বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়ায় বর্ণিত রয়েছে,
وفي حالة الغضب يصدق في جميع ذلك لاحتمال الرد والسب إلا فيما يصلح للطلاق ولا يصلح للرد والشتم كقوله اعتدي واختاري وأمرك بيدك فإنه لا يصدق فيها كذا في الهداية............... وفي الينابيع ألحق أبو يوسف - رحمه الله تعالى - بالخمسة ستة أخرى وهي الأربعة المتقدمة وزاد خالعتك والحقي بأهلك هكذا في غاية السروجي.
রাগের অবস্থাঃ-
রাগের অবস্থায় স্বামী তালাকের নিয়তকে অস্বীকার করলে স্বামীর উক্ত বক্তব্য-কে সত্যায়ন করা হবে।কেননা সেই শব্দ সমূহে গালিগালাজ ও স্ত্রীর তালাকের আবেদন-কে ফিরিয়ে দেয়ার অর্থ বিদ্যমান রয়েছে।তবে যেই সমস্ত শব্দাবলীতে শুধুমাত্র তালাকের অর্থ বিদ্যমান রয়েছে।গালিগালাজ বা (স্ত্রীর তালাকের আবেদন) ফিরিয়ে দেয়ার অর্থ বিদ্যমান না থাকে,তাহলে সেই সমস্ত শব্দাবলীর বেলায় স্বামীর অস্বীকার-কে সত্যায়ন করা হবে না।বরং তালাক পতিত হবে।যেমন- তুমি ইদ্দত গণনা করো,তুমি পছন্দ করো,তোমার বিষয় তোমার হাতে, ইত্যাদি।সুতরাং এমন শব্দাবলীর বেলায় স্বামীর অস্বীকারকে সত্যায়ন করা যাবে না,বরং তালাক পতিত হবে।(হেদায়া) ইমাম আবু ইউসুফ রাহ পূর্ববর্তী পাঁচের সাথে আরো দুইটি শব্দ সংযোগ করেন,তখন সর্বমোট ছয়টি শব্দ হয়।সেই দুইটি হল,আমি তোমার সাথে খোলা করলাম,তুমি তোমার পরিবারবর্গের সাথে মিলিত হয়ে যাও।(গায়াতুস-সুরুজী)(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৩৭৫)
নির্ভরযোগ্য ফাতাওয়া গ্রন্থ ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়ায় বর্ণিত রয়েছে,
قال لها لا نكاح بيني وبينك أو قال لم يبق بيني وبينك نكاح يقع الطلاق إذا نوى
স্বামী যদি তার স্ত্রীকে বলে তোমার আর আমার মধ্যকার বিয়ের কোনো সম্পর্ক নেই।অথবা বলে যে, তোমার আর আমার মধ্যকার আর বিয়ে নেই।তাহলে তালাক পতিত হবে যদি স্বামী তালাকের নিয়ত করে।নতুবা তালাক পতিত হবে না।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৩৭৫,কিতাবুন-নাওয়াযিল-৯/৪৪৬)
সুতরাং প্রশ্নের বিবরণ অনুযায়ী এটা তালাকে কেনায়ার পর্যায়ভুক্ত হবে।তালাকে কেনায়ার হুকুম হল,স্বামী উক্ত কথা দ্বারা তালাকের নিয়ত করলে তালাক পতিত হবে।এক তালাকের নিয়ত করে থাকলে এক তালাকে বায়েন পতিত হবে।আর তিন তালাকের নিয়ত করে থাকলে, তিন তালাকে বায়েন পতিত হবে। তালাকে কেনায়ায় দু তালাকের নিয়ত করা যায় না।আর যদি স্বামী তালাকের কোনো নিয়ত না করে থাকে,তাহলে কোনো তালাকই পতিত হবে না।
কেনায়া শব্দ দ্বারা তালাক পতিত হওয়ার ব্যাপারে ফুকাহায়ে কেরামদের মধ্যে কোনো প্রকার মতবিরোধ নাই।সকল মাযহাবের সমস্ত ফুকাহায়ে কেরামদের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত মুতাবিক কেনায়া শব্দ দ্বারা তালাক পতিত হয়।যদিও শাখাপ্রশাখা গত কিছু মতপার্থক্য রয়েছে-
وَلاَ خِلاَفَ بَيْنَ جُمْهُورِ الْفُقَهَاءِ فِي أَنَّ الطَّلاَقَ يَقَعُ بِالْكِنَايَةِ مَعَ النِّيَّةِ.
নিয়ত থাকলে কেনায়া শব্দাবলী দ্বারা তালাক পতিত হওয়ার ব্যাপারে ফুকাহায়ে কেরামদের মধ্যে কোনো প্রকার মতপার্থক্য নাই।(আল-মাওসুআতুল ফেকহিয়্যাহ-৩৫/১৩৮)
সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
স্বামীর কথা "সে বিয়ে করে ফেলে না কেন" তালাকে কেনায়ার অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং এদ্বারা এক তালাকে বায়েন বা তিন তালাকে বায়েন পতিত হবে।এটা স্বামীর নিয়তের উপর নির্ভরশীল।
সুতরাং স্বামীর উক্ত কথা বলার পর যদি ঐ স্ত্রীর ইদ্দত তথা তিন হায়েয অতিক্রান্ত হওয়ার পর কোথাও বিয়ে হয়ে থাকে,তাহলে সে বিবাহ শুদ্ধ হয়েছে।যদি তিন হায়েয অতিক্রান্ত হওয়ার পূর্বেই কোথাও বিয়ে হয়ে থাকে,তাহলে বিয়ে ফাসিদ বলে গণ্য হবে।আবার নতুন করে বিয়ে দিতে হবে।