আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
472 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (7 points)
দ্বীনের বুজ না থাকায় নকল করে পরীক্ষায় সার্টিফিকেট, সরকারী শিক্ষা বৃত্তি ও সম্মানি ক্রেস্ট পেলে এই সব কি ফেলে দিতে হবে?উক্ত সার্টিফিকেট ব্যবহার করা জায়েয হবে কি?উক্ত বৃত্তির টাকা খরচ করার কাফফারা দিতে হবে কি?কাফফারা দেয়ার সামর্থ্য না থাকলে কি করনীয়? মানুষ রেজাল্ট জিজ্ঞেস করলে নকলকৃত সার্টিফিকেটের রেজাল্ট বলা যাবে কি?শিক্ষকরাও অন্যদের নকলে সাহায্য ও উৎসাহিত করলে করনীয় কি?

1 Answer

+1 vote
by (597,330 points)
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
সমাধানঃ- 
পরীক্ষায় নকল করা হল ধোঁকা।সরকারী এবং সামাজিক আইন সকল দৃষ্টিতে এটা জগন্যতম একটা অপরাধ। ধোকা এবং প্রতারণা সম্পর্কে হাদীসে ধমকি বর্ণিত হয়েছে,হযরত আবু-হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত,
 عن أبي هريرة رضي الله عنه أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال :  مَنْ حَمَلَ عَلَيْنَا السِّلَاحَ ، فَلَيْسَ مِنَّا ، وَمَنْ غَشَّنَا ، فَلَيْسَ مِنَّا 
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন- যে ব্যক্তি আমরা মুসলমানদের বিরুদ্ধে অস্র ধরলো, সে আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়।এবং যে কাউকে ধোকা দিলো সেও আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়।(সহীহ মুসলিম-১৪৬) ভিন্ন এক সুত্রে বর্ণিত আছে, 
হযরত আবু-হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত,
 عن أبي هريرة رضي الله عنه – أيضاً - ، وفيه : مَنْ غَشَّ ، فَلَيْسَ مِنِّي 
ভাবার্থঃ যে কাউকে ধোকা দিলো সে আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়।(সহীহ মুসলিম-১৪৭)

যেহেতু নকল করা ধোকা আর জগন্যতম অপরাধ।এর জন্য অবশ্যই ননকলকারী কে তাওবাহ করতে হবে।আল্লাহর কাছে কায়মনোবাক্যে ক্ষমা চাইতে হবে। নকল পরীক্ষার মাধ্যমে অর্জিত সকল প্রকার সুযোগ সুবিধা জায়েয কি না? এ সম্পর্কে উলামায়ে কেরামদের মাতবিরোধ রয়েছে। কিছু সংখ্যক উলামায়ে কেরাম নাজায়েয মনে করেন।অন্যদিকে সিংহভাগ উলামায়ে কেরাম বলেন, পরীক্ষায় নকল করা হারাম হলেও যদি কেউ উক্ত সার্টিফিকেট দ্বারা কোনো চাকুরী গ্রহণ করে,অতঃপর ঐ কাজকে সুন্দরভাবে সম্পাদন করতে পারে,তাহলে তার বেতনভাতা হারাম হবে না।কেননা কাজকে ভালো ভাবে আঞ্জাম দেয়াই মূল বিষয়।কাজের দক্ষতা যাচাইয়ের জন্যই মূলত নিয়োগের সময় সার্টিফিকেট দেখা হয়।নিয়োগ কমিটি সার্টিফিকেট দ্বারা নিশ্চিত হতে চায়,কে কাজে দক্ষ হবে আর কে হবে না। নিয়োগের সময় যাদের নিকট থেকে সার্টিফিকেট চাওয়া হয়,তারা সবাই উক্ত কাজের দক্ষ হবে না।কেননা সার্টিফিকেট অর্জনে অনেক সময় সীমালঙ্ঘন ঘটে এটা প্রায় সবাই জানে।কিন্তু এর পরও সার্টিফিকেটকে কাজের দক্ষতার উপর প্রমাণ হিসেবে গ্রহণ করা হয়ে থাকে।অতঃপর ব্যবহারিক ভাবে কাজের দক্ষতাকে যাচাই করা হয়।সুতরাং পরবর্তীতে যখন কেউ সুষ্ট ও সুন্দরভাবে কাজকে অাঞ্জাম দিতে পারবে,তখনই সার্টিফিকেট তলবের উদ্দেশ্য পূর্ণ হবে। বিন বায রাহ বলেন,নকলকারীকে অবশ্যই তাওবাহ ইস্তেগফার করতে হবে।কেননা নকল করা গোনাহ।তবে উক্ত সার্টিফিকেট দ্বারা যে চাকুরীকে গ্রহণ করা হবে,সেই কাজকে যদি সার্টিফিকেটদারী সুন্দরভাবে আদায় করে দিতে পারে তাহলে তার উপার্জন হারাম হবে না।যদিও সে পূর্বে ভূল করেছিলো।(ফাতাওয়া বিনবায-১৯/৩১) 

