আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
131 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (25 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ।
একটা ঘটনা দিয়ে শুরু করতে হবে, একজন ব্যাক্তির প্রশ্ন।

সে তার জীবনটা হেদায়াতের পর পুরোপুরি পরিবর্তন করে ফেলেছে আল্লাহর জন্য, এবং যত গায়রে মাহেরাম বন্ধু ছিল তার সবাইকে আল্লাহর জন্য ছেড়ে দিয়েছে। তবে আল্লাহ তাকে এক কঠিন পরীক্ষায় ফেলেছে অর্থাৎ সে যাদেরকে ছেড়ে আসছে তাদের সাথে ওর কলেজ জীবন শুরু অর্থাৎ একই ক্লাসরুমে একই ছাদের নিচে টানা ৭ ঘন্টা সময় থাকা লাগে। হ্যাঁ তাদের থেকে দূরেই থাকা যায় কিন্তু আগের জীবনে থাকা এক গায়রে মাহরাম বন্ধু ছিল তার, সে বন্ধুটা তাকে পছন্দ করত চক্ষু যিনা হিসেবে অর্থাৎ ভালোলাগে এই হিসেবে বিয়ে করবে এমন না। কিন্তু মেয়েটা তেমন গুরুত্ব দিত না তাকে একজন বন্ধুর চোখেই দেখত হেদায়েত আসার আগে। মেয়েটার হেদায়াত আসার পর ওর সাথে বন্ধুত্ব চিরতরে মুছে দিয়েছিল কিন্তু এখন অই ছেলের সাথে একই ক্লাসে এখন অই মেয়েটাও পড়ে। ইন্টার ১ম বর্ষে ছেলেটাও মেয়েটার দিকে তাকাত আর মেয়েটাও এমনেই তাকাত, মেয়েটার ছেলেটার প্রতি কোন আকর্ষণ ছিল না তখন, এই জিনিসটা ইচ্ছাকৃতভাবে হতো তা না, যেমন ক্লাসে কোন ঘটনা ঘটল হাসির তখন হাসতে হাসতে একজন আরেকজনের চোখে চোখ পড়ে যেত। আর ভাগ্যও এমন যে ওদের eye contact হয়েই যেত প্রায়। এমন হতে হতে ইন্টার ২য় বর্ষে আসল মেয়েটা এখন বুঝতে পারল অর ছেলেটার প্রতি দুর্বলতা কাজ করছে মানে ওর দিকে না তাকিয়ে থাকতেই পারে না আর ব্যাপারটা এমন যে ওই ছেলের প্রতি এমনেই একটা আকর্ষণ কারন ছেলেটাও সুদর্শন। অকে কখনো বিয়ে করবে এমন চিন্তা আসে না কারন ছেলেটা দ্বীনদার না, যদি দ্বীনদার হতো মেয়েটা বিয়ের জন্য প্রস্তাব দিত ছেলেটাকে কিন্তু ছেলে একেবারেই দ্বীনহীন। মেয়েটা প্রতিদিন কলেজে চোক্ষু যিনা করে এসে নামাজে আল্লাহর সামনে কান্নাকাটি করে আর স্বচ্ছ মনে তওবা করে। অনেক চেষ্টাও করে কিন্তু কলেজে তাকে যাওয়াই লাগবে তাই ওর সাথে দেখাই হয় প্রতিদিন আর এতোক্ষন একটা ক্লাস রুমে থাকা তাই চোক্ষু যিনা হয়েই যায়। সে এই গুনাহ থেকে বাচতে চায় আর একবার এমনও হয়েছে যে এতো কান্নাকাটি করছে এই গুনাহের জন্য যে শরীর দুর্বল হয়ে গেছে জ্বর চলে আসছিল। তারপর সেইদিনের পরের দিন মনে হয় তার দোয়া কবুল হয়ছে হঠাৎ করেই পরের দিন ছেলেটা আর মেয়েটার দিকে তাকায় না, কেমন যেন পালিয়ে বেরাচ্ছিল, মেয়েটা বুঝতে পারল তার দোয়া কবুল হইছে। তারপর সেদিনের ছেলেটার ব্যবহারেও আবার মেয়েটা ভেংগে পরে এই ভেবে যে আমাকে ইগনর করছে তাই তার মন খারাপ ছিল কোন কাজে মন দিতে পারছিল না,কান্নাও চলে আসছিল কিন্তু তার বিবেক আবার খুশি ছিল যে গুনাহ থেকে বাচা গেল।পরেরদিন থেকে আবার ছেলেটা মেয়েটার দিকে তাকানো শুরু করে সেম মেয়েটাও করে যেহেতু ওর প্রতি একটা দুর্বলতা সৃষ্টি হয়ে গেছিল তাই। ব্যাপারটা মেয়েটার জন্য অনেক অনেক অনেক কষ্টকর, ও মানসিক সমস্যায় আছে।

