আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
382 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (66 points)
edited by

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। প্রথম ২টি প্রশ্ন অনেক লম্বা, একটু ধৈর্য ধরে পড়ার অনুরোধ থাকল।
বিঃ দ্রঃ মুফতি সাহেবগণ ও যারা এই প্রশ্নটা পড়ছেন তারা কেউ আমার আব্বু আম্মু বা ভাইয়াকে বদদুয়া দেবেন না, পারলে একটু দুয়া করে যাবেন তাদের জন্য। 

 

১। আমি আগে একাধিকবার বলেছি আমার পরিপূর্ণ দ্বীন পালনে সমস্যা নিয়ে। বহুদিন পর্যন্ত বুঝতে পারি নি যে দাওয়াহ দেওয়ার এটাই সঠিক সময় কিনা যেহেতু মানুষের মেজাজ বুঝে দাওয়াহ দিতে হয়। এজন্য অনেকদিন পরিবারে দাওয়াহ দিতে পারি নি। এবার ঠিক করলাম যে আমি দাওয়াহ দিবই ইনশা আল্লাহ। তো আমি এর আগে তাদের সমস্যাগুলো নিয়ে কিছুদিন বিশ্লেষণ করলাম। কিছু গবেষণার পর বুঝতে পারলাম যে আব্বু আম্মু ৫ ওয়াক্ত সালাত আদায় করেন, হজ্ব করে এসেছেন, মানুষকে অনেক দান সদাকা করেন, অন্যের বিপদাপদে সাধ্যমত পাশে দাঁড়ান, কারো সাথে খারাপ সম্পর্ক নেই, সজ্জন হিসেবে পরিচিত এলাকায়। আলহামদুলিল্লাহ! আল্লাহুম্মা বারিক লাহুম! 

 

কিন্তু আসল সমস্যা যেটা সেটা হল আমার মা পর্দা করেন শাড়ির আঁচল বা সালোয়ার কামিজের ওড়না মাথায় দিয়ে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই চুল বেরিয়ে থাকে নাহলে কান। হজ্বের পর কিছুদিন হিজাব পরতেন কিন্তু প্রচণ্ড গরম লাগায় আর কনটিনিউ করতে পারেননি। আমার আব্বু হজ্বের পর মাথায় টুপি পরেন কিন্তু দাঁড়ি রাখেন না এমনকি নিয়মিত শেভ করেন। আম্মু মজা করে বলেন যে আব্বু মাথার টাক ঢাকতে টুপি পরেন। 

 

আব্বু নিজে রাজনীতি না করলেও আব্বুর ঘনিষ্ঠ বন্ধুরা বামধারার রাজনীতির সাথে যুক্ত। আমার আম্মু ভারতীয় সিরিয়াল দেখেন, টিভি নষ্ট থাকলে ইউটিউবে দেখেন তাও না দেখে থাকেন না। আম্মু প্রতিদিন কুরআন পড়েন আলহামদুলিল্লাহ কিন্তু বাংলা অর্থ দেখে পড়েন আর মূলভাব অনুধাবন করার চেষ্টা করেন। আমি একবার জিজ্ঞাসা করেছিলাম যে আম্মু আরবি পড়তে পারেন কিনা। আম্মু বলেছিলেন যে ছোটবেলায় যে হুজুর আম্মুকে পড়াতেন তিনি একমাস পড়িয়েই চলে গিয়েছেন কারণ হুজুরের মনে হয়েছিল যে আম্মু দ্রুত শিখে নিয়েছেন, হুজুরের আর দরকার নেই। আর আম্মুও বলেছিলেন যে তিনি আমার মত সওয়াবের আশায় কুরআন পড়েন না। 

 

আমি একবার বলেছিলাম যে আরবি পড়তে পারলে একটু আরবি পড়তে। আমার এই কথা শুনে তিনি এত ক্লান্ত চোখে তাকিয়েছিলেন যে আমারই খারাপ লেগেছিল। আমি কুরআন টিচারের কথা বলেছিলাম কিন্তু একথা শুনে আব্বু বলেছিলেন যে তুমি জানো তোমার আম্মুর আল্লাহর উপর কতো বিশ্বাস। তিনি তোমার মতো বিপদে পড়লে নার্ভাস হয়ে পড়েন না। কথাটা আসলেই উড়িয়ে দেওয়া যায় না। আমি আসলেই তাকে আল্লাহর উপর গভীর বিশ্বাস করতে দেখেছি। আব্বু বুঝাতে চেয়েছিলেন যে তোমার আম্মুর আল্লাহর উপর এত বিশ্বাস যে তার আরবিতে কুরআন না পড়লেও চলবে। 

