আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
242 views
in ওয়াসওয়াসা by (15 points)
আসসালামু আলাইকুম শায়েখ,

(১) ভাত খেতে খেতে খাওয়ার সুন্নাত নিয়ে মনে একটা খুব খারাপ গালি আসলো। অনেক সময় আল্লাহকে নিয়ে মনে বিভিন্ন প্রকারের গালি গালাজ আসে। মনে অনেক ধরনের শিরিকি কুফুরি চিন্তা আসে। এমনকি ঘুমের ঘোরেও বিভিন্ন আজে বাজে স্বপ্ন আসে, যেমন আমি পূজা করছি। আমি পাগল হয়ে যাচ্ছি শায়েখ। আমি ভাল কিছু চিন্তা করতে পারি না। মনে প্রতিটা বিষয় নিয়ে খারাপ কথা মনে আসে। যা খুবই নোংরা। মাঝে মাঝে মনের ভিতর হয় যে, আমি আল্লাহকে পরোয়া করি না। আল্লাহ বলে কেউ নেই, এমন কথাও মনে আসে। এসব কথাগুলি উচ্চারন করে ফেলছি কিনা তাতেও মনে সন্দেহ লাগে। এগুলার জন্য কি আমার ঈমান চলে যাবে শায়েখ??

(২) খাটের চাদরে ও কোম্বলে বির্য লাগার পর তা শুকিয়ে গেলে, সেখানে শোয়া হলে কি শরিল ও জামা কাপড় পাক থাকবে?
সহবাস করার সময় বেশিরভাগ সময়ই চাদরে বির্য লেগে যায়। প্রতিদিন চাদর ধোয়াতো একটু কষ্টকর। তাই কি সাবধানতা মানলে চাদর না ধুলেও সমস্যা হবে না ?

"প্রতিদিন চাদর ধোয়া কষ্টকর" যখন আমি লিখছিলাম তখন আমার মনে রাগ হচ্ছিল।
এভাবে রাগ নিয়ে লেখার জন্য কি আমার ঈমানে চলে যাবে শায়েখ??

(৩) আমাদের এক হিন্দু স্যার আছে। স্যার একদিন সন্ধায় অফিসে আসার পর আমাদের নামাজে পড়তে যাবার কথা বলছিল। তাই আমি একজনকে আমাদের স্যারের ব্যাপারে বলছিলাম যে,  " আমাদের স্যার হিন্দু কিন্তু তিনি নামাজকে শ্রদ্ধা করে "। একথা বলার পর তখনি আমার মনের ভিতর আসলো যে, " আমাদেরও হিন্দু ধর্মকে শ্রদ্ধা করা উচিত "।এমন কথা মনে আসলো।
তারপর থেকে কথাটি বারবার মাথায় আসছে, আর আমি উচ্চারন করে বলছি যে, " একমাএ সত্য ধর্ম ইসলাম। হিন্দু ধর্ম মিথ্যা। মিথ্যা ধর্মের আবার শ্রদ্ধা কিসের? "।
এমন মনে মনে ভাবছি। কিন্তু আমার মনে একবার কিছু আসলে সেটা বার বার মনে করতেই থাকি। আর আমার মনে " হিন্দু ধর্মকে শ্রদ্ধা করা উচিত" মনে বার বার আসছে। রাতে বার বার মনে মনে বলছি যে, " হিন্দু ধর্মকে শ্রদ্ধা করি "।
-এজন্য কি আমার ঈমান চলে যাবে শায়েখ?
-আমাদের ইসলাম ধর্ম অন্য ধর্মকে কি শ্রদ্ধা করার অনুমতি দেই?

(৪) আমার এক ভাইয়ের সাথে বিদেশি ভাইদের ইনকাম বেশি সেই বিষয়ে কথা বলছিলাম।  কথা বলার সময় আমি বললাম যে, " তাদের ইনকাম বেশি হবার কারন তারা অযথা সময় নষ্ট করে না "।
এই কথা বলার পর মনে হচ্ছে, " আমি মনে হয় অযথা সময় নষ্ট করা বলতে নামাজ পড়ার কথা বললাম "। এমন কথা মনে আসছে। এতে কি আমার ঈমান চলে যাবে শায়েখ??

