আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
390 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (12 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম।
১)আমার ছোট ভাগ্নী জিজ্ঞেস করছে- আল্লাহ্ দেখতে কেমন?
তাকে কীভাবে এই উত্তরটা দিতে হবে?  কীভাবে উত্তর দিলে ও বুঝবে? উত্তর কী হবে সেটা লিখে দিলে ওকে শুনাইতে পারবো ইনশাআল্লাহ্!

২) ফজরের ফরজ স্বলাতের শেষ বৈঠকে তাশাহহুদ, দরুদ, দোআ মাসূরা পড়ার পর মনে হলো মনোযোগ দিয়ে পড়া হয়নি তাই আবার দরুদ পড়ে সালাম ফিরানোর আগে যেসব দোআ আছে সেগুলো থেকে পড়ে নামাজ শেষ করলে নামাজের কোন ক্ষতি হবে কি?

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)

(০১)
তাকে আপনার নিজ ভাষাতেই বুঝাবেন যে দুনিয়াতে চর্মচক্ষু দ্বারা মহান আল্লাহ তায়ালা কে দর্শন করা সম্ভব নয়।

কুরআনুল কারীমের অকাট্য ঘোষণা হল,
لَيْسَ كَمِثْلِهِ شَيْ وَهُوَ السَّمِيعُ الْبَصِيرُ
(তরজমা) কোনও জিনিস নয় তার অনুরূপ। তিনিই সব কথা শোনেন ও সবকিছু দেখেন। -সূরা শূরা, আয়াত ১১

لَا تُدْرِكُهُ الْأَبْصَارُ وَهُوَ يُدْرِكُ الْأَبْصَارَ
এবং হাদীস শরীফে ইরশাদ হয়েছে
تعلموا أنه لن يرى أحد منكم ربه عز وجل حتى يموت
 (সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৯৩০) 
তবে আল্লাহর মুমিন ও নেক বান্দাগণ আখেরাতে জান্নাতে আল্লাহ তাআলার দিদার লাভে ধন্য হবে- সে কথা কুরআন-হাদীস দ্বারা অকাট্যভাবে প্রমাণীত।

بَابُ بَيَانِ مَا أَعَدَّ اللهُ تَعَالٰى لِلْمُؤْمِنِيْنَ فِي الْجَنَّةِ
وَعَنْ صُهَيبٍ رضي الله عنه : أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ: «إِذَا دَخَلَ أَهْلُ الجَنَّةِ الجَنَّةَ يَقُولُ اللهُ تَبَارَكَ وَتَعَالَى: تُريدُونَ شَيئاً أَزِيدُكُمْ ؟ فَيَقُولُونَ : أَلَمْ تُبَيِّضْ وُجُوهَنَا ؟ أَلَمْ تُدْخِلْنَا الجَنَّةَ وَتُنَجِّنَا مِنَ النَّارِ ؟ فَيَكْشِفُ الحِجَابَ، فَمَا أُعْطُوا شَيْئاً أَحَبَّ إلَيْهِمْ مِنَ النَّظَرِ إلَى رَبِّهِمْ».
সুহাইব রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘জান্নাতিরা যখন জান্নাতে প্রবেশ করে যাবে, তখন মহান বরকতময় আল্লাহ বলবেন, ‘তোমরা কি চাও যে, আমি তোমাদের জন্য আরও কিছু বেশি দিই?’ তারা বলবে, ‘তুমি কি আমাদের মুখমণ্ডল উজ্জ্বল করে দাওনি? আমাদেরকে তুমি জান্নাতে প্রবিষ্ট করনি এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি দাওনি?’ অতঃপর আল্লাহ [হঠাৎ] পর্দা সরিয়ে দেবেন [এবং তারা তাঁর চেহারা দর্শন লাভ করবে]। সুতরাং জান্নাতের লব্ধ যাবতীয় সুখ-সামগ্রীর মধ্যে জান্নাতিদের নিকট তাদের প্রভুর দর্শন [দীদার]ই হবে সবচেয়ে বেশী প্রিয়।’’ 
মুসলিম ১৮১, তিরমিযী ২৫৫২, ১৮৭, আহমাদ ১৮৫৫৬, ১৮৪৬২, ২৩৪০৭
,
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ ثَابِتٍ الْبُنَانِيِّ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي لَيْلَى، عَنْ صُهَيْبٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي قَوْلِ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّّ : (لِلََّذِينَ أَحْسَنُوا الْحُسْنَى وَزِيَادَةٌ ) قَالَ " إِذَا دَخَلَ أَهْلُ الْجَنَّةِ الْجَنَّةَ نَادَى مُنَادٍ إِنَّ لَكُمْ عِنْدَ اللَّهِ مَوْعِدًا يُرِيدُ أَنْ يُنْجِزَكُمُوهُ قَالُوا أَلَمْ تُبَيِّضْ وُجُوهَنَا وَتُنَجِّنَا مِنَ النَّارِ وَتُدْخِلْنَا الْجَنَّةَ قَالَ فَيُكْشَفُ الْحِجَابُ . قَالَ فَوَاللَّهِ مَا أَعْطَاهُمُ اللَّهُ شَيْئًا أَحَبَّ إِلَيْهِمْ مِنَ النَّظَرِ إِلَيْهِ " .
মুহাম্মাদ ইবন বাশশার (রহঃ) ..... সুহায়ব রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, আল্লাহ্ তা’আলা এ বাণীঃ (لِلََّذِينَ أَحْسَنُوا الْحُسْنَى وَزِيَادَةٌ) যারা মঙ্গলকর কাজ করে তাদের জন্য আছে মঙ্গল এবং আরো অধিক (১০ঃ ২৬) প্রসঙ্গে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ জান্নাতীরা যখন জান্নাতে দাখিল হবে তখন এ আহবানকারী ঘোষাণা দিবে আল্লাহর কাছে তোমাদের জন্য একটি ওয়াদাকৃত বস্তু রয়ে গেছে। তিনি তা তোমাদের জন্য পূরণ করে দিতে চান।
তারা বলবেঃ তিনি কি আমাদের চেহারা উজ্জ্বল করে দেন নি? আমাদেরকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন নি এবং জান্নাতে দাখিল করেন নি? নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ এরপর আল্লাহর হিজাব উন্মোচিত করে দেওয়া হবে। আল্লাহর কসম, তাদের কাছে তাঁর দীদারের চেয়ে অধিক পছন্দনীয় আর কোন জিনিস আল্লাহ্ তা’আলা তাদের দেননি।
সহীহ, ইবনু মাজাহ ১৮৭, মুসলিম, তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ৩১০৫ [আল মাদানী প্রকাশনী]

