আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
256 views
in পবিত্রতা (Purity) by (2 points)
closed by

আসসালামু আলাইকুম ওয়ারহমাতুল্লাহ।
আমি চাকরিজীবী। সপ্তাহে দু-একদিন বাড়িতে যাওয়া হয় তাও রাতে। তাই আমাদের জুমাবার ছাড়া দিনে সহবাস করার খুব একটা সুযোগ থাকে না। কিন্তু রাতে সহবাস করে গোসল করলে স্ত্রীর সমস্যা হয়। ঠাণ্ডা লেগে যায়। বাচ্চারও ঠাণ্ডাজনিত সমস্যা দেখা দেয়। এমনকি গরম পানি দিয়ে গোসল করলেও।

উস্তায, আমার দুইটা বিষয় নিয়ে সংশয়। দয়া করে, উত্তর দিলে খুব উপকৃত হবো।

১. উক্ত ওজরের কারণে কি আমার স্ত্রী তায়াম্মুম করে ফজর নামাজ পড়তে পারবে?
২. যদি এই অবস্থায় তায়াম্মুম করা জায়েজ হয়, তবে, ‘এই ওজর দেখিয়ে তায়াম্মুম করে ফজর নামাজ পড়া যাবে, গোসল করা লাগবে না।’ এই চিন্তা মাথায় রেখে রাতে সহবাস করলে কি গুনাগার হবো আমরা?

closed

1 Answer

0 votes
by (574,050 points)
selected by
 
Best answer
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

أَنَّ عَمْرَو بْنَ العَاصِ: ” أَجْنَبَ فِي لَيْلَةٍ بَارِدَةٍ، فَتَيَمَّمَ وَتَلاَ: {وَلاَ تَقْتُلُوا أَنْفُسَكُمْ إِنَّ اللَّهَ كَانَ بِكُمْ رَحِيمًا} [النساء: 29] فَذَكَرَ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَلَمْ يُعَنِّفْ “

বর্ণিত আছে যে,এক শীতের রাতে আমর ইবনুল আস (রা) জুনুবী হয়ে পড়লে তায়াম্মুম করলেন। আর (এ প্রসঙ্গে) তিনি এই আয়াত তিলাওয়াত করলেনঃ তোমরা নিজেদের হত্যা করো না, নিশ্চই আল্লাহ তোমাদের প্রতি পরম দয়ালু। (৮:২৯) [সহীহ বুখারী-১/৪৯]

কেউ যদি পানি ব্যবহারে অক্ষম হয়– পানি না থাকার কারণে কিংবা পানি থাকলেও এর ব্যবহারে রোগের ক্ষতি হতে পারে কিংবা তীব্র ঠাণ্ডার কারণে (তার কাছে পানি গরম করার মত কিছু না থাকলে); তাহলে সে ব্যক্তি পানি দিয়ে গোসল করার পরিবর্তে মাটি দিয়ে তায়াম্মুম করতে পারেন। 

অসুস্থ ব্যক্তি পানি ব্যবহার করার ফলে যদি তার মৃত্যু ঘটা, কিংবা রোগ বেড়ে যাওয়া কিংবা আরোগ্য লাভ বিলম্ব হওয়ার আশংকা থাকে সেক্ষেত্রে তিনি তায়াম্মুম করবেন।
,
আমর বিন আস (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: ‘যাতুস সালাসিল’ এর অভিযানে এক ঠাণ্ডার রাতে আমার স্বপ্নদোষ হয়ে গেল। আমি আশংকা করলাম, আমি যদি গোসল করি তাহলে ধ্বংস হয়ে যাব। তাই আমি তায়াম্মুম করলাম। এরপর আমার সাথীদেরকে নিয়ে ফজরের নামায আদায় করলাম। আমার সাথীরা বিষয়টি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে উল্লেখ করলে তিনি বললেন: হে আমর! তুমি কি জুনুবী (গোসল ফরজ হওয়া) অবস্থায় তোমার সাথীদের নিয়ে নামায পড়েছ? তখন আমি তাঁকে জানালাম কি কারণে আমি গোসল করিনি এবং আমি আরও বললাম: আমি শুনেছি আল্লাহ্ বলেন: ‘তোমরা নিজেদেরকে হত্যা করো না। নিশ্চয় আল্লাহ্ তোমাদের প্রতি দয়ালু’ [সূরা নিসা, আয়াত: ২৯] তখন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হেসে দিলেন, কোন কিছু বললেন না।[সুনানে আবু দাউদ (৩৩৪), আলবানী ‘সহিহ সুনানে আবু দাউদ’ গ্রন্থে হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন]
,
হাফেয ইবনে হাজার বলেন: এ হাদিসে দলিল রয়েছে যে, পানি ব্যবহার করলে যে ব্যক্তি মারা যাওয়ার আশংকা রয়েছে; সেটা ঠাণ্ডার কারণে হোক কিংবা অন্য কোন কারণে হোক– তার জন্য তায়াম্মুম করা জায়েয। তায়াম্মুমকারীর জন্য ওজুকারীদের ইমাম হওয়াও জায়েয।[ফাতহুল বারী (১/৪৫৪)]

আরো জানুনঃ- 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
(০১)
প্রশ্নের বিবরণ মতে উক্ত ওযরের কারনে আপনার স্ত্রী তায়াম্মুম করে ফজর নামাজ পড়তে পারবেনা।

এক্ষেত্রে বিকল্প পদ্ধতি অবলম্বন করা যেতে পারে।
সেটি হলো, ফজরের ওয়াক্ত আসা মাত্র আপনার স্ত্রী ফজরের নামাজ পড়ে নিবে,তারপর সহবাস করবেন।
সেক্ষেত্রে তিনি দুপুরে ফরজ গোসল করে নিবেন।
তাহলে আর ঠান্ডা জনিত সমস্যা হবেনা।

অথবা ফজরের পরেও সহবাস করতে পারেন।

(০২)
এই চিন্তা মাথায় রেখে রাতে সহবাস করলে গুনাহগার হবেননা,তবে প্রশ্নের বিবরণ মতে আপনার স্ত্রীর জন্য তায়াম্মুম করে ফজরের নামাজ আদায় করা জায়েজ হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (2 points)
জাযাকাল্লাহু খাইর, উস্তায। 
উস্তায, আবেগের বশবর্তী হয়ে বা ভুলে গিয়ে যদি রাতে সহবাস হয়েই যায়, তাহলে আমাদের করণীয় কি হবে? 
by (574,050 points)
এক্ষেত্রে আপনার স্ত্রী গরম পানি দিয়ে গোসল করলেও কঠিন ও মারাত্মক অসুস্থ হয়ে যাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা করলে ও এই বিষয়ে বিজ্ঞ ডাক্তারের কথাও এমন হয় যে এতে কঠিন ও মারাত্মক অসুস্থ হবে,তাহলে তায়াম্মুম করবে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...