আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
151 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (50 points)
reshown by
বয়সে ছোট(নাবালক না) কেউ যদি হারাম(গান শোনে) কাজ করে,তাকে বারবার বুঝানো সত্ত্বেও যদি কাজটা করেই যায়,অথচ সে জানে যে সে হারাম কাজ করছে...তখন তাকে আটকাতে তার সাথে খারাপ ব্যবহার করলে কি গুনাহ হবে?(তার কাজের জন্য নিজের সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা থাকে)

1 Answer

0 votes
by (715,680 points)
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
ইসলাম এ বিষয়ে জোর দেয় যে,মানুষ তার জীবনের প্রতিটি মূহূর্ত এমন কাজে ব্যয় করবে যাতে দুনিয়া ও আখেরাতের নিশ্চিত কল্যাণ রয়েছে।কমপক্ষে যেন দুনিয়া ও আখেরাতের কোনো ক্ষতি না হয়।এ জন্যই কোরআনে কারীমে মু'মিনদের উত্তম ও প্রশংসনীয় গুনাবলীর আলোচনা করতে যেয়ে বলা হয়,
ﻭَﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻫُﻢْ ﻋَﻦِ ﺍﻟﻠَّﻐْﻮِ ﻣُﻌْﺮِﺿُﻮﻥَ
যারা অনর্থক কথা-বার্তায় নির্লিপ্ত,(মু'মিনুন-৩) 
ﻭَﺇِﺫَﺍ ﻣَﺮُّﻭﺍ ﺑِﺎﻟﻠَّﻐْﻮِ ﻣَﺮُّﻭﺍ ﻛِﺮَﺍﻣًﺎ
এবং যখন অসার ক্রিয়াকর্মের সম্মুখীন হয়, তখন মান রক্ষার্থে ভদ্রভাবে চলে যায়।(ফুরকান-৭৩)

লাহব কাকে বলে?
اللهو: ما يشغل الإنسان عما يعنيه و يهمه (مفردات القرآن للإمام الراغب)
অর্থাৎ-যে সকল বস্তু মানুষকে লক্ষণীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াবলী থেকে অমনোযোগী করে দেয় তা হলো "লাহব"।
اللعب :لعب فلان اذا كان فعله غير قاصد به مقصدا صحيحا 
অর্থাৎ- খেলাধুলা ঐ সকল কাজ যাতে সঠিক কোন উদ্দেশ্য থাকে না।
اللغو: وهو كل سقط من قول او فعل فيدخل فيه الغناء واللهو و غير ذلك مما قاربه
অর্থাৎ- লাগু ঐ সকল অনর্থক কথাবার্তা ও কাজ-কর্ম যাতে গান-বাদ্য রং তামাশা ইত্যাদি বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।(কুরতুবি:১৩/৮০)

উল্লেখিত আয়াত ও হাদীস সমূহ থেকে বুঝা গেল যে, ইসলামী শরীয়তে সময়ের প্রতি যত্নশীল হওয়া ও লক্ষস্থির জীবন গঠন করা জরুরী।অবশ্যই কিছু হেকমত যেমন শারিরিক ফায়দার  দিকে লক্ষ্য রেখে শরীয়ত কিছু খেলার অনুমোদন দিয়েছে।বিস্তারিত জানুন- 4190

হাদীসে এসেছে,ইবনু মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে,
أن النبي صلى الله عليه وسلم قال : ( لَا تَزُولُ قَدَمُ ابْنِ آدَمَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مِنْ عِنْدِ رَبِّهِ حَتَّى يُسْأَلَ عَنْ خَمْسٍ : عَنْ عُمُرِهِ فِيمَ أَفْنَاهُ ، وَعَنْ شَبَابِهِ فِيمَ أَبْلَاهُ ، وَمَالِهِ مِنْ أَيْنَ اكْتَسَبَهُ وَفِيمَ أَنْفَقَهُ وَمَاذَا عَمِلَ فِيمَا عَلِمَ ) 
 রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামাত দিবসে পাঁচটি বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ হওয়ার আগপর্যন্ত আদম সন্তানের পদদ্বয় আল্লাহ্ তা'আলার নিকট হতে সরতে পারবে না। তার জীবনকাল সম্পর্কে, কিভাবে অতিবাহিত করেছে? তার যৌবনকাল সম্পর্কে, কি কাজে তা বিনাশ করেছে; তার ধন-সম্পদ সম্পর্কে, কোথা হতে তা উপার্জন করেছে এবং তা কি কি খাতে খরচ করেছে এবং সে যত টুকু জ্ঞান অর্জন করেছিল সে মুতাবিক কি কি আমল করেছে।
(সুনানু তিরমিযি-২৪১৬)বিস্তারিত জানুন-৪৬৭৭

