বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(ক)
4350 নং ফাতাওয়ায় উল্লেখ করেছি,নামাযের কেরাতে যদি তাজবীদে ভূল হয়,যাকে লাহলে খাফী বলা হয়,তাহলে উক্ত নামাযকে দোহড়ানের প্রয়োজন নেই।তাজবীদ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-
1126
তবে যদি নামাযে এমন কোনো ভূল হয়,যার কারণে অর্থ পরিবর্তন হয়ে যায়,(এক্ষেত্রে তাজবীদ বিভাগের লাহনে জালী গ্রহণযোগ্য নয়,কেননা তাজবীদের পরিভাষায় এক হরফের স্থলে অন্য হরফ পড়ে নিলেই লাহনে জলী হয়ে যায়,চায় নিকটবর্তী মাখরাজ হোক বা দূরবর্তী মাখরাজ হোক,চায় অর্থ সঠিক থাকুক বা নাই থাকুক)কিন্তু ফুকাহায়ে কেরাম দূরবর্তী মাখরাজের উচ্ছারণের সময়ে এবং অর্থ বিগড়ে যাওয়ার সময়ে নামাযকে ফাসিদ হওয়ার ফাতাওয়া দিয়ে থাকেন।
সুতরাং নামাযে কোনো হরফ উচ্ছারণের সময়ে,সেই হরফের স্থলে তার দূরবর্তী মাখরাজের কোনো হরফ উচ্ছারিত হয়ে গেলে,এবং অর্থ বিগড়ে গেলে নামায ফাসিদ হয়ে যাবে।একবার উচ্ছারিত হয়ে গেলেই নামায ফাসিদ হয়ে যায়।দ্বিতীয়বার দোহড়িয়ে নিলেও আর নামায বিশুদ্ধ থাকবে না।ভূল উচ্ছারণের সময়ে আপনার নামায বিশুদ্ধ থাকছে কি না? সেই উচ্ছারণ কোনো মুফতির নিকট উল্লেখ করলেই বুঝতে পারবেন যে,আপনার নামায বিশুদ্ধ হয়েছে কি না?
সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
নামাযের কেরাতে ভূল বলতে যদি লাহনে জালী হয়ে থাকে,তাহলে এমন ভূল নামাযকে ফাসিদ করে দিয়েছে।আর যদি লাহনে জালী না হয়ে থাকে,তাহলে নামায তো অবশ্যই ফাসিদ হবে না।যদি সেই ভুলটি লাহনে জালী হয়ে থাকে,তাহলে নামায ফাসিদ হয়ে গিয়েছে।সুতরাং আপনাদেরকে নামায কা'যা করতে হবে।
(খ)আপনাকে এবং আপনার ভাই ভাই উভয়কেই কা'যা করতে হবে।আপনারা চাইলে জামাতের সাথেও কা'যা করতে পারেন।আবার একাকিও কা'যা করতে পারেন।এটা সম্পূর্ণ আপনাদের ইচ্ছাধীন বিষয়।
(গ)
5568 নং ফাতাওয়ায় আমরা উল্লেখ করেছি যে,মকসুদুল মুমিনিন বইটি সম্পূর্ণ ভুল সেটা বলা যাবে না।হ্যা এই যৎসামান্য বিষয় সম্পর্কে বিজ্ঞজন প্রশ্ন তুলেছেন। যেহেতু নবীন শিক্ষার্থী ভাইগণ এ কিতাব পড়ে কোনটি সহীহ আর কোনটি সহীহ নয়,সেটা বুঝতে পারবেন না, পার্থক্য করতে পারবেন না।তাই আমাদের পরামর্শ হল,এ কিতাব পাথমিক পর্যায়ে না পড়াই উত্তম।এ কথা অনস্বীকার্য যে,মকসুদুল মুমিন যারা লিখেছেন,তারা এ কিতাবের মাধ্যমে এ দেশে অনেক খেদমত করেছেন।এদেশের মানুষ এই কিতাবের মাধ্যমে দ্বীনের পথে এসেছেন।আল্লাহ লিখদেরকে জান্নাতুল ফিরদাউস নসীব করুক।আমীন।মকসুদুল মু'মিনিন কিতাবে যে বিষয়ে প্রশ্ন তুলা হয় যে,সেটা হল,কিছু আ'মল রয়েছে,যা নির্দিষ্ট সংখ্যায় করা হয়ে থাকে।অথচ নির্দিষ্ট সংখ্যার আ'মল ইসলামে গ্রহণযোগ্য নয়।এছাড়া অন্য কোনো বিষয়ে কেউ প্রশ্ন তুলেননি।
সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
এ সমস্ত কিতাবাদি পড়তে পারবেন।তবে সংখ্যা নির্দিষ্ট করে তাতে যে বিভিন্ন আ'মল বর্ণিত রয়েছে,সেগুলোকে কুরআন সুন্নাহ দ্বারা প্রমাণিত ভাবা যাবে না।
(ঘ)এ সব কিতাবের সবকিছু যে অশুদ্ধ তা কিন্তু নয়।হ্যা কিছু অতিরঞ্জন রয়েছে।সেগুলোকে পড়লে কেউ যে,গোমরাহ হবে সেটাও নিশ্চিত নয়।তাই এগুলোর স্থলে বিশুদ্ধ কিছু কিতাব রেখে দিতে পারেন।যে কিতাব কুরআন সুন্নাহর আলোকে রচিত থাকবে।যাতে সহীহ যঈফের সংমিশ্রণ থাকবে না।
(ঙ)গঞ্জল আরশ,দরুদে আকবর ইত্যাদি দু'আ কুরআন সুন্নাহ দ্বারা প্রমাণিত নয়।সুতরাং এগুলোর প্রচলন অবশ্যই বিদ'আত হবে।
(চ)কুরআন সুন্নাহে যেসব সূরার ফযিলত বর্ণিত হয়নি,সে সব ফযিলতকে গ্রহণ করা যাবে না,ফলো করা যাবে না।বরং এসব বিবর্জিত থাকবে।