জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ-
ثُمَّ سَوّٰىہُ وَ نَفَخَ فِیۡہِ مِنۡ رُّوۡحِہٖ وَ جَعَلَ لَکُمُ السَّمۡعَ وَ الۡاَبۡصَارَ وَ الۡاَفۡـِٕدَۃَ ؕ قَلِیۡلًا مَّا تَشۡکُرُوۡنَ ﴿۹﴾
পরে তিনি সেটাকে করেছেন সুঠাম এবং তাতে ফুঁকে দিয়েছেন তাঁর রূহ থেকে। আর তোমাদেরকে দিয়েছেন কান, চোখ ও অন্তঃকরণ, তোমরা খুব সামান্যই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর।
(সুরা সাজদাহ ০৯)
ثُمَّ خَلَقۡنَا النُّطۡفَۃَ عَلَقَۃً فَخَلَقۡنَا الۡعَلَقَۃَ مُضۡغَۃً فَخَلَقۡنَا الۡمُضۡغَۃَ عِظٰمًا فَکَسَوۡنَا الۡعِظٰمَ لَحۡمًا ٭ ثُمَّ اَنۡشَاۡنٰہُ خَلۡقًا اٰخَرَ ؕ فَتَبٰرَکَ اللّٰہُ اَحۡسَنُ الۡخٰلِقِیۡنَ ﴿ؕ۱۴﴾
অতঃপর আমি শুক্রবিন্দুকে পরিণত করি আলাকা-তে, অতঃপর ‘আলাকা-কে পরিণত করি গোশতপিণ্ডে, অতঃপর গোশতপিণ্ডকে পরিণত করি অস্থিতে; অতঃপর অস্থিকে ঢেকে দেই গোশত দিয়ে; তারপর তাকে গড়ে তুলি অন্য এক সৃষ্টিরূপে। অতএব (দেখে নিন) সর্বোত্তম স্রষ্টা আল্লাহ কত বরকতময়!
(সুরা মু'মিনুন ১৪)
আলোচ্য আয়াতসমূহে মানব সৃষ্টির সাতটি স্তর উল্লেখ করা হয়েছে। সর্বপ্রথম স্তর মৃত্তিকার সারাংশ, দ্বিতীয় বীর্য, তৃতীয় জমাট রক্ত, চতুর্থ মাংসপিণ্ড, পঞ্চম অস্থি-পিঞ্জর, ষষ্ঠ অস্থিকে মাংস দ্বারা আবৃতকরণ ও সপ্তম সৃষ্টিটির পূর্ণত্ব অর্থাৎ রূহ সঞ্চারকরণ।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، وَوَكِيعٌ، ح وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ، اللَّهِ بْنِ نُمَيْرٍ الْهَمْدَانِيُّ - وَاللَّفْظُ لَهُ - حَدَّثَنَا أَبِي وَأَبُو مُعَاوِيَةَ وَوَكِيعٌ قَالُوا حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنْ زَيْدِ بْنِ وَهْبٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ حَدَّثَنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ الصَّادِقُ الْمَصْدُوقُ " إِنَّ أَحَدَكُمْ يُجْمَعُ خَلْقُهُ فِي بَطْنِ أُمِّهِ أَرْبَعِينَ يَوْمًا ثُمَّ يَكُونُ فِي ذَلِكَ عَلَقَةً مِثْلَ ذَلِكَ ثُمَّ يَكُونُ فِي ذَلِكَ مُضْغَةً مِثْلَ ذَلِكَ ثُمَّ يُرْسَلُ الْمَلَكُ فَيَنْفُخُ فِيهِ الرُّوحَ وَيُؤْمَرُ بِأَرْبَعِ كَلِمَاتٍ بِكَتْبِ رِزْقِهِ وَأَجَلِهِ وَعَمَلِهِ وَشَقِيٌّ أَوْ سَعِيدٌ فَوَالَّذِي لاَ إِلَهَ غَيْرُهُ إِنَّ أَحَدَكُمْ لَيَعْمَلُ بِعَمَلِ أَهْلِ الْجَنَّةِ حَتَّى مَا يَكُونَ بَيْنَهُ وَبَيْنَهَا إِلاَّ ذِرَاعٌ فَيَسْبِقُ عَلَيْهِ الْكِتَابُ فَيَعْمَلُ بِعَمَلِ أَهْلِ النَّارِ فَيَدْخُلُهَا وَإِنَّ أَحَدَكُمْ لَيَعْمَلُ بِعَمَلِ أَهْلِ النَّارِ حَتَّى مَا يَكُونَ بَيْنَهُ وَبَيْنَهَا إِلاَّ ذِرَاعٌ فَيَسْبِقُ عَلَيْهِ الْكِتَابُ فَيَعْمَلُ بِعَمَلِ أَهْلِ الْجَنَّةِ فَيَدْخُلُهَا " .
আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও মুহাম্মাদ ইবন আবদুল্লাহ ইবন নুমায়র (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সাদিকুল মাসদূক (সত্যপরায়ণ ও সত্যনিষ্ঠরূপে প্রত্যায়িত) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের হাদীস শুনিয়েছেন যে, তোমাদের প্রত্যেকের সৃষ্টি (শুক্র) তার মাতৃ উদরে চল্লিশ দিন জমাট থাকে। এরপর অনুরুপ চল্লিশ দিনে রক্তপিণ্ডে পরিণত হয়। এরপর অনুরুপ চল্লিশ দিনে তা একটি গোশত পিণ্ডের রুপ নেয়। এরপর আল্লাহ তাআলার তরফ থেকে একজন ফিরিশতা পাঠানো হয়। সে তাতে রুহ ফুকে দেয়। আর তাঁকে চারটি বিষয় লিপিবদ্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। আর তা হল এই- তার রিযক, তার মৃত্যুক্ষণ, তার কর্ম, এবং তার বদকার ও নেককার হওয়া।
সেই সত্তার কসম যিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই! নিশ্চয়ই তোমাদের মধ্য থেকে কেউ কেউ জান্নাতীদের মত আমল করতে থাকে। অবশেষে তার ও জান্নাতের মাঝখানে মাত্র একহাত ব্যবধান থাকে। এরপর তাকদীরের লিখন তার উপর জয়ী হয়ে যায়। ফলে সে জাহান্নামীদের ন্যায় কাজ-কর্ম শুরু করে। এরপর সে জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হয়। আর তোমাদের মধ্যে কোন কোন ব্যক্তি জাহান্নামের কাজ-কর্ম করতে থাকে। অবশেষে তার ও জাহান্নামের মাঝখানে একহাত মাত্র ব্যবধান থাকে। এরপর ভাগ্যলিপি তার উপর জয়ী হয়। ফলে সে জান্নাতীদের ন্যায় আমল করে। অবশেষে জান্নাতে দাখিল হয়।
(সহীহ মুসলিম ৬৪৮২)
আরো জানুনঃ-
" السقط إذا مات قبل أربعة أشهر ، فليس بآدمي ، بل هو قطعة لحم يدفن في أي مكان كان ، ولا يغسل ، ولا يكفن ، ولا يصلى عليه ، ولا يبعث يوم القيامة .
وإذا كان بعد أربعة أشهر : فقد نفخت فيه الروح وصار إنسانًا ، فإذا سقط فإنه يغسل ويكفن ويصلى عليه ، ويسمى ، ويُعق عنه " انتهى من " مجموع فتاوى ابن عثيمين " (25/225) .
সারমর্মঃ-
ভূমিষ্ট হওয়ার আগেই গর্ভে যে সন্তান গুলোর মৃত্যু হয়,এটি যদি চার মাসের পূর্বে হয়,সেক্ষেত্রে রুহ আসেনা,তাই সেটি মানুষ নয়,তাকে গোসল দেয়া হবেনা,কাফন পড়ানো হবেনা,জানাযা নামাজও পড়া হবেনা।
কিন্তু যদি চার মাসের পর মারা যায়,সেক্ষেত্রে তার মধ্যে রুহ চলে আসে,সে মানুষ এ পরিনত হয়,,,,।
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(০১)
ভূমিষ্ট হওয়ার আগেই গর্ভে যে সন্তান গুলোর মৃত্যু হয়,সেক্ষেত্রে চার মাসের পূর্বে মৃত্যু হলে তো রুহ আসেবা।
আর চার মাস পর মারা গেলে তাদের রুহ গুলো হযরত ইব্রাহিম আঃ এর কাছে থাকে।
মা বাবা মুসলিম হলে তারাও মুসলিম।
(০২)
সেই রুহ গুলো পরবর্তীতে অন্য কোনো শিশুর মধ্যে আসেনা।
(০৩)
যদি তিন মাসের আগে গর্ভপাত হয় তাহলে তার মধ্যে রুহ আসেনা।
সুতরাং এক্ষেত্রে তার জান্নাতী জাহান্নামী হওয়ার প্রশ্নই উঠেনা।
হাশরে তার কোনো অস্তিত্ব থাকবেনা,তাই তার বাবা মাকে চেনার প্রশ্নই উঠেনা।
(০৪)
গর্ভের চার মাস পর মারা গিয়ে থাকলে পিতামাতা এই আশা করতে পারে যে তার সন্তান জান্নাতি।