এখন প্রশ্ন হলো মেয়েটা এই সিচুয়েশন থেকে কিভাবে বাচাবে নিজেকে? ধাপে ধাপে তাকে সুধরাতে হবে যাতে তার জন্য তা সহজ হয় সেটা। কিভাবে তা করবে। গুনাহ করলেও আল্লাহর ভয়ে কান্না করে আবার তার দিকে না তাকালেও সে দুর্বল হয়ে যায় কাজে মন বসাতে পারে না।

উল্লেখ্য মেয়েটার স্বপ্ন সে একজন আলেমা হবে। তাই তার এই গুনাহ তার স্বপ্ন পরিপূর্ণ হতে বাধা দেয়, সে প্রতি নিয়ত ভাবে যে আল্লাহ মনে হয় তাকে অপছন্দ করছেন, আল্লাহকে সে অসন্তুষ্ট করছে, সে নিজের কান্না আর থামাতে পারে না এইসব ভেবে।  আবার সে বাড়ির ছোট সদস্য,  তার বাসায় বড় অবিবাহিত বোন আছে তার বিয়ে হচ্ছে না তাই ওর বিয়েও কেউ দিচ্ছে না।  ও এই গুনাহ থেকে বাচার জন্য পরিবারকে ইংগিতে বুঝিয়েছে সে বিয়ে করতে চায়। তারপরেও তাকে বিয়ে দিচ্ছে না আর এইদিকে তার চরিত্র রক্ষা করা নিয়ে সে সমস্যায় পড়ে গেছে। সে সুরা ফুরকান এর ৭২ নাম্বার আয়াত পড়ে, আল্লাহর কাছে দোয়াও করছে তাহাজ্জুদে তাড়াতাড়ি বিয়ে হয়ে যেন যায় কিন্তু জানি না কেন হচ্ছে না। আল্লাহই সর্বোত্তম পরিকল্পনাকারী।

 আবার তার আশেপাশে এমন কোন বান্ধুবি নেই দ্বীনদার যে তাকে বিভিন্ন গুনাহ থেকে বাচাবে।

সে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে গেছে কারন সে এই গুনাহ নিয়ে অন্য কারোর কাছে কিছু বলতেও পারছে না এই ভেবে যে " আমি যদি গুনাহ ফাস করে দেই তাহলে কেয়ামতের ময়দানে তার বিপক্ষে একজন সাক্ষী রেখে গেল" মোট কথা সে দম বন্ধ করা পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।

▪️নিজেকে কিভাবে সামাল দেওয়া যায় ধাপে ধাপে সহজ পদ্ধতি একটু জানান দয়া করে শায়েখ। আর অনুরোধ রইল শায়েখ সে মেয়েটার জন্য একটু দোয়া করে দিবেন যেন আল্লাহ তার বিয়ে দ্রুত দিয়ে দেয় তার চরিত্র যাতে হেফাজত হয় আর এই গুনাহ যাতে ছাড়তে পারে।

1 Answer

0 votes
by (587,340 points)
ওয়া!আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত
قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ اللَّهَ كَتَبَ عَلَى ابْنِ آدَمَ حَظَّهُ مِنَ الزِّنَا، أَدْرَكَ ذَلِكَ لاَ مَحَالَةَ، فَزِنَا العَيْنِ النَّظَرُ، وَزِنَا اللِّسَانِ المَنْطِقُ، وَالنَّفْسُ تَمَنَّى وَتَشْتَهِي، وَالفَرْجُ يُصَدِّقُ ذَلِكَ كُلَّهُ وَيُكَذِّبُهُ»
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “নিশ্চয় আল্লাহ বনি আদমের উপর যতটুকু যিনা লিখে রেখেছেন সে তা করবেই; এর থেকে কোন নিস্তার নেই। চোখের যিনা হচ্ছে- দেখা; জিহ্বার যিনা হচ্ছে- কথা, অন্তর কামনা করে ও উত্তেজিত হয় এবং যৌনাঙ্গ সেটাকে বাস্তবায়ন করে অথবা বাস্তবায়ন করে না।(সহীহ বুখারী-৬২৪৩)

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/4094


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
ঐ দ্বীনি বোন আল্লাহর কাছে সদাসর্বদা গোনাহ থেকে বেঁচে থাকার আকুতি মিনতি করবে। নিজে হেজাব পরিধান করে কলেজে যাবে।কলেজ ক্যাম্পাসে সর্বদা নিজের মুখকে ঢেকে রাখবে। যথাসম্ভব কলেজে যাওয়াকে কমিয়ে নিবে। এবং অতি দ্রুত ঐ কলেজকে পরিত্যাগ করে ভিন্ন কোনো কলেজে গিয়ে ভর্তি হবে।  এটাই তার জন্য কল্যানকর হবে।

আল্লাহ ঐ বোনকে সঠিক রাস্তা দেখার ও গোনাহমুক্ত থাকার তাওফিক দান করেন।,


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...