আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
137 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (12 points)
আসসালামু আলাইকুম
১.আমার একজনের সাথে হারাম সম্পর্ক ছিল . মাশাআল্লাহ এখন নেই .এখন চেষ্টা করি দিনের পথে চলার যখন ছিলো তখন দুই জনের মধ্যে গিফট আদান প্রদান হয়েছে বলতে গেলে আমার পক্ষ থেকে তার তুলনায় অনেক বেশি.হারাম সম্পর্ক এর সময় তার কাছ থেকে আমি ২০০ টাকা নিয়েছিলাম এবং বলেছিলাম সামনের মাসে দিয়ে দেবন. কিন্তু পরে কোন কারণে হয়তো দাওয়া হয় নি.যেহেতু এইটা বান্দার হক তাই আমি তার মোবাইল নাম্বার একজন এর কাছ থেকে নিয়ে ম্যানেজ করেছি.  যদি তাকে না জানিয়ে তার নম্বরে আমি ২০০ টাকা ফ্লেক্সিলোড করে দি তাইলে কি হক আদায় হবে?? অথবা ওই মেয়ে নম্বরে ফ্লেক্সিলোড করে এসএমএস দিয়ে দিলাম যে তুমি ২০০ টাকা পেতে তাই পরিশোধ করলাম তাইলে কি হবে নাকি যেহেতু  সরাসরি নিয়েছিলাম তাই টাকা  সরাসরি দিতে হবে ??

২.জীবনে অনেক এর অনেক ভাবে হক নষ্ট করেছি .কিছু উদাহরণ হিসেবে ছোট বেলায় একজনের মুরগী কিনে ৫ টাকা কম ছিলো বলেছিলাম পরে দেবো আর দাওয়া হয় নি.একজন শিক্ষক এর কাছে পড়ে তাকে কিছু টাকা কম দিয়েছিলাম এইরকম অনেক হক ই নষ্ট করেছি .এখানে টাকার হক জড়িত . আর হারাম খেলে ইবাদত কবুল হয় না.. এখন আমার প্রশ্ন হলো এই টাকার হক গুলা শোধ না করি তাহলে কি  আমার ইবাদত দোয়া কবুল হবে ??অথবা টাকার হক পরিশোধ না করা পর্যন্ত কি আমার ইবাদত দোয়া কবুল হবে??

৩.অনেক এর টাকার হক হয়তো নষ্ট করেছি আবার বন্ধু বান্ধব একসাথে চলার সময় টাকা নিয়েছি কিন্তু পরে আর দেই নি অনেক শিক্ষক এর কাছে পড়েছি হয়তো কিছু  টাকা কম দিয়েছি .. তারাও কেউ চাইনি.. এখন তাদের না জানিয়ে যদি আমি তাদের টাকার হক গুলা অন্য ভাবে আদায় করি তাইলে কি হবে .মনে নিয়ত থাকবে তাদের হক আদায় . তাদের কাউকে সমপরিমাণ টাকার বই হাদীয়া বা বন্ধুদের গাড়ির ভাড়া বা কাউকে পোশাক হাদীয়া  বা কাউকে সমপরিমাণ টাকার খাবার খাওয়ানো .অথবা কাউকে মোবাইলে ফ্লেক্সিলোড? এইভাবে করলে কি হক আদায় হবে??

1 Answer

0 votes
by (59,970 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/46246/ নং ফাতওয়াতে আমরা বলেছি যে,

কারোর নিকট বান্দার হক পাওনা থাকলে,প্রথমে উক্ত হক পরিশোধের জন্য সাধ্যমত চেষ্টা করতে হবে। সাধ্যমত চেষ্টা করার পরও যদি সেই হককে আদায় করা সম্ভব না হয়, তাহলে উক্ত প্রাপ্য হক্বকে সেই ব্যক্তির পক্ষ থেকে সদকাহ করে দিবে এবং আল্লাহ তা'আলার নিকট খালিছ নিয়তে তাওবাহ করবে। আল্লাহ তা'আলা কারো প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে গেলে নিজ পক্ষ্য থেকে বান্দার হককে আদায় করে দিবেন।

 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ

حَدَّثَنَا آدَمُ بْنُ أَبِي إِيَاسٍ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ حَدَّثَنَا سَعِيدٌ الْمَقْبُرِيُّ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَنْ كَانَتْ لَهُ مَظْلَمَةٌ لأَخِيهِ مِنْ عِرْضِهِ أَوْ شَيْءٍ فَلْيَتَحَلَّلْهُ مِنْهُ الْيَوْمَ قَبْلَ أَنْ لاَ يَكُونَ دِينَارٌ وَلاَ دِرْهَمٌ إِنْ كَانَ لَهُ عَمَلٌ صَالِحٌ أُخِذَ مِنْهُ بِقَدْرِ مَظْلَمَتِهِ وَإِنْ لَمْ تَكُنْ لَهُ حَسَنَاتٌ أُخِذَ مِنْ سَيِّئَاتِ صَاحِبِهِ فَحُمِلَ عَلَيْهِ

