আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
226 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (2 points)
আসসালামু আলাইকুম শায়েখ ,

কাল রাত থেকে আমি একটা বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে অনেকটা চিন্তায় ছিলাম, মাথার মধ্যে না চাইতেও এই চিন্তা চলে আসছে,এমনকি নামাজেও। তো আজকে সকালে আমি সকালের দোয়া জিকির পড়া শুরু করছি, একটু খুশি খুশি লাগছিলো আল্লাহর দয়ার কথা ভেবে, তো এই মূহুর্তে জিকির করতে নিই,তো তখন হঠাৎ শুরুতেই বলে ফেলি [নবীজী( সা) আমার রব], এটা মুখে একাই কিভাবে যে চলে আসলো, আর মুখে উচ্চারণ করে ফেলেছি, তারপর আল্লাহর কাছে মাফ চেয়েছি কিন্তু ভয় হচ্ছে মুখে জোরে উচ্চারণ করে ফেলছি, এখন কি আমি তওবা করলে কোন সমস্যা হবে?  আল্লাহ মাফ করবেন?  এখন আমি ভাবছি আল্লাহকে আল্লাহ আর আল্লাহর অন্য নামগুলোয় ডাকব,রব/ ইয়া রব্বী এত বেশি বলব না, বললে যদি আবার কোন খারাপ চিন্তা আসে তাই, আর নবীজী না বলে মুহাম্মদ সাঃ বলব / রসুলুল্লাহ এতে কি কোন সমস্যা হবে?
তাছাড়া

১/ জীবনের একটা লম্বা সময় জুড়ে রবকে শুধুমাত্র নামে মাত্রই চেনা হয়েছিল। কিন্তু সেই সময়টা খুবই খারাপ ছিল, তখন অন্যান্য পাপ তো ছিলোই নাস্তিকদের মত একটা চিন্তা ভাবনাও কাজ করত(শিরক,বিদআত,কুফরী কার্যক্রমও ছিল)  হেদায়েত পাওয়ার আগের দিকে,আল্লাহ আছে কি নেই সে সম্পর্কে কুমন্ত্রণা আসতে থাকে। তারপর আল্লাহর অনুগ্রহে হেদায়েত পাওয়ার সৌভাগ্য হয় কিন্তু এখন অন্তরের কুমন্ত্রণায় নিজের ঈমান আছে কিনা সেটা নিয়ে অনেক দিন ধরেই হতাশা- দুশ্চিন্তা আর সন্দেহে আছি।

