হাদিস শরিফে এসেছে,
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: جَاءَ نَاسٌ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَسَأَلُوهُ: إِنَّا نَجِدُ فِي أَنْفُسِنَا مَا يَتَعَاظَمُ أَحَدُنَا أَنْ يَتَكَلَّمَ بِهِ، قَالَ: وَقَدْ وَجَدْتُمُوهُ؟ قَالُوا: نَعَمْ، قَالَ: ذَاكَ صَرِيحُ الْإِيمَانِ.
সারমর্মঃ
একবার সাহাবায়ে কেরমের একদল রাসূলুল্লাহ ﷺ -এর কাছে এসে জিজ্ঞাসা করলেন, আমরা আমাদের অন্তরে কখনো কখনো এমন বিষয় অনুভব করি, যা মুখ দিয়ে উচ্চারণ করা আমাদের কাছে খুব কঠিন মনে হয়। রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন, সত্যিই কি তোমরা এরকম পেয়ে থাক? তাঁরা বললেন হ্যাঁ, আমরা এরকম অনুভব করে থাকি। রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন, ذَاكَ صَرِيحُ الْإِيمَانِ এটি তোমাদের ঈমানের স্পষ্ট প্রমাণ। (মুসলিম, কিতাবুল ঈমান, অনুচ্ছেদ: অন্তরের ওয়াসওয়াসা)
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
আপনার জন্য পরামর্শ থাকবে,
আপনি নিজ কাজে মগ্ন হয়ে যান। এদিকে বেশি মনোযোগ দিবেন না। কেননা, এইসব অবাঞ্ছিত চিন্তাকে গুরুত্ব দিয়ে কীভাবে তা দূর করা যায় এ চিন্তায় পড়ে গেলে আপনি এখানেই আটকা পড়ে যাবেন। সামনে অগ্রসর হওয়া আর সম্ভব হবে না। এভাবে শয়তানের উদ্দেশ্য পূরণ হয়ে যাবে।
,
যে কোনো ওয়াসওয়াসার প্রধান চিকিৎসা এটাই যে, একে গুরুত্ব না দেয়া। কী চিন্তা আসল, কী চিন্তা গেল-তা না ভেবে নিজের কাজে মশগুল থাকুন। কেননা, এটা মূলত শয়তানের কাজ।
আল্লাহ তাআলা বলেন,
إِنَّمَا النَّجْوَىٰ مِنَ الشَّيْطَانِ لِيَحْزُنَ الَّذِينَ آمَنُوا وَلَيْسَ بِضَارِّهِمْ شَيْئًا إِلَّا بِإِذْنِ اللَّهِ ۚ وَعَلَى اللَّهِ فَلْيَتَوَكَّلِ الْمُؤْمِنُونَ
এই ওয়াসওয়াসা তো শয়তানের কাজ; মুমিনদেরকে দুঃখ দেয়ার দেয়ার জন্যে। তবে (এই ওয়াসওয়াসা সৃষ্টি করে) সে মুমিনদেরকে চুল পরিমাণ ক্ষতি করতে পারে না, আল্লাহর হুকুম ছাড়া। মুমিনদের উচিত আল্লাহর উপর ভরসা করা। (সূরা মুজাদালাহ ১০)
এমন অবস্থা মাথায় আসলেই আপনি آمنت بالله ورسوله পড়ে নিবেন।
বিতাড়িত শয়তান হতে আল্লাহর কাছে পানাহ চাইবেন।
أعوذ بالله من الشيطان الرجيم
পড়বেন।
لا حول ولا قوة الا بالله العلي العظيم
তিনবার পাঠ করে বাম দিকে তিনবার থু থু ফেলতে পারেন।
★বেশী করে আল্লাহর জিকির করুন কুরআন তিলাওয়াত করুন। কেননা, জিকির শয়তান থেকে আত্মরক্ষার শক্তিশালী দুর্গ। আল্লাহ তাআলা বলেন,
اسْتَحْوَذَ عَلَيْهِمُ الشَّيْطَانُ فَأَنسَاهُمْ ذِكْرَ اللَّهِ أُوْلَئِكَ حِزْبُ الشَّيْطَانِ أَلَا إِنَّ حِزْبَ الشَّيْطَانِ هُمُ الْخَاسِرُونَ
শয়তান তাদেরকে বশীভূত করে নিয়েছে, অতঃপর আল্লাহর জিকির ভুলিয়ে দিয়েছে। তারা শয়তানের দল। সাবধান, শয়তানের দলই ক্ষতিগ্রস্ত। (সূরা মুজাদালাহ ১৯)
★ঈমান ও ইসলামের পরিবেশে সময় ব্যয় করুন। কেননা, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
فَمَنْ أَرَادَ مِنْكُمْ بَحْبَحَةَ الْجَنَّةِ فَلْيَلْزَمُ الْجَمَاعَةَ، فَإِنَّ الشَّيْطَانَ مَعَ الْوَاحِدِ، وَهُوَ مِنَ الِاثْنَيْنِ أَبْعَدُ
তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি জান্নাতের মাঝখানে থাকতে ইচ্ছুক, সে যেন অবশ্যই জামাতবদ্ধ জীবন যাপন করে। কেননা শয়তান একাকী মানুষের সঙ্গী এবং দু’জন থেকে সে অপেক্ষাকৃত দূরে থাকে। (তিরমিযি ২২৫৪)
★সকাল ও সন্ধ্যায় পড়ুন-–أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّةِ، مِنْ غَضَبِهِ وَشَرِّ عِبَادِهِ، وَمِنْ هَمَزَاتِ الشَّيَاطِينِ وَأَنْ يَحْضُرُونِ (আমি আল্লাহর পরিপূর্ণ কালেমার আশ্রয় প্রার্থনা করি তার অসম্ভষ্টি ও শাস্তি থেকে এবং তার বান্দার অনিষ্ট থেকে এবং শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে ও শয়তানের সংস্পর্শ থেকে।)
★ফজর ও মাগরিবের পর এবং ঘুমানোর আগে সূরা ফালাক ও নাস পড়ুন। হাদিসে এসেছে, উকবা ইবনে আমের রাযি. হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
أَلَمْ تَرَ آيَاتٍ أُنْزِلَتِ اللَّيْلَةَ ، لَمْ يُرَ مِثْلُهُنَّ قَطُّ ؟ قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ الْفَلَقِ ، وَقُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ النَّاسِ
তোমার কি জানা নেই আজ রাতে আমার ওপর যে আয়াতগুলো নাজিল হয়েছে এগুলোর মতো কোনো আয়াত দেখা যায় নি। আর তা হলো কুল আয়ুজু বি রাব্বিল ফালাক ও কুল আয়ুজু বি রাব্বিন নাস। (মুসলিম ৮১৪)
,
★দাওয়াত ও তাবলিগের মেহনতে গিয়ে চিল্লা বা তিনদিন সময় লাগানোর পরামর্শ রইলো।
অথবা কোনো হক্কানী শায়েখের কাছে যাওয়ার পরামর্শ রইলো।