আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
180 views
in ওয়াসওয়াসা by (27 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম।

আমার তালাকের ওয়াসওয়াসা আছে। সবসময় সন্দেহ আসতে থাকে।

(১) আমার এক বন্ধুর সাথে কক্সবাজার ঘুরতে যাবার বিষয়ে কথা বলছিলাম। কথা বলতে বলতে হঠাৎ আমার মনের ভিতর আসলো যে,

-মন চাই সবাইকে ছেড়ে ছুড়ে কক্সবাজার চলে যায়।

এমন কথা মনে আসার পর তখনি মনে হচ্ছে এমন কথা মনে আসায় আমার ওয়াইফ তালাক হয়ে যাবে কিনা। আবার মনে হচ্ছে আমি মনে হয় আমার ওয়াইফকে ছেড়ে দেবার কথা বললাম।

এজন্য কি তালাক পতিত হবে শায়েখ??

(২) গত কয়েক বছর আগে থেকে আমার ওয়াইফের জন্য সংসারে অশান্তি ছিল। এখন একটু ভাল আছি আলহামদুলিল্লাহ। কিন্তু এখন এই ওয়াসওয়াসা রোগ হবার কারনে তখনকার সময়ের বিভিন্ন কথা মনে আসছে ও আমার মনে হচ্ছে ওই সময় এটা হয়েছিল ওটা হয়েছিল আমি এটা বলেছিলাম ওটা বলেছিলাম এমন অনেক কথা মনে আসছে আর আমি সন্দেহে ভুগছি। কিছুদিন ভাল থাকছি আবার আগের কোন না কথা মনে এসে সন্দেহ সৃষ্টি করছে। উদাহারনসরুপ :
সেসময় আমি ও আমার পরিবারের লোক চাইতাম যে, এমন কিছু করতে যার জন্য আমার ওয়াইফ নিজে থেকে যেন আমাকে ছেড়ে চলে যায়। তাই সে কিছু চাইলে না দেওয়া অথবা তার সাথে খারাপ আচারন করা ইত্যাদি। এর জন্য কি তালাক পতিত হবে শায়েখ??

(৩) ওই সময় সংসারে অশান্তি থাকার কারনে আমার খালারা আমার বাসায় এসেছিল। কি সমস্যা হয় আমাদের মধ্যে জানার জন্য। তাই আমার মা ও খালারা ও আমার ওয়াইফ একসাথে বসে কথা বলছিলাম। তখন আমি বলেছিলাম যে,

(কেউ যদি আমাকে বলে, তুমি ৫ বছর জেল খাটবা, না তোমার ওয়াইফের সাথে সংসার করবা?
তখন আমি বলবো, আমি ৫ বছর জেল খাটবো। তবু সংসার করবো না। )

এই কথার মাধ্যমে আমি তালাক দিয়ে দিলাম এমন কোন নিয়তে বলিনি। মনে ওয়াইফের প্রতি রাগ ছিল তাই বলেছি। আগের এসব কথা এখন মনে আসছে আর আমার ওয়াসওয়াসা আরো বাড়ছে।
একথার জন্য কি তালাক পতিত হবে শায়েখ??

(৪) একবার সংসারে গন্ডোগোল হওয়াতে আমার চাচা চাচিরা আমার ওয়াইফের পক্ষ নেওয়াতে আমি বেশ কয়েকবার কিছু মানুষের সাথে বলেছিলাম যে,
(আমার ওয়াইফ তো আজ আছে কাল নেই। আমার চাচা চাচিদের কি উচিত হয়েছে তার সাপোর্ট করা।)
এই কথার জন্য কি তালাক পতিত হবে?

(৫) আমার বন্ধুর সাথে আমার খালাতো ভাই ডিলারশিপের ব্যাবসা ছাড়ছে না, বা ছেড়ে দিলে আর নিতে পারবে না সেসব বিষয়ে কথা বলছিলাম। কিন্ত এসব কথা বলার সময় আমার মনে হচ্ছিল আমি যেন আমার ওয়াইফকে ছেড়ে দেবার কথা বলছি ও আমার ওয়াইফকে না নেবার কথা বলছি। এজন্য কি তালাক পতিত হবে শায়েখ?

