আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
261 views
in সালাত(Prayer) by (1 point)

1) কারো ১০ বছরের উমরী কাযা আছে, সে কি রামাদানে তারাবীহ আর কাযা ২টাই পড়বে? নাকি কাযা গুলো পড়বে শুধু? 

2) এই ক্ষেত্রে কোন সালাত উত্তম হবে শেষ ১০ রাতে ?

3) নামাজে একই রাকাতে একাধিক সূরা কিভাবে মিলাতে হয়? মাঝে বাসমালাহ পড়তে হবে? 

4) কোনো রাকাতে ২ আয়াত পড়ার পর ভুলে গেলে কি করবো? একই আয়াত একাধিক বার / ৩ বার পড়লে হবে? 

5) ৪ রাকাত ফরজ নামাজের শেষ ২রাকাতে ফাতিহার পর ভুলে বাসমালাহ পরে ফেললে সাহু সিজদা দিতে হবে?

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
নামায হয়তো কারো এক ওয়াক্ত কাযা হতে পারে,আবার কখনো কয়েক ওয়াক্ত কাযা হয়ে যেতে পারে।কারোর বা অনেক অনেক ওয়াক্ত কাযা হয়ে যেতে পারে। যদি কারো জীবনে অনেক অনেক ওয়াক্ত নামায কাযা হয়ে যায় তাহলে তার সারা জীবনের সকল নামাযকে উমুরী কাযা বলে।

ইবনে আবেদীন শামী রাহ কাযা নামায পড়ার নিয়ম এভাবে দিয়েছেন যে,
ﻭﻓﻰ ﺍﻟﺪﺭ ﺍﻟﻤﺨﺘﺎﺭ - ﻛَﺜُﺮَﺕْ ﺍﻟْﻔَﻮَﺍﺋِﺖُ ﻧَﻮَﻯ ﺃَﻭَّﻝَ ﻇُﻬْﺮٍ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﺃَﻭْ ﺁﺧِﺮَﻩُ،
ﻭﻗﺎﻝ ﺍﺑﻦ ﻋﺎﺑﺪﻳﻦ ﺍﻟﺸﺎﻣﻰ – ( ﻗَﻮْﻟُﻪُ ﻛَﺜُﺮَﺕْ ﺍﻟْﻔَﻮَﺍﺋِﺖُ ﺇﻟَﺦْ ) ﻣِﺜَﺎﻟُﻪُ : ﻟَﻮْ ﻓَﺎﺗَﻪُ ﺻَﻠَﺎﺓُ ﺍﻟْﺨَﻤِﻴﺲِ ﻭَﺍﻟْﺠُﻤُﻌَﺔِ ﻭَﺍﻟﺴَّﺒْﺖِ ﻓَﺈِﺫَﺍ ﻗَﻀَﺎﻫَﺎ ﻟَﺎ ﺑُﺪَّ ﻣِﻦْ ﺍﻟﺘَّﻌْﻴِﻴﻦِ ﻟِﺄَﻥَّ ﻓَﺠْﺮَ ﺍﻟْﺨَﻤِﻴﺲِ ﻣَﺜَﻠًﺎ ﻏَﻴْﺮُ ﻓَﺠْﺮِ ﺍﻟْﺠُﻤُﻌَﺔِ، ﻓَﺈِﻥْ ﺃَﺭَﺍﺩَ ﺗَﺴْﻬِﻴﻞَ ﺍﻟْﺄَﻣْﺮِ، ﻳَﻘُﻮﻝُ ﺃَﻭَّﻝَ ﻓَﺠْﺮٍ ﻣَﺜَﻠًﺎ، ﻓَﺈِﻧَّﻪُ ﺇﺫَﺍ ﺻَﻠَّﺎﻩُ ﻳَﺼِﻴﺮُ ﻣَﺎ ﻳَﻠِﻴﻪِ ﺃَﻭَّﻟًﺎ ﺃَﻭْ ﻳَﻘُﻮﻝُ ﺁﺧِﺮَ ﻓَﺠْﺮٍ، ﻓَﺈِﻥَّ ﻣَﺎ ﻗَﺒْﻠَﻪُ ﻳَﺼِﻴﺮُ ﺁﺧِﺮًﺍ، ﻭَﻟَﺎ ﻳَﻀُﺮُّﻩُ ﻋَﻜْﺲُ ﺍﻟﺘَّﺮْﺗِﻴﺐِ ﻟِﺴُﻘُﻮﻃِﻪِ ﺑِﻜَﺜْﺮَﺓِ ﺍﻟْﻔَﻮَﺍﺋِﺖِ . ( ﺭﺩ ﺍﻟﻤﺤﺘﺎﺭ، ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻟﺼﻼﺓ، ﺑﺎﺏ ﻗﻀﺎﺀ ﺍﻟﻔﻮﺍﺋﺖ - 2/538
ভাবানুবাদঃ-উমুরী কাযা নামায আদায় করতে হলে প্রথমে কোন ওয়াক্তের কতটা নামায কাযা হয়েছে তা নির্ণয় করবে।যদি সেটা নির্ণয় করা সম্ভব না হয়। তাহলে অনুমান করে নিবে। অনুমান করে কোন ওয়াক্তের কতটি নামায কাযা হয়েছে সেটা নির্ধারণ করে নিবে। তারপর ধারাবাহিকভাবে একে একে সবগুলোকে  আদায় করে নিবে।

