আসসালামু 'আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহ।
আমি একটি বিষয় নিয়ে অত্যন্ত চিন্তাগ্রস্ত আছি,শাইখরা আমাকে সাহায্য করবেন,এটা আমার বিনীত অনুরোধ এবং আবদার।
আমি যথাসাধ্য হারাম কাজ থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করি,শরয়ী পর্দা এবং অন্যান্য আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লার হুকুম- আহকাম পালনের চেষ্টা করি আলহামদুলিল্লাহ, তিনি আমার হিদায়াতদাতা।সহশিক্ষা বিষয়ে অনেক লেখা পড়েছি,অনেক পোস্ট পড়ি।এটা মেয়েদের জন্য নিশ্চিত হারাম বলে শুনি। আমি বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে তড়িৎ প্রকৌশলে পড়ছি,স্কুল কলেজ আলহামদুলিল্লাহ গার্লস ছিলো। আমি আমার পরিবারে বুঝিয়েছি,কান্নাকাটি করেছি এবংতারা কোনোভাবেই আমার পড়া থেকে ড্রপ করা মেনে নিতে নারাজ,এ নিয়ে অনেক ঝামেলা হয়ে গেছে। আমি আশংকা করি,তাদের সাথে আমার সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যাবে শুধু এই কারণে,ছোটবেলা থেকে আমি প্রচন্ড ভালো রেজাল্ট করি,বৃত্তি পাই এবং জেলায়ও মেধাস্থান থাকে। তাদের ইচ্ছামতো মেডিক্যালে পড়িনি বলে আমার সাথে অনেক ঝামেলা হয়েছিলো। আমার শিক্ষার জন্য তারা অনেক ত্যাগস্বীকার করেছেন। এমনকি আম্মু বাসা ছেড়ে আমাকে নিয়ে ঢাকায় থেকেছেন দেশের সবচেয়ে নামী কলেজে পড়তে চেয়েছিলাম তাই। স্কুলে থাকতে খুব অভাব ছিলো যখন,
**আমি ফিতনা এড়াতে এবং সহশিক্ষা যাতে আমার উপর প্রভাব না ফেলে,সেজন্য বিবাহের সিদ্ধান্ত নেই পারিবারিকভাবে বিবাহ হয়।ব আমার জাওয সাহেবের সাথে থাকি। লেখাপড়া করি। তিনিও আমার বিশ্ববিদ্যালয়েই পড়েন। বই খাতা কেনা থেকে শুরু করে এখানে যা প্রয়োজন,আমার সাথে থাকেন,টিচারকে কোনো প্রজেক্ট দেখাতে গেলেও আমার সাথে যান। আর থিসিস এর কাজে পুরুষ টিচার এর বদলে আমি নারী শিক্ষকের আন্ডারে আছি।
বর্তমানে তাহলে আমার পড়ার উদ্দেশ্য হলো:
১) এই বছরই আমার পড়া শেষ হয়ে যাবে। বাসা থেকে কোনোভাবেই মানছে না আমি এখন ছেড়ে দিই।ঝামেলা হচ্ছে এ নিয়ে বলতে গেলে। এখনো আমি আমার বাসার দেয়া খরচে চলি।জাওয স্টুডেন্ট, এখন আমার খরচ বহন করতে তিনি অপারগ। কিছু টিউশন করান,তাতে বাসা ভাড়া,দোকান,তার নিজের হাতখরচে চলে যায়।যতদিন তিনি পড়া না শেষ করেন,আমার খরচ আমার ফ্যামিলির উপর বলে নেয়া হয়েছে বিয়ের সময়।