 

উনার সালাতের সময় সতর ঠিকমত ঢাকা পড়ে না। হাফ হাতা জামার সাথে ওড়না দিয়ে সালাত আদায় করেন, হাত ও চুল প্রায়ই বেরিয়ে থাকে। আমি সালাত খিমার দিয়েছিলাম কিন্তু এটা উনি এত গুরুত্বের সাথে নেননি।এই রমাদানে আমি ওনাদের দুজনকে শায়খ আহমাদুল্লাহর রমাদান প্ল্যানার কিনে দেই কিন্তু ওনারা বলেছেন যে ওনাদের অন্য কারো প্ল্যানার লাগবে না, ওনারা নিজেরাই প্ল্যান করতে পারেন ভালো। শায়খ আহমাদুল্লাহ(হাফি:) সম্পর্কে জানতে চাইলে বললাম আস সুন্নাহ ফাউনডেশনের কথা। কথা প্রসঙ্গে চলে আসল শায়খ আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর(রহ:) এর কথা, ওনারা চেনেন না বলে জানালেন। যখন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক বললাম, তখন আচ্ছা আচ্ছা করলেন। 

 

আমি বিভিন্ন সময় আম্মু আব্বুকে আমল সুন্দর করার কথা বলেছি। কিন্তু তারা বলেছেন যে আমাদের মানুষ করার পিছনে যে কষ্ট তারা করেছেন এজন্যই আল্লাহ তাদের উপযুক্ত প্রতিদান দিবেন। তারা শুধু কুরআন মানতে চান, হাদিসের কথা বললে সহিহ জয়ীফ জাল এইসব ক্যাটাগরির ভেজালের মধ্যে যেতে চান না। 

 

তাদের উভয়েরই ৬০ এর উপর বয়স। প্রয়োজনীয় ইলম অর্জনের কথা বললে বলেন এই বয়সে নতুন করে কিছু শেখা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়, শিখতে চানও না। আর আমাদের বাসায় ইসলামী বই কেনা আনঅফিশিয়ালি নিষিদ্ধ (অন্তত আমার জন্য) তাই আমার পক্ষে কোন নির্দিষ্ট বই থেকে পড়ে শুনানো কষ্ট হচ্ছে। আমি তাদের কোন কোন জায়গায় সমস্যা থাকতে পারে বিস্তারিত বললাম কিন্তু স্পষ্ট করে কোন ক্যাটাগরি করতে পারলাম না। আমার দাওয়াহ এপ্রচ কেমন হওয়া উচিত? তাহাজ্জুদ তো পড়া উচিত কিন্তু তাহাজ্জুদের সময় আমি এত ক্লান্ত থাকি যে আমার ব্রেন কাজ করে না তাই কী দুয়া করতে হবে মনে পড়ে না। অন্য সময়েও সাধ্যমত দুয়া করে যাচ্ছি।
আমার এই বয়সে এত ধর্মকর্ম করা নিয়ে আব্বু আম্মু দুশ্চিন্তায় থাকেন। এজন্য আমি বাসায় যেসব বই আছে সেগুলো থেকেও পড়ে শুনাতে পারছি না। যা ২-১ বার পড়ে শুনিয়েছি তাতেই তারা বলেছেন কেন সবসময় ধর্মের কথা বলি, এতে তো একঘেয়েমি আসে। যদিও আমি খুব কমই তাদেরকে ইসলামের সুন্দর বাণী বুঝাতে পেরেছি এই ৪ বছরে। 

আমার হাল হকিকত জানতে https://www.ifatwa.info/54474/, https://www.ifatwa.info/28206/ এর ১ নং, https://www.ifatwa.info/16065/ এর ৩ নং, https://www.ifatwa.info/11505/ এগুলো একটু দেখে নেবেন। 

 

২। এবার আসি আমার ভাইয়ের প্রসঙ্গে। আমার ভাই ছোটবেলায় কুরআন কম্পিটিশনে প্রাইজ পেয়েছিল। ক্যাডেট কলেজ থেকে পাশ করে স্বনামধন্য ইঞ্জিনিয়ারিং ভার্সিটি থেকে পড়ে, ভালো কোম্পানিতে কিছুদিন চাকরি করে আমেরিকা যায় পিএইচডি করতে। পিএইচডিও শেষ করে ফেলেছে আলহামদুলিল্লাহ! আল্লাহুম্মা বারিক লাহু! কিন্তু ওর যেটা সমস্যা হয় সেটা হল আমেরিকায় গিয়ে দেখে একেকজন একেকভাবে নামাজ পড়ে। এটা দেখে ও ভাবতে থাকে যে সবসময় ওর পদ্ধতি সঠিক হবে এমন তো কোন কথা নেই। এই চিন্তা থেকে ও ভাবা শুরু করে তাহলে তো শুধু মুসলিমরা সঠিক হবে কেন, সব একেশ্বরবাদী ধর্মই সঠিক। 

