আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
122 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (6 points)
আসসালামু আলাইকুম,
১. কোন কাজ যেটা কম টাকায় করা যায় সেটা বেশি খরচে করা কি অপচয়?

২. কোন প্রকল্প যেমন: রেল স্টেশন, এয়ারপোর্ট অথবা বাড়ি মসজিদ এগুলো হয়ত স্বাভাবিক ভাবে বানানো যেত। কিন্তু সৌন্দর্যের স্বার্থে সেটা অনেক নকশা করে বা উচু করে কিছু ভংগিমায় তৈরি করলে তা কি অপচয়? হয়ত, ৫ তলা ইমারত বানালেই হয় সেখানে তার বাইরের অংশে জটিল নকশা করা হলো যা দেখতে ভালো লাগে তাহলে কি সেটি অপচয়। আর এক্ষেত্রে যেসকল ইঞ্জিনিয়ার বা স্থপতি এগুলো করেন। তাদের উপার্জন কি হারাম?

৩. কারো যদি দামি জিনিস এ খরচে সামর্থ থাকে সেযদি তা করে তাহলে কি সেটি ভুল বা নাজায়েজ? যেমন: ২০ টাকার পানি খেলেই হয় সেখানে ২০০ /২০০০ টাকার খেল। তাছাড়া নিজ সুবিধার জন্য ১ ঘরের বদলে ৫ ঘরের ফ্লাট নেয়ে কি অপচয় যদিও ১ ঘরে থাকতে তেমন সমস্যা হত না?

৪. শিক্ষক এর শেখান শিক্ষা দিয়ে ছাত্র ভুল কাজ করলে কি শিক্ষক এর গুনাহ হবে? যেমন: শিক্ষক শেখালেন প্রয়োজনে কিভাবে ইমারত ধসিয়ে সেখানে নতুন করে ইমারত তৈরি করা যায় আর ছাত্র নিজ লোভ্র দরুন অপ্রাধ হিসেবে এ কাজ করল এবং বিনা কারণে।

৫. যেকোন অপচয়ই কি পাপ৷ অতিভোজ, অতি কাপড় ক্রয়......

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


‘ইসরাফ’ (إسراف) শব্দের অর্থ হ’ল সীমালঙ্ঘন, অপচয়, অপব্যয়, অমিতব্যয়, বাড়াবাড়ি, মাত্রাতিরিক্ততা, অপরিমিতি।

‘তাবযীর’ (التبذير) অর্থও অপচয়, অপব্যয়, বাজে খরচ, অমিতব্যয় ইত্যাদি।

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

وَلَا تُبَذِّرْ تَبْذِيرًا، إِنَّ الْمُبَذِّرِينَ كَانُوا إِخْوَانَ الشَّيَاطِينِ وَكَانَ الشَّيْطَانُ، 

‘তুমি অপব্যয় করবে না, নিশ্চয়ই অপচয়কারীরা শয়তানের ভাই’ (বনী ইসরাঈল ১৭/২৬-২৭)।

অপর আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

كُلُوا مِنْ ثَمَرِهِ إِذَا أَثْمَرَ وَآتُوا حَقَّهُ يَوْمَ حَصَادِهِ وَلَا تُسْرِفُوا إِنَّهُ لَا يُحِبُّ الْمُسْرِفِينَ،

‘তোমরা এগুলির ফল খাও যখন তা ফলবন্ত হয় এবং এগুলির হক আদায় কর ফসল কাটার দিন। আর তোমরা অপচয় করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ অপচয়কারীদের ভালবাসেন না’ (আন‘আম ৬/১৪১)।

ইবনে আববাস (রাঃ) বলেন,

من أنفق درهما في غير حقه فهو سرف

‘যে ব্যক্তি অনর্থক কাজে এক দিরহামও খরচ করল সেটাই অপচয়’।
(ইমাম কুরতুবী, আল-জামি‘ লি আহকামিল কুরআন (বৈরূত : দারু ইহয়াইত তুরাছিল আরাবী, ১৯৮৫ খ্রি./১৪০৫ হি.), ১৩তম খন্ড, পৃঃ ৭৩।)

