পুরুষদের চুল রাখার বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আহকামঃ-
পুরুষের মাথার চুল রাখার ক্ষেত্রে বিধান হল, বাবরি চুল রাখা রাসূল সাঃ এর সুন্নাত। আর মাথা কামিয়ে রাখা সাহাবায়ে কেরাম রাঃ থেকে প্রমাণিত। এটিকেও সুন্নাহ বলা যাবে। তবে সাহাবীদের সুন্নাহ। রাসূল সাঃ থেকে সরাসরি প্রমাণিত সুন্নাহ নয়। কারণ, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুধু হজ্ব শেষে মাথার চুল কামিয়েছেন মর্মে হাদীস পাওয়া যায়। এছাড়া আর কখনো চুল কামিয়েছেন মর্মে বর্ণনা না পাওয়া যায় না।
যেহেতু সাহাবায়ে কেরাম রাঃ গণকেও অনুসরণীয় সাব্যস্ত করা হয়েছে। তাই মাথা কামিয়ে রাখাও সুন্নাহের অন্তর্ভূক্ত।
বাবরি রাখার তিনটি পদ্ধতি
এ বিষয়ে তিন ধরণের বর্ণনা এসেছে। যথা-
১
ওয়াফরা তথা কানের লতি পর্যন্ত চুল।
২
লিম্মা তথা গর্দান ও কানের লতির মাঝামাঝি বরাবর বড় রাখা।
৩
জুম্মা তথা ঘাড় পর্যন্ত আলম্বিত চুল।
عَنْ أَنَسٍ، قَالَ: «كَانَ شَعْرُ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى شَحْمَةِ أُذُنَيْهِ» (سنن ابى داود، رقم الحديث-4185)
হযরত আনাস রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাঃ এর চুল তাঁর দুই কানের লতি পর্যন্ত লম্বা ছিল। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৪১৮৫}
عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ: «كَانَ شَعْرُ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَوْقَ الْوَفْرَةِ، وَدُونَالْجُمَّةِ» (سنن ابى داود، رقم الحديث–
4187)
হযরত আয়শা রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাঃ এর চুল ঘাড়ের উপর এবং কানের নীচ পর্যন্ত লম্বা ছিল। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৪১৮৭}
عَنِ الْبَرَاءِ، قَالَ: «مَا رَأَيْتُ مِنْ ذِي لِمَّةٍ أَحْسَنَ فِي حُلَّةٍ حَمْرَاءَ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ» زَادَ مُحَمَّدُ بْنُ سُلَيْمَانَ: «لَهُ شَعْرٌ يَضْرِبُ مَنْكِبَيْهِ» (سنن ابى داود، رقم الحديث-4183)
হযরত বারা বিন আজেব রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি কোন ব্যক্তিকে কান পর্যন্ত বাবরীধারী, লাল ইয়ামেনী চাদরের আবরণে রাসূল সাঃ থেকে অধিক সুন্দর দেখিনি। রাবী মুহাম্মদ রহঃ অতিরিক্ত বর্ণনা করে বলেন যে, তাঁর চুল ঘাড় পর্যন্ত লম্বা ছিল। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৪১৮৩}
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনাকে টাক করে বা চুল একদম ছোট করে রাখা শুরু করতে হবেনা।
বরং বর্তমানে যেমন চুল আছে,তেমন ভাবে ছেড়ে দিবেন,আপনার মনের মধ্যেই তো রাসুলুল্লাহ সাঃ এর চুলের সুন্নাত অবলম্বনের ইচ্চা বা সংকল্প রয়েছে,সুতরাং মনেই এই ইচ্ছাই নিয়ত হিসেবে যথেষ্ট।
,
তবে কখনোও যেনো ঘাড় পেড়িয়ে না যায়।
ঘাড় পেরিয়ে গেলে মেয়েদের সাথে সাদৃশ্যতা চলে আসে,বিধায় তাহা জায়েজ নেই।
ছেলেরা সর্বোচ্চ ঘাড়ের সীমা পর্যন্ত চুল রাখতে পারবে,এর বেশি হলে অতিরিক্তটুকু কেটে ফেলতে হবে।
হাদীস শরীফে এসেছে
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ ، حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ ، عَنْ قَتَادَةَ ، عَنْ عِكْرِمَةَ ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قَالَ : لَعَنَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْمُتَشَبِّهِينَ مِنَ الرِّجَالِ بِالنِّسَاءِ، وَالْمُتَشَبِّهَاتِ مِنَ النِّسَاءِ بِالرِّجَالِ.
تَابَعَهُ عَمْرٌو ، أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ
যে সমস্ত পুরুষেরা মহিলাদের সাদৃশ্যতা অবলম্বন করে,আর যে সমস্ত মহিলারা পুরুষদের সাদৃশ্যতা অবলম্বন করে,তাদের উপর রাসুল সাঃ লা'নত করেছেন। (বুখারী শরীফ ৫৮৮৫)