হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا مُعَاذُ بْنُ هِشَامٍ، حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنِ اسْتَطَاعَ أَنْ يَمُوتَ بِالْمَدِينَةِ فَلْيَمُتْ بِهَا فَإِنِّي أَشْفَعُ لِمَنْ يَمُوتُ بِهَا "
ইবনু উমার (রাযিঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কেউ মদীনাতে মৃত্যুবরণ করতে সক্ষম হলে সে যেন সেখানেই মৃত্যুবরণ করে। কারণ যে ব্যক্তি সেখানে মৃত্যুবরণ করবে আমি তার জন্য সুপারিশ করব।
সহীহঃ ইবনু মাজাহ (৩১১২) তিরমিজি ৩৯১৭
كنز العمال (12/ 271):
"35004- " قال الله عز وجل: من زارني في بيتي أو مسجد رسولي أو في بيت المقدس فمات مات شهيدا. " الديلمي - عن أنس".
সারমর্মঃ-
মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন,যে ব্যাক্তি আমার ঘর,অথবা রাসুলের মসজিদ অথবা বাইতুল মুকাদ্দাস যিয়ারত করবে,সেক্ষেত্রে যদি মারা যায়,তাহলে সে শহিদী মৃত্যুবরন করলো।
35005- "من مات في أحد الحرمين بعث آمنا يوم القيامة. " طس - عن جابر".
সারমর্মঃ-
যে ব্যাক্তি দুই হারামাইন এর কোনো একটিতে মারা যাবে,সে কিয়ামতের ময়দানে নিরাপদ থাকবে।
আল্লাহ তাআলার পর রাসূল সাঃ এর মত মর্যাদাবান গোটা সৃষ্টি জগতে দ্বিতীয় কেউ নেই। তাই তিনি যে স্থানে মিলে আছেন তাও শ্রেষ্ঠ স্থান। যেহেতু আল্লাহ তাআলা কোন স্থানের মুখাপেক্ষি নন, তাই তিনি কোন স্থানের সাথে লাগোয়া নন। যেহেতু আরশ-কুরসীর সাথে আল্লাহ তাআলা লাগোয়া নন, তাই আরশ কুরসী রাসূল সাঃ এর সাথে লাগোয়া জমির চেয়ে শ্রেষ্ট হতে পারে নি। যদি আল্লাহ তাআলা আরশ কুরসীর সাথে লাগোয়া হতেন, তাহলে তা রাসূল সাঃ এর সাথে লাগোয়া জমির চেয়ে শ্রেষ্ঠতর হতো এতে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু আল্লাহ তাআলা যেহেতু স্থানের মুখাপেক্ষি নন। তিনি সকল বিষয় থেকে পবিত্র। তাই আরশ কুরসীতে লাগোয়া হওয়ার আল্লাহ তাআলার কোন প্রয়োজন নেই। এ কারণেই আরশ কুরসীর চেয়েও রাসূল সাঃ এর সাথে লাগোয়া জমিন শ্রেষ্ঠ।
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمَ فَتْحِ مَكَّةَ: «لَا هِجرةَ وَلَكِنْ جِهَادٌ وَنِيَّةٌ وَإِذَا اسْتُنْفِرْتُمْ فَانْفِرُوا» . وَقَالَ يَوْمَ فَتْحِ مَكَّةَ: «إِنَّ هَذَا الْبَلَدَ حَرَّمَهُ اللَّهُ يَوْمَ خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ فَهُوَ حَرَامٌ بِحُرْمَةِ اللَّهِ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ وَإِنَّهُ لَمْ يحِلَّ القتالُ فيهِ لأحدٍ قبْلي وَلم يحِلَّ لِي إِلَّا سَاعَةً مِنْ نَهَارٍ فَهُوَ حَرَامٌ بِحُرْمَةِ اللَّهِ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ لَا يُعْضَدُ شَوْكُهُ وَلَا يُنَفَّرُ صَيْدُهُ وَلَا يَلْتَقِطُ لُقَطَتُهُ إِلَّا مَنْ عَرَّفَهَا وَلَا يُخْتَلَى خَلَاهَا» . فَقَالَ الْعَبَّاسُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ إِلَّا الْإِذْخِرَ فَإِنَّهُ لِقَيْنِهِمْ وَلِبُيُوتِهِمْ؟ فَقَالَ: «إِلَّا الْإِذْخِرَ»
‘আব্দুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কা বিজয়ের দিন বলেছেনঃ আর হিজরত নেই, তবে অবশিষ্ট আছে জিহাদ ও নিয়্যাত। তাই যখন তোমাদেরকে জিহাদের জন্য বের হতে বলা হবে, বের হয়ে পড়বে। সেদিন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আবার বললেন, এ শহরকে সেদিন হতে আল্লাহ তা‘আলা সম্মানিত করেছেন যেদিন তিনি আকাশ ও জমিন সৃষ্টি করেছেন; আর এটা ক্বিয়ামাত (কিয়ামত) পর্যন্ত আল্লাহর সম্মানেই সম্মানিত (হারাম বা পবিত্র) থাকবে। এ শহরে আমার আগে কারো জন্য যুদ্ধ করা হালাল ছিল না আর আমার জন্যও একদিনের অল্প সময়ের জন্য মাত্র হালাল করা হয়েছিল। অতঃপর তা ক্বিয়ামাত (কিয়ামত) পর্যন্ত আল্লাহর সম্মানেই সম্মানিত। এ শহরের কাঁটাযুক্ত গাছ পর্যন্ত কাটা যাবে না, এখানে শিকার হাঁকানো যাবে না, এর রাস্তায় পড়ে থাকা কোন জিনিস ঘোষণাকারী ছাড়া কেউ উঠাতে পারবে না। আর এর ঘাসও কাটতে পারবে না। বর্ণনাকারী ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, এ সময় ‘আব্বাস(রাঃ) বলে উঠলেন, হে আল্লাহর রসূল! ইযখির ঘাস ছাড়া? এ ঘাসতো কর্মকরদের জন্যে ও লোকদের ঘরের জন্য বিশেষ প্রয়োজন। তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, ঠিক আছে ইযখির ঘাস ছাড়া।
(সহীহ : বুখারী ১৮৩৪, আবূ দাঊদ ২৪৮০, মুসলিম ১৩৫৩, নাসায়ী ৪১৭০, তিরমিযী ১৫৯০, মুসান্নাফ ‘আবদুর রাযযাক্ব ৯৭১৩, ইবনু আবী শায়বাহ্ ৩৬৯৩০, আহমাদ ২৮৯৬, দারিমী ২৫৫৪, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৯৯৪৪, ইরওয়া ১১৮৭, সহীহ আল জামি‘ ৭৫৬৩।)
ব্যাখ্যা: (لَا هِجْرَةَ) হিজরত নেই। অর্থাৎ- মক্কা বিজয়ের পর এখন আর মক্কা থেকে হিজরত করার সুযোগ নেই।
কারণ এটা এখন দারুল ইসলাম। এর বিধান মক্কা বিজয়ের পূর্বের হিজরতের বিধানের বিপরীত। কারণ তখন হিজরত ওয়াজিব, বরং শর্ত ছিল। আর দারুল কুফর থেকে দারুল ইসলামে হিজরত করার আবশ্যকতা কিয়ামত পর্যন্ত থাকবে। (তুহফাতুল আহ্ওয়াযী ৭ম খন্ড, হাঃ ২৭৩৫)