আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
136 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (11 points)
আসসালামু আলাইকুম,
১. "মানুষকে এক ফোটা নাপাক পানি থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে"?
এই কথা কি সঠিক ?

২. পুরুষের বীর্য কি নাপাক?

৩. মনী কি নাপাক? (জামা কাপড়ে লাগলে না ধুয়ে সলাত হবে?)

৪. হালাল হারামের ক্ষেত্রে কোরআন হাদিসে সরাসরি কোন কিছু না বলা থাকলে করনীয় কি?
by (24 points)
হুজুর, http://ifatwa.info/67384/
সেই পরিহিত জামাকাপড় গুলো তো পুরোপুরি শুকিয়ে গেছে। এখন কি করবো হুজুর?
টিস্যুতে কি গন্ধ চেক করে দেখবো?

1 Answer

0 votes
by (573,960 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


(০১)
 "মানুষকে এক ফোটা নাপাক পানি থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে"
এই কথা সঠিক।
,
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

اِنَّا خَلَقۡنَا الۡاِنۡسَانَ مِنۡ نُّطۡفَۃٍ اَمۡشَاجٍ ٭ۖ نَّبۡتَلِیۡهِ فَجَعَلۡنٰهُ سَمِیۡعًۢا بَصِیۡرًا ﴿۲﴾

আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি মিশ্র শুক্রবিন্দু থেকে, আমি তাকে পরীক্ষা করব, ফলে আমি তাকে বানিয়েছি শ্রবণ ও দৃষ্টিশক্তিসম্পন্ন। 
(সুরা দাহর ০২)

সূরা ফুরক্বান এর ৫৪ নং আয়াতে অবতীর্ণ হয়েছে,
وَهُوَ الَّذِيْ خَلَقَ مِنَ الْمَاء بَشَراً فَجَعَلَهُ نَسَباً وَصِهْراً وَكَانَ رَبُّكَ قَدِيْراً-
‘তিনিই পানি থেকে মানবকে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তাকে রক্তগত বংশ ও বৈবাহিক সম্পর্কশীল করেছেন। তোমার পালনকর্তা সবকিছু করতে সক্ষম’।

এরপর সূরা মুরসালাত এর ২০ আয়াতে আল্লাহ পাক বলেন,

 أَلَمْ نَخْلُقكُّمْ مِّنْ مَّاءٍ مَّهِيْنٍ 

‘আমি কি তোমাদেরকে তুচ্ছ পানি থেকে সৃষ্টি করিনি’।

পরবর্তীতে সূরা আত-তারেক এর ৫ ও ৬নং আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা তাঁর প্রিয় মানব প্রতিনিধিদের স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, 
فَلْيَنظُرِ الْإِنْسَانُ مِمَّ خُلِقَ- خُلِقَ مِن مَّاءٍ دَافِقٍ-

 ‘মানুষের দেখা উচিত কি বস্ত্ত থেকে সে সৃজিত হয়েছে। সে সৃজিত হয়েছে, সবেগে স্খলিত পানি থেকে’।

সূরা নাহল এর ৪নং আয়াতের তাৎপর্যপূর্ণ বাণী হ’ল,
خَلَقَ الْإِنْسَانَ مِنْ نُّطْفَةٍ فَإِذَا هُوَ خَصِيْمٌ مُّبِيْنٌ-

‘তিনি মানবকে এক ফোঁটা বীর্য থেকে সৃষ্টি করেছেন। এতদসত্ত্বেও সে প্রকাশ্য বিতন্ডাকারী হয়ে গেছে’।

সূরা ইয়াসীন এর ৭৭ আয়াতেও মহান আল্লাহ বলেন,
أَوَلَمْ يَرَ الْإِنْسَانُ أَنَّا خَلَقْنَاهُ مِنْ نُّطْفَةٍ فَإِذَا هُوَ خَصِيْمٌ مُّبِيْنٌ-

‘মানুষ কি দেখে না যে, আমি তাকে সৃষ্টি করেছি বীর্য থেকে? অতঃপর তখনই সে হয়ে গেল প্রকাশ্য বাকবিতন্ডাকারী’।

আরো জানুনঃ- 

(০২)
পুরুষ এবং মহিলা সকলের বীর্যই নাপাক।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

