আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
127 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (23 points)
আসসালামুআলাইকুম, হুজুর আশা করি ভালো আছেন।

আপনার কাছে বিনীত অনুরোধ যদি আমার প্রশ্নটি মনোযোগ দিয়ে পড়ার। আমি দু রাকাত নামাজ পড়ে আপনার জন্য দুয়া করবো ইনশাআল্লাহ।

আল্লাহ উত্তম প্রতিদানকারী।

আমি আইবিএস নামক পায়খানা জনিত একটি রোগে ভুগছি। টয়লেট নরম হয়, মাঝেমাঝে ডায়রিয়া, পেটে ও পায়ুপথে ভুটভাট করে, গ্যাস হয়। এই রোগের কোনো ঔষধ নেই। টেনশন, মানসিক চাপ, ঘুম কমের ফলে এটি হয়। এখন সমস্যা অযু থাকা নিয়ে।

মাঝেমধ্যে আসরের থেকে, বেশিরভাগ সময় মাগরিব ও এশার থেকে পায়ুপথে ভুটভাট শুরু হয়ে যায়। এই ভুটভাট বায়ু হয়ে বের হয়না। কিছু বায়ু পায়ুপথে কাটার মত আটকে থাকে, চাপ দিলেও বের হয়না। পায়ুপথের এদিক সেদিক দৌড়াদৌড়ি করে। আবার একজায়গায় স্থির হয়, আবার দৌড়াদৌড়ি করে।

ফজরের নামাজে সময় সবচেয়ে বেশি হয়। নামাজের ওয়াক্ত শেষ হয়ে যায়।

★অযুর পরে এই ভুটভাট থেকে কিছু বায়ু, সূক্ষ্ণ বায়ু পায়ুপথের ছিদ্রে প্রবেশ করে এটাই আমি বুঝতে পারি। যেই বায়ু বের হয়ে যায় বা যাবে বুঝতে পেরে আমি অযু ভেঙেছে ধরি।

ভুটভাটের ফলে পায়ুপথ স্বাভাবিকভাবে একটা চাপ থাকে, বা বায়ুর দৌড়াদৌড়ির কারনে পায়ুপথের বাইরের মাংসপেশি, লোম কেপে কেপে উঠে। ফলে সন্দেহের মধ্যে পড়ে যায় অযু আছে কি নাই। নামাজের মধ্যে হলে নামাজের খুসুবুঝু থাকেনা, আমার পা কাপা শুরু হয়ে যায়৷ কারন ওয়াসাওয়াসা রোগী হিসেবে বারবার অযু করা আমার জন্য কঠিন। আবার আমি কি মাজুর কিনা সেটা যাচাই করিনি। তবে আমার মনে হয় মাজুর হবোনা। এই সম্পর্কে আরেকটি প্রশ্ন থাকবে পরে। এই সমস্যার জন্য আমার অনেক নামাজ কাজা হয়ে যায়।

লেখা বড় হতে পারে বলে আরো কিছু কষ্টের কথা লিখতে পারিনি। বিশেষ করে নামাজ সুন্দরভাবে না পড়তে পারার কষ্ট।

এখন আমি কি করতে পারি হুজুর?????

এছাড়া প্রশ্ন

১/আমি কি আমার উপরে বর্ণিত সমস্যার জন্য প্রবল ধারনার ওপর নির্ভর করে আমল করেতে পারবো? যেই মাসয়ালা নামাজের মধ্যে করা হয়। অর্থাৎ পায়ুপথে ভুটভাট ও বায়ুর চাপে যদি প্রবল ধারনা যদি বেশি হয় অযু ভাঙলো তাহলে অযু ভাঙা ধরবো। আর যদি প্রবল ধারনা হয় অযু ভাঙেনি, তাহলে না।

1 Answer

0 votes
by (564,060 points)
edited by
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، وَمُحَمَّدُ بْنُ أَحْمَدَ بْنِ أَبِي خَلَفٍ، قَالَا حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ، وَعَبَّادِ بْنِ تَمِيمٍ، عَنْ عَمِّهِ، قَالَ: شُكِيَ إِلَى النَّبِيِّ صلي الله عليه وسلم الرَّجُلُ يَجِدُ الشَّىْءَ فِي الصَّلَاةِ حَتَّى يُخَيَّلَ إِلَيْهِ فَقَالَ " لَا يَنْفَتِلُ حَتَّى يَسْمَعَ صَوْتًا أَوْ يَجِدَ رِيحًا " . - صحيح : 