,
حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، وَوَكِيعٌ، وَأَبُو أُسَامَةَ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ أَبِي خَالِدٍ، عَنْ قَيْسِ بْنِ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ جَرِيرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ: كُنَّا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ جُلُوسًا، فَنَظَرَ إِلَى الْقَمَرِ لَيْلَةَ الْبَدْرِ لَيْلَةَ أَرْبَعَ عَشْرَةَ، فَقَالَ: إِنَّكُمْ سَتَرَوْنَ رَبَّكُمْ كَمَا تَرَوْنَ هَذَا لَا تُضَامُّونَ فِي رُؤْيَتِهِ، فَإِنِ اسْتَطَعْتُمْ أَنْ لَا تُغْلَبُوا عَلَى صَلَاةٍ قَبْلَ طُلُوعِ الشَّمْسِ وَقَبْلَ غُرُوبِهَا فَافْعَلُوا ثُمَّ قَرَأَ هَذِهِ الْآيَةَ فَ (سَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ قَبْلَ طُلُوعِ الشَّمْسِ وَقَبْلَ غُرُوبِهَا) [طه: ١٣٠]
জারীর ইবনু আব্দুল্লাহ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট বসা ছিলাম। তিনি চৌদ্দ তারিখের রাতে পূর্ণিমার চাঁদের দিকে তাকিয়ে বললেনঃ অচিরেই তোমরা তোমাদের রবকে দেখতে পাবে যেমন তোমরা এ চাঁদকে দেখছো, আর একে দেখতে তোমাদের কোনো অসুবিধা হচ্ছে না। যদি তোমরা সূর্যদয়ের ও সূর্যাস্তের পূর্বে সালাত আদায়ে পরাভূত না হও তাহলে তা আদায় করে নাও। অতঃপর তিনি এ আয়াত পাঠ করলেনঃ ‘‘সূর্যদয় ও সূর্যাস্তের পূর্বে তোমার রবের প্রশংসাসহ তাসবীহ পাঠ করো।
(বুখারী মুসলিম।)
,
এক বর্ণনায় পাওয়া যায় যে আল্লাহ তায়ালাকে দেখার পর জান্নাতিরা লক্ষ কোটি বছর ধরে সেজদায় পড়ে থাকবে,,,,,
,
(০২)
শরীয়তের বিধান মতে  নামাজের শেষ বৈঠকে দরুদ শরীফ,দোয়ায়ে মাছুরা পড়া সুন্নাত।
আর সুন্নাত ছেড়ে দেওয়ার দ্বারাও নামাজ হয়ে যায়,সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব  হয়না।

বিস্তারিত জানুনঃ
,

নামাজের শেষ বৈঠকে একাধিক বার তাশাহুদ দরুদ শরীফ, দোয়ায়ে মাছুরা,কুরআন হাদীসে বর্ণীত দোয়া পড়লে কোনো সমস্যা  নেই। 
এতেও সেজদায়ে সাহু দিবে হবেনা।
ফাতাওয়ায়ে শামী ৬৯৩

کرر التشہد في القعدۃ الأخیرۃ فلاسہو علیہ۔
(البحرالرائق، کتاب الصلاۃ، باب سجود السہو، زکریہ172/2,173ہندیۃ، 2/97کتاب الصلاۃ، الباب الثاني عشر في سجود السہو1/127/، جدید زکریا/1/186)
যদি শেষ বৈঠকে তাশাহুদ তাকরার করে,তাহলে সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবেনা।    
,
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে নামাজের কোনো সমস্যা হবেনা।    


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...