শরীফ আলী জুরজানী রহঃ অপচয় এর সংজ্ঞা দিয়েছেনঃ-

الإسراف هو إنفاق المال الكثير في الغرض الخسيس وتجاوز الحد في النفقة، وقيل: أن يأكل الرجل ما لا يحل له، أو يأكل مما يحل له فوق الاعتدال، ومقدار الحاجة-

‘ইসরাফ হ’ল কোন হীন উদ্দেশ্যে প্রচুর অর্থ-সম্পদ ব্যয় করা এবং ব্যয়ের ক্ষেত্রে সীমা লঙ্ঘন করা। কেউ কেউ বলেন, কোন ব্যক্তির অবৈধ বস্ত্ত ভক্ষণ করা অথবা তার জন্য যা কিছু হালাল তা অপরিমিত ও প্রয়োজনের অতিরিক্ত আহার করা’।
(শরীফ আলী জুরজানী, কিতাবুত তা‘রীফাত (বৈরূত: দারুল কিতাবিল আরাবী, ১৪০৫ হি.), পৃঃ ৩৮।)

ফক্বীহগণ ‘তাবযীর’-কে সংজ্ঞায়িত করেছেন এভাবে যে,

عدم إحسان التصرف في المال وصرفه فيما لا ينبغي،

‘সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার না করা এবং তা অনুচিত কাজে ব্যয় করা’।
(ইমাম নববী, তাহরীরু আলফাযিত তানবীহ (দামেশক : দারুল কলম, ১৪০৮ হি.), পৃঃ ২০০।)
(কিছু তথ্য সংগৃহীত)

(০১)
এটি অনার্থক ও অনুচিত কাজ না হলে অপচয় হবেনা।

(০২)
মসজিদের ক্ষেত্রে এমন নকশা ও সাজ সজ্জাকে অনেক স্কলারগন অপচয় নয় বলেছেন।
আবার কেউ কেউ অপচয়ের অন্তর্ভুক্ত বলেও আখ্যায়িত করেছেন। 

তবে বাসা বাড়ি ও অন্যান্য ক্ষেত্রে অনার্থক এ কাজ গুলি অপচয়ের শামিল হবে।

এক্ষেত্রে যেসকল ইঞ্জিনিয়ার বা স্থপতি এগুলো করেন। তাদের উপার্জন হালাল।

(০৩)
এই খরচ অনার্থক ও অনুচিত কাজ হলে অপচয় হবে।
নতুবা নয়।
যেমন প্রশ্নে উল্লেখিত ২০ টাকার পানির ক্ষেত্রে ২০০ টাকা/১০০০ টাকা দিয়ে ক্রয় তাহা যদি পান করে তাহলে অপচয় হবেনা।

আর তাহা যদি পান না করে ফেলে দেয়,বা নষ্ট করে,তাহলে অপচয় হবে।

১ ঘরের বদলে ৫ ঘরের ফ্ল্যাট নিলে এক্ষেত্রে দেখতে হবে যে অতিরিক্ত সমস্ত ঘর গুলো নেয়া অনার্থক ও অনুচিত ছিলো?
সেগুলো দতার কোনো কাজেই লাগছেনা?

যদি তাই হয়,সেক্ষেত্রে অতিরিক্ত গুলি অপচয়ের শামিল হবে।

আর যদি অতিরিক্ত ঘর গুলিও তার ব্যবহারে লাগে,সেগুলো অনার্থক ও অনুচিত না হয়,সেক্ষেত্রে অপচয়ের শামিল হবেনা।

(০৪)
এক্ষেত্রে শিক্ষকের কোনো গুনাহ হবেনা।

(০৫)
অপচয় যদি আসলেই শরীয়তে অপচয় বলে স্বীকৃত হয়,সেক্ষেত্রে তাহা গুনাহ।

অতিভোজ অপচয় হবে কিনা,এ সংক্রান্ত মাসয়ালা জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...