জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
(০১)
শরীয়তের বিধান হলো শরয়ী সফরের দূরত্বে কোন স্থানে গিয়ে সেখানে যদি কমপক্ষে পনের দিন থাকার নিয়ত না করে, তাহলে কসর পড়তে হবে। ১৫ দিন বা তার চেয়ে বেশি দিন থাকার নিয়ত করলে কসর করতে পারবে না।
৭৮ কিলোমিটার হল সফরের দূরত্ব। এর কম নয়। সুতরাং কেউ যদি ৭৮ কিলোমিটার দূরত্বের সফরের নিয়তে বের হয় কেবল সেই ব্যক্তি কসর পড়তে পার। এরচে’কম দূরত্বের সফরের জন্য কসর পড়া জায়েজ নয়।
বিস্তারিত জানুনঃ-
সেক্ষেত্রে চার রাকাত বিশিষ্ট ফরজ নামাজ কসর করতে হবে। কুরআন মাজিদে ইরশাদ হয়েছে,
وَإِذَا ضَرَبْتُمْ فِي الْأَرْضِ فَلَيْسَ عَلَيْكُمْ جُنَاحٌ أَنْ تَقْصُرُوا مِنَ الصَّلَاةِ
‘আর যখন তোমরা যমীনে সফর করবে, তখন তোমাদের নামাজ কসর করাতে কোনো দোষ নেই।’ [সূরা নিসা, আয়াত: ১০১]
হাদিস শরীফে এসেছে,
عِيسَى بْنُ حَفْصِ بْنِ عَاصِمِ بْنِ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ عَنْ أَبِيهِ قَالَ صَحِبْتُ ابْنَ عُمَرَ فِى طَرِيقٍ – قَالَ – فَصَلَّى بِنَا رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ أَقْبَلَ فَرَأَى نَاسًا قِيَامًا فَقَالَ مَا يَصْنَعُ هَؤُلاَءِ قُلْتُ يُسَبِّحُونَ. قَالَ لَوْ كُنْتُ مُسَبِّحًا أَتْمَمْتُ صَلاَتِى يَا ابْنَ أَخِى إِنِّى صَحِبْتُ رَسُولَ اللَّهِ – ﷺ – فِى السَّفَرِ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ وَصَحِبْتُ أَبَا بَكْرٍ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ وَصَحِبْتُ عُمَرَ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ تَعَالَى وَصَحِبْتُ عُثْمَانَ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ تَعَالَى وَقَدْ قَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ (لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِى رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ
ইবনে উমর রাযি. বলেন, নিশ্চয় আমি রাসুলুল্লাহ ﷺ এর সাথে সফর করেছি, তিনি মৃত্যুবরণ করার আগ পর্যন্ত সফরে ২ রাকাতের বেশি পড়েন নি। আমি আবু বকর রাযি. এর সাথেও সফর করেছি, তিনিও আমরণ সফরে ২ রাকাতই পড়েছেন। আমি উমর রাযি. এর সাথেও সফর করেছি তিনি মৃত্যু পর্যন্ত সফরে ২ রাকাতের বেশি পড়েন নি। আমি উসমান রাযি. এর সাথেও সফর করেছি, তিনিও মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সফরে ২ রাকাতের বেশি পড়েন নি। আর আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, আমি তোমাদের জন্য রাসুলুল্লাহ ﷺ এর মাঝে রেখেছি উত্তম আদর্শ। (মুসলিম ১৬১১)
আরো জানুনঃ
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নের বিবরণ মতে আপনারা যদি নিশ্চিত হোন যে ১৫ দিন বা তার চেয়ে বেশি থাকতে হবে,যেমনটি প্রশ্নে উল্লেখ রয়েছে,তাহলে সেক্ষেত্রে ইন্ডিয়াতে গিয়ে কসর আদায় করা যাবেনা।
পূর্ণ নামাজ আদায় করতে হবে।
হ্যাঁ যদি নিশ্চিত ভাবে ১৫ দিনের কম থাকার নিয়ত হয়,সেক্ষেত্রে কসর আদায় করতে হবে।
(০২)
না,এভাবে টানা একসাথে নামাজ আদায় করা যাবেনা।
কসর নামাজও আদায় করা যাবেনা।
আপনি জোহরের শেষ ওয়াক্তের দিকে জোহর নামাজ আর আসরের শুরুর ওয়াক্তে আসরের নামাজ দুটি একসাথে পড়তে পারবেন।
এর পর মাগরিবের নামাজ মাগরিবের ওয়াক্তে আদায় করে ঈশার নামাজ দেড়িতে আদায় করতে পারবেন।
কেননা ঈশার ওয়াক্ত ফজরর ওয়াক্তের আগ পর্যন্ত থাকে।
(০৩)
দুগ্ধপানকারিনী মায়ের দুইটি অবস্থা হতে পারে:
১. রোজা রাখার দ্বারা তার স্বাস্থ্যের উপর কোন প্রভাব না পড়া। অর্থাৎ তার জন্য রোজা রাখাটা কষ্টকর না হওয়া এবং তার সন্তানের জন্যেও আশংকাজনক না হওয়া। এমন নারীর উপর রোজা রাখা ফরজ; তার জন্য রোজা ভাঙ্গা নাজায়েয।
২. রোজা রাখলে তার নিজের স্বাস্থ্য অথবা সন্তানের স্বাস্থ্যের ক্ষতি হওয়ার আশংকা করা এবং তার জন্যে রোজা রাখাটা কষ্টকর হওয়া। এমন নারীর জন্য রোজা না-রাখা জায়েয আছে; তিনি এ রোজাগুলো পরবর্তীতে কাযা পালন করবেন।
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে বাচ্চা যদি বুকের দুধ খায়,সেক্ষেত্রে রোযা রাখলে যদি নিজের স্বাস্থ্য অথবা সন্তানের স্বাস্থ্যের ক্ষতি হওয়ার আশংকা হয় এবং আপনার জন্যে রোজা রাখাটা কষ্টকর হয়,সেক্ষেত্রে রোযা না রেখে পরবর্তীতে কাজা আদায় করতে পারবেন।
নতুবা রোযা আদায় করতে হবে।
(০৪)
আপনি যদি পূর্ণ পর্দা মেইনটেইন করে চাকুরী করতে পারেন,সেক্ষেত্রে সন্তানের হক আদায়ের শর্তে ও পূর্ণ শরীয়ত মানার শর্তে চাকুরী করতে পারেন।
এর বিপরীত হল চাকুরী না করার পরামর্শ থাকবে।
(০৫)
আপনি স্বামীর বিরোধীতা সত্ত্বেও চাকুরী ছাড়লে সেক্ষেত্রে আপনার ওযর দেখতে হবে।
আপনি যদি পূর্ণ পর্দা মেইনটেইন করতে না পারার দরুন বা বাচ্চার হক পূর্ণ ভাবে আদায় করতে না পারার দরুন চাকুরী ছেড়ে দেন,সেক্ষেত্রে গুনাহ হবেনা।
এমতাবস্থায় আপনার স্বামী কঠিন ভাবে চাপ দিলে সংসার চালিয়ে যাওয়া অসম্ভব হয়ে গেলে নিজেকে নিজেক তালাক প্রদান করতে পারবেন।
আর যদি উপরোক্ত সমস্যা গুলি ব্যাতিত বিনা ওযরে চাকুরী ছেড়ে দেন,সেক্ষেত্রে স্বামীর আদেশ না মানার দরুন গুনাহ হবে।
এমতাবস্থায় তালাক গ্রহন করলেও গুনাহ হবে।