জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
(০১) নামাজের ভিতর নড়াচড়া করা যাবেনা।
এক রুকন সমপরিমাণ এমনটি করলে নামাজ ভেঙ্গে যাবে।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
সাহাবি হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের নবীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যেন সাতটি (অঙ্গের) ওপর সিজদা করে এবং নামাজে চুল বা কাপড় না গুটায়। -সুনানে আবু দাউদ: ২/১৪
নির্ভরযোগ্য বর্ণনায় এসেছে, বিখ্যাত তাবেয়ি মুজাহিদ (রহ.) বলেন, হজরত আবু বকর সিদ্দিক (রা.) ও হজরত আবদুল্লাহ ইবনে যুবাইর (রা.) যখন নামাজে দাঁড়াতেন তখন মনে হত একটি কাঠ মাটিতে গেড়ে দেওয়া হয়েছে। -মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা: ৭৩২২
প্রখ্যাত তাবেয়ি আমাশ (রহ.) থেকে নির্ভরযোগ্য সূত্রে বর্ণিত, তিনি বলেন, হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) যখন নামাজে দাঁড়াতেন তাকে দেখে মনে হত যেন একটি পড়ে থাকা কাপড়। -মুসান্নাফ আবদুর রাজ্জাক: ৩৩০৩
,
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যদি আমলে কাছির হয়,তাহলে নামাজ ভেঙ্গে যাবে।
আমলে কাছির সম্পর্কে বিস্তারিত জানুনঃ
,
আর যদি আমলে কাছির না হয়,অল্প সময়ে (কয়েক সেকেন্ডে) হালকা নড়াচড়া হয়,এক সাথে দুই পা না হয়,তাহলে সেটার দ্বারা নামাজ ভেঙ্গে যাবেনা।
(২.৩)
শরীয়তের বিধান হলো নামাজের কেরাতে লাহনে জলি (অর্থ বিকৃত হয়ে যায়, এমন ভুল) পড়লে নামাজ নষ্ট হয়ে যাবে।
পক্ষান্তরে লাহনে খফি (সাধারণ ভুল- যার দ্বারা অর্থ একেবারে বিগড়ে যায় না,) তাতে নামাজ নষ্ট হবে না। (খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/১১৮, ফাতাওয়া কাজিখান ১/৬৭)
লাহনে জলি সম্পর্কে বিস্তারিত জানুনঃ
كَوْم ج أَكْوَام، كِيمَان
[কাওম] যার অর্থ হলোঃ স্তূপ,রাশ,রাশি,গাদা,ঢিপি,টিলা।
সুতরাং اهدنا الصراط المستقيم আমাদেরকে সরল সোজা রাস্তা দেখাও,উল্লেখিত আয়াতে তে কাফ পড়লে অর্থ আসে যে আমাদেরকে স্তুপের রাস্তা দেখাও।
دَالّ [دلل]
[দাল্] যার অর্থ হলো প্রদর্শক,নির্দেশক,অর্থক,প্রমাণ।
ولاالضالين পথভ্রষ্ট দের রাস্তা নয়,এখানে দাল পড়লে অর্থ আসে প্রদর্শকের রাস্তা নয়।
সুতরাং উভয় ছুরতেই লাহনে জলি হয়েছে,তাই নামাজ ভেঙ্গে যাবে।
(০৪)
মাসবুক ব্যক্তি যদি ভুলে ইমামের সাথে বা আগে সালাম ফিরিয়ে ফেলে তাহলে তার উপর নামাযের শেষাংসে সাহু সেজদা দেয়া আবশ্যক নয়।
আর যদি ইমাম সালাম ফিরানোর পর সালাম ফিরায়, তাহলে তার উপর নামাযের শেষাংসে সাহু সেজদা দেয়া ওয়াজিব।
আর যদি ইমামের সাথে সালাম ফিরায় এটা ভেবে যে, ইমামের সাথে তার সালাম ফিরানো উচিত, তাহলে তার নামায ফাসিদ হয়ে যাবে। এ নামায পুনরায় পড়তে হবে।
বিঃদ্রঃ সাধারণতঃ মাসবুক ব্যক্তিরা ইমামের পর ভুলে সালাম ফিরায় তাই সেজদায়ে সাহু দেয়াই আবশ্যক।
فى البحر الرائق- ومن احكامه- ومن أحكامه أنه لو سلم مع الإمام ساهيا أو قبله لا يلزمه سجود السهو لأنه مقتد وإن سلم بعده لزمه وإن سلم مع الإمام على ظن أن عليه السلام مع الإمام فهو سلام عمد فتفسد (البحر الرائق، كتاب الصلاة، باب الحدث فى الصلاة-1/662
যার সারমর্ম হলো যদি মাসবুক ব্যাক্তি ইমামের সাথে বা আগেই সালাম ফিরায়,তাহলে সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবেনা।
কেননা সে মুক্তাদি।
আর যদি ইমামের সালাম ফিরানোর পর সালাম ফিরায়,তাহলে সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবে,,,।
(আল বাহরুর রায়েক-১/৬৬২
ফাতওয়ায়ে শামী-২/৩৫০
ফাতওয়া আলমগীরী-১/৯১)
,
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যেহেতু ইমামের সাথে সালাম ফিরিয়েছে,তাই সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবেনা।