ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
নামাযকে কখনো পরিত্যাগ করা যাবে না।এমনকি যুদ্ধের সময়ও নামায পড়তে হবে।
সালাতুল খাওফ সম্পর্কে আল্লাহ তা'আলা বলেন,(যেহেতু যুদ্ধের জন্য সফর পরিমাণ দূরত্বে অবস্থান করা স্বাভাবিক,তাই প্রথমে কসরের আলোচনা তারপর সালাতুল খাওফের পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে)
وَإِذَا ضَرَبْتُمْ فِي الْأَرْضِ فَلَيْسَ عَلَيْكُمْ جُنَاحٌ أَن تَقْصُرُوا مِنَ الصَّلَاةِ إِنْ خِفْتُمْ أَن يَفْتِنَكُمُ الَّذِينَ كَفَرُوا ۚ إِنَّ الْكَافِرِينَ كَانُوا لَكُمْ عَدُوًّا مُّبِينًا
যখন তোমরা কোন দেশ সফর কর, তখন নামাযে কিছুটা হ্রাস করলে তোমাদের কোন গোনাহ নেই, যদি তোমরা আশঙ্কা কর যে, কাফেররা তোমাদেরকে উত্ত্যক্ত করবে। নিশ্চয় কাফেররা তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।
وَإِذَا كُنتَ فِيهِمْ فَأَقَمْتَ لَهُمُ الصَّلَاةَ فَلْتَقُمْ طَائِفَةٌ مِّنْهُم مَّعَكَ وَلْيَأْخُذُوا أَسْلِحَتَهُمْ فَإِذَا سَجَدُوا فَلْيَكُونُوا مِن وَرَائِكُمْ وَلْتَأْتِ طَائِفَةٌ أُخْرَىٰ لَمْ يُصَلُّوا فَلْيُصَلُّوا مَعَكَ وَلْيَأْخُذُوا حِذْرَهُمْ وَأَسْلِحَتَهُمْ ۗ وَدَّ الَّذِينَ كَفَرُوا لَوْ تَغْفُلُونَ عَنْ أَسْلِحَتِكُمْ وَأَمْتِعَتِكُمْ فَيَمِيلُونَ عَلَيْكُم مَّيْلَةً وَاحِدَةً ۚ وَلَا جُنَاحَ عَلَيْكُمْ إِن كَانَ بِكُمْ أَذًى مِّن مَّطَرٍ أَوْ كُنتُم مَّرْضَىٰ أَن تَضَعُوا أَسْلِحَتَكُمْ ۖ وَخُذُوا حِذْرَكُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ أَعَدَّ لِلْكَافِرِينَ عَذَابًا مُّهِينًا
যখন আপনি তাদের মধ্যে থাকেন, অতঃপর নামাযে দাঁড়ান, তখন যেন একদল দাঁড়ায় আপনার সাথে এবং তারা যেন স্বীয় অস্ত্র সাথে নেয়। অতঃপর যখন তারা সেজদা সম্পন্ন করে, তখন আপনার কাছ থেকে যেন সরে যায় এবং অন্য দল যেন আসে, যারা নামায পড়েনি। অতঃপর তারা যেন আপনার সাথে নামায পড়ে এবং আত্মরক্ষার হাতিয়ার সাথে নেয়। কাফেররা চায় যে, তোমরা কোন রূপে অসতর্ক থাক, যাতে তারা একযোগে তোমাদেরকে আক্রমণ করে বসে। যদি বৃষ্টির কারণে তোমাদের কষ্ট হয় অথবা তোমরা অসুস্থ হও তবে স্বীয় অস্ত্র পরিত্যাগ করায় তোমাদের কোন গোনাহ নেই এবং সাথে নিয়ে নাও তোমাদের আত্নরক্ষার অস্ত্র। নিশ্চয় আল্লাহ কাফেরদের জন্যে অপমানকর শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছেন।(সূরা আন-নিসা-১০২)
কখন কোন পরিস্থিতে নামাযকে কাযা করা যাবে সে সম্পর্কে হাদীসে এসেছে,
আনাস ইবনু মালিক (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত।
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " مَنْ نَسِيَ صَلاَةً فَلْيُصَلِّهَا إِذَا ذَكَرَهَا لاَ كَفَّارَةَ لَهَا إِلاَّ ذَلِكَ " . قَالَ قَتَادَةُ وَأَقِمِ الصَّلاَةَ لِذِكْرِي .
রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কেউ কোন সালাত আদায় করতে ভুলে গেলে যখন স্মরণ হবে তখনই যেন সে তা আদায় করে নেয়। এ ব্যবস্থা গ্রহণ করা ছাড়া আর কোন কাফফারাহ তাকে দিতে হবে না।
হাদীসের বর্ণনাকারী কাতাদাহ্ তার বর্ণনায় "আমার স্মরণের জন্য সালাত আদায় করো"- (সূরাহ ত্ব-হা- ২০ঃ ১৪) এ আয়াতটি উল্লেখ করেছেন। (সহীহ মুসলিম-১৪৫২/১৪৩৬/১৪৪৬)
আবূ কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ رَبَاحٍ، عَنْ أَبِي قَتَادَةَ، قَالَ ذَكَرُوا لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَوْمَهُمْ عَنِ الصَّلاَةِ فَقَالَ " إِنَّهُ لَيْسَ فِي النَّوْمِ تَفْرِيطٌ إِنَّمَا التَّفْرِيطُ فِي الْيَقَظَةِ فَإِذَا نَسِيَ أَحَدُكُمْ صَلاَةً أَوْ نَامَ عَنْهَا فَلْيُصَلِّهَا إِذَا ذَكَرَهَا "
সাহাবায়ে কিরাম (রাঃ) নিদ্রাবস্থায় সালাতের সময় তাদের ঘুমে থাকার বিষয়টি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট উল্লেখ করলেন। তিনি বললেনঃ ঘুমে থাকার মধ্যে অবহেলা নেই। অবহেলা হয় জাগ্রত অবস্থায় (যথাসময়ে সালাত আদায় না করলে)। সুতরাং যদি তোমাদের কেউ সালাত (নামায/নামাজ) ভুলে যায় বা ঘুমিয়ে পড়ে, তবে যখনই স্মরণ হয় তখনই পড়ে নেবে।
(সুনানে নাসাঈ-৬১৬,ইবনু মাজাহ হাঃ ৬৯৮, সহীহ মুসলিম- ১৪৪২)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
রাসূলুল্লাহ সাঃ খনাদকের যুদ্ধে নামায কাযা করেছেন।একথা সর্বজন স্বীকৃত।
প্রশ্ন হল, যখন ইসলামে সালাতু খাওফের প্রচলন ছিল, তখন নামাযকে কাযা করা কি প্রয়োজন ছিল,সালাতুল খাওফ পড়ে নিলেই তো হতো।রাসূলুল্লাহ সাঃ কেন পড়লেন না?
এই প্রশ্নের জবাবে উলামায়ে কেরামদের মতবিরোধ হয়েছে, মূল মতপার্থক্যর বিষয় হল, সালাতুল খাওফ যে যুদ্ধে নাযিল হয়েছে, সেই যদ্ধের নাম "যাতুর রি'কা" এই যাতুর রি'কা যুদ্ধ খন্দকের যুদ্ধের পূর্বে হয়েছে না পরে হয়েছে? সেটা নিয়েই উলামাদের মধ্যে তুমুল মতপার্থক্য হয়েছে,
কামাল ইবনে হুমাম ফাতহুল কাদীর গ্রন্থে লিখেন,
وقال الكمال بن الهمام في فتح القدير:
إن صلاة الخوف إنما شرعت في الصحيح بعد الخندق، فلذلك لم يصلها إذا ذاك
বিশুদ্ধ কথা হল, সালাতুল খাওফের বিধান খন্দকের যুদ্ধের পরে এসেছে। সুতরাং খন্দের যুদ্ধের সময় সালাতুল খাওফের বিধানই ছিলনা।
হেদায় কিতাবের শরাহ বেনায়াতে বর্ণিত রয়েছে,
فإن قلت: روي عن ابن إسحاق والواقدي أن غزوة ذات الرقاع كانت قبل غزوة الخندق، وقد صلى رسول الله - عَلَيْهِ السَّلَامُ - صلاة الخوف في غزوة ذات الرقاع، وقال الأترازي: فثبت أن صلاة الخوف كانت شرعت قبل الخندق، فلما ترك رسول الله عليه الصلاة السلام يوم الخندق لأجل القتال، دل أن القتال يمنع الصلاة.
قلت: قال البيهقي: لا حجة لهم، لأن صلاة الخوف إنما شرعت بعد الخندق، وقد جاء التصريح في طريق الحديث، بأن صلاة يوم الأحزاب كانت قبل نزول صلاة الخوف، رواه النسائي في سننه وابن أبي شيبة وعبد الرزاق في مصنفيهما، والبيهقي في سننه والشافعي وأبو يعلى والدارمي في مسانيدهم كلهم عن ابن أبي ذئب عن سعيد المقبري «عن عبد الرحمن بن أبي سعيد الخدري عن أبيه قال: جئنا يوم الخندق، فذكره إلى أن قال: وذلك قبل أن ينزل {فَرِجَالًا أَوْ رُكْبَانًا} [البقرة: 239] [البقرة: 239] » (البناية شرح الهداية)
সারমর্ম হল,
বিশুদ্ধ কথা হল, সালাতুল খাওফের বিধান খন্দকের যুদ্ধের পরে এসেছে। সুতরাং খন্দের যুদ্ধের সময় সালাতুল খাওফের বিধানই ছিলনা।