আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
282 views
in পবিত্রতা (Purity) by (7 points)
edited by
১. একজন মহিলা দেখলেন তার পিরিয়ড শেষ। এরপরেও আর হয়নাই , সাদা সাদা আসছিলো যা দিয়ে শেষ বুঝায়, তাই উনি গোসল করে নামাজ-রোজা শুরু করে দেন।কিন্তু   আজকে আবার গোসলে গিয়ে ক্লিন করার সময় দেকলেন একটু লাল আসতেছে এরপর আবার শুধু সাদাই আসতেছে খালি। এরপর ওই গোসল পরে নামাজ পরতেছেন নিয়মিত, যেহেতু সাদা দেখেছেন।

এখন আমি জানতে চাই, উনার গতকাল ও আজকের রোজা কি হয়েছে? এবং লালের পর আবার সাদা দেখে রোজা চালু রাখা কি ঠিক আছে? আগামীকাল(বুধবার) রোজা কি রাখতে পারবেন?

২. একটি দাখিল মাদরাসায় পুজার ছুটি দেওয়া হয় না,যেহেতু সবাই মুসলিম তাই। সারা দেশের সকল প্রতিষ্ঠানে পুজার বা অন্য ধর্মের অনুষ্ঠানে ছুটি দেয়, এখন কোনো শিক্ষক/শিক্ষকেরা  যদি মাদরাসা পুজা উপলক্ষে বন্ধ দেওয়ার কথা বলেন, ওনার কি এতে কুফর হবে?

৩. আমাদের মাদরাসায় রমজানের বন্ধ দেন না। নিয়োগের সময় বলেছিলেন যে আমরা পুজার বন্ধ দেই না, তবে সেগুলো জমিয়ে ইদে ছুটি বাড়িয়ে দেই, এখন উনার কথা মাফিক ইদের সময় পুজার ছুটি এড করে বন্ধ বাড়িয়ে দেওয়ার কথা বললে কি কুফর হবে?

৪. কোনো মানুষ যদি অন্য জনকে বলে  "আমি এই জিনিসের জন্য এতো আল্লাহর কাছে চেয়েছি, মাঝে মাঝে মনে হয় এই জিনিস না পেলে আম নাস্তিক হয়ে যাবো "  উনার এই মাঝে মাঝে যে অনুভুতি হয় তা প্রকাশ করায় কি তার কুফর হয়ে যাবেন? উনার কি বিবাহ নষ্ট হয়ে যাবে?

৫. আসলে শায়েখ আমি একটা জিনিস খুব চেয়েছিলাম আল্লাহর কাছে, মাঝে মাঝে আমার মনে হতো এরুপটা, মাঝে মাঝে ভাবতাম এরকম হলে কি কি হবে, কিন্তু এটাও জানতাম এই ইসলামকে তো সত্যি হিসাবেই জানি এটাকে সত্য জেনে মানা করা কি সম্ভব? " এসব ভাবনা মনে মনে চলে আসতো,বা ভাবতাম এর ফলে কি কুফর হবে? এগুলো বিয়ের আগে না পরে ভাবতাম টাইম তো বলতো পারছিনা শিওর করে,এতে কি বিবাহে সমস্যা হবে?

 ৬..  আমার মনে হচ্ছে যে চার নং প্রশ্নের মতো করে আমার বউকে এভাবে বলেছিলাম আমি একদিন, কিন্তু মনে করতে পারছি না নিশ্চিত করে আবার মনে হচ্ছে হয়তো ম্যাসেজে বলেছিলাম, আমি পুরাতন ম্যাসেজ ডিলেট করে দিয়েছি, বউ এর কাছে যদিও আছে তা চ্যাক করা ঝামেলা হবে,কারণ সে তার বাবার বাড়ি থাকে,বললেও চ্যাক করবে কি না কে জানে, সে জানে আমার কিছু ওসওয়াসার সমস্যা আছে। এখন কি করবো, বুঝতেও পারছিনা, বলছিলাম কিনা শিওর ও হতে পারছি না, এখন কি বিধান আমার এই অবস্থার।

৭. মনে মনে যদি কেও কুফরি ভাবনা ভাবতে থাকে, ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় পরে যখন খেয়াল হয় এই ভাবনা তো কুফরি বা মনে  মনে বলা এই কথা তো কুফরি, তখন যদি তা বলা থামিয়ে দেয় বা সেই চিন্তা থামিয়ে দেয় এতে কিতার কুফর হবে?

৮. বিবাহ শব্দটারে অনেকে ব্যঙ্গ করে "হাঙ্গা" বলে।  কেও শুধু এটাকে বিবাহের প্রতিশব্দ হিসাবেই জানতো, একজন বলেছিলো তাকে এটা নাকি যাদের তালা* হয়ে পরে বিয়ে হয় তাদের ক্ষেত্রে ইউজ হয়। ওর কথাত্টা গুরুত্ব দেয়নি। আজকে গুগলেও দেখলো অনেক জাগায় এটাকে বহুবিবাহের ক্ষেত্রে ইউজ করে, মেয়েদের ক্ষেত্রে ।  এখন সে এই শব্দ মজা করে অনেক বার বিয়ে শব্দের পরিবর্তে ইউজ করেছিলো। যেমন তার বউকে বলা, "আমাদের হাঙ্গার বছর হয়ে গেছে" /আমদের হাঙ্গার কতো দিন হইছে বা অন্য কে বলা, "আমাদের হাঙ্গা হয়েছে" সে মুলত বিয়ের প্রতিশব্দ হিসাবে ইউজ করেছিলো। এর ফলে কি তার বিবাহে সমস্যা হবে?

