জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم
(০১)
صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ
'সাল্লি আলা মুহাম্মাদিন' এই দরুদ টার অর্থ
(ইয়া আল্লাহ!) আপনি মুহাম্মদ সাঃ এর ওপর দুরুদ, রহমত, প্রশংসা নাজিল করুন।
,
(০২)
শরীয়তের বিধান হলো মহিলাদের জন্য পর পুরুষের চেহারা দেখা, যদি আকৃষ্ট হবার শংকা না থাকে,ফেতনার আশংকা না থাকে, তাহলে জায়েজ আছে।
কিন্তু আকৃষ্ট হবার শংকা থাকলে জায়েজ নয়,হারাম।
তবে শংকা না থাকলেও দেখা অনুত্তম।
وَقُل لِّلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ [٢٤:٣١
ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে। [সূরা নূর-৩১]
عَنْ عَلِيٍّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ أَنَّهُ كَانَ عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وسلم، فَقَالَ: أَيُّ شَيْءٍ خَيْرٌ لِلْمَرْأَةِ؟ فَسَكَتُوا، فَلَمَّا رَجَعْتُ قُلْتُ لِفَاطِمَةَ: أَيُّ شَيْءٍ خَيْرٌ لِلنِّسَاءِ؟ قَالَتْ: أَلَّا يَرَاهُنَّ الرِّجَالُ، فَذَكَرْتُ ذَلِكَ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: «إِنَّمَا فَاطِمَةُ بِضْعَةٌ مِنِّي» رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا
হযরত আলী রাঃ থেকে বর্ণিত। একদা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উপস্থিত সাহাবাগণকে জিজ্ঞাসা করলেন যে, মহিলাদের জন্য সবচে’ উত্তম কী? তখন সকলেই চুপ ছিল। তারপর যখন আমি বাড়ীতে ফিরলাম। তখন ফাতিমা রাঃ কে জিজ্ঞাসা করলামঃ মহিলাদের জন্য সবচে’ উত্তম কী? তখন ফাতিমা রাঃ বললেন, পর পুরুষকে না দেখা। তারপর এটি আমি নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বললাম। তখন নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, নিশ্চয় ফাতিমা আমারী শরীরের অংশ। [মুসনাদুল বাজ্জার, হাদীস নং-৫২৬]
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبَّاسٍ قَالَ كَانَ الْفَضْلُ رَدِيفَ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَجَاءَتْ امْرَأَةٌ مِنْ خَشْعَمَ فَجَعَلَ الْفَضْلُ يَنْظُرُ إِلَيْهَا وَتَنْظُرُ إِلَيْهِ وَجَعَلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَصْرِفُ وَجْهَ الْفَضْلِ إِلَى الشِّقِّ الآخَرِ
‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আববাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ফযল ইবনু ‘আববাস (রাঃ) একই বাহনে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর পিছনে আরোহণ করেছিলেন। এরপর খাশ‘আম গোত্রের জনৈক মহিলা উপস্থিত হল। তখন ফযল (রাঃ) সেই মহিলার দিকে তাকাতে থাকে এবং মহিলাটিও তার দিকে তাকাতে থাকে। আর আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফযলের চেহারা অন্যদিকে ফিরিয়ে দিলেন। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং-১৫১৩]
عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ كَانَ الْحَبَشُ يَلْعَبُونَ بِحِرَابِهِمْ فَسَتَرَنِي رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَأَنَا أَنْظُرُ فَمَا زِلْتُ أَنْظُرُ حَتّٰى كُنْتُ أَنَا أَنْصَرِفُ فَاقْدُرُوا قَدْرَ الْجَارِيَةِ الْحَدِيثَةِ السِّنِّ تَسْمَعُ اللَّهْوَ
‘আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন যে, একদিন হাবশীরা তাদের বর্শা নিয়ে খেলা করছিল। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে নিয়ে পর্দা করে তার পেছনে দাঁড় করিয়ে ছিলেন এবং আমি সেই খেলা দেখছিলাম। যতক্ষণ আমার ভাল লাগছিল ততক্ষণ আমি দেখছিলাম। এরপর আমি স্বেচ্ছায় সে স্থান ত্যাগ করলাম। সুতরাং তোমরা অনুমান করতে পার কোন্ বয়সের মেয়েরা আমোদ-প্রমোদ পছন্দ করে। [বুখারী, হাদীস নং-৫১৯০]
نَظَرُ الْمَرْأَةِ إلَى الرَّجُلِ الْأَجْنَبِيِّ كَنَظَرِ الرَّجُلِ إلَى الرَّجُلِ تَنْظُرُ إلَى جَمِيعِ جَسَدِهِ إلَّا مَا بَيْنَ سُرَّتِهِ حَتَّى يُجَاوِزَ رُكْبَتَهُ، وَمَا ذَكَرْنَا مِنْ الْجَوَابِ فِيمَا إذَا كَانَتْ الْمَرْأَةُ تَعْلَمُ قَطْعًا وَيَقِينًا إنَّهَا لَوْ نَظَرَتْ إلَى بَعْضِ مَا ذَكَرْنَا مِنْ الرَّجُلِ لَا يَقَعُ فِي قَلْبِهَا شَهْوَةٌ، وَأَمَّا إذَا عَلِمَتْ أَنَّهُ تَقَعُ فِي قَلْبِهَا شَهْوَةٌ أَوْ شَكَّتْ وَمَعْنَى الشَّكِّ اسْتِوَاءُ الظَّنَّيْنِ فَأَحَبُّ إلَيَّ أَنْ تَغُضَّ بَصَرَهَا مِنْهُ، (الفتاوى الهندية-5/327)
(وكذا) تنظر المرأة (من الرجل) كنظر الرجل للرجل (إن أمنت شهوتها) فلو لم تأمن أو خافت أو شكت حرم استحسانا (الدر المختار مع رد المحتار، كتاب الحظر والإباحة، فصل فى النظر واللمس-9/533)
যার সারমর্ম হলো মহিলাদের জন্য পুরুষদের দিকে দৃষ্টিপাত করা, পুরুষের জন্য পুরুষের দিকে দৃষ্টিপাত করার বিধানের মতোই।
তবে যদি আকৃষ্ট হবার শংকা থাকে,ফেতনার আশংকা থাকে, তাহল হারাম।
কুরআনে কারীমে ইরশাদ হয়েছে,
إِنَّ السَّمْعَ وَالبَصَرَ وَالفُؤَادَ كُلُّ أُولَئِكَ كَانَ عَنْهُ مَسْئُولًا.
...নিশ্চয় কান, চোখ, হৃদয় এর প্রতিটি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে। সূরা বনী ইসরাঈল (১৭) : ৩৬
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে ফেতনার আশংকা না থাকলে তো কোনো গুনাহই নেই,তবে অনুত্তম।
আর ফেতনার আশংকা থাকলে চেষ্টা করার পরেও অনিচ্ছায় চোখ গেলে কোনো কোনো গুনাহ্ নেই।
আলী রা.-কে নবীজী বলেছেন,
يَا عَلِيُّ لَا تُتْبِعِ النَّظْرَةَ النَّظْرَةَ، فَإِنَّ لَكَ الأُولَى وَلَيْسَتْ لَكَ الآخِرَةُ.
হে আলী! (হঠাৎ) দৃষ্টি পড়ে যাওয়ার পর আবার দ্বিতীয়বার তাকিয়ো না। কারণ, (হঠাৎ অনিচ্ছাকৃত পড়ে যাওয়া) প্রথম দৃষ্টি তোমাকে ক্ষমা করা হবে, কিন্তু দ্বিতীয় দৃষ্টি ক্ষমা করা হবে না। জামে তিরমিযী, হাদীস ২৭৭৭
,
তবে ফেতনার আশংকা থাকার ছুরতে বার বার অনিচ্ছায় চোখ দেওয়া জায়েয নেই, হারাম।
আর এই ছুরতে এক বার ইচ্ছাকৃতভাবে নজর দেওয়াও হারাম।
,
সুতরাং এখানে মূল বিষয় হলো ফেতনার আশংকা, আকৃষ্ট হবার শংকা থাকা।
আরো জানুনঃ-