আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
141 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (18 points)
edited by
আমি OCD রোগে আক্রান্ত এবং ওষুধ ও খাচ্ছি। আমার আগের মাসআলায় হুজুর আপনি বলেছিলেন আমি OCD রোগে আক্রান্ত তাই আমার তালাক হবেনা।

আমি সাদারিং টেনশন এ থাকি কোন সময় জানি আমার তালাক হয়ে যায়। আমার মুখ দিয়ে নিজের ওপর তালাক কথাটা বের হয়ে যায়। এই ভয়ে আমি কথা কম বলি। ব্রাশ করতে গেলেও মুখ ভালো ভাবে খুলে ব্রাশ করতে ভয় লাগে। স্বাভাবিক কথার পরেও আমি চিন্তায় পরে যাই আমি কথাটা কোন নিয়তে বললাম। আমার কি তালাকের নয়তো ছিলো কিনা। বা কিছু বলার পরি আমি বলি তালাক না তালাক না অথবা আমার তালাকের ইচ্ছা নাই। অথবা বলি নিজের ওপর তালাক না। যখন যেভাবে মনে পরে ঐভাবেই বলি মনে মনে। ভাত খাওয়ার সময় খাবার চিবাতেও ভয় লাগে ভুল করে মুখ দিয়ে তালাক কথাটা বের হয়ে যায় কিনা।আমার অধিকার আছে কি নাই সেটাও স্পষ্ট না আমি। আমার এমন কোনো কথা মনে পড়েনা যেটা দিয়ে আমি অধিকার পেয়েছি

ক। অনেক আগে স্বামীকে বলেছিলাম ডিভোর্স লেটার পাঠিয়ে দোবো সই করে দিও। সে হাসতে হাসতেই উত্তর দিয়েছিলো আচ্ছা দিবোনে তার নিয়ত কি ছিলো আমি জানিনা । এভাবে কি আমি তালাকের অধিকার পেয়ে গেছি??

খ।কিছুক্ষন আগে আমার স্বামীর কথায় কষ্ট পেয়ে আমি কাঁদতেসিলাম। আর আমার মনে বার বার বলছিলাম কোনো তালাক না কোনো তালাক না। মনে মনে বলতে বলতে এক পর্যায়ে আমার জীহবা তালাক শব্দটা বলার সময় নরসে সামান্য। স্পষ্ট শব্দ কানে শুনিনাই। শুধু এটাই বুঝসি যে শব্দটা তালাক পুরো তালাক ও উচ্চারণ করসি কিনা মনে নাই। আমার ইদানিং কোনো কথা মনে থাকেনা। কথা ভুলে ভুলে যাই। এখন বলে ২ ৪ মিনিট ও লাগেনা আমি কথা ভুলে যাই। ওই তালাক শব্দ বলার পরে আমি উচ্চারণ করেই না বলসি নাকি মনে মনে না বলসি আমার মনে নাই।কোন পর্যায়ে যেন আমি বলসি না না না না মানে তালাক না বলতে চাইসি। এভাবে কি তালাক হয়ে গেছে? এতো সন্দেহ নিয়ে তালাক হয়?? আর আমার যেহেতু ocd রোগ আছে আমার ক্ষেত্রে মাসআলা কেমন হবে?

গ। তারপর আমি মুখেই বলসি না মনে মনে যেন বলসি আমার নিজের ওপর তালাক না। এখন এই না শব্দটা আমি বলসি কিনা আমার মনে নাই। তবে সন্দেহ হয় না বলসি। আমি শিউর না। এই ক্ষেত্রে আমি কি ধরে নিবো? যতটুকু মনে হয় আমি মনে মনেই বলসি আমার নিজের ওপর কোনো তালাক না। শুধু শেষের না শব্দটা নিয়ে আমি টেনশন এ আছি।আমার কথা মনের থাকেনা ইদানিং। তালাকের ওয়াসওয়াসা সারাদিনই লেগে থাকে কৌটা ঘটনা আমি মনে রেখে লিখবো আপনাদের কাছে । এভাবে কি তালাক হয়ে গেছে??

ঘ।অনেক =তোমারে অনেক দোষ

কম =তরকারি কম আছে

বড় =মাছটা বড় বা মাছটা অনেক বড়

মেঝো =তোমারে মেঝো মামা কই

ছোট =এই জিনিসটা তো ছোট।

লম্বা =তুমি লম্বা মানুষ

এই কথাটালো কি কেয়াটা শব্দ?? মানে অনেক, কম।, বেশি, মেঝো, ছোট, লম্বা, শেষ এই শব্দ গুলো আমি বলতে পারিনা। সালাম দিলে ভয়ে জবাব দিতে পারিনা। কাওকে সালাম দেইনা। নামাজের পরে জিকির গুলো পড়িনা। সূরা ইখলাস পরে ভয় লাগে। মানে যেখানে সংখ্যা আছে বা অনেক কম এই জাতীয় শব্দ আছে সেগুলো বলতে ভয় লাগে।এগুলোতে কি তালাক হয়?

ঙ।যেমন এতো তরকারি বা অনেক তরকারি রান্না করসো কেন। এটা বলার সময় কেউ যদি ইচ্ছাকৃত নিজের ওপর তালাক নেয় সেটাকি তালাক হয়ে যাবে?