 

সে ইসলাম, খৃষ্টান ও ইহুদি ধর্মের যা যা কমন ও ভালো লাগে তাই পালন করে। যেমন ও বলেছে দান সদাকা করে  চ্যারিটিতে, কিয়ামতে বিশ্বাস করে, আল্লাহর উপর বিশ্বাস করে, ভালো কাজ করে। কিন্তু ৬১০ সালে আসা একটা ধর্ম কেন সঠিক হবে আর সব নবী কেন মধ্যপ্রাচ্যে আসল এটা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করে। আমি ওকে বুঝানোর চেষ্টা করেছি, সালাতের দাওয়াতও দিয়েছি। কিন্তু ও বলেছে যে ধর্ম মানুষের পার্সোনাল ব্যাপার, আর যেন ওকে দাওয়াত না দেই। আমাকে বলেছে যে কোন দেশে মাইনরিটি হিসেবে বাস করতে তাহলেই বুঝব নিজেই সবসময় সঠিক না অন্যের সাথেও তাল মেলাতে হয়। ও নাকি বাংলাদেশে থাকতে আমার মত ভাবত যে ইসলাম একমাত্র সঠিক ধর্ম। ওর হিন্দু বন্ধু ওকে দেশে থাকতে বলেছিল যে মাইনরিটিদের কষ্ট মেজরিটিরা কখনো বুঝবে না। এটা ২০১৯ সালের কথা যখন ওকে দাওয়াহ দিচ্ছিলাম। এরপর কিছুদিন ওকে সেভাবে কিছু বলিনি । 

 

মাঝেমাঝে প্রাসঙ্গিক ভিডিও বা লেখা পাঠাতাম ওকে। কোনসময় লাইক দিত আবার কোন সময় বলত যে পরে কথা বলবে এসব ব্যাপারে। যদিও পরে আর এসব ব্যাপারে কথা আর সেভাবে হত না। ওর কনফিউশন ক্লিয়ার করার জন্য বইও পাঠিয়েছিলাম কিন্তু ও বলেছে যে ঐ বই কিছুদুর পড়ার পর আর ইন্টারেস্ট পাচ্ছে না। এই রমাদানে পাইলট প্রজেক্ট হাতে নেই পরিবারে দাওয়াহ দেওয়ার। এই প্রজেক্টের মধ্যে ভাইয়াকে দাওয়াহ দেওয়াও ছিল। ইসলাম যে আদম আলাইহিস সালাম এর থেকেই বিভিন্ন ভাবে আছে এটা বুঝাতে ওকে একটা ভিডিও দেই। যার মধ্যে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আগের যুগের হানিফদের কথা আছে (জায়িদ ইবন আমির, ওয়ারাকা ইবন নাওফেল প্রমুখ)। গুরুত্বপূর্ণ অংশ ক্লিপ করে দিয়েছিলাম যাতে ও সহজে ও কম সময়ে বুঝতে পারে, যেহেতু ও অনেক ব্যস্ত থাকে। কিন্তু এর পর ওর রিয়্যাকশনটা ছিল এরকমঃ

 

ভাইয়াঃ আমাকে কেন এসব আমি পাঠাস? 

আমিঃ ইসলাম পূর্ব যুগে কয়েকজন মানুষ ছিলেন যাদের হানিফ বলা হত। এদের একজন ছিলেন জায়িদ ইবন আমির। তিনি আইয়ামে জাহিলিয়ার যুগেও এক মিল্লাতে ইব্রাহিমীর অনুসারী ছিলেন। মানে তিনি আল্লাহকেই ইলাহ মানতেন। দেবতাদের উদ্দেশ্যে বলি দেওয়া মাংস খেতেন না। কোন মেয়ে বাচ্চাকে জীবন্ত কবর দিতে গেলে তিনি এসে বাঁচাতেন আর ঐ মেয়েদেরকে লালন পালন করতেন। কিন্তু তিনি জানতেন না কোন পথটা সঠিক। 

ভাইয়াঃ সঠিক পথ জানার দরকার নাই, ভালো কাজ করলেই হল। 

আমিঃ জায়িদ ইবন আমির আল্লাহর কাছে করা দুয়া করতেন এভাবে যে হে আল্লাহ আমি জানি না কোনটা সঠিক পথ, তুমি আমাকে দেখিয়ে না দিলে আমি কীভাবে জানব। তুই কোনদিন আল্লাহর কাছে এভাবে দুয়া করেছিস? 