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


(০১)
শরীয়তের বিধান অনুযায়ী হায়েযের সর্বোচ্চ সময়সীমা ১০দিন।
এ ১০দিনের ভিতর লাল,হলুদ,সবুজ,লাল মিশ্রিত কালো বা নিখুত কালো যে কালারের-ই পানি বের হোক না কেন তা হায়েয হিসেবেই গণ্য হবে।যতক্ষণ না নেপকিন সাদা নজরে আসবে। (বেহেশতী জেওর-১/২০৬)  

হায়েজের দিন গুলোতে যেই কালারেরই রক্ত হোক,সেটি হায়েজের রক্ত বলেই গন্য হবে। 
উক্ত সময় নামাজ রোযা ইত্যাদি আদায় করা যাবেনা।
(কিতাবুল ফাতওয়া ২/৭৬)

তবে স্পষ্ট সাদা কালারের কিছু বের হলে সেটাকে হায়েজ বলা যাবেনা।
(ফাতাওয়ায়ে হক্কানিয়াহ ২/৮৩৩)

উম্মে আলক্বামাহ তথা মার্জনা (مَوْلاَةِ عَائِشَةَ) হইতে বর্ণিত,

عن أم علقمة أَنَّهَا قَالَتْ : " كَانَ النِّسَاءُ يَبْعَثْنَ إِلَى عَائِشَةَ أُمِّ الْمُؤْمِنِينَ بِالدُّرْجَةِ فِيهَا الْكُرْسُفُ فِيهِ الصُّفْرَةُ مِنْ دَمِ الْحَيْضَةِ يَسْأَلْنَهَا عَنْ الصَّلَاةِ فَتَقُولُ لَهُنَّ لَا تَعْجَلْنَ حَتَّى تَرَيْنَ الْقَصَّةَ الْبَيْضَاءَ تُرِيدُ بِذَلِكَ الطُّهْرَ مِنْ الْحَيْضَةِ "

তিনি বলেনঃ (ঋতুমতী) স্ত্রীলোকেরা আয়েশা (রাঃ)-এর নিকট ঝোলা বা ডিবা (دُرْجَة) পাঠাইতেন, যাহাতে নেকড়া বা তুলা (كُرْسُفْ) থাকিত। উহাতে পাণ্ডুবৰ্ণ ঋতুর রক্ত লাগিয়া থাকিত। তাহারা এই অবস্থায় নামায পড়া সম্পর্কে তাহার নিকট জানিতে চাহিতেন। তিনি [আয়েশা (রাঃ)] তাহাদিগকে বলিতেনঃ তাড়াহুড়া করিও না, যতক্ষণ পর্যন্ত পূর্ণ সাদা (বর্ণ) দেখিতে না পাও। তিনি ইহা দ্বারা ঋতু হইতে পবিত্রতা (طُهْر) বুঝাইতেন।(মুয়াত্তা মালিক-১২৭)
,

أن النساء کن یبعثن بالکرسف إلی عائشۃ رضی اللہ تعالیٰ عنھا فکانت تقول : لا حتی ترین القصۃ البیضاء‘‘ ( المؤطأ للإمام مالک : ۱/۵۹۱ ،  : مصنف ابن عبد الرزاق، حدیث نمبر : ۱۱۵۹ )
সারমর্মঃ আয়েশা সিদ্দিকা রাঃ সেই সমস্ত মহিলাদের বলিতেনঃ তাড়াহুড়া করিও না, যতক্ষণ পর্যন্ত পূর্ণ সাদা দেখিতে না পাও। 
,
আরো জানুনঃ
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন
প্রশ্নে উল্লেখিত বোনের হায়েজ আসার পর থেকে হিসেব করলে আজকে কততম দিন হয়?

যদি ১০ দিন বা তার চেয়ে কম হয়,সেক্ষেত্রে আজকে যে লাল স্রাব বের হয়েছে,এটা যেহেতু ১০ দিনের মধ্যেই হয়েছে,তাই সেটি হায়েজ।
এই সময়ে নামাজ পড়া যাবেনা। রোযাও আদায় করা যাবেনা।

সেক্ষেত্রে গতকাল ও আজকের রোযা আদায় হয়নি।
পুনরায় কাজা আদায় করতে হবে।

★প্রশ্নে উল্লেখিত বোনের হায়েজ আসার পর থেকে হিসেব করলে আজকে যদি ১১ তম দিন হয় বা তার চেয়ে বেশি হয়,সেক্ষেত্রে এটি ইস্তিহাজা,এসময়ে নামাজ রোযা আদায় করা যাবে।

সেক্ষেত্রে তার গতকাল ও আজকের রোযা আদায় হয়েছে।

আরো জানুনঃ 

(০২)
এতে কুফর হবেনা।

(০৩)
এক্ষেত্রে কোনো শিক্ষক/শিক্ষকেরা  যদি মাদরাসা পুজা উপলক্ষে বন্ধ দেওয়ার কথা বলেন, এতে কুফর হবেনা।

(০৪)
প্রশ্নের বিবরণ মতে তার কুফর হয়ে যায়নি। তার বিবাহ নষ্ট হয়ে যাবেনা।

তবে এক্ষেত্রে তিনি মারাত্মক অপরাধ মূলক কথা বলেছেন,তাই তওবা করতে হবে,আর ভবিষ্যতে যেনো এমন কথা কোনোক্রমেই না উচ্চারিত হয়,সেদিকে সজাগ থাকতে হবে। 

(০৫)
এতে কুফর হবেনা,এতে বিবাহে সমস্যা হবেনা।

(০৬)
এতে কুফর হবেনা,আপনার বিবাহেও সমস্যা হবেনা।

(০৭)
এতে তার কুফর হবেনা।

(০৮)
এর ফলে তার বিবাহে সমস্যা হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...