীতিমত যুদ্ধ করতে হয় নিজের সাথে।

দেরীতে পড়ার কারনে সওয়াব থেকে মাহরুম হচ্ছি? 

৭/ রাত শেষ হয়ে যাবে দেখে কয়েকদিন আমি ৮/১২ রাকাত তারাবীহ নামাজ পড়েছি। এতে কি গুনাহ হয়েছে? কি করণীয় এখন?

1 Answer

0 votes
by (677,280 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


শরীয়তের বিধান অনুযায়ী তারাবিহ নামাজ বিশ রাকাত পড়া সুন্নাতে মুয়াক্কাদা। 
কেহ যদি বিনা ওযরে বিশ রাকাত না পড়ে,বা ওযর বশত বিশ রাকাত না পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলে,তাহলে সে গুনাহগার হবে।
,
এবং শেষে তিন রাকাত বিতর পড়া ওয়াজিব। 
,     
ইমাম বুখারীসহ সিহাহ সিত্তার সকল গ্রন্থকারের উস্তাদের ২৬ খন্ডে রচিত কিতাব ‘মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবাহ’( ২/১৬৪)-তে সহিহ সনদে এসেছে, আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাযি. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, 
ﺃَﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﷺ ﻛَﺎﻥَ ﻳُﺼَﻠِّﻲ ﻓِﻲ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ ﻋِﺸْﺮِﻳﻦَ ﺭَﻛْﻌَﺔً ﻭَﺍﻟْﻮِﺗْﺮَ  

রাসূল ﷺ রমযান মাসে বিশ রাকাআত তারাবী ও বিতির আদায় করতেন।
হাদিসটি এই হাদিসগ্রন্থগুলোতেও বর্ণিত হয়েছে– সুনানুল কোবরা লিল-বায়হাকী: ২/৬৯৮, আল-মুনতাখিব: ৬৫৩, আল-মু’জামুল কাবীর: ১১/৩৯৩, আল-মু’জামুল আওসাত: ১/২৪৩।

 ইয়াজিদ বিন রূমান বলেন,
 كان الناس يقومون في زمان عمر بن الخطاب في رمضان بثلاث وعشرين ركعة 

লোকেরা (সাহাবী ও তাবেয়িগণ) ওমর রাযি. এর শাসনামলে বিশ রাকাত তারাবী এবং তিন রাকাত বিতির রমযান মাসে আদায় করতো। (মারিফাতুস সুনান ওয়াল আসার, হাদীস নং-১৪৪৩, মুয়াত্তা মালিক, হাদীস নং-৩৮০, সুনানে বায়হাকী কুবরা, হাদীস নং-৪৩৯৪)

সায়েব বিন ইয়াজিদ বলেন,
 كـانوا يقـومـون عهد عمر بن الخطاب رضى الله عنه فى شهر رمضان بعشرين ركعة وكانوا يقومون بالمأتين وكانو يتوكؤن على عصيتهم فى عهد عثمان من شدة القيام  

ওমর রাযি. এর শাসনামলে লোকেরা (সাহাবী ও তাবেয়িগণ) বিশ রাকাত তারাবী পড়তেন। আর উসমান রাযি. এর শাসনামলে লম্বা কেরাতের কারণে লাঠির উপর ভর দিতেন। (বায়হাকী-৪/২৯৬)

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(০১)
এক্ষেত্রে অন্যান্য নফল সুন্নাত নামাজের মতোই এ নামাজ আদায় করতে হবে।
এর জন্য আলাদা কোনো নিয়ম বা দোয়া নেই।

মনে মনে এভাবে নিয়ত করবেন যে "আমি দুই রাকাত তারাবিহ নামাজ আদায় করছি"
আর জামায়াতে কাহারো ইক্তেদা করে নামাজ পড়লে এভাবে নিয়ত করবেন   "আমি এই ইমামের পিছনে দুই রাকাত তারাবিহ নামাজ আদায় করছি"

(০২)
এক্ষেত্রে রোযা হবে।
তবে বিনা ওযরে এমন কিছু জিহবায় নেয়া মাকরুহ।

(০৩)
২ রাকাত করে তারাবীহ নামাজ পড়া ও ৪রাকাত করে নামাজ আদায়কারীর সওয়াব  সমান নয়।
২ রাকাত করে তারাবীহ নামাজ পড়ার ছওয়াব একটু বেশি।

(০৪)
এসব সন্দেহের ক্ষেত্রে প্রবল ধারনার উপর আমল করবেন।
সেক্ষেত্রে সেজদায়ে সাহু দিতে হবেনা।
আর যদি কোনোদিকেই প্রবল ধারনা না হয়,সেক্ষেত্রে যেই রুকন নিয়ে সন্দেহ হয়েছে,সেই রুকন পুনরায় আদায় করে শেষে সেজদায়ে সাহু আদায় করবেন।

নামাজে পূর্ণ মনোযোগ না থাকার কারনেই এমনটি হচ্ছে।
তাই নামাজে মনোযোগী হতে হবে।

নামাজে মনোযোগী হওয়ার পদ্ধতি জানুনঃ- 

(০৫)
সব সময় স্রাব বের না হলে আপনি মা'যুর নন,সেক্ষেত্রে নামাজের মধ্যে বা অযুর পর সাদা স্রাব বের হলে আপনার ঐ নামাজ হবেনা।
বের হওয়া বুঝতে পারলে নামাজ চালিয়ে যাওয়া যাবেনা।

সাথে সাথেই পবিত্র হওয়ার জন্য নামাজ ছেড়ে দিতে হবে, নতুবা গুনাহ হবে।

হ্যাঁ যদি নামাজের মধ্যে বিষয়টি বুঝা না যায়,সেক্ষেত্রে নামাজ চালিয়ে গেলে গুনাহ হবেনা।
এক্ষেত্রে আপনি প্রতি নামাজের পরেই চেক করবেন।
সাদা স্রাব পাওয়া গেলে পবিত্র হয়ে পুনরায় উক্ত নামাজ আদায় করবেন।

(০৬)
দেরীতে পড়ার কারনে সওয়াব থেকে মাহরুম হচ্ছেননা।

(০৭)
ওযর বশত ও নিয়মিত না হওয়ায় গুনাহ হবেনা। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...