আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
239 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (7 points)
edited by
১.  আমার বয়স যখন ১৩/১৪ এইরকম তখন আমার একটা মানসিক সমাজ দেখা দেয় আমি শুধুই ভাবতাম যে আমি  হয়তো মারা যাবো, আজ/কাল, এরকম অবস্থা ছিলো। যতোটুকু মনে হচ্ছে এই সমস্যা যখন ধীরে লয়ে শুরুর হচ্ছিলো তখন নিজের মনকে শান্তনা দেওয়ার জন্য একটি হাত দেখার ( জোতিষি ) বই বের করে দেখি আয়ু রেখা কোনটা পরে তা, হাতের সাথে মিলাই, তখন সেই দাগটা অনেক লম্বা দেখে মনে মনে ভেবেছিলাম  অনেক দিন বাঁচবো। তাও আমার মানসিক সমস্যা টা কমে নি, আবার এরো আগে (১১+ বছর) একজন আমার হাত দেখে একজন বলেছিলো আমার অনেক টাকা পয়সা৷ হবে  অনেক দেশে যাবো, এইসব, এগুলো আবার খুশি হয়ে অনেককে বলেছিলাম তখন। তো, আরেকবার ১৭+ বছর বয়স হবে আনুমানিক একজন বাড়ি বাড়ি এসেছিলো... যে হাত দেখতো, তখন  সে আমাকে বলেছিলো যে আমার অনেকদূর পড়াশোনা হবে, ইত্যাদি এই কথা গুলো কিরকম বিশ্বাস করেছিলাম, তা মনে নাই। তবে ভালো কথা শুনে খুশি  লাগতো। আনেকবার মাজার থেকে ফকির মহিলা আসতো বাড়িতে সেও অনেক কথা বলতো, এগুলো ভিন্ন বিষয় যতেটুক মনে পরে তখন ভাবতাম কোনো ভাবে আল্লাহ জানান( বয়স ১৪/১৫) সেটা ভিন্ন।  এখন আমার কথা হলো এই সুরত হালের ফলে কি আমার কুফর হয়েছিলো?

২. এসব তো অনেক আগের, আমি ১ নং প্রশ্নের ওই মানসিক সমস্যা শুরুর দিকের ঘটনা ছাড়া এইসব নুন্যতম গুরুত্ব দিয়ে বিশ্বাস করেছি বলে মনে পরছে না, এখনো অবিশ্বাস করি এসব ভান্ডামি আগেও করেছিলাম, তবে এই কিছু ঘটনা মনে পরছে, আমি বিয়ে করেছি ২ বছর হয়, এর পরে এইরকম জিনিস বিশ্বাস বা এর আগেও ওই সব ঘটনা ছাড়া এগুলো বিশ্বাস করেছিলাম এরকম সন্দেহ ও আসছে না মনে।আরেকটা বিষয় তখন বিভিন্ন পত্রিকায় দেখেছিলাম যে মায়া সভ্যতার কেলেন্ডার অনুযায়ী ২০১২ তে পৃথিবী ধ্বংস হবে। তাই এই নিউজটা মনে দাগ কাটে এটা নিয়ে অনেক সংসয়ে থাকতাম ভয়ে থাকতাম বয়স(১৩),  তখন কেয়ামত সংক্রান্ত ইসলামী মত নিয়ে কি ভাবতাম পরিষ্কার মনেও পরছে না, তবে আমার মানসিক অনেক সমস্যা হয়েছিলো তখন । আমি প্রতিদিন নির্দিষ্ট সংখ্যাক বার কলিমা তৈয়িবা পড়ি,রাতে ঘুমানোর সময় পড়ি একবার (হয়তো অর্থের দিকে খেয়াল থাকে না,তবে কলিমা তৈয়িবা পড়ি প্রায় ৭/৮ বছর থেকে এটা শিওর)

কলিমা শাহাদাত ও দীর্ঘ দিন থেকে পাঠ করি ডেইলি, মন বলছে তাও ৫/৬ বছর থেকে হবে। কিন্তু তা কবে থেকে শুরু করেছিলাম তা মনে পরছে না, কলিমা তৈয়িবা পড়া শুরুর সময় মনে আছে, এখন ধরে নিলাম না হয় শুধু কলিমা তৈয়িবা ওই পড়ছি ডেইলি এতেদিন থেকে।
এখন আমার এই চলমান বিবাহ কি দুহরাতে হবে?

