আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
176 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (32 points)
আসসালামু 'আলাইকুম

প্রশ্ন-১:
ইউনিভার্সিটির নির্দিষ্ট একটি ব্যাচের পিকনিক অনুষ্ঠিত হলে তাতে মেয়েদের অংশগ্রহণ করাটা কতটুকু শারী'আহসম্মত?? মেয়েদেরকে পিকনিকে অংশ নিতে কেউ ফোর্স করে না,বাধ্য করে না। সেচ্ছায় ছেলেদের সাথে পিকনিকে অংশ নেওয়াটা অনর্থক কাজের মধ্যে নিশ্চয়ই পড়ে। তবে অংশ নেওয়ার সুরত টা একটু আলাদা।
ছেলেদের সাথে মিলেমিশে কাজ করা বা অংশ নেওয়া নয়।বরং ছেলেরা রান্নাবাড়া করছে, আর মেয়েরা আলাদা ভিন্ন জায়গায় দূরে তারা তাদের মত সময় কাটিয়েছে। রান্নাবাড়া শেষে ছেলেরা তাদের ইনফর্ম করলে  তারা(মেয়েরা সবাই) সেখানে গিয়ে খাবার নিয়ে আসছে!! এটা কতটুকু জরুরতের মধ্যে পড়ে?
রান্নাবাড়া হোটেলে তো পরপুরুষরা করে, সেটা তো আলাদা। বাট এখানে এই পরপরুষরা হলো নিজের পরিচিত নন-মাহরাম ক্লাসমেট!

আর "পরিচিত নন-মাহরামের" রান্নাবাড়া নেওয়ার বিষয়টা ইসলামের দৃষ্টিতে কেমন?? কতটুকুই বা জরুরত?

আমরা অনেকসময় দেখি মেয়েরা হাতমোজা পড়া হাতের ছবি ফেসবুকে,গ্রুপে শেয়ার করে।কিংবা হিজাব নিকাব পড়ে অনর্থক ছবি ফেসবুকে শেয়ার করে।এগুলোকে তা জায়েজ মনে করার সুযোগ নেই,তাই না?আর এভাবে ছেলেদের সাথে পিকনিকে অংশ নেওয়াটা ও কি একই পর্যায়ে পড়ে??

বিষয়টি মোডারেট ইসলামপন্থীদের মতো কিনা?  জানাবেন।।

এভাবে মোডারেট পন্থা অবলম্বন করতে করতে একটা সময় ধীরে ধীরে দ্বীন থেকে ছিটকে পড়ার সম্ভাবনা কতটুকু?
প্রশ্ন-২:
একটা ভার্সিটির ডিপার্টমেন্টের সিনিয়র জুনিয়র ছেলে মেয়ে সবাইকে নিয়ে কম্বাইন্ড আয়োজিত পিকনিকে অংশ নেওয়াটা জায়েজ কিনা?!!
এরকম একটা কম্বাইন্ড আয়োজনে ছেলে মেয়েরা বেশি ফ্রি-মিক্সিং এর সুযোগ পায়। ছেলে মেয়ে আলাদা সময় কাটায় বা কাটাইছে। এরকম একটা আয়োজনে যাওয়াটা ছেলে হোক কিংবা মেয়ে হোক অংশ নেওয়াটা কি বেমানান নয়? ইসলামি শরিয়তের দৃষ্টিতে এরকম আয়োজনকে ঘৃণার চোখে দেখা উচিত কিনা এবং এরকম আয়োজন নাজায়েজ কিনা? কারণ, এরকম আয়োজনে যাওয়া কখনওই বাধ্যতামূলক নয়। অনর্থক যাওয়ার সুযোগ আছে কিনা?
আর মেয়েদের যাওয়ার সুরত যদি এমন হয় যে সেখানে গিয়ে আলাদা মেয়েদের সাথে থাকা খাবার বাসায় নিয়ে আসা! এটা কি মোডারেট পন্থীদের কর্মপন্থার মধ্যে পড়ে কিনা? একটা ফ্রি মিক্সিং করে দেয় এমন একটা আয়োজনকে সাপোর্ট করা হয় কিনা? ইসলামী শরিআহ এর দৃষ্টিভঙ্গি কি এব্যাপারে???

