আসসালামু আলাইকুম শায়েখ ,
কাল রাত থেকে আমি একটা বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে অনেকটা চিন্তায় ছিলাম, মাথার মধ্যে না চাইতেও এই চিন্তা চলে আসছে,এমনকি নামাজেও। তো আজকে সকালে আমি সকালের দোয়া জিকির পড়া শুরু করছি, একটু খুশি খুশি লাগছিলো আল্লাহর দয়ার কথা ভেবে, তো এই মূহুর্তে জিকির করতে নিই,তো তখন হঠাৎ শুরুতেই বলে ফেলি [নবীজী( সা) আমার রব], এটা মুখে একাই কিভাবে যে চলে আসলো, আর মুখে উচ্চারণ করে ফেলেছি, তারপর আল্লাহর কাছে মাফ চেয়েছি কিন্তু ভয় হচ্ছে মুখে জোরে উচ্চারণ করে ফেলছি, এখন কি আমি তওবা করলে কোন সমস্যা হবে? আল্লাহ মাফ করবেন? এখন আমি ভাবছি আল্লাহকে আল্লাহ আর আল্লাহর অন্য নামগুলোয় ডাকব,রব/ ইয়া রব্বী এত বেশি বলব না, বললে যদি আবার কোন খারাপ চিন্তা আসে তাই, আর নবীজী না বলে মুহাম্মদ সাঃ বলব / রসুলুল্লাহ এতে কি কোন সমস্যা হবে?
তাছাড়া
১/ জীবনের একটা লম্বা সময় জুড়ে রবকে শুধুমাত্র নামে মাত্রই চেনা হয়েছিল। কিন্তু সেই সময়টা খুবই খারাপ ছিল, তখন অন্যান্য পাপ তো ছিলোই নাস্তিকদের মত একটা চিন্তা ভাবনাও কাজ করত(শিরক,বিদআত,কুফরী কার্যক্রমও ছিল) হেদায়েত পাওয়ার আগের দিকে,আল্লাহ আছে কি নেই সে সম্পর্কে কুমন্ত্রণা আসতে থাকে। তারপর আল্লাহর অনুগ্রহে হেদায়েত পাওয়ার সৌভাগ্য হয় কিন্তু এখন অন্তরের কুমন্ত্রণায় নিজের ঈমান আছে কিনা সেটা নিয়ে অনেক দিন ধরেই হতাশা- দুশ্চিন্তা আর সন্দেহে আছি।
আমার অন্তরে আল্লাহ সম্পর্কে অনেক খারাপ খারাপ চিন্তা ভাবনা আসে,নবী- রাসূল , নবীজী(সাঃ) সম্পর্কেও। এটার পরিমাণ অনেক বেশি, খুবই খারাপ চিন্তা ভাবনা আসে(আমি বুঝাতে পারছি না তবে সেটা খুবই জঘন্য), প্রায়সময়ই এমনটা হয়। তখন আমার মাঝে খুব হতাশা কাজ করে।
তখন এমন চিন্তা কাজ করে - আমি তো তওবা করেছি,দোয়া করছি, এগুলো কি তাহলে আল্লাহ কবুল করলেন না? এমন চিন্তা আসলে কি আগের দোয়া গ্রহণযোগ্য হবে না?
★আমার অন্তরে মানুষের সম্পর্কে অধিক অনুমান আর বাজে চিন্তা আসে,আমি জানি এটা ঠিক না। কিন্তু ( তোমরা কারো সম্পর্কে অধিক অনুমান করা থেকে বিরত থাকো) সেদিন কুরআনের এই আয়াত জানলাম/ এমন ভালো কিছু জানি সেটা নিয়ে অধিক বাজে চিন্তা আসে।
★ আমার অন্তরে আসা কুমন্ত্রণাগুলো অটোমেটিক চলতে থাকে,যেমন- একটা ঘরে মানুষ আছে,যার রুম তার রুমের মধ্যে অনেক মানুষ কথা বলছে কিন্তু তার সেদিকে খেয়াল নেই, হঠাৎ সে খেয়াল করলো আরে এখানে লোকজন কি নিয়ে কথা বলছে। আমারও এমনটাই হচ্ছে অন্তরে একা একাই কথা বার্তা চলতে থাকে...
