আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
207 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (21 points)
আসসালামু আলাইকুম হুজুর
১। মেয়েদের উত্তেজনা সহিত অন্তর কেপে উঠলে হুরমতে মুসাহারাত হই।উত্তেজনা বলতে কি তার সাথে সহবাসের ইচ্ছা হওয়া বুজানো হই?

২।কারো যদি স্পর্শ লাগার সময় সহবাসের কল্পনা আসে এবং সে যদি ভাবে আল্লাহ আমি কি চিন্তা করে ফেললাম মানে সহবাসের ইচ্ছা প্রবল না হওয়া। তখন যদি উত্তেজনা ছাড়া (অইভাবে চিন্তার দরুন মানে অই চিন্তা করা ঠিক হই নায় এমন টা মনে হয়ে) অন্তর কেপে উঠে তাইলে কি হুরমতে মুসাহারাত হবে?

৩।কারো যদি হুরমতে মুসাহারাত হওয়া  নিয়ে সন্দেহ থাকে মানে যখন স্পর্শ লাগসে তখন কার অন্তরের চিন্তা মনের অবস্থা কি ছিল তা নিয়ে সন্দিহান থাকে তাহলে কি হুরমত হবে?

৪।কেও যদি হুরমতে মুসাহারাত নিয়ে মাসালা নেওয়ার সময় এমন বিবরণ দেয় জাতে হুরমত হইয়া যাবে এমন মাসালা আসে কিন্তু বাস্তবে তা ঘটে নাই।শুধু মাসালা নেওয়ার দুরুন অইভাবে মিথ্যা বিরবন দেওয়ায় কি সত্যি হুরমত হবে?

৫।হাসবেন্ড কে তালাকের অধিকার দেওয়ার বিষয় জানতে চাইলে....মানে বলসি তুমি কি ছাইড়া দিও বলছিলা নাকি ভাল না লাগলে বা মন চাইলে ছাইড়া দিও বলছিলা।তখন জিজ্ঞেস করাই  একদিন বলসে হইত একবার বলছিলাম।আবার জিগ্যেস করাই বলসে বিয়ের আগে বলছিলাম।তখন আরেক দিন আমি বলসি কিভাবে বলছিলা মানে বাক্য টা কি ছিল তুমার মনে আছে সে বলছে না মনে নাই চিন্তা কইরা দেখলাম ত।আবার আরেকদিন বলসি সত্যি কি তুমার মনে নাই কিভাবে বলছিলা তখন বলছে না মনে নাই আমার ৩দিন আগের কথাই মনে থাকে না আর এগুলা ত অনেক আগের কথা।তুমার সাথে জগরা হলে পরের দিন ই মনে থাকে না কি বলসিলাম।পরে আবার জিজ্ঞেস করছি যে আমার মনে আছে যে তুমি একদিন বলসিলা তুমি ডিভোর্স দিয়া দিও। তখন কি ভবিষ্যৎ এর অধিকার দেওয়ার নিয়তে বলসিলা..তখন হাসবেন্ড বলসে না আমি ত অধিকার দেওয়ায় বুজতাম না।আর হুজুর অই একদিন এর বলা তুমি ডিভোর্স দিয়া দিও এটা ছাড়া আর কোন  দিন বলছে নাকি আর বললেও কিভাবে বলসে কসম করে বলতে পারব না।আর হাসবেন্ড  এর ও মনে নাই উপরে ত বললাম ই।এখন তাহলে হাসবেন্ড কে আর জিজ্ঞেস না করে কি সংসার করে যাব। উপরের বর্ণনা অনুযায়ী কি কোন সমস্যা হবে বা কোন ধরনের অধিকার দেওয়া বুজাবে?

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


হাদীস শরীফে এসেছে 

أخبرنا إسماعیل بن عیاض، حدثنا سعید بن أبی عروبة، من قیس بن سعید، عن مجاهد في الرجل یفجر بالمرأة قال: إذا نظر إلی فرجها فلا یحله له أمها ولا بنتها، أخرجه محمد في الحجج أیضًا ورجاله ثقات (إعلاء السنن: ۱۱/۱۳۲

যার সারমর্ম হলো যদি কেহ কোনো মহিলার লজ্জাস্থানের দিকে দৃষ্টিপাত করে,তাহলে সেই মহিলার মেয়ে বা তার মাকে সে কোনোদিন বিবাহ করতে পারবেনা।

ই'লাউস সুনান ১১/১৩১

أخبرنا أبوحنیفة، عن حماد، عن إبراهیم، قال: إذا قبل الرجل أم أمرأته أو لمسها من شهوةٍ حرمت علیه امرأته، أخرجه محمد في الحجج ورجاله ثقات (إعلاء السنن: ۱۱/۱۳۱)

যার সারমর্ম হলো কেহ যদি তার শাশুড়িকে চুম্বন করে,অথবা উত্তেজনার সাথে স্পর্শ করে,তাহলে স্ত্রী তার উপর চিরজীবনের জন্য হারাম হয়ে যাবে।      