ভাইয়াঃ এই আত্মিক আহ্বান ন্যাচারালিই আসবে। আমি দুয়া করি নাই তোকে কে বলেছে। 

আমিঃ কেউ বলেনি, কিন্তু সঠিকভাবে দুয়া করলে তোর ভাষায় সেটা ফুটে উঠত।

ভাইয়াঃ কেউই পরম সত্যিটা জানে না। আমরা বড়জোর বিশ্বাস করতে পারি ও খারাপ কাজ থেকে দূরে থাকতে পারি। প্রত্যেকের স্টাইল ভিন্ন হবে। একজনের স্টাইল আরেকজনের উপর চাপিয়ে দেওয়াতেই আমার আপত্তি। নিজেকে অন্যের চেয়ে বড় ভাবাটাই ভুল। 

আমিঃ নিজেকে বড় ভাবছি না।

ভাইয়াঃ নিজের ওয়েকে ভাবছিস।সবসময় যে জায়নামাজে বসে দুয়া করতে হবে এমন কথা নেই। কারো ভিন্ন ওয়েতেও আত্মিক উপলব্ধি আসতে পারে। এজন্য এসব শেয়ার দিতে মানা করেছি।  কেউ যতক্ষণ খারাপ কাজ করছে না, তার ব্যাপারে নাক গলানোর কেউ অধিকার রাখে না। 

আমিঃ দুয়া যেকোনো ভাবেই করা যায় এটা ঠিক। কিন্তু তুই যদি আসলেই সিন্সিয়ারলি দুয়া করতিস, তাহলে তোর ভাষাতেই তা স্পষ্ট হয়ে উঠত। 

ভাইয়াঃ এই যে শুরু হয়েছে নিজেকে বড় ভাবার মত কথাবার্তা। আমি কীভাবে কি করেছি এটা তোর জাজ করার কোন দরকার নেই।

এরপর আর এসব নিয়ে কথা হয়নি ৪-৫ দিন।

আমি অবশ্য কিছু ব্যাপার জেনেই ওকে এসব বলেছিলাম। আমার ভাতিজিকে বলেছিল ৭ বছর হলে সালাত শুরু করতে। দেশে আসলে আমি আমার ভাতিজিকে নবীদের গল্প শুনিয়েছি তাতে আপত্তি করেনি। ও রমাদানের শুরুর দিকে আমাকে ইস্তিখারা করার কথা বলেছিল। নিজের গুনাহ প্রকাশ করতে নেই ও আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হতে নেই এরকম ভিডিও পাঠানোর পর বেশ প্রশংসা করেছিল। একদিন বললাম যে সাহরীর পর যেন ফজরটা পড়ে নেয়, বেশি সময় লাগবে না। ও প্রত্যুত্তরে বলেছিল যে ও ভেবেছিল তারাবীহ শুরু করবে কিন্তু আমার এসব দাওয়াহর জ্বালায় তারাবীহও পড়বে না। 

বুয়েটের হলে ওকে তাবলীগের লোক প্রতিদিন দাওয়াহ দিত আর ও বিরক্ত হত। আমিও নাকি একদম সেরকম করছি। উপরোক্ত কনভারসেশনের পর এই উদাহরণ দিয়ে আমাকে মানা করল দাওয়াহ দিতে। আমার প্রশ্ন হল আমার এপ্রচ কি ঠিক ছিল? আমার কীভাবে দাওয়াহর ক্ষেত্রে অগ্রসর হওয়া উচিত ভাইয়ার ব্যাপারে আর আব্বু আম্মুর ব্যাপারেও? 

 

