আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
100 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (27 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম শায়েখ,

আমার ওসিডি রোগ থাকার কারনে মাথায় বিভিন্ন ধরনের আজে বাজে চিন্তা আসতে থাকে। বিশেষ করে তালাক ও ঈমান নিয়ে। আমার মনকে এসব চিন্তা বা অহেতুক পেরেশানি থেকে আমি কন্টোল করতে পারছি না।

(১) নামাজের ভিতরে আমার মনে এসেছে যে,

নামাজ পড়া শুরু করলে এটা করতে পরবো না, ওটা
এভাবে করতে পরবো না।
আবার,আমার নামাজ শুরু করার পিছনে আমার ওমক  
বন্ধুর অবদান আছে।

এসব কথা নামাজের ভিতর মনে আসলে কি ঈমান চলে যাবে শায়েখ?

(২) গত কয়েক বছর আগে একবার আমার স্ত্রীকে "বাসা থেকে বের হয়ে যাও" বলেছি কি বলেনি মনে পড়ছে না। তবে একবার সংসারে গোন্ডোগোল হওয়াতে আমার স্ত্রীকে সকাল হলেই বাসা থেকে চলে যেতে বলেছিলাম।  বললেও তালাকের নিয়তে বলেনি। অশান্তি করতো তাই বলেছিলাম। কিন্তু গত কয়েক বছর আগের বলা কথা আজ নামাজের ভিতর মনে হচ্ছে। মনের ভিতর রাগ নিয়ে আমি তাকে মনে মনে বলছি যে "বাসা থেকে বের হয়ে যাও"।একথা মনে হওয়া মাএ আমি হাতে মুঠো মেরে ফেলছি। এবং কথাটি আমার কাছে এতটায় রিয়েল মনে হচ্ছিল যেন আমি উচ্চারন করে বললাম। প্রায় সময়ই আমি মনে মনে তালাক বললেও মনে হয় উচ্চারন করলাম।  তারপর থেকে মনে সন্দেহ হচ্ছে উচ্চারন করে বললাম কিনা।
এবং আমার মনে সন্দেহ হচ্ছে আমি যেন উচ্চারন করে কথাটি বললাম। এমন তালাকের উচ্চারনের সন্দেহ আমার প্রায় সময়ই হয়। ওয়াইফের সাথে ফোনে কথা বলার সময় মাথা বাড়াতে থাকি। কথা বলার সময় সব কথায় আমার কাছে কেনায়া বাক্য বলে মনে হয়। কথা বলার সময় মনে তালাক নিয়ে অনেক আজে বাজে কথা আসে। মনে হয় তালাক উচ্চারন করে ফেলবো। আমি খুবই মানসিক অস্থিরতাই আছি শায়েখ। এর আগের অনেক প্রশ্নেও আপনি আমাকে ওয়াসওয়াসার রুগি বলেছেন।

(৩) আবার, তালাক দিয়ে দিলাম শব্দ মনের ভিতর চলে আসার পর যদি হাত কেরাম বোর্ড খেলার মত হাতের আংগুল ঠোকার মত করা হয়, তাহলে কি তালাক পতিত হবে?

(৪) আমার এক বন্ধু ভোর রাতে আমার ফোন বিজি পেয়ে আমাকে বলছে যে, "তোর বউ এর সাথে কথা বলতে ও তো পারিস"

আমি তখন বাইক চালাচ্ছিলাম। একথা শুনে আমার মনের ভিতর আসলো যে, " বউ তালাক দিয়ে দিতে পারলে ভালো হয় "।

এমন কথা মনে আসার সাথে সাথে আমি জোরে কাশি দিতে গিয়ে বাইক নিয়ে প্রায় খাদে পড়ে যাচ্ছিলাম। আমার মাথায় তালাক নিয়ে বিভিন্ন আজে বাজে চিন্তা ফিকির সারাটাদিন চলতে থাকে, আর আমি মাথা চাপড়াতে থাকি। আমার পাগলের মত অবস্থা হয়ে যাচ্ছে শায়েখ। এতে কি তালাক পতিত হবে শায়েখ??

(৫) আমি ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার চেষ্টা করছি শায়েখ। আজ ইমামের পিছনে ইশার ফরজ নামাজে সালাম ফেরানোর আগে মনে হলো বায়ু নির্গত হলো।কিন্তু আমি কোন গন্ধ বা শব্দ পাইনি। মনে সন্দেহ হচ্ছিল বায়ু নির্গত হলো না হয়নি। এমন সন্দেহ হচ্ছিল। কিছুদিন আগে একটা হাদিস শুনছিলাম যে, কেউ তিরস্কার করার উদ্দেশ্যে সেজদাহ করলে সে কাফের হয়ে যাবে। সন্দেহ আসার মূহুর্তে এই হাদিস আমার মনে আসছিল, আর আমার মনে হচ্ছিল আমি নামাজকে তিরস্কার করছি মনে হয়। এমন কথা মনে আসছিল। এই দিধাদন্ধ নিয়ে আমি সালাম ফিরালাম। এমন সন্দেহে পড়ে আমি আর সুন্নত পড়তে পারলাম না। এতে কি আমি কাফের হয়ে যাবে শায়েখ??

