بسم الله الرحمن الرحيم
জবাবঃ
শরিয়তের নির্দেশনা হলো, অনতিবিলম্বে মৃতের কাফন-দাফন-জানাজার বন্দোবস্ত করা। বিশেষ কারণ ব্যতীত বিলম্ব করা বিধি সম্মত নয়। কাফন-দাফনে বিলম্ব না হওয়ার শর্তে জানাজার পূর্বে মৃতের চেহারা দেখা জায়েজ বটে; তবে জানাজার পর মৃতের চেহারা না দেখাই বরং উত্তম। অনেক সময় জানাজার পর মৃতের চেহারায় পরিবর্তনও চলে আসে। এতে এক মুসলমানের দোষ প্রকাশিত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও থাকে।
নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
أَسْرِعُوا بِالْجِنَازَةِ، فَإِنْ تَكُ صَالِحَةً فَخَيْرٌ تُقَدِّمُوْنَهَا إِلَيْهِ، وَإِنْ يَكُ سِوَى ذَلِكَ فَشَرٌّ تَضَعُوْنَهُ عَنْ رِقَابِكُمْ
অর্থ: তোমরা দ্রুত জানাজার নামাজ পড়ে লাশ দাফন কর। কেননা যদি মৃত ব্যক্তি পুণ্যবান হয়, তবে তোমরা ‘ভাল’-কে দ্রুত কবরে সমর্পণ কর। আর যদি অন্যরূপ হয়, তাহ’লে ‘মন্দ’-কে দ্রুত তোমাদের কাঁধ থেকে নামিয়ে দাও। (বুখারি ১৩১৫) (আবু দাউদ ১/১৫৮)
وقال في الہندیة: ویبادر إلی تجہیزہ ولا یوٴخر
অর্থ: জানাজায় বিলম্ব নয়; দ্রুত করা বিধেয়। (ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়া ১/১৫৭)
سألتُ یوسف بن محمد عمن یرفع الستر عن وجہ المیت لیراہ، قال: لا بأس بہ
ইউসুফ বিন মুহাম্মদ রাহ. কে মৃতের চোহারা দেখার ব্যাপারে জিগ্যেস করা হলে তিনি বলেন, মৃতের চেহারা দেখাতে কোন অসুবিধা নেই। (ফাতওয়ায়ে তাতারখানিয়া,৩/৭৮)
★★জাদু-টোনা, জিন-শয়তান ও বদনজরসহ যাবতীয় অনিষ্টতা থেকে মুক্তি পাওয়ার ইসলামি উপায় রয়েছে। এসব থেকে আত্মরক্ষার জন্য সকাল-সন্ধ্যা, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পরে এবং ঘুমের আগে হাদিসে বর্ণিত দোয়া ও জিকিরের আমল করা। তাহলো-
১. সকাল-সন্ধ্যায় সুরা ইখলাস, ফালাক ও নাস তিনবার পড়া এবং আয়াতুল কুরসি একবার পড়া।
২. পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পর উক্ত তিনটি সুরার পাশাপাশি আয়াতুল কুরসি একবার পড়া।
৩. রাতে ঘুমের আগে উক্ত তিন সুরা পড়ে দুই হাত একত্রিত করে তাতে ফুঁ দিয়ে মাথা থেকে শরীরের যতটুকু পৌঁছানো সম্ভব তাতে তিনবার মাসেহ করা। সঙ্গে আয়াতুল কুরসিও পড়া।
৪. কোনো কারণে কোথাও যাওয়ার প্রয়োজন হলে- ‘বিসমিল্লাহি তাওয়াক্কালতু আলাল্লাহ’ বলে ঘরতে বের হওয়া। এবং নির্ধারিত গন্তব্যে পৌছলে এ দোয়া পড়া-
أَعُوذُ بِكلِمَاتِ الله التّامّاتِ مِن شَرّ مَا خَلَقَ
উচ্চারণ : আউজুবি কালিমাতিল্লাহিত তাম্মাতি মিন শাররি মা খলাকা।
অর্থ : ‘আল্লাহর পরিপূর্ণ কালেমার ওসিলায় তিনি যা সৃষ্টি করেছেন সেগুলোর অনিষ্টা থেকে তাঁর কাছেই আমি আশ্রয় চাই।’
হজরত খাওলাহ বিনতে হাকিম রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেন, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোনও স্থানে পৌঁছে পাঠ করে-
أَعُوذُ بِكلِمَاتِ الله التّامّاتِ مِن شَرّ مَا خَلَقَ
উচ্চারণ : আউজুবি কালিমাতিল্লাহিত তাম্মাতি মিন শাররি মা খলাকা।
(এতে) কোনো কিছুই তার ক্ষতি সাধন করতে পারবে না; যতক্ষণ না সে ওই স্থান থেকে (অন্য কোথাও) চলে যায়।’ (মুসলিম)
ইসলাম মানুষকে এমন সুন্দর জীবন ব্যবস্থা দিয়েছে যে, দুনিয়ার প্রতি কাজে কাজে, প্রতিটি পদক্ষেপে অনিষ্টতা থেকে আশ্রয় পাওয়ার জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করার সুযোগ দিয়েছেন। যার ফলে বান্দা অনেক বিপদ-আপদ এমনকি কুসংস্কার থেকেও মুক্তি পায়।
সুতরাং মুমিন মুসলমানের সব গর্ভবতী ও প্রসূতি নারীর উচিত, নিজের ও নিজের গর্ভের কিংবা শিশু সন্তানের অনিষ্টতা থেকে বেঁচে থাকতে সব সময় মহান আল্লাহর ওপর বিশ্বাস স্থাপন করে কোরআন-সুন্নাহর দিকনির্দেশনা মেনে চলা।
এমনকি বাহির থেকে বাড়িতে প্রবেশের সময় সালাম দেওয়া, ঘরে প্রবেশের সময় দোয়া ও বিসমিললাহ বলে প্রবেশ করা।, টয়েলেটে যাওয়ার সময় যেমন দোয়া পড়ে যাওয়া; তেমনি টয়লেট থেকে বে হয়েও আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা। খাবারের সময় বিসমিল্লাহ বলে শুরু করা, স্ত্রী সহবাসের আগে দোয়া পড়া। সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াত ও সুরা তাওবার শেষ দুই আয়াত তেলাওয়াত করা। বেশি বেশি তাওবাহ-ইসতেগফার পড়া। যা সব মানুষকেই জিন-শয়তানের অনিষ্টতা, জাদু-টোনা থেকে রক্ষা করবে। ইনশাআল্লাহ।
প্রশ্নকারী প্রিয় দ্বীনী ভাই/ বোন!
যদি পূর্ণাঙ্গ পর্দার সাথে স্বাস্থগত ঝুঁকিমুক্ত থেকে আপনি আপনার সেই মৃত মাহরাম কে দেখতে যান তাহলে কোন গুনাহ হবে না। তবে সাধারণত এসমস্ত স্থানে মানুষের অধিক সমাগম ঘটে এবং কখনো আবার বদ নজরেরও আশংকা থাকে এবং পর্দার ক্ষেত্রেও বেশ কিছু ত্রুটি বা শিথিলতা চোখে পড়ে, বিধায় এমতবস্থায় না যাওয়াই উত্তম। কিন্তু গেলে গুনাহ হবে না।
উল্লেখ্য যে, গর্ভাবস্থায় উপরে উল্লিখিত আমলগুলি করার চেষ্টা করুন।