(৬) আমার অতিরিক্ত ওয়াসওয়াসা থাকার কারনে সবসময় মনের ভিতর তালাক নিয়ে বিভিন্ন চিন্তা বা তালাক দিয়ে দিলাম এমন কথা আসতে থাকে। সারাদিন এই তালাক নিয়ে চিন্তা ভাবনা আসতে থাকে। মাঝে মাঝে মনে হয় তালাক উচ্চারন করে ফেলছি। যদিও আমি নিজের কানে স্পষ্ট ভাবে তালাক শব্দ শুনছি না। তারপরেও মনে হয় এই বুঝি উচ্চারন করলাম। যে কারো উপরে রাগ হলেও মনে হচ্ছে আমি তাকে তালাক বলে ফেলবো। ওয়াইফের সাথে ফোনে কথা বলতে গেলে ফোন ধরা মাএ আগে তালাক শব্দ মনে আসে। যতক্ষন কল না কাটি মনে হয় তালাক শব্দ উচ্চারন করে ফেলবো। কোন কারনে ওয়াইফের উপর সামান্য রাগ হলেও মনে হচ্ছে তালাক বলে ফেলবো। মাঝে মাঝে মনে হয় দেয়াল এর সাথে মাথা ঠুকি। ঘুমের ভিতরে তালাক নিয়ে বিভিন্ন আজে বাজে স্বপ্ন দেখি এবং ঘুম ভাংগার পর সাথে সাথে মনে হয় তালাক উচ্চারন করে ফেলছি। এমন সন্দেহ আমাকে মানসিকভাবে খুবই কষ্ট দিচ্ছে শায়েখ। এসব কারনে কি তালাক পতিত হবে শায়েখ??

(৭) আল্লাহকে নিয়ে অনেক আজে বাজে চিন্তা আসে। অনেক সময় মনে হয় আমি আল্লাহকে পরোয়া করি না, এত হালাল হারামের চিন্তা করলে চলবে না, এছাড়া আরো অনেক শিরিকি ও কুফুরি কথা মনে আসে। আমি একটা এপ্সে এড দেখে সামান্য কিছু টাকা ইনকাম করার চেষ্টা করছি। আমি জানি এটা হারাম।এটা করা ঠিক না। কিন্তু তখনি আমার মনের ভিতর হচ্ছে আমি আল্লাহকে পরোয়া করি না। মাঝে মাঝে এই সমস্যা এত তিব্র হয় মনে হয় আমি এসব কথা উচ্চারন করে ফেলবো। এমনকি উচ্চারন করে ফেললাম কিনা ভেবেও সন্দেহ হয়। এতে কি আমার ঈমান নষ্ট হয়ে যাবে শায়েখ??

(৮) আমি এই মানসিক সমস্যার জন্য কিছুদিন ঔষধ খেয়েছি কিন্তু কোন কাজ হয়নি। হয়তোবা আরো ভাল ট্রিটমেন্ট করাতে হবে। এমন অবস্থায় আমার জন্য শরিয়তে কি ছাড় রয়েছে? ছাড় থাকলে সেটা কিরকম ছাড় জানাবেন শায়েখ।

1 Answer

0 votes
by (589,140 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন,
ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﻫُﺮَﻳْﺮَﺓَ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻪُ ﻗَﺎﻝَ : ﻗَﺎﻝَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢ : َ ( ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﺗَﺠَﺎﻭَﺯَ ﻟِﻲ ﻋَﻦْ ﺃُﻣَّﺘِﻲ ﻣَﺎ ﻭَﺳْﻮَﺳَﺖْ ﺑِﻪِ ﺻُﺪُﻭﺭُﻫَﺎ ﻣَﺎ ﻟَﻢْ ﺗَﻌْﻤَﻞْ ﺃَﻭْ ﺗَﻜَﻠَّﻢ
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন,নিশ্চয় আল্লাহ তা'আলা আমার খাতিরে আমার উম্মতের অন্তরে চলে আসা ওয়াসওয়াসা(শয়তানি প্ররোচনা) বিষয়ে কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ/শাস্তি প্রদাণ করবেন না।যতক্ষণ না সে কথা বা কাজের মাধ্যমে সেটাকে বাস্তব রূপ দিচ্ছে। (সহীহ বোখারী-২৩৬১,সহীহ মুসলিম-১২৭)

 তালাকের ওয়াসওয়াসা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-  https://www.ifatwa.info/835

ওয়াসওয়াসা সম্পর্কে জানতে ক্লিক করুন-  https://www.ifatwa.info/1379

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনার প্রশ্নের বিবরণমতে আপনি ওয়াসওয়াসা রোগে আক্রান্ত।সুতরাং আপনার কোনো তালাকও হবে না, এবং আপনার ঈমানেও কোনো সমস্যা হবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (589,140 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...