আমি ইচ্ছে করে আল্লাহ, নবীজী( সা:) মানুষ সম্পর্কে খারাপ চিন্তা ভাবনা করি না একা একাই যেন কোথা থেকে চলে আসে,মাঝেমধ্যে মনে হয় আমি ইচ্ছে করেই ভাবছি।
আমি কিভাবে এ থেকে রেহাই পাব, কিভাবে তওবা করব, আমার তো বারবার এমন হচ্ছে।
২/ আমাদের সাথে কতজন ফেরেশতার নিযুক্ত রয়েছে?আমাদের শুধু কথাবার্তা লিখে রাখার জন্য কি একজন বিশেষ ফেরেশতা নিযুক্ত আছেন?
আমি জানতে পারলাম আমাদের কথা বার্তা যা বলি সেটা একজন ফেরেশতা লিপিবদ্ধ করেন। এটা শোনার পর আমি বিশ্বাস করি কিন্তু কয়েক ঘন্টা পর এটা নিয়েও কুমন্ত্রণা আসতে শুরু করে। এই তথ্যটা কি সঠিক?
৩/ মানুষের যেমন অন্তরের রোগ আছে আমারও রয়েছে, যেমন- ( রাগ, হিংসা, অহংকার, গীবত, রিয়া, চুরি,মিথ্যা....) আমি জানি এগুলো ঠিক না,তওবা করার পরও হয়ে যায়, তারপর অনেক হতাশ লাগে, আবার নিজেকে সান্ত্বনা দিই অভ্যাস ত্যাগ করতে সময় লাগবে, এক্ষেত্রে আমি কি করব?
৪/ আমার মাঝে আত্মঅহংকার কাজ করে, অন্যের থেকে নিজেকে বড় ভাবি। এক্ষেত্রে আমি কি করব?
আমি নিজের অন্তরের রোগ ধরতে পেরেছি কিন্তু ত্যাগ করতে পারছি না।
৫/ একটা পাপ হলে পূর্বের সব পাপ মনে হয় মাফ হয়নি,সব পাপ স্মরণ করে মাফ চাই এটা কি ঠিক?
এক্ষেত্রে পূর্বের পাপ কি চলে আসবে?
৬/ উপরোক্ত কারণ গুলো বিশেষ করে অন্তরে বাজে চিন্তা ভাবনার কারণে কি আমার ঈমান চলে গেছে? আমি কিভাবে পরিত্রাণ পাব এ সমস্যা থেকে? আমি কিভাবে তওবা করে নিজের আত্মশুদ্ধি করব,কিভাবেই বা আবার এমন সমস্যার সম্মুখীন হতে মোকাবিলা করব?
অন্তরের রোগের ক্ষেত্রে মনে হয় কাল এই পাপ আবার হতে পারে, এতে কি আমার তওবা হবে না, আমি কিভাবে কি করব বুঝতে পারছি না খুব,হতাশা আর দুশ্চিন্তায় আছি।
আমার অন্তরে বারবার আল্লাহ, নবীজী, মানুষ সম্পর্কে খুব খারাপ চিন্তা আসে। যার জন্য আমার নামাজেও মনযোগ ধরে রাখা সম্ভব হয় না। নামাজে খুশু খুযু ধরে রাখতে কি করতে পারি?
তাছাড়া আরেকটা প্রশ্ন ছিল
৭/ যদি কোন মহিলার বুকের ওড়না সরে যায় আর তার স্বামী ব্যতীত অন্য কেউ (মাহরাম-নানা)এই অবস্থায় হঠাৎ সামনে এসে দেখে ফেলে,তাহলে তার কেমন গুনাহ হবে? মাফ চাইলে আল্লাহ মাফ করবেন?