আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
60 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (7 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ।

আমি ভার্সিটিতে এডমিশন নিতে চাইছি না কারণ সেখানে ফ্রিমিক্সিং থাকে এবং নিজের ঈমান হারাবার সম্ভাবনাও আছে ফিতনাময় পরিবেশে নিজেকে কিভাবে সামলে রাখবো ভরসা নেই নাফসের প্রতি।

আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি পড়বো না কিন্তু কাউকে পাচ্ছি না আমার সিদ্ধান্ত শোনাতে যে কি না আমাকে পরামর্শ দিতে পারবেন।আমার পড়াশোনা ছেড়ে দেয়াটা ভালো হবে কি না।অবশ্য আমি ইস্তিখারা করেছি কিন্তু কিছুই বুঝতে পারছি না সেহেতু আমি পরামর্শ চাইছি যদি আমাকে পরামর্শ দিতেন তাহলে মুনাসিব হতো আমার জন্য।পড়তে খুব ভালো লাগে,খুব ইচ্ছা হয় লেখাপড়ায় জুড়ে থাকতে কিন্তু দেশের পরিস্থিতি দেখে নিজের ঈমান হারাবার ভয় করছে।একবার চাইছি পড়ালেখা কন্টিনিউ করবো আবার ভাবছি না আর পড়বোই না আমি খুবই টানাপোড়েনে পড়ে গিয়েছি এ বিষয়ে।আমি চাইছিলাম জেনেরাল ছেড়ে দিয়ে সেই অবসর সময়গুলোতে কোরআন শিখবো এবং এই বিষয়েই পড়ালেখা করবো আমার এ সিদ্ধান্তটা কতোটুকু যুক্তিযুক্ত তা যদি আমাকে জানাতেন খুবই উপকৃত হতাম।

জাযাকুমুল্লহু খইরন।

1 Answer

0 votes
by (63,560 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/43048/?show=43048#q43048  ফাতওয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে,

দ্বীনি শিক্ষা হোক, বা দুনিয়াবি শিক্ষা হোক, ইসলামের বিধান হলো ছেলেরা ছেলেদের প্রতিষ্ঠানে এবং মেয়েরা মেয়েদের প্রতিষ্ঠানে পড়বে। বিশেষত মেয়েদের ক্ষেত্রে এর প্রতি সর্বোচ্চ লক্ষ রাখা ও গুরুত্ব দেয়া আবশ্যক।

 

কেননা, আল্লাহ তাআলা বলেন,

زُيِّنَ لِلنَّاسِ حُبُّ الشَّهَوَاتِ مِنَ النِّسَاء

মানবকূলকে মোহগ্রস্ত করেছে নারী… (সূরা আলে ইমরান, আয়াত নং- ১৪)

 

রাসুলুল্লাহ বলেছেন,

مَا تَرَكْتُ بَعْدِي فِتْنَةً أَضَرَّ عَلَى الرِّجَالِ مِنْ النِّسَاءِ

আমি আমার পরে মানুষের মাঝে পুরুষদের জন্য নারীদের চাইতে অধিকতর ক্ষতিকর কোন ফিতনা রেখে যাই নি। (বুখারী ৪৮০৮ মুসলিম ২৭৪০)

 

ফাতাওয়া লাজনাতিদ্দায়িমাতে এসেছে,

 فلا يجوز للمرأة أن تَدرس أو تعمل في مكان مختلط بالرجال والنساء ، ولا يجوز لوليها أن يأذن لها بذلك

সুতরাং মেয়েদের জন্য এমন প্রতিষ্ঠানে পড়া-লেখা কিংবা চাকরি করা জায়েয হবে না যেখানে নারী-পুরুষের সহাবস্থান রয়েছে এবং অভিভাবকের জন্য জায়েয হবে না তাকে এর অনুমতি দেয়া।  (ফাতাওয়া লাজনাতিদ্দায়িমা ১২/১৫৬)

 

একান্ত অপারগ অবস্থায় বা বিকল্প কোন পথ না পেলে এসব প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করা জায়েয আছে। কেননা, الضرورات تبيح المحظورات  জরুরত নিষিদ্ধ কাজকে সিদ্ধ করে দেয়। (আলআশবাহ ওয়াননাযাইর ১/৭৮)

