আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
461 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (1 point)

আসসালামু আলাইকুম

  1. ১.আমি হোস্টেলে থাকি।এখন ওইখানে যে মাছ-মুরগী দেয় ওইগুলো আল্লাহর নাম নিয়ে জবাই করে কিনা আমার জানা নেই।এক্ষেত্রে তা খাওয়া জায়েজ হবে??
  2. ২.রেস্টুরেন্টের মুরগী দিয়ে তৈরী খাবারগুলো কি খাওয়া জায়েজ??

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)

ওয়া আলাইকুম আসসালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহ

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ
মুসলমান মালিকাধীন হোটেলের গোশত ভক্ষণ করা যাবে।কেননা মুসলমান যবেহের সময় বিসমিল্লাহ্ বলবে,এটাই স্বাভাবিক। এবং এমন ধারণা পোষণ করাই সকলের উচিৎ। তাছাড়া মুসলমান যদি যবেহের সময় অনিচ্ছাকৃত ভাবে বিসমিল্লাহকে ভূলেও যায়,তদুপরি মুসলমানের অন্তরে আল্লাহর নাম থাকার দরুণ ঐ যবেহকৃত জন্তুকে ভক্ষণ করা জায়েয রয়েছে। হাদিস শরিফে এসেছে, আয়েশা রাযি. বলেন, একদল লোক নবী রাসুলুল্লাহ ﷺ -কে জিজ্ঞেসা করল, ‘এক নও মুসলিম সম্প্রদায় আমাদের নিকট গোশত নিয়ে আসে। আমরা জানি না যে, তার জবেহকালে আল্লাহর নাম উচ্চারণ করা হয়েছে কি না।’ তিনি বললেন,
 ﺳَﻤُّﻮﺍ ﻋَﻠَﻴﻪِ ﺃَﻧﺘُﻢ ﻭَﻛُﻠُﻮﻩُ 
‘তোমরা আল্লাহর নাম নিয়ে তা ভক্ষণ কর।’ (বুখারি ২০৫৭, ৫৫০৭ ) 

উক্ত হাদিসের ব্যাখ্যায় হাফেজ ইবন হাজার আসকালানী রহ. বলেন,
 ﻭﻳﺴﺘﻔﺎﺩ ﻣﻨﻪ ﺃﻥ ﻛﻞ ﻣﺎ ﻳﻮﺟﺪ ﻓﻲ ﺃﺳﻮﺍﻕ ﺍﻟﻤﺴﻠﻤﻴﻦ ﻣﺤﻤﻮﻝ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﺼﺤﺔ ، ﻭﻛﺬﺍ ﻣﺎ ﺫﺑﺤﻪ ﺃﻋﺮﺍﺏ ﺍﻟﻤﺴﻠﻤﻴﻦ … ﻷﻥ ﺍﻟﻤﺴﻠﻢ ﻻ ﻳﻈﻦ ﺑﻪ ﻓﻲ ﻛﻞ ﺷﻲﺀ ﺇﻻ ﺍﻟﺨﻴﺮ ، ﺣﺘﻰ ﻳﺘﺒﻴﻦ ﺧﻼﻑ ﺫﻟﻚ
 ‘এই হাদিস থেকে বুঝা যায়, মুসলমানদের বাজারে যে গোশত পাওয়া যায় তা হালাল হিসেবে গণ্য হবে। কেননা, মুসলমানের সব বিষয়ে ততক্ষণ পর্যন্ত ভালো ধারণা রাখতে হয় যতক্ষণ পর্যন্ত এর বিপরীত স্পষ্ট প্রমাণ না পাওয়া যায়।’ (ফাতহুল বারী ৯/৭৮৬) 

সুতরাং 
  • মুসলিম দেশের হোটেল-রেস্তোরাঁ গুলোতে গোশত খাওয়া জায়েয রয়েছে।এক্ষেত্রে সন্দেহ প্রবণতা পরিহার করা উচিত।মুসলমানকে এবং মুসলিম সমাজের মানুষকে বিশ্বাস করাই স্বাভাবিকতা। অবশ্য কোনো অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া গেলে নিশ্চয়ই এসব থেকে দূরে থাকতে হবে। 
  • অন্যদিকে অমুসলিম রেস্তোরাঁ থেকে গোস্ত ভক্ষণ করতে হলে মালিককে জিজ্ঞাসা করতে হবে।সে যদি বলে ইসলামি ত্বরিকায় হালালভাবে যবেহ করা হয় নাই,তাহলে এমতাবস্থায় উক্ত গোশতকে ভক্ষণ করা যাবে না। 
কিন্তু যদি সে বলে যে এটাকে হালাল ত্বরিকায় যবেহ করা হয়েছে,তাহলে এমতাবস্থায় করণীয় কি? 
সে সম্পর্কে বর্ণিত রয়েছে যদি কোনো মুশরিক দাবী করে যে তার কাছে হালাল যবেহ করা গোস্ত রয়েছে। তাহলে সেটা খাওয়া জায়েয রয়েছে।( কিতাবুল ফাতাওয়া ৪/১৯৯ আরো বর্ণিত রয়েছে, আবকে মাসাঈল -৭/২৯২ জা'মেউল ফাতাওয়া-৩/১৩৭)

