https://ifatwa.info/16102/ ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে, নাপাক কাপড় ধৌত করার সময় প্রত্যেকবার ভিন্নভাবে বালতি ধুয়ে পাক করার প্রয়োজন নেই। তৃতীয়বার কাপড়টি ধৌত করার পর তা পাক হয়ে যাবে। তবে প্রথম ও দ্বিতীয় বার বালতি থেকে পানি সবটুকু ফেলে দিয়ে পরবর্তী বারের জন্য পানি নেয়া প্রয়োজন।
,
এখানে বালতি নাপাক হওয়ার বিষয়টা প্রয়োজনের খাতিরে রহিত হয়ে যাবে। অর্থাৎ এভাবে যদি আমরা বালতিকে নাপাক বলি, তাহলে একটি কাপড় পবিত্র করা জন্য অনেক পানির প্রয়োজনিয়তা দেখা দিবে। সুতরাং যত সামান্য পানি লেগে থাকার কারণে উক্ত বালতি নাপাক হবে না।
উসূলঃ প্রয়োজন অনেক নিষিদ্ধ জিনিষকে সিদ্ধ করে দেয়
ﺍﻟﻀﺮﻭﺭﺍﺕ ﺗﺒﻴﺢ ﺍﻟﻤﺤﻈﻮﺭﺍﺕ
স্থান-কাল-পাত্র বেধে সময়ের প্রয়োজনে ফুকাহায়ে কিরামগন সহজতার স্বার্থে আসল হুকুম থেকে সরে এসে তার বিপরীত সাময়িক হুকুম মাঝেমধ্যে প্রয়োগ করে থাকেন।একেই পরিভাষায় জরুরত বলে। জরুরত বা সময়ের চাহিদায় অনেক বিধিত সিদ্বান্তকে শর্তসাপেক্ষে সাময়িক পরিবর্তন করে দেয়।
এরকম কিছু ফিকহী মূলনীতি 'উসূলে ফিকহ' এর কিতাবাদিতে সবিস্তারে বর্ণিত আছে,তন্মধ্যে কিছু মূলনীতি হল।
যথাক্রমেঃ-
ﺍﻟﻀﺮﻭﺭﺍﺕ ﺗﺒﻴﺢ ﺍﻟﻤﺤﻈﻮﺭﺍﺕ
(প্রয়োজন অনেক নিষিদ্ধ জিনিষকে বৈধ করে দেয়)
এটা একাটা নীতিসিদ্ধ মৌলিক ফিকহী ক্বায়দা/ধারা যা কোরআন এবং হাদিসের থেকে চয়ন করা হয়েছে।
যেমনঃ-কোরআন থেকে.....
ﻭَﻣَﺎ ﻟَﻜُﻢْ ﺃَﻻَّ ﺗَﺄْﻛُﻠُﻮﺍْ ﻣِﻤَّﺎ ﺫُﻛِﺮَ ﺍﺳْﻢُ ﺍﻟﻠّﻪِ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﻗَﺪْ ﻓَﺼَّﻞَ ﻟَﻜُﻢ ﻣَّﺎ ﺣَﺮَّﻡَ ﻋَﻠَﻴْﻜُﻢْ ﺇِﻻَّ ﻣَﺎ ﺍﺿْﻄُﺮِﺭْﺗُﻢْ ﺇِﻟَﻴْﻪِ ﻭَﺇِﻥَّ ﻛَﺜِﻴﺮًﺍ ﻟَّﻴُﻀِﻠُّﻮﻥَ ﺑِﺄَﻫْﻮَﺍﺋِﻬِﻢ ﺑِﻐَﻴْﺮِ ﻋِﻠْﻢٍ ﺇِﻥَّ ﺭَﺑَّﻚَ ﻫُﻮَ ﺃَﻋْﻠَﻢُ ﺑِﺎﻟْﻤُﻌْﺘَﺪِﻳﻦ
তরজমাঃ-কোন কারণে তোমরা এমন জন্তু থেকে ভক্ষণ করবে না, যার উপর আল্লাহর নাম উচ্চারিত হয়, অথচ আল্লাহ ঐ সব জন্তুর বিশদ বিবরণ দিয়েছেন, যেগুলোকে তোমাদের জন্যে হারাম করেছেন; কিন্তু সেগুলোও তোমাদের জন্যে হালাল, যখন তোমরা নিরুপায় হয়ে যাও। অনেক লোক স্বীয় ভ্রান্ত প্রবৃত্তি দ্বারা না জেনে বিপথগামী করতে থাকে। আপনার প্রতিপালক সীমাতিক্রম কারীদেরকে যথার্থই জানেন।(সূরা আন-আম-আয়াতঃ-১১৯)
,
নাপাক কাপড় ধৌত করার সময় প্রত্যেকবার ভিন্নভাবে বালতি ধুয়ে পাক করার প্রয়োজনিয়তা নাই। তৃতীয়বার কাপড়টি ধৌত করার পর বালতি এমনিতেই পাক হয়ে যাবে। তবে প্রথম ও দ্বিতীয় বার বালতি থেকে পানি সবটুকু ফেলে দিয়ে পরবর্তী বারের জন্য পানি নিতে হবে। (দুররে মুখতার-১/৩০৮, ফাতাওয়া আলমগীরী-১/৪২)
إنْ غَسَلَ ثَلَاثًا فَعَصَرَ فِي كُلِّ مَرَّةٍ ثُمَّ تَقَاطَرَتْ مِنْهُ قَطْرَةٌ فَأَصَابَتْ شَيْئًا إنْ عَصَرَهُ فِي الْمَرَّةِ الثَّالِثَةِ وَبَالَغَ فِيهِ بِحَيْثُ لَوْ عَصَرَهُ لَا يَسِيلُ مِنْهُ الْمَاءُ فَالثَّوْبُ وَالْيَدُ وَمَا تَقَاطَرَ طَاهِرٌ وَإِلَّا فَالْكُلُّ نَجِسٌ. هَكَذَا فِي الْمُحِيطِ.
যদি কেউ কাপড়কে তিনবার ধৌত করে,এবং প্রত্যেকবার নিংড়ায়, অতঃপর কাপড় থেকে পানির ফোটা কোনো জিনিষে পড়ে, যদি তৃতীয়বার ভালভাবে নিংড়ানো হয়ে থাকে,এমনভাবে যে এরপর আর নিংড়ালে কোনো পানি বের হবে না,তাহলে কাপড় থেকে যে পানি পড়বে,সেই পানি ও কাপড় এবং হাত কোনো কিছুই নাপাক বলে বিবেচিত হবে না।আর যদি নিংড়ানো না হয়ে থাকে,তাহলে তিনবার ধৌত করার পরও কাপড় থেকে ফোট ফোটা করে পরে যাওয়া পানি নাপাক বলেই গণ্য হবে। ( ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৪২)
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
এক্ষেত্রে এভাবে তিনবার কাপড় ধোয়ার দ্বারা কাপড়,হাত,বালতি সবই পাক হয়ে যাবে।
তবে এক্ষেত্রে সবশেষে সতর্কতামূলক হাত ধুয়ে নিবেন।
★প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে প্রথম/দ্বিতীয়বারের ওই বালতিতে কাপড় তোলার সময় হাত ভিজে,সেই ভেজা হাতে পুনরায় ঐ কাপড় ধরলে সমস্যা নেই।
কিন্তু এ হাত না ধুয়ে অন্য কোনো কিছু ধরলে যেমন নিজের পরনের কাপড়,তাহলে সেটি নাপাক হয়ে যাবে।