জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم
শরীয়তের বিধান হলো আল্লাহ আল্লাহ বলে যিকির করা শুধু জায়েযই নয়,এটা আল্লাহ তায়ালার হুকুমের পর্যায়েও পড়ে।
,
আল্লাহ তায়ালা বলেন
قد افلح من تزكي وذكر اسم ربك فصلي
অনুবাদ অনুবাদ সফলকাম তারাই যারা আত্মশুদ্ধি অর্জন করবে,আল্লাহর নামে যিকির করবে,এবং নামাজ আদায় করবে।
(সুরা দুহা ১৫.১৬)
এখানে আল্লাহ তায়ালা কিন্তু
وذكر ربك
বলেননি,বরং বলেছেন৷ وذكر اسم ربك
ইহার দ্বারা এই দিকে ইশারা যে এখানে আল্লাহ শব্দ বলে যিকির করাও উদ্দেশ্য।
( মাআরিফুল কুরআন ৮/৫৯৪,ফাতাওয়ায়ে দারুল উলুম ১/৫৮৪)
হাদীস শরীফে এসেছে
“কিয়ামত তত দিন পর্যন্ত সংঘটিত হবে না যত দিন না আল্লাহ আল্লাহ বলনে ওয়ালা কেউ না থাকে”। [সহীহ মুসলিম, অনুচ্ছেদঃ শেষ যমানায় ঈমান চলে যাওয়া]
যিকিরের ফজিলত সংক্রান্ত কিছু আয়াত ও হাদীসঃ
আল্লাহকে অধিক পরিমাণে স্মরণ করবে যাতে তোমরা সফলতা অর্জন কর।-সূরা আনফাল : ৪৫
যারা ঈমানদার তারা এমন যে যখন তাদের সামনে আল্লাহর নাম নেওয়া হয় তখন তাদের অন্তর ভীত হয়ে পড়ে।-সূরা আনফাল : ২
আল্লাহ তাআলা আরো বলেন, যাদের হৃদয় ভয়ে কম্পিত হয় আল্লাহর নাম যিকির করা হলে।-সূরা হজ্ব : ৩৫
হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহর অধিক পরিমাণে যিকির কর।-সূরা আহযাব : ৪১
উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বাবস্থায় আল্লাহর যিকির করতেন।-সহীহ মুসলিম ১/২৮২; সুনানে আবু দাউদ, পৃষ্ঠা ৪
হযরত মুআয রা. থেকে বর্ণিত। এক সাহাবী বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার কাছে ইসলামের বিধান অনেক মনে হয়। তাই আমাকে এমন একটি বিষয় বলে দিন যার উপর আমি সর্বদা আমল করতে পারি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমার জিহবাকে আল্লাহর যিকিরে তরতাজা রাখ।-জামে তিরমিযী, হাদীস : ৩৩৭৫; ইবনে মাজাহ, হাদীস : ৩৭৯৩
হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, এক হাদীসে কুদসীতে আছে, আল্লাহ তাআলা বলেন, বান্দা যতক্ষণ আমাকে স্মরণ করতে থাকে এবং আমার যিকিরের কারণে তার ঠোঁট নড়তে থাকে, ততক্ষণ আমি তার সাথে থাকি। (অর্থাৎ আল্লাহর রহমত তার সাথে থাকে)।-মুসনাদে আহমাদ, হাদীস : ১০৯৬৮; ইবনে মাজাহ, হাদীস : ৩৭৯২
হযরত মুয়ায ইবনে জাবাল রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, জান্নাতে প্রবেশ করার পর জান্নাতবাসীরা দুনিয়ার কোনো জিনিসের জন্য আফসোস করবে না, শুধু ঐসময়ের জন্য আফসোস করবে, যা দুনিয়াতে আল্লাহর যিকির ছাড়া অতিবাহিত করেছে।-শুআবুল ঈমান, হাদীস : ৫১২; মাজমাউয যাওয়ায়েদ, হাদীস : ১৬৭৪৬
হযরত আবু সাঈদ খুদরী রা: থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহর যিকির এত বেশী করতে থাক যে, লোকেরা পাগল বলে।-মুসনাদে আহমদ ৩/৬৮, ৭১, হাদীস : ১১৬৫৩; ইবনে হিববান, হাদীস : ৮১৪
★উল্লেখ্য যে কিছু ইসলামী স্কলারদের মতে যেহেতু কুরআন হাদীসে স্পষ্ট আকারে উপরোক্ত যিকিরের আদেশ বা কথা নেই, যেহেতু এমন যিকির কুরআন হাদিসে সরাসরি আসেনি, তাই অনেক আলেমরা এটাকে বিদআত বলে আখ্যায়িত করেন।
সুতরাং তাদের মতানুসারীরা সেই মত অনুযায়ী আমল করতে পারবেন।
এতে কোনো সমস্যা নেই।
এই মতটিও আমলযোগ্য।
আরো জানুনঃ