অমুসলিম দেশের গোশত ব্যতিত অন্যান্য খাবার সম্পর্কে যতক্ষণ না হারাম হওয়ার কোনো প্রমান মিলবে , ততক্ষণ পর্যন্ত উক্ত খাবার খাওয়া জায়েয হবে। আর গোশতের ব্যাপারে যতক্ষণ না হালাল হওয়ার কোনো প্রমাণ মিলবে, ততক্ষণ পর্যন্ত গোশতে খাওয়া জায়েয হবে না।


لما في الإختيار لتعليل المختار :
"ويقبل في المعاملات قول الفاسق، ولا يقبل في الديانات إلا قول العدل حرا كان أو عبدا، ذكرا أو أنثى.
قال: (ويقبل في المعاملات قول الفاسق) لأنها يكثر وجودها من الناس، فلو شرطنا العدالة حرج الناس في ذلك، وما في الدين من حرج، فيقبل قول الواحد عدلا كان أو فاسقا، حرا كان أو عبدا، ذكرا أو أنثى، مسلما أو كافرا دفعا للحرج،قال: (ولا يقبل في الديانات إلا قول العدل حرا كان أو عبدا، ذكرا أو أنثى) لأن الصدق فيه راجح باعتبار عقله ودينه، سيما فيما لا يجلب له نفعا ولا يدفع عنه ضررا، ولهذا قبلت رواية الواحد العدل للأخبار النبوية، وإنما اشترطنا العدالة لأنها مما لا يكثر وقوعها كثرة المعاملات، ولأن الفاسق متهم والكافر غير ملتزم لها فلا يلزم المسلم بقوله، بخلاف المعاملات فإنه لا مقام له في دارنا إلا بالمعاملة، ولا معاملة إلا بقبول قوله، ولا كذلك الديانات والمعاملات كالإخبار بالذبيحة والوكالة والهبة والهدية والإذن ونحو ذلك، والديانات كالإخبار بجهة القبلة وطهارة الماء." (ص:١٦٣،ج:٤،کتاب الكراهية،فصل في مسائل مختلفة،ط:دار الكتب العلمية)


وفي حاشية ابن عابدين :
"(ويقبل قول كافر) ولو مجوسيا (قال اشتريت اللحم من كتابي فيحل أو قال) اشتريته (من مجوسي فيحرم) ولا يرده بقول الواحد وأصله أن خبر الكافر مقبول بالإجماع في المعاملات لا في الديانات وعليه يحمل قول الكنز ويقبل قول الكافر في الحل والحرمة يعني الحاصلين في ضمن المعاملات لا مطلق الحل والحرمة.
(قوله أو قال اشتريته من مجوسي فيحرم) ظاهره أن الحرمة تثبت بمجرد ذلك، وإن لم يقل ذبيحة مجوسي وعبارة الجامع الصغير، وإن كان غير ذلك لم يسعه أن يأكل منه قال في الهداية معناه إذا قال كان ذبيحة غير الكتابي والمسلم اهـ تأمل. وفي التتارخانية قبيل الأضحية عن جامع الجوامع لأبي يوسف من اشترى لحما فعلم أنه مجوسي وأراد الرد فقال ذبحه مسلم يكره أكله اهـ ومفاده أن مجرد كون البائع مجوسيا يثبت الحرمة، فإنه بعد إخباره بالحل بقوله ذبحه مسلم كره أكله فكيف بدونه تأمل."(ص:٣٤٤،ج:٦،کتاب الحظر والإباحة،ط:ایج ایم سعید)

وفيةمجمع الأنهر شرح ملتقي الأبحر :
"واعلم أن الأصل في الأشياء كلها سوى الفروج الإباحة قال الله تعالى: هو الذي خلق لكم ما في الأرض جميعا، وقال: كلوا مما في الأرض حلالا طيبا، وإنما تثبت الحرمة بعارض نص مطلق أو خبر مروي فما لم يوجد شيء من الدلائل المحرمة فهي على الإباحة."(ص:٥٦٨،ج:٢،کتاب الأشربة،ط:دار إحياء التراث)


وفي بدائع الصنائع  :
"(ومنها) أن يكون مسلما أو كتابيا فلا تؤكل ذبيحة أهل الشرك والمجوسي والوثني وذبيحة المرتد أما ذبيحة أهل الشرك فلقوله تعالى: وما أهل لغير الله، وقوله عز وجل :وما ذبح على النصب، أي للنصب وهي الأصنام التي يعبدونها، وأما ذبيحة المجوس فلقوله عليه الصلاة والسلام: سنوا بالمجوس سنة أهل الكتاب غير ناكحي نسائهم ولا آكلي ذبائحهم،ولأن ذكر اسم الله تعالى على الذبيحة من شرائط الحل عندنا لما نذكر ولم يوجد."(ص:٤٥،ج:٥،کتاب الذبائح والصیود،فصل في بيان شرط حل الأكل في الحيوان المأكول،ط:دار الکتب العلمية)



(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...