আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
200 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (2 points)
প্রশ্ন(১)ঃ হুজুর, স্বামীকে বিয়ে করতে বলা কি মহিলাদের ক্ষেত্রে কেনায়া বাক্য?
প্রশ্ন(২)কোন মহিলা যদি তালাকের অধিকারপ্রাপ্ত হয়, তার ক্ষেত্রে কেনায়া তালাকের বাক্য কেমন হবে?
প্রশ্ন(৩)সে কোন কোন শব্দ দ্বারা কেনায়া তালাক নিতে পারবে?
প্রশ্ন(৪)আর কেনায়ার নিয়ত কেমন থাকবে? মহিলা নিজের ওপর পতিত করছে / নিচ্ছে এরকম নিয়ত থাকবে? একটু বুঝিয়ে বলবেন হুজুর প্লিজ।

ঘটনা(১)

হুজুর আমি আমার স্বামীকে বলি, শুনেন আপনি আমাকে কখনও যা খুশি কর এই বাক্য টা আর বলবেন না৷ তখন হাসবেন্ড বলে, বলছি? এখন কি বলছি? আমি বলি, না বলেন নাই। কিন্তু সাধারণ কথায়ও বলবেন না৷
হুজুর আমি তালাকের টেনশনে কাদতে থাকি, আর বলি, আমার সাথে কেন হলো এসব। কত সুন্দর সংসার ছিল। এটা বলার সঙ্গে সঙ্গে আমার হাজব্যান্ড চিল্লায়ে উঠে বলে, কি হইছে কি? ভেঙে গেছে? ভাঙছে?
  তারপর আমি বলি ভাঙ্গে নাই।
আমি আরেকদিন আমার স্বামীকে বলি, আপনি আমাকে সম্পর্ক নাই, শেষ এসব বলেন নাই তো? তখন সে বলে, আমি নাই শেষ এসব কিছুই বলি নাই।

প্রশ্ন(৫)ঃহুজুর উপরের কথার মাঝে কোন সমস্যা হয়েছে?

প্রশ্ন(৬)ঃ হুজুর, "তোমার সাথে কোন সম্পর্ক রাখবো না" এটা তো ভবিষ্যৎ মূলক বাক্য।  অনেকে বলেছে এটা ওয়াদামূলক বাক্য। এটা কি কেনায়া হবে?
প্রশ্ন(৭)হুজুর স্বামী সাথে ফোনে তালাকের মজলিস হওয়ার পর যদি তাদের কেউ একজন ফোন কেটে দেয়৷ তালহে কি মজলিস শেষ হয়েছে ধরা হবে?
প্রশ্ন(৮)তার কিছুক্ষণ পর আবার ফোন দিল তখনও কি মজলিস অব্যাহত থাকবে?  নাকি প্রথম ফোন কেটে দেওয়ার পর মজলিস শেষ হবে?

ঘটনা (২)
হুজুর আমাকে কাবিন নামায় তালাকের অধিকার দেওয়া হয়েছে কিনা আমরা কেউ জানি না৷ তবে আমার স্বামী মৌখিকভাবে কখনও দেয় নাই। আমার এই ওয়াসওয়াসা শুরুর পর আমার ছোট ভাই এক হুজুরের কাছে যায়। তার সাথে আমার কথা বলায় দেয়। আমি তাকে আমার সমস্যা খুলে বলি৷ হুজুর সে জ্বীন দিয়ে তদবির করে। তখন আমি জানতাম না এটা জায়েজ না৷ তো সেই হুজুর বলে তিনদিন পর তার কাছে যেতে। আমার ছোট ভাই তিনদিন পর তার কাছে যায় কি সমস্যা এটা জানতে৷  তখন আমার টেনশন হচ্ছিল হুজুর কি বলে না বলে এটা নিয়ে। বেশ কয়েক ঘন্টা পরও আমার ভাই কোন কিছু জানাচ্ছিল না। পরে আমি আমার স্বামীকে ফোন দিয়ে বলি, "রিফাত তো ফোন ধরতেছে না। হুজুর কি সমস্যার কথা বললো নাকি। আমার খুব ভয় করতেছে৷  তাকে তো তালাকের ওয়াসওয়াসা নিয়ে বলছিলাম। সে নাকি জ্বীন দিয়ে তদবির করে। জ্বীন কি কোন সমস্যা হইছে বললো নাকি। তারপর হাসবেন্ড বলে আরে টেনশন কইরো না। কোন সমস্যা হয় নাই৷ পরে আমি কিছুক্ষন পরে আবার বলি, আমার মনে হয় সব শেষ। সব শেষ৷ কোন সমস্যা পাইছে।  ( এখানে আমি বুঝাইতে চাইছি তালাক সংক্রান্ত কোন সমস্যা হইছে। আমাদের হয়ত সম্পর্ক আর নাই) । আমার স্বামী বলতেছিল, কিছুই হয় নাই।এত টেনশন কইরো না।
প্রশ্ন(৯)ঃ হুজুর আমার এসব বলা দ্বারা কি তালাক হইছে? আমার অধিকার আছে কিনা জানি না৷ ভয়ে, টেনশনে সন্দেহবশত বলছিলাম এমনটা।

