আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
152 views
in সালাত(Prayer) by (36 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ
১. গতকাল রাতে আমি এশার নামাজ নিয়ে আমি খুব সন্দেহে পড়ে যায়। আমি কাল রাতে ৯:১৫ এর সময় এশার নামাজ পড়া শুরু করি। ৯:১৫- ৯:৪৫ এইসময়টুকু আমি বারবার নামাজ ভাঙে দিই। একবার ৩ রাকাত পড়ে,,,একবার ২ রাকাত পড়ে এইরকম। কারণ আমার বারবার ওয়াসওয়াসা আসছিল। একবার মাখরাজ নিয়ে,, একবার সিজদা নিয়ে,,,আবার নামাজের মধ্যে একটু ঝিম ঝিম ঘুম আসছিল। আবার আমি ৯:৪৫ থেকে নামাজ পড়া শুরু করি। আবার সিজদা নিয়ে সন্দেহ হয় তারপর একদিকে সালাম ফিরায়ে সাহু সিজদা দিই।  সাহু সেজদা দিতে গিয়ে আবার সিজদা নিয়ে সন্দেহ হয়। আমি জানি না যে সিজদা নিয়ে সন্দেহ হলে একদিকে সালাম ফিরায়ে সাহু সেজদা দিতে হয় না। আজ সকালে আপনাদের পেজে দেখছি।
যাইহোক আমি আবার নামাজ আদায় করা শুরু করলাম।  আবার নামাজে প্রথমে সিজদা নিয়ে সন্দেহ হয়। তারপর এই একই নামাজে আবার রাকাত সংখ্যা নিয়ে সন্দেহ হয়।  আবার আমি একদিকে সালাম ফিরায়ে সাহু সেজদা দিয়ে নামাজ শেষ করি। এরপর আর নামাজ পড়ি নি। আমার নামাজ কি হয়েছে?  নাকি আবার আদায় করতে হবে???  আদায় করলে কি ঐ নামাজ আদায় না করার গুনাহ মাফ হবে। নাকি আমাকে আবার তওবা করতে হবে??  আদায় করলে কখন আদায় করব??
২. নামাজে কখন সালামের আগে সাহু  সিজদা দিতে হবে কখন পরে দিতে হবে???  একটু বিস্তারিত জানাবেন। সাহু সেজদা দেওয়ার সঠিক নিয়ম টা একটু বলবেন।

৩. আমার এখন পড়াশোনার অনেক চাপ।  পড়াশোনার চাপে এখন আমি ঠিক মতো নফল ইবাদত করতে পারছি না। পড়াশোনা না করলে আম্মু বাকবকি আর অশান্তি করছে। এইদিকে সকাল থেকে আমার প্রাইভেট পড়া শুরু হয়ে যায়।  সেই পড়া রেডি করতে গিয়ে আমি দিনে নফল ইবাদত করতে পারছি না দিনে  যেমন : চাশত, ইশরাক, কুরআন তিলাওয়াত ইত্যাদি।  এখন আমি যদি রাতে ৩ ঘণ্টা পড়তে পারি তাহলে দিনে আর বেশি পড়া লাগবে না। তখন আমি দিনের বেলা ইবাদত করতে পারবো। এখন রাতেও আমি বেশি সময় পাচ্ছি না। কারণ এশার নামাজের পর আমি তাড়াতাড়ি ঘুমায়ে পড়ছি সুন্নাহ মেনে। এতে আমার দিনে নফল ইবাদতের কমতি হয়ে যাচ্ছে।  এখন আমি যদি এশার নামাজ টা  একটু আগে আগে পড়ে ফেলি আর এশার পরে ৩ ঘণ্টা মতো পড়ি তাহলে পড়া রেডি করা সম্ভব। এতে আমি দিনে নফল ইবাদত করতে পারছি।  এখন আমি যদি এশার নামাজের পর  রাত জেগে পড়ি তাহলে কি সুন্নত বিরোধী কাজ হবে??

৪.রাসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর অভ্যাস ছিল না খাওয়ার পরপরই পানি খাওয়ার।’
.
ইয়াহ্‌ইয়া (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘আমি বুশাইরকে সুওয়াইদ (রদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণনা করতে শুনেছি, তিনি বলেন, ‘আমরা রাসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে খাইবারের দিকে রওয়ানা হলাম। আমরা যখন সাহ্‌বা নামক জায়গায় পৌছলাম—ইয়াহ্‌ইয়া বলেন, এ স্থানটি খাইবার থেকে এক মনযিল দূরে—তিনি খাবার নিয়ে আসতে বললেন। কিন্তু ছাতু ব্যতীত অন্য কিছু আনা হলো না। আমরা তাই মুখে দিয়ে নাড়াচাড়া করে খেলাম। তিনি পানি আনতে বললেন এবং কুলি করলেন, আমরাও কুলি করলাম। এরপর তিনি আমাদের নিয়ে মাগরিবের সলাত আদায় করলেন কিন্তু ওজু করলেন না।’
এই হাদিসটা কি সহিহ? অর্থাৎ খাওয়ার সাথে সাথে পানি না খেয়ে দেরি করে পানি খাওয়া কি সুন্নত? দেরি বলতে কি এক দেড় ঘন্টা পরে খাওয়া সুন্নাত নাকি ১৫-২০ মিনিট পরে খাওয়া কি সুন্নত?