চ। ইদানিং আজান শুনতে বিরক্ত লাগে। মনে হয় তাড়াতাড়ি আজান শেষ হয়ে যাক।কারণ আজানের সময় আমার মনে ওয়াসওয়াসা কাজ করে যে এই ওয়াক্তের নামাজ না পড়লে নিজের তালাক কথাগুলো মনে মনে আসে কিন্তু আমার ভয় হয় মুখ থেকে ভুলে বের হইসে কিনা।। পরে আমি নামাজটা ভয়ে পড়ি। কারণ না পড়লে তালাক হওয়ার যাবে আবার পড়লেও তো শির্কের ভয় আছে যে আমি সংসার বাঁচানোর জন্য নামাজ পরে আল্লাহর সাথে শিরক করেছি। আমি কি করবো আমিতো উপায় খুঁজে পাইনা।আমার ওয়াসওয়াসা কাজ করে তাই নামাজ পরে নেই। আবার এটাও ভাবি আমার ওপর তো নামাজ ফরজ ও। নামাজের মধ্যে বার বার ভুল হয়। নামাজ কয়েকবার পড়ি। পরে বিরক্ত লাগে নামাজ পড়তে। শেষে বিরক্ত হয়ে নামাজ পড়ি। এইটাকি আমার শিরক হলো??

ছ। ঐদিন নামাজের সময় সিজদাতে আমার ছেলে আমার সিজদার জায়গায় আসে পরসে আমি ভাবসি আমি দেখিনি কারণ তখন আমি সিজদায়। তখন মনে আসে আমি আমার ছেলেকে দেই নাউজুবিল্লাহ।তারপর সিজদা থেকে উঠে বসে দেখি বাবুর খেলা আমার সামনে তখন আবার সিজদায় গিয়ে মনে হলো আমি বাবু খেলনাকে সিজদা দেই। নাউজুবিল্লাহ। আমার এমন ইন্টেশন নাই। তবুও মনে হলো যেন কথা গুলো আমি নিজেই মনে আনসি। এভাবে কি শিরক হওয়ার গেলো?

জ। স্বামীর কাছে শাশুড়ির নাম বিচার দিলে স্বামী বলে এভাবেই এসব সহ্য করেই এখানে থাকতে পারলে থাকো নয়তো বাপের বাড়ি যাও। এটাকি কেয়ানা বাক্য? নাকি এটা দিয়ে স্বামীর যদি স্ত্রীকে নিজের ওপর তালাক নেয়ার ক্ষমতা দেয় মনে মনে তাহলেকি স্ত্রী অধিকার পেয়ে যাবে স্ত্রী কিন্তু শুনে নাই যে স্বামী অধিকার দিসে ?

1 Answer

0 votes
by (598,650 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
চার মাযহাব সম্ভলিত সর্ববৃহৎ ফেকহি গ্রন্থ "আল-মাওসুআতুল ফেকহিয়্যা"গ্রন্থে লিপিবদ্ধ রয়েছে যে,
نَقَل ابْنُ عَابِدِينَ عَنِ اللَّيْثِ: فِي مَسْأَلَةِ طَلاَقِ الْمُوَسْوَسِ  أَنَّهُ لاَ يَجُوزُ طَلاَقُ  الْمُوَسْوَسِ  ، قَال: يَعْنِي الْمَغْلُوبَ فِي عَقْلِهِ
وَنَقَل ابْنُ الْقَيِّمِ: إِنَّ الْمُطْلِّقَ إِنْ كَانَ زَائِل الْعَقْل بِجُنُونٍ أَوْ إِغْمَاءٍ أَوْ وَسْوَسَةٍ لاَ يَقَعُ طَلاَقُهُ،  قَال: وَهَذَا الْمَخْلَصُ مُجْمَعٌ عَلَيْهِ بَيْنَ عُلَمَ ـ اءِ الأُْمَّةِ

- رِدَّةُ الْمُوَسْوَسِ:  
٢١ - إِنْ تَكَلَّمَ الْمُوَسْوَسُ  بِكَلاَمٍ يَقْتَضِي الرِّدَّةَ لَمْ يَكُنْ فِي حَقِّهِ رِدَّةٌ. صَرَّحَ بِذَلِكَ الْحَنَفِيَّةُ، يَعْنُونَ الْمَغْلُوبَ فِي عَقْلِهِ
ইবনে আবেদিন শামী রাহ বর্ণনা করেন,ওয়াসওয়াসা গ্রস্থ ব্যক্তি -যার বিবেকবুদ্ধি লোপ পেতে বসেছে-তার তালাক গ্রহণযোগ্য নয়।
ইবনুল কাইয়িম রাহ বলেন, যদি তালাক প্রদানকারী ব্যক্তির ওয়াসওয়াসা,বেহুশি বা পাগলামির দরুণ বিবেকবুদ্ধি লোপ পেতে থাকে, তাহলে তার তালাকও গ্রহণযোগ্য হবে না। এর উপর সমস্ত উলামাদের ঐক্যমত রয়েছে।

বিবেক বুদ্ধি লোপ পেতে বসা ওয়াসওয়াসা রোগীর এমন কোনো কথা বার্তা যা মুরতাদ হওয়াকে লাযিম করে দেয়, সেই কথাবার্তার দরুণ উক্ত ওয়াসওয়াসার রোগী মুরতাদ হবে না।(আল-মাওসু'আতুল ফেকহিয়্যাতুল কোয়েতিয়্যাহ-৪৩/১৫৬)


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
যেহেতু আপনি ওয়াসওয়াসা রোগে আক্রান্ত আছেন, তাই আপনার টেনশনের কোনো কারণ নাই। আপনার কথা দ্বারা কোনো তালাক হবে না এবং কুফরিও হবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...