আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
121 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (10 points)
আসসালামু আলাইকুম, আমার একজন বোনের হয়ে প্রশ্ন করছি। বোনটি বিয়ের পর থেকেই জানতে পারে তার স্বামীর চারিত্রিক সমস্যা রয়েছে। মেয়েদের সাথে অবৈধ সম্পর্ক, চ্যাট করা তার নিয়মিত কাজ। বোনটি অনেক ভাবে বুঝিয়ে চেষ্টা করেছে স্বামীকে ফেরাতে, লাভ হয়নি। তাদের একটা ৪বছরের ছেলে সন্তান আছে। বোনটি দ্বীনের বুঝ পাওয়ার পর থেকে সন্তানকেও দ্বীনি ইলম দান ও তারবিয়াতের চেষ্টা করে যাচ্ছে।  কিন্তু তার স্বামী বেদ্বীনদার এবং স্ত্রী সন্তানের প্রতি কোনো প্রকার দায়িত্ব পালন না করা সত্ত্বেও সন্তানকে দ্বীনি শিক্ষা দিতে বাঁধা দেয়। স্বামী ও তার পরিবার দ্বীনদারীতাকে বাড়াবাড়ি মনে করে। এমতাবস্থায় বোনটি দুশ্চরিত্র স্বামীকে ডিভোর্স দিতে চাচ্ছ। সে জানতে চাচ্ছে যদি সে তার স্বামীকে ডিভোর্স দেয় তাহলে সন্তানকে কি সে তার দায়িত্বে রাখতে পারবে কিনা। কেননা বাবার কাছে থাকলে সন্তানেরও চারিত্রিক অধঃপতন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আবার বোনটি চাচ্ছে না সন্তানের প্রতি বাবার অধিকার থেকেও তাকে বঞ্চিত করতে। বাংলাদেশী আইন অনুযায়ী মামলা হলে পিতার দায়িত্বেই সন্তানকে রাখা হবে। এজন্য বোনটি মামলা না করে পারিবারিকভাবে বসে সন্তানকে নিজের কাছে রাখার বিষয়ে দাবি করতে চাচ্ছ। ইসলামে সেই অধিকার কি  তার আছে কিনা।  এমতাবস্থায় ইসলামী শরিয়াহ অনুযায়ী সুপরামর্শ দেয়ার অনুরোধ করছি।
বি:দ্র: বোনটি নিজেও দ্বীনপালনের পাশাপাশি হালাল অর্থোপার্জনের জন্য চাকরি করছে। সন্তানের ভরনপোষণ তার পিতা দিতে চাইলে দিতে পারবে তবে যেহেতু তার দ্বীনের বুঝ নেই তাই বোনটি পিতার দ্বারা হারাম অর্থের সংস্পর্শেরও আশংকা করছে।

1 Answer

0 votes
by (573,960 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


শরীয়তের বিধান মতে তালাকের পর স্ত্রী যদি অন্যত্রে বিবাহ না বসে,এ শর্তে সন্তান ছেলে হলে ৭ বছর,মেয়ে হলে ৯ বছর পর্যন্ত তার লালন পালন স্ত্রী তথা সন্তানের মা করতে পারবে।
এটি তার হক,তবে তিনি অন্যত্রে বিবাহ বসলে তার হক আর থাকবেনা।
এ সময়ের মধ্যে তিনি যদি তার স্বামীর সাথে ঝগড়া করে দূরে চলে যায়,তাহলে সেটি মন্দ বিষয়। 
সন্তানের সাথে দেখা করতে না দেওয়া তার পিতার প্রতি জুলুম।
,
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে স্বামীর সাথে ঝগড়া  না করে,এমনিতেই নিজ প্রয়োজনে অন্য কোনো জেলায় স্ত্রী স্থানান্তরিত হতে পারবে।
তবে  স্বামীর সাথে ঝগড়া করে যদি এমনটি করে,তাহলে সেটি জায়েজ নয়।
,
যেহেতু সন্তানের সাথে তার পিতার হক রয়েছে,যেটি অন্য দেশে গেলে বিনষ্ট হয়ে যেতে পারে,তাই স্ত্রী তথা সন্তানের মা তাকে অন্য দেশে নিয়ে যেতে পারবেনা।


আবু দাউদ শরীফের ২২৭৬ নং হাদীস শরীফে এসেছেঃ

حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ خَالِدٍ السُّلَمِيُّ، حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ، عَنْ أَبِي عَمْرٍو يَعْنِي الْأَوْزَاعِيَّ، حَدَّثَنِي عَمْرُو بْنُ شُعَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو، أَنَّ امْرَأَةً قَالَتْ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنَّ ابْنِي هَذَا كَانَ بَطْنِي لَهُ وِعَاءً، وَثَدْيِي لَهُ سِقَاءً، وَحِجْرِي لَهُ حِوَاءً، وَإِنَّ أَبَاهُ طَلَّقَنِي، وَأَرَادَ أَنْ يَنْتَزِعَهُ مِنِّي، فَقَالَ لَهَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أَنْتِ أَحَقُّ بِهِ مَا لَمْ تَنْكِحِي 

আব্দুল্লাহ ইবনু আমর (রাযি.) সূত্রে বর্ণিত। একদা এক মহিলা বললো, হে আল্লাহর রাসূল! এই সন্তানটি আমার গর্ভজাত, সে আমার স্তনের দুধ পান করেছে এবং আমার কোল তার আশ্রয়স্থল। তার পিতা আমাকে তালাক দিয়েছে। এখন সে সন্তানটিকে আমার থেকে কেড়ে নিতে চাইছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেনঃ তুমি অন্যত্র বিয়ে না করা পর্যন্ত তুমিই তার অধিক হকদার।
(আহমাদ, হাকিম। ইমাম হাকিম ও যাহাবী বলেন: সনদ সহীহ।)

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে স্বামী যদি আজীবন সন্তানকে সন্তানের মায়ের কাছেও রাখার উপর সন্তুষ্টি চিত্তে রাজি হয়,সেক্ষেত্রে কোনো সমস্যা নেই।

প্রশ্নে উল্লেখিত বোন তার সন্তানকে আজীবন নিজের কাছে রাখতে পারবে।

আর যদি সন্তুষ্টি চিত্তে অনুমতি না দেয়,
বরং স্বামী নিজের কাছেই রাখতে চায়, সেক্ষেত্রে সেই বোন যদি অন্যত্রে বিবাহ না বসে,তাহলে সন্তান ছেলের  হলে ৭ বছর আর মেয়ে হলে ৯ বছর পর্যন্ত নিজের কাছে রেখে সন্তানের লালন পালন করতে পারবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...