وَقَالَ: سَمِعْتْ عَبْدَ اللَّهِ يَقُولُ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، يَقُولُ: «الْغِنَاءُ يُنْبِتُ النِّفَاقَ فِي الْقَلْبِ»
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,গান অন্তরে নেফাক বা মুনাফিকি তৈরী করে থাকে।(সহীহ মুসলিম-৪৯২৭)

সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
গান শুনা হারাম।ছোট্ট বাচ্ছাদেরকে গান থেকে দূরে রাখতে হবে।এবং এর জন্য অভিভাবককে আপ্রাণ চেষ্টা করতে হবে।ছোট্ট বাচ্ছা গান শুনলে তার গোনাহ হবে না।তবে অভিবাবকের জন্য এরকম সুযোগ প্রদান করা কখনো জায়েয হবে না।
প্রয়োজনে ছোট্ট বাচ্ছাকে গান থেকে বিরত রাখতে প্রহার করতে হবে।এবং এজন্য কঠিনতম ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

অবস্থাবেধে সর্বোচ্ছ ১০টা বেত্রাঘাত  করা যাবে।যেমন হাদীস শরীফে এসেছে......
ﺃﺑﻲ ﺑﺮﺩﺓ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﻗﺎﻝ ﻛﺎﻥ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻳﻘﻮﻝ ﻻ ﻳﺠﻠﺪ ﻓﻮﻕ ﻋﺸﺮ ﺟﻠﺪﺍﺕ ﺇﻻ ﻓﻲ ﺣﺪ ﻣﻦ ﺣﺪﻭﺩ ﺍﻟﻠﻪﺍﻟﻜﺘﺐ » ﺻﺤﻴﺢ ﺍﻟﺒﺨﺎﺭﻱ » ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻟﺤﺪﻭﺩ » ﺑﺎﺏ ﻛﻢ ﺍﻟﺘﻌﺰﻳﺮ ﻭﺍﻷﺩﺏ
তরজমা- নবী কারীম সাঃ বলেনঃ-শিষ্টচার শিক্ষা দেওয়ার জন্য সর্বোচ্ছ দশটা বেত্রাঘাত করা যাবে তবে আল্লাহর নির্ধারিত সীমারেখা অতিক্রান্ত হওয়ার হলে এর থেকেও বেশী শাস্তি দেওয়া যাবে।(যেমন ব্যবিচারির শাস্তি ১০০বেত্রাঘাত)
**শিষ্টাচার শিক্ষা দিতে বেত্রাঘাত ব্যতীত অন্যান্য সব রকম চেষ্টাই যখন ব্যর্থ হবে সব রকম চেষ্টাই বিফল যাবে,তখন বেত্রাঘাত করার হুকুম শরীয়ত কয়েকটি শর্তসাপেক্ষে প্রদান করে।(১)দশের উর্দে হতে পারবে না।(২)চেহারায় প্রহার করা যাবে না।

নবীজি সাঃ বলেনঃ-
ﺇﺫﺍ ﺿﺮﺏ ﺃﺣﺪﻛﻢ، ﻓﻠﻴﺠﺘﻨﺐ ﺍﻟﻮﺟﻪ، ﻭﻻ ﻳﻘﻞ ﻗﺒﺢ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﺟﻬﻚ " ﺭﻭﺍﻩ ﺃﺣﻤﺪ، ﻭﻫﻮ ﻓﻲ ﺍﻟﺼﺤﻴﺤﻴﻦ ﺑﺄﻟﻔﺎﻅ ﺃﺧﺮﻯ
তরজমা- যখন শরয়ী প্রয়োজনে কেউ প্রহার করবে তখন সে যেন চেহারায় প্রহার করা থেকে বিরত থাকে,এবং সে যেন তাকে (রাগবশত)এ কথা না বলে যে,আল্লাহ তোমার চেহারাকে (সমস্ত বরকত থেকে বঞ্চিত করে)অমঙ্গল করুক।(৩)বিশেষ এমন কোন স্থানে প্রহার করা যাবে না যেখানে বেশী ব্যথা পাওয়া যায় বা অন্য কোন সমস্যার সম্ভাবনা থাকে,যেমনঃ পেট,লজ্জাস্থান,ইত্যাদি।(৪)রাগান্বিত অবস্থায় প্রহার করা যাবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...