জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
শরীয়ত স্ত্রীর উপর এমন কোনো দায়িত্ব দেয়নি,যাতে তাকে ইনকাম করতে হবে।
স্ত্রীর ভরণ-পোষণ স্বামীর উপর সর্বাবস্থায় ফরয, স্ত্রীর নিজের সম্পদ থাকুক বা না থাকুক।
,
মহান আল্লাহ তাআলা বলেন,
الرِّجَالُ قَوَّامُونَ عَلَى النِّسَاءِ بِمَا فَضَّلَ اللَّهُ بَعْضَهُمْ عَلَىٰ بَعْضٍ وَبِمَا أَنفَقُوا مِنْ أَمْوَالِهِمْ ۚ فَالصَّالِحَاتُ قَانِتَاتٌ حَافِظَاتٌ لِّلْغَيْبِ بِمَا حَفِظَ اللَّهُ ۚ
পুরুষেরা নারীদের অভিভাবক, ঐ (বিশেষত্বের) কারণে, যার দ্বারা আল্লাহ তাদের কাউকে কারো উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন এবং ঐ সম্পদের কারণে, যা তারা ব্যয় করেছে। সুতরাং সৎ নারীরা হল অনুগত, (স্বামীর) অবর্তমানে (নিজের সতিত্ব ও স্বামীর সম্পদ) রক্ষাকারী, আল্লাহ রক্ষা করার কারণে ... -সূরা নিসা : ৩৪
এখানে قَوَّامُونَ -এর তরজমা করা হয়েছে ‘অভিভাবক’। মুফাসসিরীনের ব্যাখ্যামতে তা হচ্ছে,
শাসন ও ব্যবস্থায়ন এবং রক্ষা ও নিরাপত্তাবিধানের মাধ্যমে নারীর দেখভাল করা এবং আদেশ ও নিষেধের মাধ্যমে তার অবস্থার সংশোধন করা, যেমন শাসকগণ প্রজাসাধারণের দেখভাল করে। তো পুরুষ হচ্ছে নারীর প্রধান ও উপরস্থ;নারীর শাসক ও সংশোধক, যদি সে বেঁকে যায়।-আহকামুল কুরআন, জাসসাস ২/১৮৮; আহকামুল কুরআন ইবনুল আরাবী ২/৪১৬; তাফসীরে কাশশাফ ১/৫০৫; তাফসীরে ইবনে কাছীর ১/৪৯১
এই আয়াতে স্ত্রীর উপর স্বামীর অভিভাবকত্বের দুটো কারণ বলা হয়েছে : প্রথমত দৈহিক শক্তি-সামর্থ্য ও বিচার-বিচক্ষণতার মতো গুণাবলি, দ্বিতীয়ত মোহরানা ও ভরণ-পোষণের জন্য ব্যয়বহন।
এই আয়াতে ‘পুরুষের ব্যয়কৃত সম্পদ’ মানে স্ত্রীর মোহরানা, খোরপোষ ও আনুষঙ্গিক অন্যান্য খরচ, কুরআন ও সুন্নাহর বিধান অনুযায়ী যা বহন করা অবশ্যকর্তব্য। এ আয়াত প্রমাণ করে, স্ত্রীর নাফাকা ও খোরপোষ স্বামীর উপর ফরয। -তাফসীর ইবনে কাছীর ১/৪৯২; আহকামুল কুরআন, জাসসাস ২/১৮৮
হাদীস শরীফে এসেছে-
عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ عَمْرِو بْنِ الأَحْوَصِ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي أَنَّهُ، شَهِدَ حَجَّةَ الْوَدَاعِ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَحَمِدَ اللَّهَ وَأَثْنَى عَلَيْهِ وَذَكَّرَ وَوَعَظَ فَذَكَرَ فِي الْحَدِيثِ قِصَّةً فَقَالَ " أَلاَ وَاسْتَوْصُوا بِالنِّسَاءِ خَيْرًا… أَلاَ وَحَقُّهُنَّ عَلَيْكُمْ أَنْ تُحْسِنُوا إِلَيْهِنَّ فِي كِسْوَتِهِنَّ وَطَعَامِهِنَّ " .
সুলাইমান ইবনু আমর ইবনুল আহওয়াস (রহঃ) হতে তার পিতার সূত্র থেকে বর্ণিতঃ
বিদায় হজ্জের সময় তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে ছিলেন। তিনি আল্লাহ তা'আলার প্রশংসা ও গুণগান করলেন এবং ওয়াজ-নাসীহাত করলেন। এ হাদীসের মধ্যে বর্ণনাকারী একটি ঘটনা বর্ণনা করে বলেন, তিনি (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ স্ত্রীদের সাথে ভালো আচরণের উপদেশ নাও। ... জেনে রাখ! তোমাদের প্রতি তাদের অধিকার এই যে, তোমরা তাদের উত্তম পোশাক-পরিচ্ছদ ও ভরণপোষণের ব্যবস্থা করবে। (সুনানে তিরমিযী ১১৬৩)
হযরত আমর ইবনুল আহওয়াস রা. বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-
সাবধান, তোমাদের জন্য তোমাদের স্ত্রীদের উপর রয়েছে কিছু অধিকার, আর তোমাদের স্ত্রীদের জন্যও তোমাদের উপর রয়েছে কিছু অধিকার। তোমাদের অধিকার এই যে, স্ত্রীরা কোনোভাবেই তোমাদের বিছানায় এমন কাউকে পদার্পণের সুযোগ দিবে না, যাকে তোমাদের পছন্দ নয়। এবং তোমাদের ঘরে এমন কাউকে প্রবেশের অনুমতি দিবে না, যাকে তোমাদের অপছন্দ।
সাবধান, তোমাদের উপর তাদের অধিকার এই যে, খোরপোষের বিষয়ে তাদের প্রতি সদাচার করবে।-জামে তিরমিযী, হাদীস : ১১৬৩; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস : ১৮৫১
মুআবিয়া কুশাইরী রাহ. বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খেদমতে আরজ করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! স্ত্রীদের বিষয়ে আমাদের প্রতি আপনার আদেশ কী? তিনি বললেন-
তোমরা যেমন খাও তাদেরকেও তেমন খাওয়াও, তোমরা যেমন পর, তাদেরকেও তেমন পরাও। তাদেরকে প্রহার করো না ও কটু কথা বলো না।-সহীহ ইবনে হিববান, হাদীস : ৪১৬৩; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ২১৪২
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
আপন যদি ফ্রিল্যান্সিং শিখে বৈধ ভাবে টাকা ইনকাম করেন,সেক্ষেত্রে নিজ পরিবারকে হেল্প করতে পারেন,সাদাকাহ করতে পারেন,স্বামীকেও হেল্প করতে পারেন।
তবে কোনোটিই আপনার উপর শরীয়ত কর্তৃক আবশ্যক নয়।
সম্পূর্ণ আপনার ইখতিয়ারধীন।
এমন নয় যে স্বামীকে হেল্প করতেই হবে,বা নিজ পরিবারকে হেল্প করতেই হবে।
বিষয়টি এমন নহে।
আপনার ইচ্ছা,আপনি স্বামীকে হেল্প করতেও পারেন,নাও করতে পারেন।
স্বামী এর জন্য আপনাকে চাপ দিতে পারবেনা।
সংসারের জন্য খরচ করলেও ছওয়াব পাবেন,পিতা মাতাকে দিলেও ছওয়াব পাবেন,সাদাকাহ করলেও ছওয়াব পাবেন।