৩. যদিও এরকম মনে হচ্ছে না, তাও বিবাহের আগের এমন কোনো কথা বা কাজে কুফর প্রকাশ পেয়ে যায়,এমনটা স্মরন হয়, যা বিবাহের পরে বা ওই বিবাহ করার সময়ের আসেপাশে করেছি বলে মনেই হয় না, মনে হয় অনেক আাগে বলেফেলেছিলা বা করে ফেলেছিলাম।
 তবে কি আমার  বিবাহ দোহরাতে হবে?নাকি কলিমা তৈয়িবা প্রতিদিন পাঠের দরূন না সঠিক হয়ে গেছে ধরে নিবো?
(অনেক পুরাতন ঘটনা মনে হয় তাই জেনে নিলে অন্তত পুরাতন ঘটনা নিয়ে আর টেনশন হবে না)

৪. এরুপ বক্তব্য বা লিখা "বিবাহের আগে আমার দ্বারা কুফরি প্রকাশ পেয়ে যায়" এটুক লিখলে কি কাফের হয়ে যাবে?

৫. আপাদের সাইটে দেখলাম চোখে ড্রপ দিলে রোজা যায় না, এটা দেখে আমার মনে মনে বলে ফেলি, "হুজুরের কথা বিশ্বাস কইরা লাভ নাই/করি না" (এরকমই একটা কথা),  কারণ আগে একজনের থেকে জেনেছিলাম নাকে পানি মাথায় গেলে রোজা যায় না পরে অনেকে বললেন কাজা করতে হবে। তাই এই কথা মনে মনে বলে ফেলি। তার পরে টেনশনে আছি এর ফলে কি আমার কুফর হবে?

৬.উচ্চারণ ছাড়া কোনো ভাবে কি কোনো রকম, তালাক সম্ভব?  যেমন শর্তযুক্ত, সরিহ,কেনায়া .  তালাকের কথা বা শর্তের কথা ভাবার সময় বা বলায় সময় মাথা নাড়ালে কি সম্ভব? না কি মুখে উচ্চারণ ছাড়া তালাক কোনো ভাবে সম্ভব না..(স্বাভাবিক মানুষের জন্য,যে কথা বলতে পারে না তার জন্য না)

৭. নবী (সাঃ) কে আল্লাহ যতটুকু জানিয়েছেন তিনি ততোটুকুই জানেন, আমরা জানি কিছু জিনিস আল্লাহ জানিয়েছেন।  এই নিয়তে কেও যদি বলে, "নবী (সা:) গায়েব জানতেন" তবে কি তা কুফর হবে?

৮. ৭ নং প্রশ্নের নিয়তে গতকাল এই কথাটি আমি মনে মনে স্বেচ্ছায় ২/৩ বার বলে ফেলি। তার পর থেকে টেনশনে আছি, এতে কি আমার কুফর হবে?

৯. সুরা, কলিমা, ইত্যাদি পড়ার সময় আমার শুধু সন্দেহ হয়, যে পড়া ঠিক হলো কিনা মনযোগ ছিলো কি না ইত্যাদি। তাই বেশি অংশ তা পড়ার সময় বিভিন্ন জিনিস মনে মনে আকি, মনে মনে দাগ অংকন করি,তীর আকি বা বিভিন্ন জিনিস আকি,যাতে পরে সন্দেহ হলে মনে হয় এইটা পড়ার সময় এই জিনিস একেছি। এতে কি গুনাহ বা কুফর হবে?

১০. একটা পশতু বা ওই জাতীয় একটা গানের লাইনের ভাষা না বুঝে, একজন নিজের আন্তাজে গাইতে শুরু করলো "ইমান দিলে আইবেক,  ইমান গেলে গাইবেক " এরকম তার যা মাথায় আসছিলো এই লাইনের মতো বলছে এরুপ কোনো উদ্দেশ্যে বলে নি, বলার সময় ইমান দেওয়া নেওয়া এসব কথা বলা হচ্ছে এই ভাবনা ভেবেছিলো কিনা খেয়াল নাই, এসব কথার তো অর্থ ও দাড়াচ্ছে না,তার কি কুফর হবে?