 

তবে সবোর্চ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি, যাতে পর্দা লঙ্ঘন বা আল্লাহর অসন্তুষ্টি মূলক কার্যক্রম সংঘটিত না হয়। কেননা, আল্লাহ তাআলা বলেন,

فَاتَّقُوا اللَّهَ مَا اسْتَطَعْتُمْ

অতএব তোমরা যথাসাধ্য আল্লাহকে ভয় কর। (সূরা তাগাবুন, আয়াত নং-১৬)

 

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন

যতদিন পর্যন্ত এই দেশে পৃথক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু না হচ্ছে , ততদিন প্রয়োজনের তাগিদে নিম্নোক্ত শর্তাদির সাথে উলামায়ে কেরামগণ  কলেজ-ভার্সিটিতে শিক্ষা গ্রহণের পরামর্শ দেন।

 

১/শিক্ষা অর্জন দেশ ও মুসলিম জাতীর খেদমতের উদ্দেশ্যে হতে হবে।

 

২/ (পরিপূর্ণ পর্দার সাথে পড়া-লেখা করতে হবে এবং) চোখকে সব সময় নিচু করে রাখতে হবে, প্রয়োজন ব্যতীত কোনো শিক্ষক/শিক্ষিকার দিকে তাকানো যাবে না। মহিলা/পুরুষ তথা অন্য লিঙ্গের  সহশিক্ষার্থীদের সাথে তো কোনো প্রকার সম্পর্ক রাখা যাবেই না। সর্বদা অন্য লিঙ্গর শিক্ষার্থী থেকে নিজেকে নিরাপদ দূরত্বে রাখতে হবে। ফাতাওয়া উসমানী ১/১৬০-১৭১

 

সহ শিক্ষা সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুন-  https://www.ifatwa.info/434

পরীক্ষা দেওয়ার সময় হাত-মুখ খোলা বাধ্যতামূলক হলে করণীয় কি-  https://ifatwa.info/59512/     

ছেলে-মেয়ে একই বেঞ্চে বসে পরীক্ষা দেওয়া প্রসঙ্গে জানুন- https://ifatwa.info/38708/?show=38708#q38708

 

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন

 

১. আপনি উপরোক্ত শর্তগুলি পুরোপুরি ভাবে মেনে ফ্রি মিক্সিং পরিবেশে পড়াশোনা  করতে পারেন। শর্তাবলি মেনে চলতে যা যা করা দরকার, তা  তাই করতে হবে। দাঁতে দাঁত চেপে অন্তরকে কন্ট্রোল করে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে হবে। তবে যদি উপরোক্ত শর্তাবলী মেনে চলতে অনেক কষ্টকর হয়, তাহলে প্রয়োজনে ক্লাশে কম উপস্থিত হবেন।  তদুপরি দৃষ্টিগত গুনাহ হলে ইস্তেগফার পাঠ করবেন।

 

আর আপনি ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো গায়রে মাহরাম মহিলা বা পুরুষের দিকে নজর দিবেননা, অনিচ্ছায় নজর চলে গেলে সাথে চোখ ফিরিয়ে নিবেন। তাদের সাথে কোনো কথা বলবেননা। বৈধ ও প্রয়োজনীয় কথা হলে দৃষ্টি অবনত রেখে অল্প সময়েও কথা বলে শেষ করবেন।

 

তারপরও যদি ফিতনায় বা জিনায় জড়িয়ে পড়ার প্রবল আশংকা হয় বা পর্দার বিধানের লঙ্ঘন হয় তাহলে আপনি এমন পরিবেশে পড়া-লেখা থেকে বিরত থাকবেন। কারণ নিজেকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচানো ফরজ।

 

২.  আবার আপনি চাইলে কোনো মহিলা মাদ্রাসাতে ভর্তি হয়েও দ্বীনি ইলম অর্জন করতে পারেন। কারণ, দ্বীনি ইলম অর্জন করা ফরজ। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...