বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ-
اِنَّ اللّٰہَ ہُوَ الرَّزَّاقُ ذُو الۡقُوَّۃِ الۡمَتِیۡنُ ﴿۵۸﴾
‘নিশ্চয়ই আল্লাহ রিজিক দান করেন এবং তিনি প্রবল পরাক্রান্ত’। (সূরা যারিয়াত : আয়াত ৫৮)।
قَالَ عِیۡسَی ابۡنُ مَرۡیَمَ اللّٰہُمَّ رَبَّنَاۤ اَنۡزِلۡ عَلَیۡنَا مَآئِدَۃً مِّنَ السَّمَآءِ تَکُوۡنُ لَنَا عِیۡدًا لِّاَوَّلِنَا وَ اٰخِرِنَا وَ اٰیَۃً مِّنۡکَ ۚ وَ ارۡزُقۡنَا وَ اَنۡتَ خَیۡرُ الرّٰزِقِیۡنَ ﴿۱۱۴﴾
‘মারয়াম তনয় ঈসা (আঃ) বলল, হে আল্লাহ, আমাদের প্রতিপালক। আমাদের জন্য আসমান হতে খাদ্যপূর্ণ খাঞ্জা দান করুন, তা আমাদের ও আমাদের পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী সকলের জন্য আনন্দ উৎসব এবং তোমার নিকট হতে নিদর্শনস্বরূপ হবে এবং আমাদেরকে রিযিক দান করুন আপনিই তো শ্রেষ্ঠ জীবিকা দানকারী। (সূরা মায়েদা : আয়াত ১১৪)।
وَ جَعَلۡنَا لَکُمۡ فِیۡہَا مَعَایِشَ وَ مَنۡ لَّسۡتُمۡ لَہٗ بِرٰزِقِیۡنَ ﴿۲۰﴾
তোমাদের জন্য রিজিক বা জীবিকার ব্যবস্থা করেছি। আর তোমরা যাদের জীবিকদাতা নও তাদের জন্যও। (সূরা হিজর : আয়াত ২০)।
রিজিক কাকে বলে? এ সম্পর্কে কয়েকটি সংজ্ঞা রয়েছে।
যথা-
★মহান আল্লাহপাক তার সৃষ্টি জীবের প্রয়োজনে যেসকল বস্তুর ব্যবস্থা করেন, তারপর সৃষ্টিজীব তার দ্বারা উপকৃত হয়, তা-ই রিজিক। সুতরাং সকল সৃষ্টিই নিজ নিজ রিজিক গ্রহণ করে থাকে। (শারহুল মাকাসিদ : খন্ড ১, পৃষ্ঠা ২৩৫)।
★কেউ কেউ উল্লেখ করেছেন,, আল্লাহপাক তোমাদের জন্য যে সকল বস্তুর ব্যবস্থা করেন, অনন্তর প্রাণী তা গ্রহণ করে জীবন পরিচালনা করে তা-ই রিজিক। আর তা কখনো কিছু সৃষ্টির জন্য হালাল হয় এবং কখনো কিছু সৃষ্টির জন্য হারাম হয়। এতে প্রমাণিত হয় যে, আপেক্ষিকভাবে যা হারাম, তা-ও রিজিকের অন্তর্ভুক্ত। কারণ, সৃষ্টি বিশেষের জন্য হালাল করা হয়েছে।
★কারো কারো মতে প্রাণী যা ভক্ষণ করে জীবন যাপন করে তাকে রিজিক বলে। তবে এ সংজ্ঞা হতে প্রথমোক্ত সংজ্ঞা উত্তম। কেননা, তৃতীয় সংজ্ঞায় রিজিকের সম্বন্ধ আল্লাহপাকের দিকে করা হয়নি। অথচ রিযিক বোঝাতে আল্লাহর প্রতি সম্বন্ধ থাকা বিশেষ ধর্তব্য। (শারহুল আকাইদ : পৃষ্ঠা ৯৫)।
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(০১)
ঐ ব্যক্তি মৃত্যু পর্যন্ত সেই সম্পদ থেকে যতটুকু নিজে ভোগ করতে পারে, সেটাকে তাঁর রিযক বলে।
(আর বাকি সম্পদ যাহা তার মালিকানায় ছিলো,সেটি মাজায অর্থাৎ রুপক অর্থে রিযক বলে।)
(০২)
এই নির্ধারণকৃত রিযক দ্বারা মৃত্যু পর্যন্ত তাঁর নিজের ভোগ্য অংশটুকুকে বুঝায়।
(০৩)
ব্যক্তির নিজের ভোগ্য অংশটুকু ছাড়া অবশিষ্ট সম্পত্তিকে প্রকৃত অর্থে রিযিক না বলা হলেও সেটিকে মাজায অর্থাৎ রুপক অর্থে রিযক বলে। আর মৃত্যু পর্যন্ত যেহেতু তারই মালিকানা থাকে,সুতরাং নিজের ভোগের পর অবশিষ্ট থাকা সম্পদ থেকে সে সাদাকাহ করলে সেটা নিজের রিযক থেকে করছে বলে গণ্য হবে।
(০৪)
সে সারাজীবন হালাল উপায় অবলম্বন করলেও সব শেষে সে হারাম উপায়ের দিকেই অগ্রসর হতো,হারাম উপায়ে সেই ১০ কোটি টাকা-ই উপার্জন করতে পারত এবং ৫ কোটি টাকা-ই ভোগ করতে পারত বলা হবে।
(০৫)
মায়ের পেটে থাকাকালীন রিযক নির্ধারণ করে দেওয়া হয় বলতে বেশি পরিশ্রম করলেও নির্ধারিত পরিমাণের চেয়ে বেশি সম্পদ উপার্জনের সুযোগ নেই বুঝানোটা উদ্দেশ্য।
উল্লেখ্য, এখানে সে কতটুকু পরিশ্রম করতে পারবে,সেটিও নির্ধারিতই থাকে।
সুতরাং সেই নির্ধারিত অংশ চেয়ে বেশি পরিশ্রমও করতে পারবেনা।
সব কিছুই তাকদীরে লিপিবদ্ধ আছে।