জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم
প্রথমে আমরা দুইটি আয়াত দেখে নেই।
★আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘
বল, ‘আমার নিকট যে ওহী পাঠানো হয়, তাতে আমি আহারকারীর উপর কোন হারাম পাই না, যা সে আহার করে। তবে যদি মৃত কিংবা প্রবাহিত রক্ত অথবা শূকরের গোশ্ত হয়- কারণ, নিশ্চয় তা অপবিত্র।’ (আন-আম : ১৪৫)
সুরা মায়েদার ০৩ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ
حرمت عليكم الميتة والدم ولحم الخنزير،،
তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃত জন্তু, রক্ত, শূকরের মাংস এবং যা আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে জবাই করা হয়েছে। এছাড়া শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মরা, আঘাত পেয়ে মরা, উপর থেকে পড়ে মরা, শিংয়ের আঘাতে মরা এবং হিংস্র জন্তুর খাওয়া প্রাণী এগুলোও হারাম।
,
এখন আসি মূল প্রশ্নের উত্তরে।
আমাদের দেশে,অন্যান্য অনেক রাস্ট্রে কিছু খাদ্য পানীয়তে জেলেটিন এর ব্যবহার হয়।
ইউরোপের জেলেটিন উৎপাদকদের সংগঠন জেলেটিন ম্যানুফ্যাকচারার্স অফ ইউরোপ বা জিএমইর তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ৫৯% জেলেটিন ব্যবহৃত হয় খাদ্যপণ্যে৷ ৩১% ব্যবহৃত হয় ফার্মাসিউটিক্যালস পণ্যে, ২% ছবি প্রক্রিয়াকরণে ও আরো বিভিন্ন কাজে ৮% ব্যবহৃত হয়৷
খাদ্যপণ্য ছাড়াও ক্রিম, লোশন ও বার্ধ্যক্য রোধে ব্যবহৃত মাস্কে এটি ব্যবহৃত হয়৷ শাওয়ার জেল, শ্যাম্পু ও চুলের স্প্রেতে ছাড়াও জেলেটিন থাকে অনেক রকমের ক্যাপসুল ও ট্যাবলেটে ৷ এছাড়া খেলোয়াড়দের পুষ্টিবর্ধনে বা গবাদিপশুর খাদ্যেও এর ব্যবহার প্রচলিত৷
কোনো কোনো গবেষণা বলছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে শূকরের ত্বক থেকে প্রক্রিয়াজাত জেলেটিন সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়৷ তবে ফ্রান্স ও ব্রিটেনে এর যোগানদাতা মূলত গরু ও অন্যান্য গবাদি পশু৷ তবে পুরো ইউরোপের চিত্র এমন নয়৷
যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত ভিত্তিক বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান গ্র্যান্ড ভিউ রিসার্চের এ বছরের বাৎসরিক রিপোর্ট অনুযায়ী, ‘‘২০১৮ সালে সবচেয়ে বেশি আয় হয়েছে শূকরের ত্বকের জেলেটিন থেকে৷ আগামী কয়েক বছরেও এই ধারা বজায় থাকবে৷ শূকরের ত্বকের জেলেটিন উৎপাদনে ইউরোপই সবচেয়ে এগিয়ে এবং এই ধারাও অব্যাহত থাকবে৷''
তবে তারা বলছে, গরু ও অন্যান্য গবাদি পশুর হাড় ও চামড়া থেকে তৈরি জেলেটিন তৈরির হার বছরে সাড়ে পাঁচ শতাংশ করে বাড়ছে৷ কাঁচামাল ব্যবহারের হিসেবে শূকরের ত্বকের চেয়ে অন্য উপাদানগুলো মোট হিসেবে এগিয়ে আছে৷
★শরীয়তের বিধান মতে শূকরের গোশত হারাম৷ তাই শূকরের ত্বকের জেলেটিনও হারাম, বলে ধরা হয়৷
, ‘‘জেলেটিন যেহেতু হাড়, ক্ষুর ও প্রাণীর টিস্যু সিদ্ধ করে তৈরি করা হয়, তাই এটা প্রাণীটির বৈশিষ্ট্যই ধারণ করে৷ যদি সেই প্রাণীর গোশত হালাল হয়, যেমন গরু, উট, ভেড়া ও অন্যান্য, তাহলে জেলেটিনও হালাল হবে, এবং এই প্রাণী থেকে তৈরি অন্যান্য খাদ্যপণ্যও৷ কিন্তু তা যদি হারাম হয়, যেমন শূকর, তাহলে তার জেলেটিনও হারাম হবে৷''
প্রাণীর গোশত হালাল হলেও তা জবাই করতে ইসলামিক উপায় অবলম্বন করা হয়েছে কি না, তাও দেখতে হবে। তবে ইসলামী রাস্ট্রে বা ইসলাম অধ্যুষিত এলাকা কে জবাই করেছে জানা না থাকলে তা জায়েজ আছে।
,
★★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যেই প্রানীর গোশত হালাল,সেই প্রানীর জেলেটিন,সোয়া সস হালাল।
(তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই শরয়ী নীতিমালা মেনেই উক্ত প্রানীর জবাই হওয়া শর্ত)
আর যেই প্রানীর গোশত হারাম,সেই প্রানীর জেলেটিন,সোয়া সসও হালাল।
,
আর নুডলসে ব্যবহার সোয়া সস বা অন্যান্য সসের ক্ষেত্রেও বিধান একই।
হ্যাঁ যদি প্রানী ব্যাতিত অন্য কোনো বস্তু দ্বারা যদি সোয়া সস বানানো হয়,তাহলে দেখতে হবে সেই বস্তুটি হালাল কিনা,যদি হালাল হয়,তাহলে তার সসও হালাল হবে।
যেমন টমেটোর সস।
,
আর যদি সেই বস্তু হারাম হয়,তাহলে সেই হারাম বস্তু দ্বারা বানানো সসও হারাম হবে।