বাইয়াত ৫ প্রকার।
فالحق ان البيعة على اقسام، منها بيعة الخلافة، ومنها بيعة الاسلام، ومنها بيعة التمسك بحبل التقوى، ومنها بيعة الهجرة والجهاد، ومنها بيعة التوثق فى الجهاد، (القول الجميل مع شرح شفاء العليل-1/6
সারমর্মঃ-
বাইয়াত কয়েক প্রকার। তার মধ্যে হতে একটি হলো,খিলাফাতের বাইয়াত,ইসলামের বাইয়াত,তাকওয়া পরহেযগারীতে অগ্রগামী হবার শপথের বাইয়াত,হিজরত ও জিহাদের বাইয়াত,জিহাদের ময়দানে দৃঢ় থাকার বাইয়াত।
,
১
খিলাফাতের বাইয়াত। যা ইসলামী রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধানের আনুগত্বের প্রতীক হিসেবে নেয়া হয়ে থাকে।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم يَقُول: «مَنْ خَلَعَ يَدًا مِنْ طَاعَةٍ لَقِيَ اللَّهَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَلَا حُجَّةَ لَهُ. وَمَنْ مَاتَ وَلَيْسَ فِي عُنُقِهِ بَيْعَةٌ مَاتَ مِيتَةً جَاهِلِيَّةً»
‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি ইমাম বা শাসকের আনুগত্য থেকে দূরে সরে গেল, কিয়ামতের দিন সে আল্লাহর সাথে এমন অবস্থায় উপস্থিত হবে যে, তার কোনো সাক্ষ্য-প্রমাণ থাকবে না। আর যে ব্যক্তি এমন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে যে, তার ঘাড়ে কোনো বায়‘আত নেই, সে জাহিলিয়্যাতের ন্যায় মৃত্যুবরণ করবে।
(মুসলিম ১৮৫১, সহীহাহ্ ৯৮৪, সহীহ আল জামি‘ ৬২২৯,মিশকাত ৩৬৭৪)
২
বাইয়াতে ইসলাম। তথা ইসলাম গ্রহণের জন্য বাইয়াত নেয়া।
৩
তাকওয়া পরহেযগারীতে অগ্রগামী হবার শপথের বাইয়াত। যাকে বাইয়াতে তাসাওউফও বলা হয়।
এ সংক্রান্ত জানুনঃ-
৪
বাইয়াতে জিহাদ ও হিজরত। জিহাদ বা কাফেরদের জুলুমী রাষ্ট্র ছেড়ে দেয়ার বাইয়াত।
৫
জিহাদের ময়দানে দৃঢ় থাকার বাইয়াত। যদি কখনো জিহাদের ময়দানে ভয়ে পালিয়ে যাবার শংকা দেখা দেয়, তখন আমীরে জিহাদের হাতে দৃঢ়তার বাইয়াত গ্রহণ করা।
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
আমিরুল মু'মিনিন এর হাত ধরে বাইয়াত করানো সুন্নত।
তবে হাতে হাত না রেখে তাকে স্বীকৃতি প্রদান ও তার আনুগত্য মৌখিক ভাবে মেনে নেয়াও বাইয়াত গ্রহনের অন্তর্ভুক্ত হবে।
আর দারুল আমানে বসবাস কারী মুসলিমদের উপর আমিরুল মু'মিনিন এর হাতে বাইয়াত প্রাথমিক ভাবে আবশ্যক হবেনা।
তবে উলামায়ে কেরামগন যদি রায় দেন,সেক্ষেত্রে আবশ্যক হবে।
সময় ও প্রেক্ষাপট বিবেচনায় দারুল হারাবে বসবাস কারী মুসলিমদের উপর বাইয়াত আবশ্যক হবে,তবে সেটি সেই সময়ের বিজ্ঞ স্কলারগন বলে দিবেন।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