(৫) আমি দোকানে বসে কিছু খাচ্ছিলাম। তখন আমার বন্ধু আসছিল, তখন আমি আমার বন্ধু বাপ্পিকে বললাম যে, " বিল দেন "।
তখন আমার বন্ধু বাপ্পি দোকানদেরকে বললো বাকিটা লিখে রাখতে। এরপর আমি দোকান থেকে বেরোতো বেরোতো বাপ্পি টাকা দেবে এই  উদ্দেশ্য করে দোকানদারকে বললাম যে, "বাপ্পির নামে"।
একথা বলার পর থেকে আমার মনে হতে থাকে যে, " আমি আমার বন্ধুর নামে খাচ্ছি বা আমি আমার বন্ধুকে রিযিকদাতা মনে করলাম মনে হয়। এমন কথা মনে আসতে থাকে। আর আমার খারাপ লাগতে শুরু হয়।
এতে কি আমার ঈমান চলে যাবে শায়েখ??

(৬) একটা ওয়াজে হুজুর বললো যে, আল্লাহর গ্যানের বাইরে কি আমরা যেতে পারবো?

এটা শোনার পর আমি অত কিছু না বুঝে বললাম যে, হুম। কারন,আমি তখন মোবাইলে প্রশ্ন লিখছিলাম। তাই অতটা খেয়াল না করে "হুম" বলেছি।

এখন মনে হচ্ছে,  আমি বললাম যে - আমরা আল্লাহর গ্যানের বাইরে যেতে পারবো বললাম। এতে কি আমার ঈমান চলে যাবে??

(৭) আমার প্রচন্ড রকমের তালাকের ওয়াসওয়াসা আছে। এর আগেও আপনি বেশ কয়েকবার আমার তালাক পতিত হবে না বলেছেন। আজ রাতে মনে হলো, আমি হাতের আংগুল দিয়ে শুন্যে তালাক লেখার মত করলাম। যদিও আমি সম্পূর্ন তালাক শব্দ লিখিনি। একটা থেকে দুইটা শব্দ লিখেছি। এতে কি তালাক পতিত হবে শায়েখ??

1 Answer

–1 vote
by (590,550 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
চার মাযহাব সম্ভলিত সর্ববৃহৎ ফেকহি গ্রন্থ "আল-মাওসুআতুল ফেকহিয়্যা"গ্রন্থে লিপিবদ্ধ রয়েছে যে,
نَقَل ابْنُ عَابِدِينَ عَنِ اللَّيْثِ: فِي مَسْأَلَةِ طَلاَقِ الْمُوَسْوَسِ  أَنَّهُ لاَ يَجُوزُ طَلاَقُ  الْمُوَسْوَسِ  ، قَال: يَعْنِي الْمَغْلُوبَ فِي عَقْلِهِ
وَنَقَل ابْنُ الْقَيِّمِ: إِنَّ الْمُطْلِّقَ إِنْ كَانَ زَائِل الْعَقْل بِجُنُونٍ أَوْ إِغْمَاءٍ أَوْ وَسْوَسَةٍ لاَ يَقَعُ طَلاَقُهُ،  قَال: وَهَذَا الْمَخْلَصُ مُجْمَعٌ عَلَيْهِ بَيْنَ عُلَمَ ـ اءِ الأُْمَّةِ

- رِدَّةُ الْمُوَسْوَسِ:  
٢١ - إِنْ تَكَلَّمَ الْمُوَسْوَسُ  بِكَلاَمٍ يَقْتَضِي الرِّدَّةَ لَمْ يَكُنْ فِي حَقِّهِ رِدَّةٌ. صَرَّحَ بِذَلِكَ الْحَنَفِيَّةُ، يَعْنُونَ الْمَغْلُوبَ فِي عَقْلِهِ
ইবনে আবেদিন শামী রাহ বর্ণনা করেন,ওয়াসওয়াসা গ্রস্থ ব্যক্তি -যার বিবেকবুদ্ধি লোপ পেতে বসেছে-তার তালাক গ্রহণযোগ্য নয়।
ইবনুল কাইয়িম রাহ বলেন, যদি তালাক প্রদানকারী ব্যক্তির ওয়াসওয়াসা,বেহুশি বা পাগলামির দরুণ বিবেকবুদ্ধি লোপ পেতে থাকে, তাহলে তার তালাকও গ্রহণযোগ্য হবে না। এর উপর সমস্ত উলামাদের ঐক্যমত রয়েছে।

বিবেক বুদ্ধি লোপ পেতে বসা ওয়াসওয়াসা রোগীর এমন কোনো কথা বার্তা যা মুরতাদ হওয়াকে লাযিম করে দেয়, সেই কথাবার্তার দরুণ উক্ত ওয়াসওয়াসার রোগী মুরতাদ হবে না।(আল-মাওসু'আতুল ফেকহিয়্যাতুল কোয়েতিয়্যাহ-৪৩/১৫৬)

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/835

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/1379

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনার কোনো তালাক গ্রহণযোগ্য নয়,এবং আপনার ঈমানেও কোনো সমস্যা হবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (590,550 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...