যেমন
ফজরের নামায সর্বমোট ১০০ ওয়াক্তের কাযা হয়েছে। তখন কাযা নামায আদায় করার সময় এভাবে নিয়ত করবে যে, আমার জিম্মায় যত ফজরের নামায কাযা রয়েছে, সে অনাদায়কৃত নামায সমূহের মধ্য থেকে প্রথম ফজরের নামাযকে এখন কাযা আদায় করছি” এমন নিয়তে নামায আদায় করবে।এভাবে হিসেবে করে পড়তে থাকবে। প্রতিবার অনাদায়কৃত প্রথম ফজরের নামায বলার দ্বারা তার যিম্মায় যতগুলো নামায বাকি ছিলো, সেগুলোর প্রথম নামাযের নিয়ত হচ্ছে, তাই এক্ষেত্রে নিয়তটি নির্দিষ্ট নামাযেরই হচ্ছে।ঠিক উল্টোভাবেও করা যায়। অর্থাৎ যত নামায কাযা আছে তার সর্বশেষ অনাদায়কৃত কাযার নিয়ত করছি। এভাবেও পূর্বোক্ত পদ্ধতিতে বাকি নামাযের কাযা আদায় করা যাবে।(রদ্দুল মুহতার-২/৫৩৮)

এ ধারাবাহিকতায় বাকি নামায সমূহের ক্বাযা আদায় করবে। যোহর, আছর, মাগরিব, ইশা এবং সাথে বিতিরের নামাযকে ও এভাবেই আদায় করে নিবে।বিতিরের নামাযের ক্বাযা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/629

একদিনে যত দিনের ইচ্ছে কাযা আদায় করা যাবে। কোন সমস্যা নেই। নফল নামায এর স্থলে উমুরী ক্বাযা নামায পড়াই উচিৎ। (ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যাহ-৭/৩৮৫)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
(১) কারো জিম্মায় ১০ বছরের উমরী কাযা থাকলে, সে  রমজানে তারাবীহ এবং কাযা দুটিই পড়বে। শুধুমাত্র কাযা পড়লে তখন হবে না। ওয়াক্তিয়া সুন্নত আদায় করার পর উমরি কাযা পড়া হবে।

(৩) শেষ ১০ রাতে ওয়াক্তিয়া সুন্নত পড়ার সাথে সাথে কাযাও পড়াই সাধারণ নিয়ম।

(৩) নামাজে একই রাকাতে একাধিক সূরা কিভাবে মিলাতে হয়? মাঝে বিসমালাহ পড়তে হবে? 
আর নামাযের প্রত্যেক রা'কাতে সূরায়ে ফাতেহার পূর্বে নিম্নস্বরে বিসমিল্লাহ্ পড়া সুন্নত।এবং সূরায়ে ফাতেহার পর সূরা মিলানোর পূর্বে বিসমিল্লাহ্ পড়া উত্তম।অবশ্য এ ব্যাপারে মতানৈক্য রয়েছে।তবে সুন্নত না হওয়ার উপর সবাই-ই একমত (কিতাবুন-নাওয়াযিল-৪/৫১,কিতাবুল-ফাতাওয়া-২/১৭২)

সূরায়ে ফাতেহার পর সূরা মিলানোর পূর্বে বিসমিল্লাহ্ পড়া উত্তম। অবশ্য এ ব্যাপারে মতানৈক্য রয়েছে।তবে সুন্নত না হওয়ার উপর সবাই-ই একমত। এবং সূরার মধ্যখান থেকে পড়লেও বিসমিল্লাহ পড়া উত্তম।

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/1300

(৪) বড় একটি আয়াত বা ছোট্ট তিনটি আয়াত সমপরিমাণ তিলাওয়াত করা ওয়াজিব। সুতরাং কোনো রাকাতে ২ আয়াত পড়ার পর ভুলে গেলে,যদি এই দু'টি আয়াত ছোট্ট হয়, তাহলে অন্যকোনো সূরা শুরু করতে হবে। আর যদি ঐ আয়াতটি বড় হয়, তাহলে রু'কু চলে যাওয়াই উচিৎ।তখন একই আয়াতকে একাধিক বার / ৩ বার পড়লেও অনুমোদন থাকবে।

(৫) ৪ রাকাত ফরজ নামাজের শেষ ২রাকাতে ফাতিহার পর ভুলে বিসমিল্লাহ পরে ফেললে সাহু সিজদা দিতে হবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (597,330 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...