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি তার ভাইয়ের সম্ভ্রমহানি বা অন্য কোন বিষয়ে যুলুমের জন্য দায়ী থাকে, সে যেন আজই তার কাছ হতে মাফ করিয়ে নেয়, সে দিন আসার পূর্বে যে দিন তার কোন দ্বীনার বা দিরহাম থাকবে না। সে দিন তার কোন সৎকর্ম না থাকলে তার যুলুমের পরিমাণ তা তার নিকট হতে নেয়া হবে আর তার কোন সৎকর্ম না থাকলে তার প্রতিপক্ষের পাপ হতে নিয়ে তা তার উপর চাপিয়ে দেয়া হবে। (বুখারী শরীফ ২৪৪৯.৬৫৩৪) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২২৭০,

ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২২৮৭)

 

https://www.ifatwa.info/8668  নং ফাতাওয়াতে বলেছি যে,

অন্যর মাল তার অন্তরের সন্তুষ্টি ব্যতীত কারো জন্য হালাল হয় না।বিদায় এসব পরিত্যাজ্য।

কেননা আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ

ﻳَﺎ ﺃَﻳُّﻬَﺎ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺁﻣَﻨُﻮﺍْ ﻻَ ﺗَﺄْﻛُﻠُﻮﺍْ ﺃَﻣْﻮَﺍﻟَﻜُﻢْ ﺑَﻴْﻨَﻜُﻢْ ﺑِﺎﻟْﺒَﺎﻃِﻞِ ﺇِﻻَّ ﺃَﻥ ﺗَﻜُﻮﻥَ ﺗِﺠَﺎﺭَﺓً ﻋَﻦ ﺗَﺮَﺍﺽٍ ﻣِّﻨﻜُﻢْ ﻭَﻻَ ﺗَﻘْﺘُﻠُﻮﺍْ ﺃَﻧﻔُﺴَﻜُﻢْ ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠّﻪَ ﻛَﺎﻥَ ﺑِﻜُﻢْ ﺭَﺣِﻴﻤًﺎ

তরজমাঃ-হে ঈমানদারগণ! তোমরা একে অপরের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না। কেবলমাত্র তোমাদের পরস্পরের সম্মতিক্রমে যে ব্যবসা করা হয় তা বৈধ। আর তোমরা নিজেদের কাউকে হত্যা করো না। নিঃসন্দেহে আল্লাহ তা’আলা তোমাদের প্রতি দয়ালু। (সূরা নিসা-২৯)

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

 

. প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনি নিজে সরাসরি না দিয়ে অন্য কারো (মাহরাম মহিলার) মাধ্যমে বিকাশ করে তার কাছে ঐ ২ শত টাকা পৌছানোর চেষ্টা করবেন কারণ, আপনি নিজে তা পৌছাতে গেলে আবার ফিতনার আশংকা রয়েছে আর যদি এটা সম্ভব না হয় তাহলে অন্য কোনো অপরিচিত নাম্বার থেকে তার নাম্বারে ফ্লেক্সিলোড করে দিলেও হবে ইনশাআল্লাহ।

 

২-৩. জী, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার ইবাদত কবুল হবে ইনশাআল্লাহ। তবে খুব দ্রুত ঐ হকগুলো আদায় করে দিবেন। কারণ আল্লাহ তায়ালা বান্দার হক মাফ করেন না।

উল্লেখ্য যে, যাদের যাদের হক নষ্ট করেছেন হিসেব করে করে তাদের সবার নিকট টাকা পৌছিয়ে দিবেন। আর লজ্জাবোধ করলে হাদিয়া নামে হলেও দিবেন। পৌছিয়ে দেয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করার পরও যদি পৌছানো সম্ভব না হয়, তখন আপনি তাদের নামে উক্ত টাকা গুলি সদকাহ করে দিবেন। পাশা পাশি তওবাও করবেন।

 

উল্লেখ্য যে, শুধু তওবা করলে হবে না। বরং তাদের সবার নিকট টাকা পৌছিয়ে দিতে হবে। আর এটা সম্ভব না হলে তাদের নামে উক্ত টাকা গুলি সদকাহ করে দিতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...