৩। প্রাচীন বাংলায় খনা নামে এক মহিলা বাস করতেন। তিনি ছিলেন তুখোড় বুদ্ধিমত্তার অধিকারী। কলা রুয়ে না কেটো পাত, তাতেই কাপড় তাতেই ভাত; গাছ যত তিতা বাতাস তত মিঠা এগুলো খনার বচন নামে পরিচিত। তার জ্ঞান ও বুদ্ধিমত্তার জন্য তার খ্যাতি দিকেদিকে ছড়িয়ে পড়ে। তার স্বামী দেখেন যে তিনি তার স্বামীর থেকে বেশি বুদ্ধিমান। যাতে স্বামীর চেয়ে বেশি বুদ্ধিমান হতে না পারেন তার জন্য খনার স্বামী খনার জিহ্বা কেটে নেন। এখন কোন মুসলিম স্বামী যদি দেখেন যে তার স্ত্রী তার থেকে বেশি জ্ঞানী ও বুদ্ধিমান তাহলে সেই স্বামীর কি করা উচিত? এভাবে জিহ্বা কেটে তো আর নিতে পারেন না যদি তাকওয়াবান মানুষ হন। আমাদের সামাজিক ইসলাম প্র্যাকটিস করা সমাজে প্রচলিত আছে যে স্বামীর থেকে স্ত্রী যেন কোনভাবেই বেশি জ্ঞানী, বুদ্ধিমতী, ধনী না হন। এমনকি এহেন পরিস্থিতিতে বেশিরভাগ স্বামীদেরকেও দেখেছি হীনমন্যতায় ভুগতে? আচ্ছা ছেলেরা কেন বুদ্ধিমতী মেয়েকে সহ্য করতে পারে না? বোকা মেয়েকেই কেন তাদের জীবনসঙ্গী হিসেবে পছন্দ? 

 

৪। এক ভদ্রমহিলা কানাডায় থাকতেন তার স্বামীর সাথে। কানাডায় তার কোন আত্মীয় স্বজন নেই, ছেলেমেয়েরা বাংলাদেশে থাকে। একদিন তার স্বামী মারা যান। একা বাসায় কিছুতেই থাকতে পারছিলেন না তিনি, চাচ্ছিলেন বাংলাদেশে চলে আসবেন। এখন বাংলাদেশে মাহরামদের কাছে আসার জন্য কি কানাডা থেকে বাংলাদেশে একা আসতে পারবেন? কানাডায় কিন্তু তার কোন মাহরাম নেই। বাংলাদেশে আসাটাই কি মাহরামের সাথে থাকার নিকটবর্তী নয়?  

1 Answer

0 votes
by (589,680 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন-
{ ﻳَﺎﺃَﻳُّﻬَﺎ ﺍﻟﺮَّﺳُﻮﻝُ ﺑَﻠِّﻎْ ﻣَﺂ ﺃُﻧﺰِﻝَ ﺇِﻟَﻴْﻚَ ﻣِﻦ ﺭَّﺑِّﻚَ ﻭَﺇِﻥ ﻟَّﻢْ ﺗَﻔْﻌَﻞْ ﻓَﻤَﺎ ﺑَﻠَّﻐْﺖَ ﺭِﺳَﺎﻟَﺘَﻪُ [ ﺍﻟﻤﺎﺋﺪﺓ 67: ]
হে রাসূল! আপনার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে আপনার উপর যা অবতীর্ণ হয়েছে তা আপনি প্রচার করুন। যদি আপনি তা না করেন তাহলে আপনি আল্লাহর বার্তা প্রচার করলেন না। (সূরা মায়েদা : ৬৭)


আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা আরোও বলেন:
ﺍﺩْﻉُ ﺇِﻟِﻰ ﺳَﺒِﻴﻞِ ﺭَﺑِّﻚَ ﺑِﺎﻟْﺤِﻜْﻤَﺔِ ﻭَﺍﻟْﻤَﻮْﻋِﻈَﺔِ ﺍﻟْﺤَﺴَﻨَﺔِ ﻭَﺟَﺎﺩِﻟْﻬُﻢ ﺑِﺎﻟَّﺘِﻲ ﻫِﻲَ ﺃَﺣْﺴَﻦُ ( ﺍﻟﻨﺤﻞ : ١٢٥ (
আপনি আপনার প্রতিপালকের দিকে আহবান করুন হিকমত বা প্রজ্ঞা দ্বারা এবং সুন্দর ওয়াজ-উপদেশ দ্বারা এবং তাদের সাথে উৎকৃষ্টতর পদ্ধতিতে আলোচনা-বিতর্ক করুন। (সূরা নাহল: ১২৫)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনি আপনার মা বাবাকে হেকমতের সাথে বুঝানোর চেষ্টা করুন, তাদের জন্য দু'আ করুন। আল্লাহ আপনার মা বাবা বুঝার তাওফিক দান করুক।আমীন।

(২)
আল্লাহ আপনার ভাইকে হেদায়ত দান করুক।তাকে সাধ্যানুযায়ী বুঝানোর চেষ্টা অভ্যাহত রাখবেন।

(৩)
সকল পুরুষ এমন নয়।

(৪)
জ্বী, ঐ মহিলা দেশে একাকি আসতে পারবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (589,680 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...