1 Answer

0 votes
by (574,050 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


(০১)
আপনার নামাজ আদায় হয়েছে।
,
আপনার আসলে এতকিছুর প্রয়োজন ছিলোনা।
আপনার নামাজ ভেঙ্গে দেয়াই উচিত হয়নি।
প্রথম নামাজেই আপনার সন্দেহ হলে যেই বিষয়ে সন্দেহ হয়েছে,প্রবল ধারনার উপর আমল করবেন।
কোনোদিকে প্রবল ধারনা না হলে আপনার যেই রুকন নিয়ে সন্দেহ হয়েছে, কম সংখ্যক রুকন ধরে পুনরায় সেটি আদায় করে শেষে সেজদায়ে সাহু দিবেন।

তাহলেই নামাজ হয়ে যাবে। 

(০২)
শেষ বৈঠকে তাশাহুদ পাঠ করা ডান দিকে সালাম ফিরিয়ে ২ টি সেজদাহ আদায় করতে হবে।
অতঃপর তাশাহুদ,দরুদ শরীর,দোয়ায়ে মাছুরা পাঠ করে দুই দিকে সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করে দিতে হবে।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

عَنْ ثَوْبَانَ، عَنِ النَّبِيِّ صلي الله عليه وسلم قَالَ " لِكُلِّ سَهْوٍ سَجْدَتَانِ بَعْدَ مَا يُسَلِّمُ "

সাওবান (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সালাতের যেকোন ভুলের জন্য সালাম ফিরানোর পর দু‘টি সিজদা্ করতে হয়।
(আবু দাউদ ১০৩৮.ইবনু মাজাহ (অধ্যায় : সালাত ক্বায়িম, অনুঃ সালামের পর সাহু সিজদা করা, হাঃ ১২১৯), আহমাদ (৫/২৮০), বায়হাক্বী (২/৩৩৭)

★সুতরাং আপনি শেষ বৈঠকে তাশাহুদ পাঠ করার পর ডান দিকে সালাম ফিরাবেন অতঃপর দুটি সেজদাহ আদায় করে তাশাহুদ, দরুদ শরীফ, দোয়ায়ে মাছুরা পাঠ করবেন।

(০৩)
আপনি যদি ইশার নামাজের পর  রাত জেগে পড়েন, তাহলে সুন্নত বিরোধী কাজ হবেনা।

(০৪)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

وَعَن سُوَيْد ابْن النُّعْمَان: أَنَّهُ خَرَجَ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَامَ خَيْبَرَ حَتَّى إِذَا كَانُوا بالصهباء وَهِي أَدْنَى خَيْبَرَ صَلَّى الْعَصْرَ ثُمَّ دَعَا بِالْأَزْوَادِ فَلَمْ يُؤْتَ إِلَّا بِالسَّوِيقِ فَأَمَرَ بِهِ فَثُرِيَ فَأَكَلَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَكَلْنَا ثُمَّ قَامَ إِلَى الْمَغْرِبِ فَمَضْمَضَ وَمَضْمَضْنَا ثمَّ صلى وَلم يتَوَضَّأ. رَوَاهُ البُخَارِيّ

সুওয়াইদ ইবনু নু‘মান (রাঃ)থেকে বর্ণিত। তিনি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে খায়বার যুদ্ধে গিয়েছিলেন। তাঁরা খায়বারের অতি নিকটে ‘সহবা’ নামক স্থানে যখন পৌঁছলেন, তখন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘আসরের সালাত আদায় করলেন। অতঃপর আহার পরিবেশন করতে বললেন, কিন্তু ছাতু ছাড়া আর কিছু পাওয়া গেল না। তিনি নির্দেশ দিলেন। তাই পানি দিয়ে ছাতু নরম করা হলো। এ ছাতু তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নিজেও খেলেন আমরাও খেলাম। তারপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মাগরিবের সালাতের জন্য দাঁড়ালেন এবং শুধু কুলি করলেন। আর আমরাও কুলি করলাম। এ অবস্থায় তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সালাত আদায় করলেন, অথচ নতুনভাবে অযু করলেন না।
(বুখারী ২০৯, (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২৭৬০, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২৭৭০,মিশকাতুল মাসাবিহ ৩০৯)

★উক্ত হাদীসের হুকুম সহীহ। 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
খাওয়ার পরে পানি না করাই সুন্নাত,এর বিপরীত করলে সুন্মাহর খেলাফ হবে,বা গুনাহ হবে,বিষয়টি এমন নহে। 

তবে কিছু ফুকাহায়ে কেরামগন ও ডাক্তারগনদের মতে খাওয়ার আগে পানি পান করা স্বাস্থসম্মত, আর খাওয়ার পর পানি পান করাটা ক্ষতিকর। খাওয়ার কমপক্ষে ১৫ মিনিট পর পানি পান করা উচিত। তাই স্বাস্থসম্মত দিক থেকে আপনি খাওয়ার ১৫ মিনিট পর পানি করার চেষ্টা করবেন। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

+1 vote
1 answer 975 views
...