আমার অন্তরে আল্লাহ সম্পর্কে অনেক খারাপ খারাপ চিন্তা ভাবনা আসে,নবী- রাসূল , নবীজী(সাঃ) সম্পর্কেও। এটার পরিমাণ অনেক বেশি, খুবই খারাপ চিন্তা ভাবনা আসে(আমি বুঝাতে পারছি না তবে সেটা খুবই জঘন্য), প্রায়সময়ই এমনটা হয়। তখন আমার মাঝে খুব হতাশা কাজ করে।
তখন এমন চিন্তা কাজ করে - আমি তো তওবা করেছি,দোয়া করছি, এগুলো কি তাহলে আল্লাহ কবুল করলেন না? এমন চিন্তা আসলে কি আগের দোয়া গ্রহণযোগ্য হবে না?
★আমার অন্তরে মানুষের সম্পর্কে অধিক অনুমান আর বাজে চিন্তা আসে,আমি জানি এটা ঠিক না। কিন্তু  ( তোমরা কারো সম্পর্কে অধিক অনুমান করা থেকে বিরত থাকো) সেদিন কুরআনের এই আয়াত জানলাম/ এমন ভালো  কিছু জানি সেটা নিয়ে অধিক বাজে চিন্তা আসে।
★ আমার অন্তরে আসা কুমন্ত্রণাগুলো অটোমেটিক চলতে থাকে,যেমন- একটা ঘরে মানুষ আছে,যার রুম তার রুমের মধ্যে অনেক মানুষ কথা বলছে কিন্তু তার সেদিকে খেয়াল নেই, হঠাৎ সে খেয়াল করলো আরে এখানে লোকজন কি নিয়ে কথা বলছে। আমারও এমনটাই হচ্ছে অন্তরে একা একাই কথা বার্তা চলতে থাকে...
আমি ইচ্ছে করে আল্লাহ, নবীজী( সা:) মানুষ সম্পর্কে খারাপ চিন্তা ভাবনা করি না একা একাই যেন কোথা থেকে চলে আসে,মাঝেমধ্যে মনে হয় আমি ইচ্ছে করেই ভাবছি।
আমি কিভাবে এ থেকে রেহাই পাব, কিভাবে তওবা করব, আমার তো বারবার এমন হচ্ছে।
২/ আমাদের সাথে কতজন ফেরেশতার নিযুক্ত  রয়েছে?আমাদের শুধু কথাবার্তা লিখে রাখার জন্য  কি একজন বিশেষ  ফেরেশতা নিযুক্ত আছেন?
আমি জানতে পারলাম আমাদের কথা বার্তা যা বলি সেটা একজন ফেরেশতা লিপিবদ্ধ করেন।  এটা শোনার পর আমি বিশ্বাস করি কিন্তু কয়েক ঘন্টা পর এটা নিয়েও কুমন্ত্রণা আসতে শুরু করে। এই তথ্যটা কি সঠিক?
৩/ মানুষের যেমন অন্তরের রোগ আছে আমারও রয়েছে, যেমন- ( রাগ, হিংসা, অহংকার, গীবত, রিয়া, চুরি,মিথ্যা....) আমি জানি এগুলো ঠিক না,তওবা করার পরও হয়ে যায়, তারপর অনেক হতাশ লাগে, আবার নিজেকে সান্ত্বনা দিই অভ্যাস ত্যাগ করতে সময় লাগবে, এক্ষেত্রে আমি কি করব?
৪/ আমার মাঝে আত্মঅহংকার কাজ করে, অন্যের থেকে নিজেকে বড় ভাবি। এক্ষেত্রে আমি কি করব?
আমি নিজের অন্তরের রোগ ধরতে পেরেছি কিন্তু ত্যাগ করতে পারছি না।
৫/ একটা পাপ হলে পূর্বের সব পাপ মনে হয় মাফ হয়নি,সব পাপ স্মরণ করে মাফ চাই এটা কি ঠিক?
এক্ষেত্রে পূর্বের পাপ কি চলে আসবে?
৬/  উপরোক্ত কারণ গুলো বিশেষ করে অন্তরে বাজে চিন্তা ভাবনার কারণে কি আমার ঈমান চলে গেছে?  আমি কিভাবে পরিত্রাণ পাব এ সমস্যা থেকে?  আমি কিভাবে তওবা করে নিজের আত্মশুদ্ধি করব,কিভাবেই বা আবার এমন সমস্যার সম্মুখীন হতে মোকাবিলা করব?
অন্তরের রোগের ক্ষেত্রে মনে হয় কাল এই পাপ আবার হতে পারে, এতে কি আমার তওবা হবে না, আমি কিভাবে কি করব বুঝতে পারছি না খুব,হতাশা আর দুশ্চিন্তায় আছি।
আমার অন্তরে বারবার আল্লাহ, নবীজী, মানুষ সম্পর্কে খুব খারাপ চিন্তা আসে। যার জন্য আমার নামাজেও মনযোগ ধরে রাখা সম্ভব হয় না। নামাজে খুশু খুযু ধরে রাখতে কি করতে পারি?
তাছাড়া আরেকটা প্রশ্ন ছিল
৭/ যদি কোন মহিলার বুকের ওড়না সরে যায় আর তার স্বামী ব্যতীত অন্য কেউ (মাহরাম-নানা)এই অবস্থায় হঠাৎ সামনে এসে দেখে ফেলে,তাহলে তার কেমন গুনাহ হবে? মাফ চাইলে আল্লাহ মাফ করবেন?

1 Answer

0 votes
by (583,410 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ
ওযর বিল জাহালত গ্রহণযোগ্য। চায় এ'তেকাদি মাসাঈল সম্পর্কিত হোক বা ফেকহী শাখাপ্রশাখাগত মাসাঈল সম্পর্কিত হোক।
যেমন আল্লাহ তা'আলা বলেন,
 ( رَبَّنَا لَا تُؤَاخِذْنَا إِنْ نَسِينَا أَوْ أَخْطَأْنَا )
হে আমাদের পালনকর্তা, যদি আমরা ভুলে যাই কিংবা ভুল করি, তবে আমাদেরকে অপরাধী করো না।(সূরা বাকারা-২৮৬)
অন্য এক আয়াতে আল্লাহ তা'আলা বলেন,
 (وَلَيْسَ عَلَيْكُمْ جُنَاحٌ فِيمَا أَخْطَأْتُمْ بِهِ وَلَكِنْ مَا تَعَمَّدَتْ قُلُوبُكُمْ وَكَانَ اللَّهُ غَفُورًا رَحِيمًا)
এ ব্যাপারে তোমাদের কোন বিচ্যুতি হলে তাতে তোমাদের কোন গোনাহ নেই, তবে ইচ্ছাকৃত হলে ভিন্ন কথা। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।(সূরা আহযাব-৫)
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/4560

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনি যতগুলো বিষয় উল্লেখ করেছেন, এগুলো যেহেতু মনের অজান্তেই হতো, তাই কোনো গোনাহ হবে না।তারপরও সতর্কতামূলক তাওবাহ ও ইস্তেগফার করে নিবেন। এবং একজন দ্বীনদার বোনের সাথে আন্তরিক বন্ধুত্ব তৈরী করে নিবেন। স্থানীয় মহিলা মাদরাসার শিক্ষিকাদের সাথে আন্তরিক সম্পর্ক গড়ে তুলার চেষ্টা করবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (583,410 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...