আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
234 views
in ওয়াসওয়াসা by (10 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম শায়েখ,

আমি বিগত কয়েকমাস মাস ধরে মারাত্তক ওয়াসওয়াসার স্বিকার। সবকিছুতেই আমার তালাক হয়ে গেল কিনা ভেবে সন্দেহ হয়। এর আগে আমার করা বিভিন্ন প্রশ্নে আমার তালাক হবে না বলেছেন। গত ৩/৩/২০২৩ তারিখে করা আমার প্রশ্নে আপনাদের উওরের লিঃক :
https://ifatwa.info/69905/

(১) মনের ভিতর সবসময় "তালাক" শব্দ ঘুরতে থাকে। উচ্চারন করে ফেললাম কিনা ভেবে সন্দেহ হয়। মাঝে মধ্যে মনে হয় মুখ দিয়ে বেরিয়ে যাবে। কন্টোল করা কষ্ট হয়ে যায়। তখন জিব্বা নাড়িয়ে ঢোক গিলি। মাঝে মধ্যে ঘুমের ভিতরে স্বপ্নে আমি আমার ওয়াইফকে কেনায়া বাক্য বলতে দেখি। ওয়াশরুমে ঢোকার সময় মনে মনে দোয়া পড়া শেষ হওয়া মাএ মনের ভিতর তালাক শব্দ আসে। ব্রাশ করতে গেলে মনে হয় তালাক শব্দ উচ্চারন করে ফেললাম বোধ হয়। কুলি করার সময় ও ওয়াশরুমে থাকা কালিন এই সমস্যা খুব বেশি হয় আমার।
এরপর, কোন কারনে ওয়াইফ এর সাথে হালকা অভিমান হলে মনে হয় তালাক উচ্চারন করে ফেলবো।
আজ আমার ওয়াইফের সাথে আমার গন্ডোগোল হয়েছে। অফিস যাবার পর আমার ওয়াইফ আমাকে ফোন করেছিল, কিন্তু আমি ধরিনি। তখন আমার মনে কল্পনা আসছিল যে, আমার ওয়াইফ হয়তো রাগ করে আমার বাসা থেকে চলে যেতে চাইবে। এটা কল্পনা করে তখন আমার মনে হচ্ছিল আমি যেন "হ্যা" বললাম। অথবা মুখ দিয়ে বাতাস বের করার জন্যও "হ্যা" বললাম বলে মনে হতে পারে। এগুলার জন্য কি তালাক পতিত হবে শায়েখ??

(২) সংসারে সামান্য কিছু হলেই আমার ওয়াইফ বলে যে,আমি বাবার বাড়ি চলে যাবো।
কিন্তু আমি ভয়ে বলতে পরি না যে,  যাও।
কারন, এটা কেনায়া শব্দ হয়ে যাবে কিনা সেই ভয়ে।
এবং আমার মনে সবসময় তালাক শব্দ চলতে থাকার দরুন তালাকের নিয়ত হয়ে যাবে সেই ভয়ে।

এখন যদি আমার ওয়াইফ বাবার বাড়ি চলে যেতে চাই, এবং আমি যদি রেগে গিয়ে "যাও" বলি, তাহলে কি এটা কেনায়া বাক্য হবে শায়েখ??

(৩) গতকাল সকালে ওয়াইফের সাথে গন্ডোগোল হয়েছে। তারপর আমি অফিসে আসার পর একটা ছবিতে দেখি যে, একজন লোক তার ওয়াইফের  দিকে হাতের তিন আংগুল ইশারা করছে।

এটা দেখার পর থেকে আমার মনেও ওয়াসওয়াসা আশা শুরু হয়ে গিয়েছে। রাতে শোয়ার সময় ও আমি হাতের মুষ্ঠি মেরে শুচ্ছিলাম।মনে হচ্ছিল আমি যেন আমার ওয়াইফের দিকে হাতের আংগুল ইশারা করে ফেলবো। রাতের শেষের দিকে আমার মনে হলো আমার হাতের একটা আংগুল আমার ওয়াইফের দিকে হয়ে আছে, তখনি আমার মনে হতে থাকে যে, এক তালাক হয়ে গেল মনে হয়। সাথে সাথে আমি হাতে মুঠো মেরে ফেলেছিলাম।  এমন সন্দেহ মনে আসতেই থাকছে। এতে কি তালাক পতিত হবে শায়েখ??