حَدَّثَنِي الْحَبِيبُ الْأَمِينُ، أَمَّا هُوَ فَحَبِيبٌ إِلَيَّ، وَأَمَّا هُوَ عِنْدِي، فَأَمِينٌ عَوْفُ بْنُ مَالِكٍ الْأَشْجَعِيُّ، قَالَ: كُنَّا عِنْدَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، تِسْعَةً أَوْ ثَمَانِيَةً أَوْ سَبْعَةً، فَقَالَ: «أَلَا تُبَايِعُونَ رَسُولَ اللهِ؟» وَكُنَّا حَدِيثَ عَهْدٍ بِبَيْعَةٍ، فَقُلْنَا: قَدْ بَايَعْنَاكَ يَا رَسُولَ اللهِ، ثُمَّ قَالَ: «أَلَا تُبَايِعُونَ رَسُولَ اللهِ؟» فَقُلْنَا: قَدْ بَايَعْنَاكَ يَا رَسُولَ اللهِ، ثُمَّ قَالَ: «أَلَا تُبَايِعُونَ رَسُولَ اللهِ؟» قَالَ: فَبَسَطْنَا أَيْدِيَنَا وَقُلْنَا: قَدْ بَايَعْنَاكَ يَا رَسُولَ اللهِ، فَعَلَامَ نُبَايِعُكَ؟ قَالَ: «عَلَى أَنْ تَعْبُدُوا اللهَ وَلَا تُشْرِكُوا بِهِ شَيْئًا، وَالصَّلَوَاتِ الْخَمْسِ، وَتُطِيعُوا – وَأَسَرَّ كَلِمَةً خَفِيَّةً – وَلَا تَسْأَلُوا النَّاسَ شَيْئًا» فَلَقَدْ رَأَيْتُ بَعْضَ أُولَئِكَ النَّفَرِ يَسْقُطُ سَوْطُ أَحَدِهِمْ، فَمَا يَسْأَلُ أَحَدًا يُنَاوِلُهُ إِيَّاهُ
আউফ বিন মালিক আশজাঈ রাঃ বলেন, আমাদের সাত বা আট নয়জন লোকের উপস্থিতিতে রাসূল সাঃ বললেন, তোমরা কেন রাসূল সাঃ এর কাছে বাইয়াত হচ্ছো না? অথচ আমরা ইতোপূর্বে বাইয়াত গ্রহণের সময় তাঁর হাতে বাইয়াত গ্রহণ করেছি। আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমরাতো আপনার কাছে বাইয়াত গ্রহণ করেছি। তিনি আবার বললেন, তোমরা কেন রাসূল সাঃ এর কাছে বাইয়াত হচ্ছো না? আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা ইতোপূর্বে বাইয়াত হয়েছি। তিনি পুনরায় বললেন, তোমরা কেন রাসূল সাঃ এর কাছে বাইয়াত হচ্ছো না? বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর আমরা হাত বাড়িয়ে দিয়ে বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমরাতো ইতোপূর্বে আপনার কাছে বাইয়াত গ্রহণ করেছি। এখন আবার আপনার কাছে কিসের বাইয়াত নিবো? তিনি বললেন, তোমরা আল্লাহর ইবাদত কর, এবং তার সাথে কাউকে শরীক করো না, পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায় কর এবং আল্লাহর আনুগত্ব কর। তিনি আর একটি কথা বললেন চুপে চুপে। তা হল-লোকের কাছে কোন কিছুর জন্য হাত পাতবে না। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর আমি দেখেছি, সেই বাইয়াত গ্রহণকারী দলের কারো কারো উটের পিঠে থাকা অবস্থায় হাত থেকে চাবুক পরে গেছে কিন্তু সে কাউকে তা তুলে দিতে অনুরোধ করেনি, বরং সে নিজেই নিচে নেমে তুলে নিয়েছে। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১০৪৩}
عَنْ عُرْوَةَ، أَنَّ عَائِشَةَ، أَخْبَرَتْهُ، عَنْ بَيْعَةِ النِّسَاءِ، قَالَتْ: مَا مَسَّ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِيَدِهِ امْرَأَةً قَطُّ، إِلَّا أَنْ يَأْخُذَ عَلَيْهَا، فَإِذَا أَخَذَ عَلَيْهَا، فَأَعْطَتْهُ، قَالَ: «اذْهَبِي، فَقَدْ بَايَعْتُكِ»
উরওয়া থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মহিলাদের বাইয়াত বিষয়ে আম্মাজান আয়শা রাঃ বলেছেন, রাসূল সাঃ কখনোই মহিলাদের হাত স্পর্শ করেননি। বরং তিনি মুখে মুখে বাইয়াত নিয়ে নিতেন। বাইয়াত হয়ে গেলে বলতেন, যাও! তোমাকে আমি বাইয়াত করে নিয়েছি। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৮৬৬}