১১. ইদানীং মারাত্মক কুফরের ওসওয়াসা হচ্ছে বিভিন্ন জিনিস ভাবলে, বললে শুধু কুফরের সন্দেহ হচ্ছে মাঝে মাঝে ভাবনায় ও কিছু কথা চলে আসে পরে খেয়ালে আসে যা ভাবনায় বললাম বা সিদ্ধান্ত নিলাম তা কি কুফর হলো?এমন আরকি, মানে অনেক চিন্তার  মাঝে আছি কিভাবে বাচবো এর থেকে? উল্লেখ করা পদ্ধতিতে ভাবনার দ্বারা কি কুফর হতে পারে?

১২।  এই চিন্তা থেকে বেঁচে স্বাভাবিক জীবনের জন্য কি করবো? প্রতি দিন কমপক্ষে ১০+ প্রশ্ন মাথা আসছে যে এতে কুফর হলো কি এটা হলো।কি না, কিভাবে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারি?

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


আল্লাহ তায়ালা বলেন,

﴿قُل لَّا يَعۡلَمُ مَن فِي ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِ ٱلۡغَيۡبَ إِلَّا ٱللَّهُۚ﴾ [النمل: ٦٥]
“বলুন, আকাশ এবং জমিনে আল্লাহ ছাড়া গায়েবের সংবাদ অন্য কেউ জানে না।” [সূরা আন-নামল, আয়াত: ৬৫]

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى الْعَنَزِيُّ، حَدَّثَنَا يَحْيَى، - يَعْنِي ابْنَ سَعِيدٍ - عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنْ نَافِعٍ، عَنْ صَفِيَّةَ، عَنْ بَعْضِ، أَزْوَاجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " مَنْ أَتَى عَرَّافًا فَسَأَلَهُ عَنْ شَىْءٍ لَمْ تُقْبَلْ لَهُ صَلاَةٌ أَرْبَعِينَ لَيْلَةً " .

মুহাম্মাদ ইবনুল মুসান্না আনায়ী (রহঃ) ..... নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কতক স্ত্রীর সানাদে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, যে লোক গণকের নিকট গেল এবং তাকে কোন ব্যাপারে প্রশ্ন করল, চল্লিশ রাত্রি তার কোন সলাত (সালাত/নামাজ/নামায) গ্রহণযোগ্য হবে না। (মুসলিম শরীফ ৫৭১৪.ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৫৬২৭, ইসলামিক সেন্টার ৫৬৫৬)

সহীহ হাদীসে এসেছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«مَنْ أَتَى كَاهِنًا فَقَدْ كَفَرَ بِمَا أُنْزِلَ عَلَى مُحَمَّدٍ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ»

“যে ব্যক্তি কোনো গণকের নিকট গমন করে তার কথায় বিশ্বাস করল, সে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর অবতীর্ণ বিষয় (কুরআন ও সুন্নাহ)-এর সাথে কুফুরী করল।”
(তিরমিযী, অধ্যায়: কিতাবুত তাহারাহ।)

আরো জানুনঃ- 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(০১)
প্রশ্নের বিবরন মতে আপনার ঈমান চলে যাবেনা। 
তবে আপনি তওবা করবেন,এহেন কাজ আর কোনোদিন করবেননা।

(০২)
চলমান বিবাহ দোহরাতে হবেনা।

(০৩)
বিবাহ দোহরাতে হবেনা।
আপনার ঈমান ঠিক আছে ধরে নিবেন।

(০৪)
এটুকু লিখলে কাফের হয়ে যাবেননা।

(০৫)
এর ফলে আপনার কুফর হবেনা। 

(০৬)
শর্তযুক্ত, সরিহ,কেনায়া .  তালাকের কথা বা শর্তের কথা ভাবার সময় বা বলায় সময় মাথা নাড়ালে তা সম্ভব নয়।  মুখে উচ্চারণ করতে হবে।

(০৭)
এতে কুফর হবেনা। 

(০৮)
এতে আপনার কুফর হবেনা। 

(০৯)
এতে গুনাহ বা কুফর হবেনা।

(১০)
এতে তার কুফর হবেনা।

(১১)
উল্লেখ করা পদ্ধতিতে ভাবনার দ্বারা কুফর হতে পারেনা।

(১২)
এগুলো চিন্তাকে পাত্তা দিবেননা।
এ সংক্রান্ত কোনো মাসয়ালা পড়বেননা,এ সংক্রান্ত কোনো মাসয়ালা জিজ্ঞাসাও করবেননা।

আরো করনীয় জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 163 views
...