 নকল করে পরীক্ষার দেয়া এবং জাল সার্টিফিকেট অর্জন করা সমান হবে না।বরং জাল সার্টিফিকেট দ্বারা চাকুরী করা কখনো বৈধ হবে না।এমতাবস্থায় প্রাপ্ত বেতনও হালাল হবে না। নকলকারী যখন অন্যান্যদের মত কাজ করতে সক্ষম হবে তখন তার জন্য উক্ত চাবুরী বৈধ এবং বেতনও বৈধ।তবে অতীতের পাপের জন্য তাকে ক্ষমা চাইতে হবে। আল্লাহ অবশ্যই ক্ষমা করে দেবেন।
আল্লাহ তা'আলা বলেন,
 الَّذِينَ يَأْكُلُونَ الرِّبَا لاَ يَقُومُونَ إِلاَّ كَمَا يَقُومُ الَّذِي يَتَخَبَّطُهُ الشَّيْطَانُ مِنَ الْمَسِّ ذَلِكَ بِأَنَّهُمْ قَالُواْ إِنَّمَا الْبَيْعُ مِثْلُ الرِّبَا وَأَحَلَّ اللّهُ الْبَيْعَ وَحَرَّمَ الرِّبَا فَمَن جَاءهُ مَوْعِظَةٌ مِّن رَّبِّهِ فَانتَهَىَ فَلَهُ مَا سَلَفَ وَأَمْرُهُ إِلَى اللّهِ وَمَنْ عَادَ فَأُوْلَـئِكَ أَصْحَابُ النَّارِ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ 
যারা সুদ খায়, তারা কিয়ামতে দন্ডায়মান হবে, যেভাবে দন্ডায়মান হয় ঐ ব্যক্তি, যাকে শয়তান আসর করে মোহাবিষ্ট করে দেয়। তাদের এ অবস্থার কারণ এই যে, তারা বলেছেঃ ক্রয়-বিক্রয় ও তো সুদ নেয়ারই মত! অথচ আল্লা’হ তা’আলা ক্রয়-বিক্রয় বৈধ করেছেন এবং সুদ হারাম করেছেন। অতঃপর যার কাছে তার পালনকর্তার পক্ষ থেকে উপদেশ এসেছে এবং সে বিরত হয়েছে, পূর্বে যা হয়ে গেছে, তা তার। তার ব্যাপার আল্লাহর উপর নির্ভরশীল। আর যারা পুনরায় সুদ নেয়, তারাই দোযখে যাবে। তারা সেখানে চিরকাল অবস্থান করবে।(সূরা বাকারা-২৭৫)

 ইবনে তাইমিয়্যাহ রাহ বলেন,এ আয়াত আম।সুতরা যে ব্যক্তি যেকোনো বিষয়ে সংশোধন হয়ে গেলে আল্লাহ অতীতের গোনাহ সমূহকে ক্ষমা করে দেবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
আসসালামু আলাইকুম, 
যদি পাঠ্যক্রমে এমন কোনো বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকে যেটা ইসলাম সমর্থন করে না যেমনঃ বিবর্তনবাদ তত্ত্ব, কিংবা মনোবিজ্ঞানের ফ্রয়েডের তত্ত্ব যা বিকৃত যৌনাচারের চিন্তা ভাবনা উস্কে দেয়। তখন কি সেগুলো না পড়ে নকল করা যাবে?

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...