عَمْرُو بْنُ مَيْمُونٍ، قَالَ: سَأَلْتُ سُلَيْمَانَ بْنَ يَسَارٍ [ص:56] فِي الثَّوْبِ تُصِيبُهُ الجَنَابَةُ، قَالَ: قَالَتْ عَائِشَةُ: «كُنْتُ أَغْسِلُهُ مِنْ ثَوْبِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، ثُمَّ يَخْرُجُ إِلَى الصَّلاَةِ، وَأَثَرُ الغَسْلِ فِيهِ» بُقَعُ المَاءِ

অনুবাদ- আমার বিন মাইমুন রহঃ সুলাইমান বিন ইয়াসার রাঃ কে বীর্য লাগা কাপড়ের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন,হযরত আয়শা রাঃ বলেছেন, “আমি রাসূল সাঃ এর কাপড় থেকে তা ধুয়ে ফেলতাম তারপর তিনি নামাযের জন্য বের হতেন এমতাবস্থায় যে,কাপড়ে পানির ছাপ লেগে থাকতো। {সহীহ বুখারী, হাদীস নং-২৩১, ২২৯}

حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ عَلِيِّ بْنِ الْعَلَاءِ ، ثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ شَوْكَرِ بْنِ رَافِعٍ الطُّوسِيُّ ، نَا أَبُو إِسْحَاقَ الضَّرِيرُ إِبْرَاهِيمُ بْنُ زَكَرِيَّا ، نَا ثَابِتُ بْنُ حَمَّادٍ ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ زَيْدٍ ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ ، عَنْ عَمَّارِ بْنِ يَاسِرٍ ، قَالَ : أَتَى عَلَيَّ رَسُولُ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - وَأَنَا عَلَى بِئْرٍ أَدْلُو مَاءً فِي رِكْوَةٍ لِي ، فَقَالَ : يَا عَمَّارُ ، مَا تَصْنَعُ ؟ قُلْتُ : يَا رَسُولَ اللَّهِ ، بِأَبِي وَأُمِّي ، أَغْسِلُ ثَوْبِي مِنْ نُخَامَةٍ أَصَابَتْهُ . فَقَالَ " يَا عَمَّارُ ، إِنَّمَا يُغْسَلُ الثَّوْبُ مِنْ خَمْسٍ : مِنَ الْغَائِطِ ، وَالْبَوْلِ ، وَالْقَيْءِ ، وَالدَّمِ ، وَالْمَنِيِّ ، يَا عَمَّارُ ، مَا نُخَامَتُكَ وَدُمُوعُ عَيْنَيْكَ وَالْمَاءُ الَّذِي فِي رِكْوَتِكَ إِلَّا سَوَاءٌ "

আহমাদ ইবনে আলী ইবনুল 'আলা (রহঃ) ... আম্মার ইবনে ইয়াসির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার নিকট এলেন, তখন আমি একটি কূপ থেকে বালতি দিয়ে পানি তুলে আমার একটি পানির পাত্রে ভর্তি করছিলাম। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, হে আম্মার! তুমি কি করছো? আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার পিতা-মাতা আপনার জন্য কোরবান হোক। আমি আমার পরিধেয় বস্ত্রে লেগে যাওয়া শ্লেষ্মা পরিষ্কার করছি। তিনি বলেনঃ হে আম্মার! পাঁচটি জিনিস থেকে কাপড় ধৌত করা প্রয়োজনঃ বিষ্ঠা, পেশাব, বমি, রক্ত ও বীর্য। হে আম্মার! তোমার নাকের শ্লেষ্মা, তোমার উভয় চোখের অশ্রু এবং তোমার এই পানির পাত্রের পানি একই সমান (পাক-নাপাকীর হুকুমের ক্ষেত্রে)।
(সুনানে দারা কুতনি ৪৫০)

(০৩)
মনী নাপাক। জামা কাপড়ে লাগলে না ধুয়ে সলাত হবেনা।
(তবে এক দিরহাম চেয়ে কম হলে সেটি মাফ হবে।)

(০৪)
হালাল হারামের ক্ষেত্রে কোরআন হাদিসে সরাসরি কোন কিছু না বলা থাকলে এক্ষেত্রে শরীয়তের অন্যান্য দলিল (ইজমা,কিয়াস) থেকে বিষয়টির বিধান জানতে হবে।

যাহা ফিকহের কিতাব গুলোতে বিস্তারিত আকারেই রয়েছে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...