২) আমার ভবিষ্যতে নারী-পুরুষের সহাবস্থান আছে এমন জায়গায় চাকরির ইচ্ছা নেই। আমি মাদ্রাসাহতে খিদমত করতে ইচ্ছুক,আমার পছন্দের কিছু মাদ্রাসাহ আছে সেখানে জেনারেল এর শিক্ষিকার শিক্ষাগত যোগ্যতা গ্র‍্যাজুয়েশন কম্পলিট চায়। যেকারণে আমি চাই এই শেষ বছরে বাদ না দিয়ে পড়াটা কম্পলিট হোক। আমার জাওযের পরিবারের ব্যয়ভার তারই বহন করতে হবে,বড় ছেলে তিনি। আর এদিকে আমার খরচ,সামনে বাচ্চাদের খরচ, আমার চিকিৎসা বাবদ বেশ খরচ আছে,মাসে আট হাজার টাকার কেবল ওষুধই দরকার,এখন টাকার সামর্থ্য না থাকায় খেতে পারছি না। সবদিক মিলিয়ে আমার একটা কর্মসংস্থান দরকার। যদি বাসায় বসে টিউশন/ফ্রিল্যান্সিং করতে পারি আল্লহ তৌফিক দিলে,হয়তো বাইরে আর যাবো না কিন্তু গ্র‍্যাজুয়েশন এর সার্টিফিকেট এর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছি।
৩) আমার শশুড়-শাশুড়ি আমার কিছু শারীরিক ত্রুটি (যেমন শর্ট) থাকলেও পছন্দ করেছেন আমার পড়াশুনা দেখে। এখন মাঝ পথে বাদ দিলেও আমাকে তাদের কটুকথা বা দোষারোপ শুনতে হবে,এমনিতেই তাদের হিদায়াত নেই বলে আমার পর্দার জন্য,দেবরের সামনে না যাওয়া/নিকাব পড়ে যাওয়া নিয়ে বেশ নারাজ। নারীবাদী চেতনা পোষণ করি না,ওয়াল্লহি।
৪) মাঝে মাঝে ভার্সিটির মেয়েদের ক্বুরআন এবং পর্দা নিয়ে শেখাতাম,এখন ব্যস্ততায় পারছি না। আমার মাধ্যমে,পোশাকের মাধ্যমে, দাওয়াত পাক মেয়েরা,এটাও একটা উদ্দেশ্য আমার। আমি ভার্সিটির মেয়েদেরকে ফেসবুকে ফ্রেন্ড করি,যাতে আমার ইসলামিক মেসেজ গুলো,তারা পোস্টে এবং স্টোরিতে দেখতে পায়। তাদের গতিবিধি/পোশাক আশাক/কার্যক্রম প্রত্যক্ষ করি প্রতিদিন এবং সে অনুযায়ী পোস্ট দেই ইসলাম কি বলে সে বিষয়ে,তা নিয়ে।
৫) সাইন্স নিয়ে পড়েছি,এই সায়েন্স এবং ইঞ্জিনিয়ারিং এর নলেজ যদি দ্বীনের কোনো ফাতওয়া,তাহকীক এর প্রয়োজন হয়,তাহলে তা কাজে লাগানোর নিয়াত আছে। অন্য মেয়েদের সাইন্স,ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়গুলো,প্রযুক্তি রিলেটেড বিষয়গুলো জানাতে,পড়াতে পারবো,নিজের মেয়ে বাচ্চাদের বাসায় পড়ানোর ইচ্ছা,গ্র‍্যাজুয়েশন পর্যন্ত যা শিখব গোটাটাই।তাদের জেনারেল শিক্ষার জন্য বাইরে বের করতে চাই না।
৬)এখন আমার অর্থের প্রচন্ড অভাব হচ্ছে,টিউশন করাবো (বাইরে গিয়ে না,বাসাতেই) গার্জিয়ান জানতে চায়,কোথায় পড়ছি,কোন ইয়ারে। পড়াশুনা করছি না শুনলে তারাও স্টুডেন্ট দিবে না।
সব মিলিয়ে খারাপ সিচুয়েশন এড়াতে আমি এখনো স্টপ করিনি পড়াটা।
উল্লেখ্য, আমি কোনো অনুষ্ঠান,আন্দোলন,সেমিনার কিছুতে যাই না ভার্সিটির। ক্লাস এবং ল্যাবের সময়টা ভার্সিটিতে থাকি। আর জাওয আমার খোঁজ খবর রাখেন,ভার্সিটির বিষয়েও। হযরত,আমি হারাম বিষয় হালালাইজের পক্ষে না। আমি আমার খোদার বান্দী। সিচুয়েশন জটিল না হলে বহু আগেই ছেড়ে দিতে পারতাম পড়াটা।জানি না কতোটুকু বুঝাতে পেরেছি।
আমাকে সমাধান দিন!!