এসব কথা মনে আসাতে আমি শরিল খারাপ হবার মত মুখ দিয়ে সাউন্ড করছি, তখন ও মনে হচ্ছে আমি "হ্যা" বলছি।

1 Answer

0 votes
by (569,520 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


(০১)
উকবাহ ইবনু আ’মির রাযি. বলেন,

لاَ يَجُوزُ طَلاَقُ الْمُوَسْوِسِ

‘ওয়াসওয়াসা সম্পন্ন (সন্দেহের বাতিকগ্রস্ত) ব্যক্তির তালাক কার্যকর হয় না।’ 
(সহিহ বুখারী, অধ্যায় ৬৮)

চার মাযহাব সম্ভলিত সর্ববৃহৎ ফেকহি গ্রন্থ "আল-মাওসুআতুল ফেকহিয়্যা"গ্রন্থে লিপিবদ্ধ রয়েছে যে,
نَقَل ابْنُ عَابِدِينَ عَنِ اللَّيْثِ: فِي مَسْأَلَةِ طَلاَقِ الْمُوَسْوَسِ  أَنَّهُ لاَ يَجُوزُ طَلاَقُ  الْمُوَسْوَسِ  ، قَال: يَعْنِي الْمَغْلُوبَ فِي عَقْلِهِ
وَنَقَل ابْنُ الْقَيِّمِ: إِنَّ الْمُطْلِّقَ إِنْ كَانَ زَائِل الْعَقْل بِجُنُونٍ أَوْ إِغْمَاءٍ أَوْ وَسْوَسَةٍ لاَ يَقَعُ طَلاَقُهُ،  قَال: وَهَذَا الْمَخْلَصُ مُجْمَعٌ عَلَيْهِ بَيْنَ عُلَمَ ـ اءِ الأُْمَّةِ

- رِدَّةُ الْمُوَسْوَسِ: 
٢١ - إِنْ تَكَلَّمَ الْمُوَسْوَسُ  بِكَلاَمٍ يَقْتَضِي الرِّدَّةَ لَمْ يَكُنْ فِي حَقِّهِ رِدَّةٌ. صَرَّحَ بِذَلِكَ الْحَنَفِيَّةُ، يَعْنُونَ الْمَغْلُوبَ فِي عَقْلِهِ
ইবনে আবেদিন শামী রাহ বর্ণনা করেন,ওয়াসওয়াসা গ্রস্থ ব্যক্তি -যার বিবেকবুদ্ধি লোপ পেতে বসেছে-তার তালাক গ্রহণযোগ্য নয়।
ইবনুল কাইয়িম রাহ বলেন, যদি তালাক প্রদানকারী ব্যক্তি ওয়াসওয়াসা,বেহুশি বা পাগলাটের দরুণ বিবেকবুদ্ধি লোপ পেতে থাকে, তাহলে তার তালাক গ্রহণযোগ্য হবে না। এর উপর সমস্ত উলামাদের ঐক্যমত রয়েছে।
(আল-মাওসু'আতুল ফেকহিয়্যাতুল কোয়েতিয়্যাহ-৪৩/১৫৬)
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/835

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই,
আপনি যেহেতু ওয়াসওয়াসার রুগী, তাই আপনার কোনো তালাকই গ্রহণযোগ্য নয়।

সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে তালাক পতিত হয়নি।

(০২)
হ্যাঁ, প্রশ্নের বিবরণ মতে এটি কেনায়া বাক্য হবে। 

(০৩)
এতে তালাক পতিত হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...