আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
96 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (23 points)
আসসালামু'আলাইকুম, পুরুষ বিয়ে করার উদ্দেশ্যে মেয়ে পছন্দ করেছেন। এখন পুরুষ যদি মেয়ের ব্যাকগ্রাউন্ড জানতে চান, সেটা কি সরাসরি তার সাথে সাক্ষাৎ করে যাচাই করতে হবে নাকি মেয়ের পিতামাতার উপস্থিত থাকা অবস্থায় প্রশ্ন করার মাধ্যমে যাচাই করতে হবে?

আর মেয়েকে যখন প্রশ্ন করে তার ব্যাকগ্রাউন্ড যাচাই করা হবে, তখন মেয়ে কে প্রশ্ন করার সময় মেয়ের দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করতে হবে নাকি চোখের দৃষ্টি এড়িয়ে তাকে প্রশ্ন করতে হবে?

1 Answer

0 votes
by (63,560 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/2898/?show=2898#q2898 নং ফাতওয়াতে আমরা বলেছি যে,

যদি কেউ কোনো মহিলাকে বিয়ে করার পূর্ণ ইচ্ছা করে নেয়, তাহলে ঐ মহিলাকে দেখতে পারবে। কথা বলতে পারবে।

হযরত জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ রাযি থেকে বর্ণিত,

إِذَا خَطَبَ أَحَدُكُمْ الْمَرْأَةَ ، فَإِنْ اسْتَطَاعَ أَنْ يَنْظُرَ إِلَى مَا يَدْعُوهُ إِلَى نِكَاحِهَا ، فَلْيَفْعَلْ

যদি কেউ কোনো মহিলাকে বিয়ের প্রস্তাব দিতে চায়,তাহলে সে যেন যযথাসম্ভব ঐ মহিলাকে দেখে নেয়। (সুনানু আবি দাউদ-২০৮২)

 

হযরত আবু হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত,

عن أبي هريرة، قال: كنت عند النبي صلى الله عليه وسلم، فأتاه رجل فأخبره أنه تزوج امرأة من الأنصار، فقال له رسول الله صلى الله عليه وسلم: «أنظرت إليها؟»، قال: لا، قال: «فاذهب فانظر إليها، فإن في أعين الأنصارشيئا»

তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ এর পাশে বসা ছিলাম। এক ব্যক্তি এসে বলল, আমি আনসারি এক মহিলাকে বিয়ে করতে চাই। রাসূলুল্লাহ বললেন, তুমি কি পাত্রী দেখেছো? তিনি বললেন, না। রাসূলুল্লাহ সাঃ বললেন, যাও গিয়ে পাত্রী দেখে আসো। কেননা আনসারীদের চোখে নীল বা এ জাতীয় কিছু থাকে। (সহীহ মুসলিম-১৪২৪)

 

" يَجُوزُ تَكْرَارُ النَّظَرِ إِنِ احْتَاجَ إِلَيْهِ لِيَتَبَيَّنَ هيئتها ، فَلاَ يَنْدَمُ بَعْدَ النِّكَاحِ ، إِذْ لاَ يَحْصُل الْغَرَضُ غَالِبًا بِأَوَّل نَظْرَةٍ ".

বারংবার দৃষ্টি দেয়া জায়েয।যাতেকরে পাত্রীর পূর্ণ অবয়ব পরিস্কার ভাবে ফুটে উঠে এবং যাতেকরে বিয়ে পরবর্তী লজ্জিত হতে না হয়। কেননা একবারের দৃষ্টি অধিকাংশ সময়ে যথেষ্ট নাও হতে পারে। (আল-মাওসুআতুল ফেকহিয়্যাহ-২২/১৭)

 

পাত্র-পাত্রীর পরস্পর দেখা সাক্ষাৎ ও আলাপ চারিতার কয়েকটি মূলনীতি-

(১) খালওয়াত (একেবারে নির্জনতা) হতে পারবে না।

(২) মুবাহ বিষয় ব্যতীত অন্য কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা করা যাবে না।

(৩) ফিতনা থেকে নিরাপদ থাকতে হবে। যদি কামভাব জাগ্রত হওয়ার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়ে যায়, অথবা কোনো একজন উপভোগ করতে শুরু করে নেয়, তাহলে তখন সেটা হারাম হয়ে যাবে।

(৪) মহিলা নরম ভাষায় কথা বলতে পারবে না।

(৫) মহিলা পূর্ণ হেজাব তথা কবজা পর্যন্ত হাত,টাখনু পর্যন্ত পা, এবং মুখ ব্যতীত সমস্ত শরীর ঢেকে রাখবে।

(৬) প্রয়োজন অতিরিক্ত কথাবার্তা বলা যাবে না।

 

যখন এই সব শর্ত পাওয়া যাবে, তখনই মূলত পাত্র-পাত্রী পরস্পর আলোচনা ও দেখা সাক্ষাৎ করতে পারবে।

 

 

(১) প্রস্তাবের পূর্বে বায়োডাটা প্রেরণ করা যাবে। তবে ছবি প্রেরণ করা যাব না। বরং পাত্র পক্ষের কোনো এক মহিলা সরাসরি পাত্রীকে দেখে আসবেন। আর প্রস্তাব দেয়ার পর যথাসম্ভব সরাসরি দেখার চেষ্টা করা হবে। কেননা যে হেকমতে পাত্রী দেখার কথা বলা হচ্ছে, সেটা একমাত্র সরাসরি দেখার মাধ্যমেই সম্ভব। হ্যাঁ, কোনো কারণে (যেমন পাত্র-পাত্রী বিদেশে অবস্থানরত)যদি পাত্র-পাত্রীকে সরাসরি দেখা সম্ভব না হয় তাহলে ভিডিওকলের মাধ্যমে উপরোক্ত শর্তাদির সাথে দেখা যেতে পারে। কেননা ছবির তুলনায় ভিডিওর হুকুমে কিছুটা শীতিলতা রয়েছে।

ছবি ভিডিও সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুন-  https://www.ifatwa.info/2253

 

(২) বিনা প্রয়োজনে রেষ্টুরেন্ট পা পার্কে পাত্র-পাত্রী দেখা উচিৎ না। কেননা এক্ষেত্রে উপরোক্ত শর্তাদির কোনোটাই রক্ষা করা সম্ভব হবে না। মহিলা প্রয়োজন ব্যতীত ঘরের বাহিরে বের হবে না।

এ সম্পর্কে জানুন- https://www.ifatwa.info/572

(৩) উপরোক্ত শর্তাদির সাথে নিজ বাসা বা আত্মীয়র বাসা পাত্রপাত্রী দেখা যেতে পারে।

(৪) বিয়ের প্রস্তাবের পর পাত্রীর বাসায় এসে মাহরামের উপস্থিতিতে পাত্র-পাত্রী পরস্পর পরস্পরকে দেখবে। অযথা বেহুদা কথাবার্তা থেকে উভয় বেঁচে থাকবে।

 

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

১. মেয়েকে কোনো কিছু প্রশ্ন করতে হলে বা তার সম্পর্কে জানতে হলে পাত্রীর বাসায় এসে মাহরামের উপস্থিতিতে তাকে সরাসরি জিজ্ঞাসা করবে বা তার কোনো অভিভাবক থেকেও বিস্তারিত জানতে পারে।

২. উভয়টি ইচ্ছাধীন। তবে উপরোক্ত শর্তগুলোর দিকে পূর্ণ খেয়াল রাখবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)
by (23 points)
Jazak Allahu Khair

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...