1 Answer

0 votes
by (566,280 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


(০১)
স্বামীকে বিয়ে করতে বলা মহিলাদের ক্ষেত্রে কেনায়া বাক্য নয় 

(২.৩)
https://ifatwa.info/39698/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে, 
তালাক হচ্ছে স্বামীর অধিকার। স্বামী তালাক দিলেই তালাক সংঘটিত হবে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ بُكَيْرٍ حَدَّثَنَا ابْنُ لَهِيعَةَ عَنْ مُوسَى بْنِ أَيُّوبَ الْغَافِقِيِّ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم رَجُلٌ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ إِنَّ سَيِّدِي زَوَّجَنِي أَمَتَهُ وَهُوَ يُرِيدُ أَنْ يُفَرِّقَ بَيْنِي وَبَيْنَهَا قَالَ فَصَعِدَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الْمِنْبَرَ فَقَالَ يَا أَيُّهَا النَّاسُ مَا بَالُ أَحَدِكُمْ يُزَوِّجُ عَبْدَهُ أَمَتَهُ ثُمَّ يُرِيدُ أَنْ يُفَرِّقَ بَيْنَهُمَا إِنَّمَا الطَّلَاقُ لِمَنْ أَخَذَ بِالسَّاقِ

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট এসে বললো, হে আল্লাহর রসূল! আমার মনিব তার বাঁদীকে আমার সাথে বিবাহ দিয়েছে। এখন সে আমার ও আমার স্ত্রীর মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে চায়। রাবী বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিম্বারে আরোহণ করলেন, অতঃপর বলেনঃ হে লোকসকল! তোমাদের কারো এরূপ আচরণ কেন যে, সে তার গোলামের সাথে তার বাঁদীর বিবাহ দেয়, অতঃপর তাদের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে চায়? নারীর ঊরু স্পর্শ করা যার জন্য বৈধ, তালাকের অধিকার তার।
(সুনানে ইবনে মাজাহ ২০৮১.বায়হাকী ৯/১৫৭, ইরওয়াহ ২০৪১।)

★শরীয়তের বিধান অনুযায়ী  মহিলা নিজের উপর কেবল তখনি তালাক পতিত করতে পারবে, যদি স্বামী তাকে তালাক দেবার অধিকার দিয়ে থাকে।
এটি নিকাহ নামার ১৮ নং ধারাতে হ্যাঁ লেখার মাধ্যমেই হোক,বা পরবর্তীতে মৌখিক বা লিখিত ভাবেই হোক।
,  
সুতরাং স্বামী যদি স্ত্রীকে তালাকের ক্ষমতা প্রদান করে,আর স্ত্রী স্বামী কর্তৃক তালাকে তাভবিজের ক্ষমতাবলে লিখিত বা মৌখিকভাবে নিজের নফসের উপর তালাক দিয়ে দিলে সেটি পতিত হয়ে যাবে।

আরো জানুনঃ 

ফাতাওয়ায়ে শামীতে আছেঃ
   
قال لھا: طلقي نفسک ولم ینو أو نوی واحدة فطلقت وقعت رجعیة الخ (الدر المختار مع رد المحتار، کتاب الطلاق، باب الأمر بالید، ۴: ۵۷۵، ط: مکتبة زکریا دیوبند)۔
সারমর্মঃ
কেহ যদি তার স্ত্রীকে বলে,তুমি তোমার নিজের নফসকে তালাক দাও,কোনো নিয়ত না করে,অথবা এক তালাকের নিয়ত করে,অতঃপর স্ত্রী তালাক দেয়,তাহলে এক তালাকে রজয়ী পতিত হবে।     

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
স্ত্রী তালাকের ক্ষমতা পেয়ে থাকলে কেনায়া তালাক দিতে পারবে।
তবে সেটি নিজের নফসের উপর তালাক প্রদান/গ্রহন জাতীয় অর্থ বিশিষ্ট হতে হবে,এবং তালাকের নিয়ত থাকতে হবে।  

যেমন,স্ত্রী যদি নিজের নফসের প্রতি তালাক প্রদানের নিয়তে বলে যে আমি মুক্ত,আমি বিচ্ছিন্ন,ইত্যাদি তাহলে তালাক পতিত হয়ে যাবে।

অথবা স্বামী যদি বলে যে তুমি তালাক গ্রহন করো,স্ত্রী যদি বলে যে আমি তাহা গ্রহন করিলাম,তাহলে তালাক হয়ে যাবে। 

رجل قال لامرأتہ خذي طلاقک، فقالت: أخذت، یقع الطلاق۔ (الفتاویٰ الہندیۃ، کتاب الطلاق / الفصل الثاني في إیقاع الطلاق ۱؍۳۵۹)
সারমর্মঃ
কোনো ব্যাক্তি তার স্ত্রীকে বলেছে তুমি তালাক গ্রহন করো,স্ত্রী যদি বলে যে আমি তাহা গ্রহন করিলাম,তাহলে তালাক হয়ে যাবে। 

(০৪)
সে নিজের নফসের উপর তালাক প্রদান করছে বা সে নিজেকে তালাক দিচ্ছে,এমন নিয়ত করবে।

ঘটনা (১)

(০৫)
উপরের কথার মাঝে কোন সমস্যা হয়নি 

(০৬)
"তোমার সাথে কোন সম্পর্ক রাখবো না" এটা ভবিষ্যৎ মূলক বাক্য। পাশাপাশি এটি ওয়াদামূলকও বাক্য। এটা কেনায়া হবেনা।

(০৭)
হ্যাঁ, মজলিস শেষ হয়েছে বলে ধরা হবে। 

(০৮)
তার কিছুক্ষণ পর আবার ফোন দিলে তখন মজলিস অব্যাহত থাকবেনা। প্রথম ফোন কেটে দেওয়ার পর মজলিস শেষ হবে।

ঘটনা (২)

(০৯)
আপনার এসব বলা দ্বারা তালাক হয়নি।
আপনি নিশ্চিত থাকুন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...