হুরমতে মুসাহারাত সাব্যস্ত হবার জন্য কয়েকটি শর্ত রয়েছে।

শর্তগুলো হল,
১–

সরাসরি খালি গায়ে বা এমন কাপড়ের উপর দিয়ে স্পর্শ করে, যা এতটাই পাতলা যে, শরীরের উষ্ণতা অনুভব হয়। যদি এমন মোটা কাপড় পরিধান করে থাকে যে, শরীরের উষ্ণতা অনুভূত না হয়, তাহলে নিষিদ্ধতা সাব্যস্ত হবে না।

فى الدر المختار- أو لمس ) ولو بحائل لا يمنع الحرارة
وقال ابن عبدين– ( قوله : بحائل لا يمنع الحرارة ) أي ولو بحائل إلخ ، فلو كان مانعا لا تثبت الحرمة ، كذا في أكثر الكتب (الفتاوى الشامية، كتاب النكاح، فصل فى المحرمات-3/107-108)

যার সারমর্ম হলো যদি কাপড় পরিধান অবস্থায় হয় তাহলে যদি এমন কাপড়ের উপর দিয়ে স্পর্শ করে, যা এতটাই পাতলা যে, শরীরের উষ্ণতা অনুভব হয়। 
তাহলে হুরমতে মুসাহারাত প্রমাণিত হবে।   

( যদি এমন কাপড়ের উপর দিয়ে স্পর্শ করে,যেটা শরীরের গরমি ভাব অনুভব হয়,তাহলে হুরমতে মুসাহারাত প্রমানীত হবে। ) 

অন্যথায় হুরমতে মুসাহারাত প্রমাণিত হবেনা।     

২–

স্পর্শ করলে পুরুষ মহিলা যেকোন একজনের উত্তেজনা অনুভুত হওয়া।

পুরুষের উত্তেজনা অনুভূত হওয়ার লক্ষণ হল গোপনাঙ্গ দাঁড়িয়ে যাওয়া, আর পূর্ব থেকে দাঁড়িয়ে থাকলে স্পর্শ করার পর উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়া।

وفى رد المحتار- قوله (بشهوة) اي ولو من احدهما،
وفى الدر المختار- وحدها فيهما تحرك آلته أو زيادته به يفتى
وفي امرأة ونحو شيخ كبير تحرك قلبه أو زيادته (الفتاوى الشامية، كتاب النكاح، فصل فى المحرمات-4/107-109)  
সারমর্মঃ
উত্তেজিত হওয়ার সীমা হলো লিঙ্গ দাঁড়িয়ে যাওয়া, আর পূর্ব থেকে দাঁড়িয়ে থাকলে স্পর্শ করার পর উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়া।
মহিলাদের ক্ষেত্রে কলব তথা অন্তর কেঁপে উঠা, আগে থেকেই কেঁপে উঠে থাকলে স্পর্শ করার পর কাঁপা বেড়ে যাওয়া। 

৩-
স্পর্শ,দৃষ্টিপাত করার সময় উত্তেজিত হতে হবে। 
আগে বা পরে উত্তেজিত হলে হুরমতে মুসাহারাত প্রমাণিত হবেনা।      

وفى الدر المختار- والعبرة للشهوة عند المس والنظر لا بعدهما
وفى رد المحتار- ( قوله : والعبرة إلخ ) قال في الفتح : وقوله : بشهوة في موضع الحال ، فيفيد اشتراط الشهوة حال المس ، فلو مس بغير شهوة ، ثم اشتهى عن ذلك المس لا تحرم عليه (رد المحتار-كتاب النكاح، فصل فى المحرمات-4/108)

যার সারমর্ম হলো স্পর্শ,দৃষ্টিপাত করার সময় উত্তেজিত হতে হবে। যদি স্পর্শ করার সময় কেউ উত্তেজিত না হয়, তাহলেও নিষিদ্ধতা প্রমাণিত হবে না। 

বিস্তারিত জানুনঃ 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
(০১)
উত্তেজনা বলতে তার সাথে সহবাসের ইচ্ছা হওয়া বুঝানো হয়েছে।
সহবাসের ইচ্ছার দরুন ভিতরে কামভাব এসে অন্তর কেঁপে উঠা এখানে উদ্দেশ্য। 

(০২)
তাহলে হুরমতে মুসাহারাত প্রমানিত হবেনা।

(০৩)
সন্দিহান থাকলে হুরমত সাব্যস্ত হবেনা।

(০৪)
শুধু মাসআলা নেওয়ার দরুন ঐভাবে মিথ্যা বিরবন দেওয়ায় সত্যি হুরমত হবেনা।

(০৫)
এখন তাহলে হাসবেন্ড কে আর জিজ্ঞেস না করে সংসার করে যাবেন। উপরের বর্ণনা অনুযায়ী  কোন সমস্যা হবেনা।
আপনি এখন তালাকের কোন ধরনের অধিকার প্রাপ্তা নন।

সুতরাং এগুলো নিয়ে না ভেবে নিশ্চিন্ত মনে সংসার চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ রইলো। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...