‘আব্বাদ ইবনু তামীম হতে তাঁর চাচার সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে অভিযোগ করল যে, কখনো সলাতের মধ্যে কিছু একটা সন্দেহ হয় যে, তার অযু হয়ত নষ্ট হয়ে গেছে। তিনি বললেন, (বায়ু নির্গত হওয়ার) শব্দ না শুনা কিংবা গন্ধ না পাওয়া পর্যন্ত সলাত ছাড়বে না।

বুখারী (অধ্যায়ঃ উযু, অনুঃ নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত সন্দেহ বশতঃ উযু করতে হবে না, হাঃ ১৩৭), মুসলিম ৩৬২ (অধ্যায়ঃ হায়িয, অনুঃ পবিত্রতার ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার পর উযু নষ্ট হওয়ার সন্দেহ হলেও ঐ অবস্থায় সালাত আদায় করা জায়িয,মিশকাতুল মাসাবিহ ৩০৬)

এই হাদীসের ব্যাখ্যায় মুহাদ্দিসিনে কেরামগন বলেছেনঃ

ব্যাখ্যা: قَوْلُهٗ (حَتّى يَسْمَعَ صَوْتًا أَو يَجِدَ رِيْحًا) (যতক্ষণ না সে বায়ু বের হওয়ার শব্দ বা নির্গত বায়ুর গন্ধ পাবে ততক্ষণ নামাজ ছেড়ে আসবে না)। এর অর্থ হলো যতক্ষণ না সে শব্দ শ্রবণ বা গন্ধ পাওয়া বা অন্য যে কোন পন্থায় তার বায়ু নির্গত হওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত হয় ততক্ষণ নামাজ পরিত্যাগ করবে না বা ছেড়ে আসবে না। তবে এতে সুনিশ্চিত হওয়ার জন্য শুধুমাত্র শব্দ শ্রবণ বা গন্ধ পাওয়াটিই শর্ত নয়।

এ হাদীস আরও প্রমাণ করে যে, শারী‘আতের কোন বিষয়ে সন্দেহের মাধ্যমে সুনিশ্চিত বিষয় বাতিল হয়ে যাবে না। অতএব যার সন্দেহ হবে বায়ু নির্গত হয়েছে কিনা তবে সে তার অজু ভঙ্গ না হওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত থাকবে। নিশ্চিত না হাওয়া পর্যন্ত এ সন্দেহ তার কোন ক্ষতি করবে না। আর এটি অন্যান্য বিষয়েও সমভাবে প্রযোজ্য।
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি  যদি বায়ু বের হওয়ার আওয়াজ/গন্ধ না পান,নিশ্চিতও না হোন,সেক্ষেত্রে অযু ভেঙ্গে যাবেনা।

এক্ষেত্রে প্রশ্নের বিবরণ মতে আপনি যেহেতু রুগী,আপনি আইবিএস নামক পায়খানা জনিত একটি রোগে ভুগছেন,সুতরাং বুঝা যাচ্ছে যে নামাজে বায়ু বের হওয়ার বিষয়টি আপনার ওয়াওয়াসা থেকে নয়,বরং এর বাস্তবতা রয়েছে।

সুতরাং বায়ু বের হওয়ার আওয়াজ/গন্ধ না পেলেও আপনি প্রবল ধারনার উপর আমল করতে পারবেন। 

যদি প্রবল ধারনা হয় যে বায়ু বের হয়েছে,সেক্ষেত্রে কোনো কথাবার্তা না বলে সরাসরি অযু করে এসে যেখানে নামাজ ছেড়ে দিয়েছেন,ঠিক সেখান থেকেই বাকি নামাজ আদায় করবেন।

পুনরায় শুরু থেকে নামাজ আদায় করতে হবেনা।
যেমন ৩য় রাকাতে রুকুতে অযু ভেঙ্গে গিয়েছিলো,সেক্ষেত্রে অযু করে এসে তাকবির বলে ৩য় রাকাতের রুকুতে চলে যাবেন,ও বাকি নামাজ শেষ করবেন।

আর যদি প্রবল ধারনা হয় যে বায়ু বের হয়নি,বায়ু বের হওয়ার আওয়াজ/গন্ধও পাওয়া যায়নি,সেক্ষেত্রে অযু ভেঙ্গে যায়নি ধরে নামাজ চালিয়ে যাবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 263 views
0 votes
1 answer 236 views
...