জবাবঃ-
ফজরের নামাযে এক রা'কাত পড়ার পর সূর্যোদয় হয়ে গেলে ঐ দিনের ফজরের নামায কি হবে?ইমাম শাফেয়ী রাহ, ইমাম মালিক রাহ,আহমদ ইবনে হাম্বল রাহ এর মতে নামায হয়ে যাবে।তবে হানাফি মাযহাব মতে তখন নামায ফাসিদ হয়ে যাবে।
ইমাম সারখাসী রাহ ফজর আর আসরের এই বৈপরীত্য সম্পর্কে বলেনঃ
والفرق بينهما عندنا أن بالغروب يدخل وقت الفرض فلا يكون منافيا للفرض وبالطلوع لا يدخل وقت الفرض فكان مفسدا للفرض كخروج وقت الجمعة في خلالها مفسد للجمعة؛ لأنه لا يدخل وقت مثلها، ،
বঙ্গানুবাদঃ-ফজর আর আছরের মধ্যে পার্থক্য হল,
যে সূর্যাস্তের মাধ্যমে ভিন্ন এক ফরয নামাযের ওয়াক্ত প্রবেশ করছে,সুতরাং তা কোনো ফরয নামাযের খেলাফ বা বিরোধী হবে না।আর সূর্যোদয়ের মাধ্যমে ভিন্ন কোনো নামাযের ওয়াক্ত প্রবেশ করছে না।বিধায় সূর্যোদয়ের পর কোনো ফরয শুদ্ধ হবে না।বরং ফাসিদ হয়ে যাবে।যেমন জুমআর নামাযের সময় ওয়াক্ত চলে গেলে নামায ফাসিদ হয়ে যাবে।কেননা তখন কোনো ভিন্ন নামাযের ওয়াক্ত প্রবেশ করছে না।
ইমাম সারখাসী রাহ আরো বলেনঃ আমার কাছে ফজর আর আসরের এই পার্থক্যর বিশুদ্ধ কারণ মনে হচ্ছে এই যে,
قال والأصح عندي في الفرق أن الطلوع بظهور حاجب الشمس وبه لا تنتفي الكراهة بل تتحقق فكان مفسدا للفرض، والغروب بآخره وبه تنتفي الكراهة فلم يكن مفسدا للعصر لهذا
সূর্যোদয়ের সময় সূর্যের কিরণরাশি দ্বারা মাকরুহ দূরবিত হয়না।বরং মাকরুহ হওয়া আরো ভালভাবে প্রমাণিত হয়।সুতরাং এজন্য সূর্যোদয়ের সময় ফজরের নামায ফাসিদ বলে গণ্য হয়।আর সূর্যাস্তের মাধ্যমে সূর্যের রশ্মি খতম হয়ে যায়,যার কারণে মাকরুহ দূরবিত হয়ে যায়।সতরাং এজন্য সূর্যাস্তের সময় আছরের নামায ফাসিদ বলে গণ্য হবে না।(মাবসুত-সারখাসী-১/১৫২)
তবে সঠিক সময়ে নামায পড়াই প্রত্যেক মুসলমানের দায়িত্ব ও কর্তব্য।
যেমনঃ-আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ
ﻓَﺈِﺫَﺍ ﻗَﻀَﻴْﺘُﻢُ ﺍﻟﺼَّﻼَﺓَ ﻓَﺎﺫْﻛُﺮُﻭﺍْ ﺍﻟﻠّﻪَ ﻗِﻴَﺎﻣًﺎ ﻭَﻗُﻌُﻮﺩًﺍ ﻭَﻋَﻠَﻰ ﺟُﻨُﻮﺑِﻜُﻢْ ﻓَﺈِﺫَﺍ ﺍﻃْﻤَﺄْﻧَﻨﺘُﻢْ ﻓَﺄَﻗِﻴﻤُﻮﺍْ ﺍﻟﺼَّﻼَﺓَ ﺇِﻥَّ ﺍﻟﺼَّﻼَﺓَ ﻛَﺎﻧَﺖْ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟْﻤُﺆْﻣِﻨِﻴﻦَ ﻛِﺘَﺎﺑًﺎ ﻣَّﻮْﻗُﻮﺗًﺎ
অতঃপর যখন তোমরা নামায সম্পন্ন কর, তখন দন্ডায়মান, উপবিষ্ট ও শায়িত অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ কর। অতঃপর যখন বিপদমুক্ত হয়ে যাও, তখন নামায ঠিক করে পড়। নিশ্চয় নামায মুসলমানদের উপর ফরয নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে।(সূরা আন-নিসা-১০৩)
বিশেষকরে আছরের নামায সঠিক সময়ে পড়া বিশেষ গুরুত্ববহ।
আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ
ﺣَﺎﻓِﻈُﻮﺍْ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﺼَّﻠَﻮَﺍﺕِ ﻭﺍﻟﺼَّﻼَﺓِ ﺍﻟْﻮُﺳْﻄَﻰ ﻭَﻗُﻮﻣُﻮﺍْ ﻟِﻠّﻪِ ﻗَﺎﻧِﺘِﻴﻦَ
সমস্ত নামাযের প্রতি যত্নবান হও, বিশেষ করে মধ্যবর্তী নামাযের ব্যাপারে। আর আল্লাহর সামনে একান্ত আদবের সাথে দাঁড়াও।(সূরা বাক্বারা-২৩৮)
সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
যেহেতু সূর্যোদয়ের সময় নামায পড়লে সেই নামায ফাসিদ হয়ে যায়,তাই সময় নিতান্তই কম থাকলে ফরয নামাযকে আদায় করে নিবেন।তারপর সূর্যোদয়ের পরে সুন্নতকে কা'যা করে নিবেন।