যাকাত আসবে কিনা?

Question

আসসালামু আলাইকুম। ১.আমাদের বিসিআইসি সারের ডিলারশীপ আছে।।এটার লাইসেন্স যখন করা হয় তখন ২ লাখ টাকা দেয়া হয়েছে।। এই লাইসেন্স এখন আমাদের মালিকানায় আছে কিন্তু এটা দ্বারা অন্য একজন ব্যবসা করে।কারণ সার তুলতে টাকা চালান দিতে হয়। আমার মামা কারো কাছ থেকে টাকা নিয়ে চালান দিয়েছেন।।এখন উনি বা অন্য আরেকজন(সঠিক জানা নেই আমার) ওই লাইসেন্স দিয়ে সার তুলে বিক্রি করে। জমা দেয়া ২ লাখ টাকা কি যাকাতের টাকা হিসাবের মাঝে ধরবো?? আর যিনি ব্যবসা করছেন তার দোকানের কতটাকার মালামাল আছে সেটাও কি আমাদের শুনে যাকাতের মাঝে হিসাব করতে হবে?? লাইসেন্স আমাদের কিন্তু চালাচ্ছে আরেকজন।
উস্তায,দয়া করে খোলাসা করে দিবেন।

২।যারা নিকট আত্নীয় (চাচা,চাচাতো ভাই,চাচী কিন্তু চাচা মারা গেছেন), বাড়ির জমি+কৃষিজমি আছে কিন্তু দরিদ্র, এমন হলে উনাদেরকে যাকাত দেয়া যাবে উস্তায?
৩। অনেক গরীব মানুষ আসে যাকাতের টাকা নিতে, তাদেরকে যাকাতের টাকা থেকে ১/২ হাজার করে দিলে যাকাত আদায় হবে না?? (যাকাতের মাধ্যমে সেভাবে সাবলম্বী করে দেয়া তো সম্ভব হয় না,আবার অনেক মানুষ আশা করে থাকে আবার এটা জানাও পসিবল না উনারা যাকাতের উপযুক্ত কিনা)
জাযাকুমুল্লাহু খইরন

Answer 1

জবাব

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 

بسم الله الرحمن الرحيم 

(০১)

ঐ ২ লক্ষ টাকা আপনি যখন উসুল করবেন,তখন আপনাকে সেই  ২ লক্ষ টাকার যাকাত দিতে হবে,এর আগে সেই টাকার যাকাত দিতে হবেনা।

তবে ঐ  ২ লক্ষ টাকা উত্তোলন করতে যদি কয়েক বছর লেগে যায়,সেক্ষেত্রে টাকা উত্তোলন করার পর হিসাব করে বিগত বছরগুলোরও যাকাত দিতে হবে। 

আরো জানুনঃ- 

https://ifatwa.info/72459/

(০২)

কোনো ব্যাক্তির যাকাতের মাল তার দরিদ্র ভাই, বোন, চাচা, ফুফুসহ সকল দরিদ্র আত্মীয়-স্বজনকে দিতে কোন আপত্তি নেই। 

বরং তাদেরকে যাকাত দেওয়া হলে সেটা সদকা ও আত্মীয়তার হক আদায়। দলিল হচ্ছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী: "মিসকীনকে যাকাত দেওয়া সদকা। আর আত্মীয়কে দেওয়া সদকা ও আত্মীয়তার হক আদায়"।[মুসনাদে আহমাদ (১৫৭৯৪) ও সুনানে নাসাঈ (২৫৮২)] 

পূর্ণ হাদীসটি হলোঃ

أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الْأَعَلَى، قَالَ: حَدَّثَنَا خَالِدٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا ابْنُ عَوْنٍ، عَنْ حَفْصَةَ، عَنْ أُمِّ الرَّائِحِ، عَنْ سَلْمَانَ بْنِ عَامِرٍ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِنَّ الصَّدَقَةَ عَلَى الْمِسْكِينِ صَدَقَةٌ، وَعَلَى ذِي الرَّحِمِ اثْنَتَانِ صَدَقَةٌ وَصِلَةٌ»

সালমান ইব্ন আমির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মিসকীনকে দান করার মধ্যে শুধু সাদাকা (র সওয়াব রয়েছে) আর আত্নীয়-স্বজনকে দান করা দুটি (সওয়াব রয়েছে) দান করা (র সওয়াব) এবং আত্নীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখা (র সওয়াব)।

,

নিজ পিতা-মাতা, দাদা-দাদী, নানা-নানী, পরদাদা প্রমুখ ব্যক্তিবর্গ যারা তার জন্মের উৎস তাদেরকে নিজের যাকাত দেওয়া জায়েয নয়। এমনিভাবে নিজের ছেলে-মেয়ে, নাতি-নাতিন এবং তাদের  অধস্তনকে নিজ সম্পদের যাকাত দেওয়া জায়েয নয়। স্বামী এবং স্ত্রী একে অপরকে যাকাত দেওয়া জায়েয নয়।-রদ্দুল মুহতার ২/২৫৮

বিস্তারিত জানুনঃ   

https://ifatwa.info/15050/

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,

প্রশ্নে উল্লেখিত আত্মীয় স্বজন যদি নেসাব পরিমান সম্পদের মালিক না হয়ে থাকে,অর্থাৎ তাদের মালিকানায় যদি ৭৩৫০০ টাকা না থাকে,সেক্ষেত্রে তাদেরকে যাকাত দেয়া যাবে। 

(০৩)

অনেক গরীব মানুষকে যাকাতের টাকা থেকে ১/২ হাজার করে দিলে যাকাত আদায় হবে। 

এতে কোনো সমস্যা নেই।

Comments

উস্তায,এই ৭৩৫০০ টাকা কি ক্যাশ বা সোনা-রুপা থাকা হিসেবে কাউন্ট হবে??

★নেসাব পরিমাণ মাল যেটা ছিল তার সাথে পরবর্তীতে বৃদ্ধিকৃত মাল/টাকাও তো যোগ হবে তাই না উস্তায? নাকি পরে বৃদ্ধিকৃত মালও একবছর থাকতে হবে তারপর এর উপর যাকাত আসবে?

---

(০১)

এই ৭৩৫০০ টাকা ক্যাশ বা সোনা-রুপা থাকা হিসেবে কাউন্ট হবে। সুতরাং কাহারো কাছে যদি সোনা ও কিছু টাকা থাকে,যার মূল্য ৭৩৫০০ টাকা বা তার চেয়ে বেশি হয়,সেক্ষেত্রে সে নেসাবের মালিক।

কাহারো কাছে যদি রুপা ও কিছু টাকা থাকে,যার মূল্য ৭৩৫০০ টাকা বা তার চেয়ে বেশি হয়,সেক্ষেত্রে সে নেসাবের মালিক।

কাহারো কাছে যদি সোনা ও কিছু রুপা থাকে,যার মূল্য ৭৩৫০০ টাকা বা তার চেয়ে বেশি হয়,সেক্ষেত্রে সে নেসাবের মালিক।

কাহারো কাছে যদি সোনা,কিছু টাকা ও কিছু রুপা থাকে,যার মূল্য ৭৩৫০০ টাকা বা তার চেয়ে বেশি হয়,সেক্ষেত্রে সে নেসাবের মালিক।

(০২)

নেসাব পরিমাণ মাল যেটা ছিল তার সাথে পরবর্তীতে বৃদ্ধিকৃত মাল/টাকাও যোগ হবে।  সব টাকারই যাকাত দিতে হবে।