দয়া করে জানাবেন।

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
edited by
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


মাহরাম পুরুষ ছাড়া এভাবে পিকনিকে যাওয়া জায়েজ হবেনা। 
ইসলাম এ ধরনের পিকনিক সমর্থন করেনা।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ  

وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ: لَا يَخْلُوَنَّ رَجُلٌ بِاِمْرَأَةٍ وَلَا تُسَافِرَنَّ امْرَأَةٌ إِلَّا وَمَعَهَا مَحْرَمٌ. فَقَالَ رَجُلٌ: يَا رَسُوْلَ اللّٰهِ اكْتُتِبْتُ فِىْ غَزْوَةِ كَذَا وَكَذَا وَخَرَجَتِ امْرَأَتِىْ حَاجَّةً قَالَ: اِذْهَبْ فَاحْجُجْ مَعَ اِمْرَأَتِكَ. (مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)

 [‘আব্দুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন পুরুষ যেন কক্ষনো কোন স্ত্রীলোকের সাথে এক জায়গায় নির্জনে একত্র না হয়, আর কোন স্ত্রীলোক যেন কক্ষনো আপন কোন মাহরাম ব্যতীত একাকিনী সফর না করে। তখন এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করলো, হে আল্লাহর রসূল! অমুক অমুক যুদ্ধে আমার নাম লেখানো হয়েছে। আর আমার স্ত্রী একাকিনী হজের উদ্দেশে বের হয়েছে। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, যাও তুমি তোমার স্ত্রীর সাথে হজ্জ/হজ করো।
সহীহ : বুখারী ৩০০৬, মুসলিম ১৩৪১, আহমাদ ১৯৩৪, সহীহ ইবনু খুযায়মাহ্ ২৫২৯, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ১০১৩৪, সহীহ ইবনু হিব্বান ৩৭৫৭।

https://ifatwa.info/62320/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে, 
এভাবে ফ্রিমিক্সিং পরিবেশে পিকনিকে যাওয়া জায়েয হবে না।শিক্ষাকেন্দ্রে মূলত জরুরতের ভিত্তিতে অনুমোদন দেয়া হয়ে থাকে। পিকনিকে না যাওয়ার জন্য যাবতীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। যদি পিকনিতে যেতে বাধ্য করা হয়, তাহলে বিপরিত লিঙ্গ থেকে নিরাপদ দূরত্বে নিজেকে রাখতে হবে। এবং যখন গান বাজনা হবে,তখন কানে হেডফোন লাগিয়ে ভালো কিছু শোনার চেষ্টা করতে হবে। এবং সর্বদা মেয়েদের সাথে থাকার চেষ্টা করতে হবে।কখনো একা হওয়া যাবে না। 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
প্রশ্নে উল্লেখিত পিকনিক কোনোভাবেই জরুরতের অন্তর্ভুক্ত হবেনা।
তাই এভাবে পিকনিকে যাওয়া শরীয়ত সাপোর্ট করেনা।

"পরিচিত নন-মাহরামের" রান্নার কাজের বিষয়টা ইসলামের দৃষ্টিতে জরুরতের অন্তর্ভুক্ত নয়।
এতে ফিতনার আশংকা রয়েছে।

মেয়েরা হাতমোজা পড়া হাতের ছবি ফেসবুকে,গ্রুপে শেয়ার করে।কিংবা হিজাব নিকাব পড়ে অনর্থক ছবি ফেসবুকে শেয়ার করে।এগুলোকে জায়েজ মনে করার সুযোগ নেই।
পাশাপাশি এভাবে ছেলেদের সাথে পিকনিকে অংশ নেওয়াটাও জায়েজ নেই।

বিষয়টি মোডারেট ইসলামপন্থীদের মতো। 

এভাবে মোডারেট পন্থা অবলম্বন করতে করতে একটা সময় ধীরে ধীরে ফিতনায় জড়িয়ে পড়া ও পূর্ণ দ্বীন থেকে ছিটকে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

(০২)
এভাবে পিকনিকে যাওয়া জায়েজ হবেনা। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...