আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
246 views
in ওয়াসওয়াসা by (15 points)
আসসালামু আলাইকুম।
হুজুর,
আমার মারাত্তক আকারের ঈমান ও তালাকের ওয়াসওয়াসা আছে শায়েখ।

(১) ওয়াশরুমে যাবার পর গত মাস দেড়েক আগের একটা ঘটনা মনে পড়লো। সহবাসের সময় আমার ওয়াইফের করা একটি কারনে আমার ব্যাথা লেগেছিল। কিন্তু আজ ওয়াশরুমে এস্তেন্জা করার সময় আমার করা একটি কারনে আবার সেরকম ব্যাথা লাগায় তখন আমার আগের সেই ব্যাথা লাগার মূহুর্তের কথা মনে পড়ছিল। অনেকটা কল্পনা হবার মত। কিন্তু তখনি আমার মনে হলো আমি "তালাক" উচ্চারন করলাম মনে হয়। এমন সন্দেহ আসার পর আবার আমার মনে তালাক শব্দ আসলো। ওয়াশরুমে এমন তালাক শব্দ উচ্চারনের সন্দেহ আমার প্রায় সময়ই হয়।
আবার,  কোন কারনে ওয়াইফের উপর হালকা রাগ হলেও মনে হচ্ছে মুখ দিয়ে " তালাক দিলাম" উচ্চারন হয়ে যাবে। যেমন : আমার ওয়াইফ আমাকে ফোনে বলছে যে : তোমার মেয়ে নাচছে। কথাটা শুনে আমার রাগ হলো। তখন আমি বললাম যে, কেউ জানো ওকে নাচতে না বলে। এসব বলছিলাম আর মনে হচ্ছিল আমি যেন " তালাক দিলাম " উচ্চারন করে ফেলবো।
এসমস্ত কারনে কি তালাক পতিত হবে শায়েখ??

(২) রাতে ঘুমালে মাঝে মাঝে আমি তালাক নিয়ে বিভিন্ন স্বপ্ন দেখি। এবং তালাক উচ্চারন করলাম কিনা ভয় হয়। আজ ঘুমের ভিতরে স্বপ্নে আমি একটা লোকের সাথে বলতে চাচ্ছিলাম বলছিলাম যে, আমি আমার ওয়াইফকে তালাক দিয়ে দিয়েছি।
তখনি আমার ঘুম ভেংগে যায়, এবং আমি আমার ওয়াইফকে তালাক দিয়ে দিয়েছি এই কথাটি আমার মনে আসতে থাকে বার বার। তখন থেকে আমার সন্দেহ হচ্ছে যে, উক্ত কথাটি কি আমি উচ্চারন করে বললাম কিনা । এতে কি তালাক পতিত হবে শায়েখ?

(৩) নামাজ শেষে আমার মনের ভিতর হলো যে,  " আল্লাহ সর্বএ বিরাজমান"। এটা মনে আসার সাথে সাথে আমার হাসি চলে এসেছে। কারন আমার বিশ্বাস যে, " আল্লাহ আরশের উপর আছেন "।
হাসির আসার জন্য কি আমার ঈমানের কোন ক্ষতি হবে?

(৪) আমার বন্ধু একদিন একটা ব্যাবসা সম্পর্কে কথা বলার সময় বলছিল যে, "এই মেশিনটার দাম এত লক্ষ টাকা"।
গতকাল আমি তাকে বললাম যে, " মেশিনটার দাম এত টাকা এই ফোতোয়া আপনি পেয়েছেন কোথায় "??
ফোতোয়া শব্দ এভাবে বলার জন্য আমার ঈমানের ক্ষতি হবে শায়েখ??

(৫)" নবিদের সাথে তুলনা করা যাবে না "। এই কথাটি আমার এক বন্ধুর সাথে কথা বলতে বলতে আমি বলেছিলাম। এই কথাটি বললে কি কোন সমস্যা হবে?

(৬) এক জায়গায় "প্রতিবন্ধগতা সৃষ্টি করছে" লিখতে গেলাম। কিন্তু মনে হলো যে, "সৃষ্টি তো আল্লাহ করেন তাই সৃষ্টি শব্দ লেখা উচিত হবে না। এমন কথা মনে আসলো।
এতে কি আমার ঈমানের কোন ক্ষতি হবে শায়েখ?
না এগুলা কি ওয়াসওয়াসা?

1 Answer

0 votes
by (589,140 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
চার মাযহাব সম্ভলিত সর্ববৃহৎ ফেকহি গ্রন্থ "আল-মাওসুআতুল ফেকহিয়্যা"গ্রন্থে লিপিবদ্ধ রয়েছে যে,
نَقَل ابْنُ عَابِدِينَ عَنِ اللَّيْثِ: فِي مَسْأَلَةِ طَلاَقِ الْمُوَسْوَسِ  أَنَّهُ لاَ يَجُوزُ طَلاَقُ  الْمُوَسْوَسِ  ، قَال: يَعْنِي الْمَغْلُوبَ فِي عَقْلِهِ
وَنَقَل ابْنُ الْقَيِّمِ: إِنَّ الْمُطْلِّقَ إِنْ كَانَ زَائِل الْعَقْل بِجُنُونٍ أَوْ إِغْمَاءٍ أَوْ وَسْوَسَةٍ لاَ يَقَعُ طَلاَقُهُ،  قَال: وَهَذَا الْمَخْلَصُ مُجْمَعٌ عَلَيْهِ بَيْنَ عُلَمَ ـ اءِ الأُْمَّةِ

- رِدَّةُ الْمُوَسْوَسِ: 
٢١ - إِنْ تَكَلَّمَ الْمُوَسْوَسُ  بِكَلاَمٍ يَقْتَضِي الرِّدَّةَ لَمْ يَكُنْ فِي حَقِّهِ رِدَّةٌ. صَرَّحَ بِذَلِكَ الْحَنَفِيَّةُ، يَعْنُونَ الْمَغْلُوبَ فِي عَقْلِهِ
ইবনে আবেদিন শামী রাহ বর্ণনা করেন,ওয়াসওয়াসা গ্রস্থ ব্যক্তি -যার বিবেকবুদ্ধি লোপ পেতে বসেছে-তার তালাক গ্রহণযোগ্য নয়।
ইবনুল কাইয়িম রাহ বলেন, যদি তালাক প্রদানকারী ব্যক্তির ওয়াসওয়াসা,বেহুশি বা পাগলামির দরুণ বিবেকবুদ্ধি লোপ পেতে থাকে, তাহলে তার তালাকও গ্রহণযোগ্য হবে না। এর উপর সমস্ত উলামাদের ঐক্যমত রয়েছে।

বিবেক বুদ্ধি লোপ পেতে বসা ওয়াসওয়াসা রোগীর এমন কোনো কথা বার্তা যা মুরতাদ হওয়াকে লাযিম করে দেয়, সেই কথাবার্তার দরুণ উক্ত ওয়াসওয়াসার রোগী মুরতাদ হবে না।(আল-মাওসু'আতুল ফেকহিয়্যাতুল কোয়েতিয়্যাহ-৪৩/১৫৬)

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/835

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/1379

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনি মারাত্মকভাবে ওয়াসওয়াসা আক্রান্ত।সুতরাং
আপনার কোনো তালাকই গ্রহণযোগ্য হবে না,এবং আপনার ঈমানেও কোনো সমস্যা হবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...