(৬) নামাজের কিছুক্ষন আগে আমার মনের ভিতর হচ্ছিল যে, "আল্লাহ এটা করতে পারবে না "।

আবার, নামাজের পরে আমি মনে মনে আল্লাহকে বলছিলাম যে, "আল্লাহ তুমি সব থেকে বড়"।
তখনি আবার মনের ভিতর চলে আসলো যে, "নবি সব থেকে বড়"। এটা আমার বিশ্বাসের পরিপন্থি। তারপরেও এসব আজে বাজে কথা আমার মাথায় চলে আসে।
আবার,  নামাজের ভিতর আমি আপনাদের কাছে কি বা কিভাবে প্রশ্ন করবো সেটা ভাবছিলাম।

আবার, সকালে আমার মনের ভিতর হচ্ছিল যে,  "যেদিন সহবাস করবো সেদিন ফজরের নামাজে যাবো না "। তখন আবার মনে হলো"যাবো না কেন? এমনিতে তো সকালে গোছল করতেই হয় "।

এসব কথা মনে আসার জন্য কি ঈমান নষ্ট হয়ে যাবে শায়েখ??

1 Answer

0 votes
by (716,760 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
চার মাযহাব সম্ভলিত সর্ববৃহৎ ফেকহি গ্রন্থ "আল-মাওসুআতুল ফেকহিয়্যা"গ্রন্থে লিপিবদ্ধ রয়েছে যে,
نَقَل ابْنُ عَابِدِينَ عَنِ اللَّيْثِ: فِي مَسْأَلَةِ طَلاَقِ الْمُوَسْوَسِ  أَنَّهُ لاَ يَجُوزُ طَلاَقُ  الْمُوَسْوَسِ  ، قَال: يَعْنِي الْمَغْلُوبَ فِي عَقْلِهِ
وَنَقَل ابْنُ الْقَيِّمِ: إِنَّ الْمُطْلِّقَ إِنْ كَانَ زَائِل الْعَقْل بِجُنُونٍ أَوْ إِغْمَاءٍ أَوْ وَسْوَسَةٍ لاَ يَقَعُ طَلاَقُهُ،  قَال: وَهَذَا الْمَخْلَصُ مُجْمَعٌ عَلَيْهِ بَيْنَ عُلَمَ ـ اءِ الأُْمَّةِ

- رِدَّةُ الْمُوَسْوَسِ:  
٢١ - إِنْ تَكَلَّمَ الْمُوَسْوَسُ  بِكَلاَمٍ يَقْتَضِي الرِّدَّةَ لَمْ يَكُنْ فِي حَقِّهِ رِدَّةٌ. صَرَّحَ بِذَلِكَ الْحَنَفِيَّةُ، يَعْنُونَ الْمَغْلُوبَ فِي عَقْلِهِ
ইবনে আবেদিন শামী রাহ বর্ণনা করেন,ওয়াসওয়াসা গ্রস্থ ব্যক্তি -যার বিবেকবুদ্ধি লোপ পেতে বসেছে-তার তালাক গ্রহণযোগ্য নয়।
ইবনুল কাইয়িম রাহ বলেন, যদি তালাক প্রদানকারী ব্যক্তির ওয়াসওয়াসা,বেহুশি বা পাগলামির দরুণ বিবেকবুদ্ধি লোপ পেতে থাকে, তাহলে তার তালাকও গ্রহণযোগ্য হবে না। এর উপর সমস্ত উলামাদের ঐক্যমত রয়েছে।

বিবেক বুদ্ধি লোপ পেতে বসা ওয়াসওয়াসা রোগীর এমন কোনো কথা বার্তা যা মুরতাদ হওয়াকে লাযিম করে দেয়, সেই কথাবার্তার দরুণ উক্ত ওয়াসওয়াসার রোগী মুরতাদ হবে না।(আল-মাওসু'আতুল ফেকহিয়্যাতুল কোয়েতিয়্যাহ-৪৩/১৫৬)

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/835


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনি আপনার মানষিক অবস্থার যে বিবরণ দিয়েছেন, সেই বিবরণ পড়ার পর যে কেউ এই সিদ্ধন্তে পৌছতে বাধ্য হবে যে, আপনার ওয়াসওয়াসার রোগ রয়েছে, সুতরাং আপনার কোনো তালাক পতিত হবে না।এবং আপনার ঈমানেও কোনো সমস্যা হবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...