আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
139 views
in হজ ও উমরা (Hajj and Umrah) by (7 points)

আমার দুই ভাই এবং বাবার নামে ৯০ লাখ টাকার হোম লোন আছে,যেটা প্রতি মাসের ভাড়া থেকে কেটে কেটে শোধ করা হচ্ছে, যা শোধ হতে প্রায় ২০ বছর লাগবে।এখন আমার বাবা হজ্জ করতে চান, আমার বাবার উপরে কি হজ্জ ফরয? (আমার বাবা লোন তারাতাড়ি শোধ করতে চান কিন্তু সেরকম কোন সম্পত্তি নাই,যেটা বিক্রি করে শোধ হবে  তাই এভাবেই  আস্তে আস্তে শোধ করতে হবে) 

1 Answer

0 votes
by (590,550 points)

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
ঋণ থাকলে  যাকাত দিতে হবে কি না? সে সম্পর্কে ইতিপূর্বে একটি ফাতাওয়ায় আমরা বলেছিলাম যে,

"ঋণ দুই প্রকার"
ঋণের ক্ষেত্রে লক্ষনীয় আরো একটি দিক রয়েছে।আর তা হল যে, ঋ দুই  প্রকার।
এক.সাধারণ ঋণ।যা মানুষ ব্যক্তিগত প্রয়োজনে কিংবা অস্বাভাবিক অবস্তায় নিতে বাধ্য হয়।
দুই.বিশাল বিশাল শিল্পকারখানা গড়ে তোলার কিংবা যে কোনো বড় ধরনের ব্যবসায়িক প্রকল্প খোলার উদ্দেশ্যে যে ঋণ নেয়া হয়ে থাকে।দৃষ্টান্ত স্বরুপ -ফ্যাক্টরী স্থাপন,মেশিনারিজ আমদানি কিংবা
ব্যবসায়িক পণ্য ইমপোর্ট করার উদ্দেশ্যে যে ঋণ নেয়া হয়।
ধরা যাক একজন শিল্পপতির দু'টি  ফ্যাক্টরী চালু রয়েছে। কিন্তু সে ব্যাংক ঋণ নিয়ে তৃতীয় আরো একটি ফ্যাক্টরী চালু করল। দ্বিতীয় প্রকারের এই ঋণকে যদি সামগ্রীক সম্পদের হিসাব থেকে বাদ দেয়া হয়, তাহলে এ জাতীয়  শিল্পপতিদের ওপর তো এক পয়সাও যাকাত ওয়াজিব হবে না; বরং উল্টো তারাই যাকাত প্রাপকের  তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে।কেননা তাদের কাছে যাকাতযোগ্য যে পরিমাণ  সম্পদ রয়েছে তার চেয়ে অনেক বেশী ঋণ সে ব্যাংক থেকে নিয়ে রেখেছে। দৃশ্যতঃ এখন তাকে দরিদ্র এবং মিসকীন মনে হচ্ছে। সুতরাং এ জাতীয় ঋণ বাদ দেয়ার ক্ষেত্রে শরীয়ত পার্থক্য নির্ণয় করে দিয়েছে।
"ব্যবসায়িক ঋণ কখন বাদ দেয়া হবে
ঋণের প্রথমোক্ত প্রকারটি তো সামগ্রিক সম্পদের হিসাব থেকে বাদ দেয়া হবে। বাদ দেয়ার পরই অবশিষ্ট সম্পদের যাকাত আদায় করতে হবে। ঋণের দ্বিতীয় প্রকারের ব্যাখ্যা হচ্ছে, যদি কোনো ব্যক্তি ব্যবসার উদ্দেশ্যে  ঋণ গ্রহণ করে থাকে অতঃপর তা এমন সামগ্রী ক্রয়ে বিনিয়োগ করে,যার ওপর যাকাত ওয়াজিব হয়। যেমন ঋণের টাকায় কাঁচামাল ক্রয় করল কিংবা ব্যবসায়িক পণ্য ক্রয় করল,তাহলে কেবলমাত্র ঋণের এই পরিমান অর্থকে সামগ্রিক সম্পদের হিসাব থেকে বাদ দেয়া হবে। কিন্তু যদি ঋণের এই অর্থ যাকাত অযোগ্য সামগ্রী ক্রয়ে ব্যবহার করা হয়, তাহলে ঋণের এই অর্থকে সামগ্রীক সম্পদ থেকে বাদ দেয়া যাবে না।

""" ঋণের দৃষ্টান্ত """
ধরা যাক, একব্যক্তি ব্যাংক থেকে এক কোটি টাকা ঋণ উত্তোলন করেছে। আন্তর্জাতিক বাজার (বর্হিঃবিশ্ব)থেকে এই টাকায় সে একটি প্লান্ট(মেশিনারি) ইম্পোর্ট (আমদানি) করল।যেহেতু ওই প্লান্টটি যাকাত যোগ্য সম্পদ নয়,সেহেতু এই অবস্থায় এই ঋণ সামগ্রিক  সম্পদ থেকে বাদ দেয়া হবে না।কিন্তু যদি ঋণের এই অর্থে সে কাঁচামাল ক্রয় করে থাকে,তাহলে যেহেতু কাঁচামালের ওপর যাকাত ওয়াজিব হয়,তাই এই ঋণ সামগ্রিক সম্পদ থেকে বাদ দেয়া হবে। কেননা ঋণের হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করে এটিকে সামগ্রিক সম্পদ থেকে বাদ দেয়া হলেও কাঁচামাল তো সামগ্রিক সম্পদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেছে।
সারকথা হল,প্রয়োজনীয় ও অস্বাভাবিক ঋণের পুরোটাই সামগ্রিক সম্পদ থেকে বাদ যাবে।আর যে ঋণ কেবলমাত্র মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে নেয়া হয়েছে, সে ক্ষেত্রে ব্যাখ্যা হলো যে, যদি ঋণের অর্থে যাকাত অযোগ্য সামগ্রী ক্রয় করা হয়, তাহলে ওই ঋণের অর্থ হিসাব থেকে বাদ দেয়া যাবে না।আর যাকাতযোগ্য সামগ্রী ক্রয়ে অর্থলগ্নি করলে তা সামগ্রীক সম্পদের হিসাব থেকে বাদ দেয়া যাবে। এই ছিল যাকাত বের করার ক্ষেত্রে শরীয়তের আহকাম।

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/17393

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনার বাবা যদি এই ঋণ বিশাল অট্টালিকা দেয়ার নিমিত্তে নিয়ে থাকেন। তাহলে এই ঋণ থাকার পরও হজ্ব ফরয হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...